যুক্তরাজ্য়ের সাউথপোর্টে ছুরির আঘাতে তিনজনের মৃত্য়ুর পর সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
বিজ্ঞাপন
গত রোববার যুক্তরাজ্য়ের উত্তরে সাউথপোর্টে একটি নাচের ক্লাসে ছুরি নিয়ে ঢুকে পড়েছিল এক বালক। তার আক্রমণে ঘটনাস্থলেই দুই শিশুর মৃত্য়ু হয়। পরে আরো এক শিশু হাসপাতালে মারা যায়। এখনো আটটি শিশু হাসপাতালে মৃত্য়ুর সঙ্গে লড়াই করছে। আহত হয়েছেন দুই নারীও।
আক্রমণকারী নাবালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু এরপরেই মঙ্গলবার সেখানে সহিংসতার ঘটনা শুরু হয়। স্থানীয় মসজিদের সামনে একটি অতি দক্ষিণপন্থি গ্রুপের মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। সমাজমাধ্য়মে নানা ধরনের গুজবের পরিপ্রেক্ষিতেই তারা সেখানে জড়ো হয় বলে পুলিশের অভিযোগ।পুলিশ জানিয়েছে, সমাজ মাধ্য়মে গুজব রটে আটক ১৭ বছরের ওই নাবালক একজন শরণার্থী। নৌকো করে কিছুদিন আগেই সে যুক্তরাজ্য়ে এসে পৌঁছেছে। ওই বালকের নামও ছড়িয়ে পড়ে ইন্টারনেটে।
ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর ডাবলিনে দাঙ্গা, আগুন
ডাবলিন সিটি সেন্টারে একটি স্কুলের বাইরে তিনটি বাচ্চা মেয়ে ও এ নারীকে ছুরি মারে এক ব্যক্তি। তারপর দাঙ্গা শুরু হয়।
ছবি: Brian Lawless/PA via AP/picture alliance
পুলিশ যা বলেছে
পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ বছরের একটি মেয়ে এখন এমার্জেন্সি কেয়ারে আছে। পাঁচ ও ছয় বছরের দুইটি মেয়ে এবং ৩০ বছর বয়সি নারীও ঘটনায় আহত হয়েছেন। এই ছুরি মারার ঘটনার জন্য একজনই দায়ী। তার খোঁজ চলছে।
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
এটা কি সন্ত্রাসবাদী হামলা?
পুলিশ সুপার প্রথমে বলেছিলেন, প্রাথমিক তদন্তে তিনি সন্তুষ্ট। এটা সন্ত্রাসবাদীদের কাজ নয়। এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। পরে পুলিশ প্রধান হ্যারিস জানান, ''পুলিশ কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছে না। এটা সন্ত্রাসবাদী ঘটনা কিনা, তা নিয়ে জল্পনা করার দরকার নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত আক্রমণের উদ্দেশ্য জানা না যাচ্ছে, ততদিন খোলা মনেই পুলিশ চলবে।''
ছবি: Brian Lawless/AP Photo/picture alliance
দাঙ্গা শুরু
এর কিছুক্ষণ পরেই মুখে মুখোশ পরে দাঙ্গাকারীরা রাস্তায় নামে। তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। তারা সরকারি যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা অভিবাসীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
'দক্ষিণপন্থিদের কাজ'
পুলিশ জানিয়েছে অতি-দক্ষিণপন্থিরাই রাস্তায় নেমেছিল। তারা ইমিগ্রেশন সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয়। একটা জুতোর দোকানে ভাঙচুর করে। বাস, গাড়ি, ট্রামে আগুন ধরায়।
ছবি: Brian Lawless/PA via AP/picture alliance
গুজব থেকে শুরু
পুলিশ জানিয়েছে, কেউ যেন কোনো গুজব না ছড়ায়। পুলিশের ধারণা, গুজবের কারণেই দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। গুজব রটেছিল, একজন বিদেশি এই ছুরি-আক্রমণের পিছনে আছে। এই গুজব ছড়িয়ে পড়ার পরে দলে দলে যুবক রাস্তায় নেমে পড়ে।
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
শুধু আগুনের ছবি
দাঙ্গার পর ডাবলিনে আগুনের ছবি সামনে আসে। দাঙ্গাকারীরা দোকান, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের সামলানোর জন্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ছবি: Clodagh Kilcoyne/REUTERS
ঘটনার নিন্দা
আয়ারল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকেন্টি বলছেন, প্রথমে ছুরি মারার ঘটনা, তারপর এই ধরনের আক্রমণ, দুটিই ভয়ংকর নিন্দনীয় ঘটনা। পুলিশ অনেককে গ্রেপ্তার করেছে। আরো করবে। আয়ারল্যান্ডের ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের প্রধান বলেছেন, যারা এইভাবে যানবাহনে আগুন ধরায় তাদের নিন্দা করার কোনো ভাষা নেই।
ছবি: CLODAGH KILCOYNE/REUTERS
7 ছবি1 | 7
মসজিদ ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে অতি দক্ষিণপন্থি গ্রুপের সদস্য়দের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য় করে বোতল এবং পাথর ছোঁড়া হয়। পুলিশও পাল্টা আক্রমণ করে। ঘটনায় অন্তত ২২ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন।
বিকেলে পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। যুক্তরাজ্য়ের স্বরাষ্ট্রসচিব সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। সাউথপোর্টের অধিকাংশ মানুষ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। তারা ঘটনাস্থলে শোকজ্ঞাপন করেছেন। মৃত শিশুদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। সমাজমাধ্য়মে গুজব ছড়ানোর পর একদল সংঘর্ষের বাতাবরণ তৈরি করে।
বস্তুত, যুক্তরাজ্য়ের প্রধানমন্ত্রীও ঘটনাস্থলে গিয়ে শোকজ্ঞাপন করেছেন। সে সময় ভিড়ের মধ্য় থেকে কেউ কেউ বলে ওঠেন, ''আর কত মৃত্য়ু দেখতে হবে, প্রধানমন্ত্রী।'' ওই ঘটনার পর দ্রুত প্রধানমন্ত্রীকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।