ইস্টার সানডেতে কয়েকটি গির্জা সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেয়ার কথা বলছে৷ বলছে, এটা তাদের অধিকার৷ অথচ করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে জমায়েত না করার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আগেই সাবধান করে দিয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
আগামী পরশু ইস্টার সানডে৷ সাধারণত এদিন চার্চগুলোতে বড় করে প্রার্থনা ও সেবার আয়োজন করা হয়৷ কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন৷ নতুন করোনা ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে যুক্তরাষ্ট্রসহ ভুগছে পুরো বিশ্ব৷ এ অবস্থায় প্রায় সব দেশেই একজায়গায় বেশি লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ বন্ধ করা হয়েছে গির্জা, মসজিদ, সিনাগগ, মন্দিরসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে বড় জমায়েত৷ ইস্টার সানডেতে পৃথিবীর বেশিরভাগ চার্চই সেই নির্দেশ মান্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্রেও অধিকাংশ মানুষ ঘরে বসেই উদযাপন করবেন এই ধর্মীয় উৎসবটি৷ কিন্তু সে দেশের কয়েকটি গির্জা বেঁকে বসেছে৷ তারা বলছে, গির্জা খুলে মানুষকে ঢুকতে দেয়া তাদের অধিকার৷
‘‘শয়তান ও একটি ভাইরাস আমাদের থামাতে পারবে না,’’ লুজিয়ানার বাটন রুজের কাছে একটি চার্চের যাজক রেভারেন্ড টনি স্পেল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা বলেন৷ তিনি আশা করছেন রোববার দুই হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হবেন চার্চে৷
‘‘ইশ্বর যে কোন দুর্যোগ ও অসুখ থেকে আমাদের বাঁচাবেন,’’ স্পেল বলেন৷ ‘‘আমরা ভয় পাই না৷ মার্কিন ভূখণ্ডে যিশুবিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে ইশ্বর আমাদের আদেশ করেছেন৷ আমরা যিশুর এ আহ্বান ছড়িয়ে দেবো৷’’
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষ৷ মারা গেছেন ১৪ হাজার সাতশ'রও বেশি৷ কর্তৃপক্ষ আরো খারাপ অবস্থার আশঙ্কা করছে৷ এ অবস্থায় ইস্টারে প্রধান ক্যাথলিক ও প্রটেস্ট্যান্ট চার্চগুলো অনলাইনে প্রার্থনা ও সেবার আয়োজন করবে৷ এমনকি যেসব সংগঠন ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করে, তারাও এ সময় কোনো প্রতিবাদ করছে না এই যুক্তিতে যে, শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বিধিনিষেধ জারি হয়েছে সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের ওপর৷ মানুষের নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে তারা৷
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য ইডাহোতে আমন বান্ডি নামের স্থানীয় এক নেতা কয়েকশ' মানুষ নিয়ে ইস্টার পালনের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো৷ অন্যদিকে, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লোদি শহরে লকডাউন ঘোষণার পর একটি এভানজেলিকাল ক্রস কালচার সেন্টারের তালা বদলে তা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ এরপরও এর যাজক জন ডানকান তার ৮০ জন অনুসারীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন গেল রোববার৷ যেহেতু ইস্টার সানডেতেও চার্চটি তালাবদ্ধ থাকবে, তাই তিনি অনুসারীদের সববেত হবার জন্য বিকল্প জায়গার ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ চার্চটির অ্যাটর্নি এমনকি শহর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন৷
‘‘একটা ভাইরাস আমাদের অধিকার হরণ করবে তা আমরা মানি না,’’ বলেন তিনি৷ আরো বলেন, ‘‘আমরা নরকের দরজার বিপরীতে দাঁড়িয়ে ইশ্বরকে স্মরণ করবো৷’’
জেডএ/এসিবি (রয়টার্স)
মসজিদ এখন যেমন
করোনা প্রতিরোধে মসজিদ, মন্দিরসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনা নিষিদ্ধ করার পর বদলে গেছে বাংলাদেশের চিত্র৷ মসজিদে আজান হয় ঠিকই, কিন্তু নেই মুসল্লি৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
দরজায় তালা
ঢাকার অধিকাংশ মসজিদের দরজায় এখন তালা ঝুলছে৷ করোনা প্রতিরোধে গত সোমবার মসজিদ, মন্দিরসহ উপাসনালয়ে প্রার্থনার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার৷ তবে নিয়মিত আজান দেয়া হচ্ছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
নোটিশ
অনেক মসজিদের দরজায় সরকারি নির্দেশনাটি টাঙিয়ে রাখা হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
কিছু ওজুখানাও বন্ধ
করোনা আতঙ্কে মসজিদের কিছু ওজুখানাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পাঁচজনও নেই
সরকারি নির্দেশনায় প্রতি ওয়াক্তের নামাজে ইমাম, মুয়াজ্জিন আর খাদেমসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন উপস্থিত থাকতে পারবে বলে জানানো হয়৷ তবে মঙ্গলবার রাতে শুক্রাবাদের একটি মসজিদে এশার নামাজের সময় তোলা এই ছবিতে মাত্র দুজনকে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
সতর্ক ব্যবস্থা
বুধবার ধানমন্ডির এক মসজিদে জোহরের নামাজের সময় এই ছবিটি তোলা৷ দরজা দিয়ে শুধু ইমাম আর মুয়াজ্জিনকে ঢুকতে দেয়া হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
কাকরাইল মসজিদ
তাবলিগ জামাতের প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ৷ সরকারি নির্দেশনার পর এই মসজিদের দরজাও এখন বন্ধ৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
পুলিশি প্রহরা
সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়ন যেন সম্ভব হয় তাই কাকরাইল মসজিদের গেটে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
তবে আছেন বিদেশিরা
বিদেশ থেকে আসা তাবলিগের প্রায় ৫০০ সদস্য এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন মসজিদে কোয়ারান্টিনে আছেন৷ তাদের বড় একটি অংশ আছেন কাকরাইল মসজিদে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
অন্যরকম শবে বরাত
বৃহস্পতিবার শবে বরাতের রাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের বাইরে কোনো মুসল্লিকে দেখা যায়নি৷
তবে আরো দু-একজন মুসল্লিও ছিলেন৷ তারা আলাদাভাবে নামাজ আদায় করেন৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
জুমার নামাজ
বায়তুল মোকাররমে আগে থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয় যেন জুমার নামাজে ভিড় না হয়৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
জুমার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জন
জুমার নামাজে সর্বোচ্চ ১০ জনের নামাজ পড়ার অনুমতি আছে৷ সেই নিয়মও মানা হয়েছে৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
আলাদা নামাজ
মসজিদে ঢোকার মুখে এত জুতা, স্যান্ডেল বলে দিচ্ছে ভেতরে নিয়মের চেয়ে বেশি লোক ঢুকেছে৷ তবে মসজিদে ঢুকে দেখা যায় তাঁরা নিরাপদ দূরত্বে থেকে আলাদা হয়ে নামাজ পড়ছেন৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
মসজিদের বাইরে নামাজ
কেউ কেউ মসজিদের বাইরে দেয়ালের পাশে নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করেন৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
কান্না
মসজিদের বাইরে দাঁড়িয়ে নামাজের সময় কেঁদে ফেলেন এই তরুণ৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
বাসায় নামাজ
সরকারে আহবান মেনে মুসল্লিরা এখন বাসায় একাকি বা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে নামাজ আদায় করছেন৷
ছবি: DW/H. Ur Rashid Swapan
গত সপ্তাহের চিত্র
এই ছবিটি গত সপ্তাহের৷ জুমার নামাজের সময় মসজিদ ছাড়িয়ে রাস্তায়ও নামাজ আদায় করেছিলেন মুসল্লিরা৷