1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আসছেন না

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ ডিসেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসছে না যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস- অ্যানফ্রেল৷ ৩০ ডিসেম্বরের আগে তাঁদের ভিসা দেয়ায় অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁরা আসতে পারছেনা৷

ছবি: bdnews24.com/T.Ahammed

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে সময়মতো ভিসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় পর্যবেক্ষক দল তাদের সফর বাতিল করেছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউটের অর্থায়নে ব্যাংককভিত্তিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যানফ্রেলের সদস্যদের বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ আসার কথা ছিল

মার্কিন দপ্তরের উপ-মুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো বিবৃতিতে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস এর আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা সময়মতো ভিসা পাননি৷ তাই বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষল মিশনের জন্য তাদের বাংলাদেশে যাওয়া সম্ভব নয়৷''

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ না থাকায় এখন বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেলো৷ স্থানীয় এনজিও, যারা নির্বাচন নিয়ে কাজ করে, বিশেষ করে ইউএসআইডির অর্থায়নে পরিচালিত কিছু সংস্থাও রয়েছে তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে৷''

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ভিসা জটিলতা নিয়ে হতাশাও প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর৷ নির্বাচনে সব দলের শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত ও সরকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখার আহ্বানও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে৷ রপ্তানি বেড়েছে, তৈরি পোশাক খাতে এগিয়েছে৷ তবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷''

পালাদিনো বলেন, ‘‘আমরা রাজনৈতিক বিভাজন, সহিংসতা, অস্থিরতা চাই না৷ আমরা গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুষ্ঠু ও স্বাধীন নির্বাচন চাই৷ আমরা সব পক্ষকে ঐকমত্যে আসার আহ্বান জানাই৷''

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘যেকোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্পন্ন করতে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের সুযোগ থাকতে হবে, গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে নির্বাচনের সংবাদ পরিবেশন করতে দিতে হবে৷''

এবারের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ৩২ জন পর্যবেক্ষক আসার কথা ছিল৷ ১৭ ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য তাঁর দেশ ৩২ জন পর্যবেক্ষক পাঠানো হবে৷ মার্কিন দূতাবাসের ১১টি দল নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে৷

মাইনুল আলম

This browser does not support the audio element.

দৈনিক ইত্তেফাকের কূটনৈতিক সম্পাদক মাইনুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্র যে ৩২ জন পাঠানোর কথা বলেছিল তারাই অ্যানফ্রেল-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসার কথা ছিল৷ তারা যে সবাই মার্কিন নাগরিক তা নয়৷ তারা অধিকাংশই এশিয়ান৷ তবে তাদের এই গ্রুপটি পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্র৷ তাঁদেরই আসার কথা ছিল৷ তবে আমরা জানতে পেরেছি তাদের মাত্র ৬ জন ভিসা পেয়েছেন৷ মার্কিন পরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে ভিসা না পাওয়ায় তাঁদের আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষরা আসছেন না৷ তবে যে ৬ জন ভিসা পেয়েছেন তারা আসবেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ ''

তিনি আরো বলেন,‘‘হয়তো ভিসা প্রক্রিয়া পর্যাপ্ত সময় নিয়ে শুরু না করায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ৩২ জন না আসলেও মার্কিন দূতবাসের যে ১১টি টিমের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার কথা তারা করবেন৷ এই টিমগুলো ঢাকায় অবস্থানরত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠন করা হবে৷''

কাজী মারুফুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

নির্বাচন নিয়ে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এবারের নির্বাচনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশ ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর কথা বলেছে৷ এখন তাঁরা যদি ভিসা না পাওয়ার কারণে আসতে না পারেন সেটা হতাশাজনক৷ গত ২৫-৩০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে৷ তাঁরা না আসলে যে নির্বাচনের মানে খুব একটা পার্থক্য হবে তা নয়৷ কিন্তু নির্বাচন নিয়ে যদি দেশে-বিদেশে কোনো প্রশ্ন ওঠে, তখন সমস্যা হবে৷ বাংলাদেশের তখন কোনো সাক্ষী থাকবে না৷ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক থাকলে তাঁরা বলতে পারেন নির্বাচন কেমন হয়েছে৷''

তবে এ নিয়ে এখনো বাংলাদেশ সরকার বা নির্বাচন কশিনের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷

এবার বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষকরা আসছেন না, সে কথা তাঁরা আগেই জানিয়ে দিয়েছে৷ তবে তাঁদের দু'জন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এরই মধ্যে ঢাকায় এসেছেন৷ ২০০৮ সালে ইইউ'র ৮০০ সদস্যের নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন৷

তবে ইইউ-এর সদস্য রাষ্ট্র ফ্রান্স ও ডেনমার্ক এবং ভারত অল্প কয়েকজন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে৷

বাংলাদেশের ১১৮টি দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন৷ এবার অধিকার, ফেমা এবং ব্রতী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি পায়নি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ