হংকং নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন পাসের পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দেশটির বেশ কয়েকটি এনজিওর উপর অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়েছে চীন৷ সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর সদস্যদের হংকং সফর বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার উপর অবরোধ দিতে যাচ্ছে চীন৷ এই তালিকায় আছে এনডোমেন্ট ফর ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ফ্রিডম হাউস, ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউট এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট৷
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং জানিয়েছেন, এই সংস্থাগুলো গত ছয় মাসে হংকংয়ের অস্থিরতায় খুব ‘বাজেভাবে' কাজ করেছে৷
পাশাপাশি হংকংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর পরিদর্শনও তারা বাতিল ঘোষণা করেছে৷
এর আগে গত সপ্তাহে হংকং নিয়ে দুটি বিল পাস করেছে ওয়াশিংটন৷ এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ওয়াশিংটন হংকংয়ের উপর অবরোধ আরোপ করতে পারবে৷ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেখানে যথাযথ স্বায়ত্তশাসন আছে কিনা তা পরীক্ষা করবে যুক্তরাষ্ট্র৷ আরেকটি আইন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র হংকংয়ে টিয়ারগ্যাস, পিপার স্প্রে, রাবার বুলেট, স্টেন গানসহ বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে৷
সেই সময় এই আইনকে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভয়ানক হস্তক্ষেপ এবং কর্তৃত্বপরায়ন আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে দেশটি৷
‘‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে ইচ্ছামতো আচরণ না করার পরামর্শ দিচ্ছি, নয়তো চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে,'' জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ পরবর্তীতে দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টেরি ব্রানস্টাডকেও তলব করেছে তারা৷
এফএস/এসিবি (এএফপি, এপি)
গত ১৬ আগস্টের ছবিঘরটি দেখুন...
হংকং সীমান্তে কেন চীনা সেনা?
হংকং ও চীনের সীমান্তের কাছে শেনঝেনে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন৷ হংকং এ চলমান প্রতিবাদের আবহাওয়ায় কেন এই মহড়া?
ছবি: Reuters/T. Peter
প্রতিবাদের পরিবেশ
গত ১০ সপ্তাহ ধরে হংকং এ চলছে সরকারবিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ৷ ১৯৯৭ সালের পর থেকে হংকঙে গণতন্ত্রের প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে বর্তমানের এই বিক্ষোভ৷ প্রথমে প্রত্যর্পণ চুক্তিতে বদলের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হলেও পরে তা হংকং এ সার্বিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে পরিণত হয়৷ গণতন্ত্রের দাবিতে পথে নামা জনতা ইতিমধ্যে স্তব্ধ করেছে হংকংগামী বিমান চলাচলও৷
ছবি: picture-alliance/AP/V. Thian
অপেক্ষায় ট্যাঙ্কার
চীনের ‘পিপলস আর্মড পুলিশ'এর শতাধিক আধাসামরিক ট্যাঙ্ক ও ট্রাকসহ কয়েকশ সামরিক সদস্য বর্তমানে সীমান্তবর্তী শহর শেনঝেনে রয়েছেন৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এর সাথে রয়েছে দু'টি জলকামানও৷
ছবি: Reuters/T. Peter
সামরিক অভিযান?
বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে হংকঙে চীনের সামরিক অভিযানের আশঙ্কার কথা৷ কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতামত, এমনটা হবে না৷ গোটা বিষয়টা আসলেই স্রেফ মহড়া৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
কেন নয় সামরিক অভিযান?
গত চার দশক ধরে চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পেছনে বড় অবদান রয়েছে হংকঙের, বলছেন ডয়চে ভেলের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ক্লিফর্ড কুনান৷ তাঁর মতে, অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ চীনে কিছুটা হলেও ধুঁকছে৷ এঅবস্থায় হংকং থেকে প্রাপ্য আর্থিক স্বস্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে চায়না চীন৷ তাই আপাতত সীমান্তেই অবস্থান করছে চীনা সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuters/T. Peter
আন্তর্জাতিক চাপ?
হংকং চীনের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও চীনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়৷ চীনা বাজারে লগ্নি করতে চাওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থারা বেইজিং এর কঠোর হংকং-নীতির ফলে বেঁকে বসতে পারে বলে মতামত কুনানের৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
সামরিক মহড়ায় কী প্রাপ্তি?
বিক্ষোভ সংযত করতে বেইজিং জানিয়েছে যে, এই প্রতিবাদকে তারা দেখছে প্রায় সন্ত্রাসবাদের সমতুল্য হিসাবে৷ এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবাদকারীদের চাপে রাখতে ও কিছুটা ভয় দেখাতেই এই মহড়ার আয়োজন, মনে করেন নানইয়াং ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজির সামরিক বিশেষজ্ঞ জেমস চার৷