যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগ যে নজরদারি করছে তা সরকার জানতো না – এমন দাবি আশি ভাগ জার্মানই বিশ্বাস করেন না৷ বিষয়টিতে কঠোর হওয়ার চাপ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে ম্যার্কেল সরকারের ওপর৷ আসন্ন নির্বাচনে ইস্যু হয়ে দাঁড়াচ্ছে এটি৷
বিজ্ঞাপন
সেপ্টেম্বরেই জার্মানির সাধারণ নির্বাচন৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জন্য টানা তৃতীয়বার চ্যান্সেলর হওয়ার সুযোগ৷ নানা সময়ে অনেক চড়াই-উৎরাই লৌহমানবীর দৃঢ়তায় পেরিয়ে এলেও ক্রিস্টিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর শীর্ষ নেত্রী এ মুহূর্তে কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায়৷ গত মাসে এডওয়ার্ড স্নোডেন বেশ কিছু গোপন তথ্য ফাঁস করার মাধ্যমে সারা বিশ্বকে জানিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা গুগল, ফেসবুক, স্কাইপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরো কিছু কোম্পানির সাইট ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে জেনে নিচ্ছে৷ পরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারও তা স্বীকার করেছে৷
ওবামার প্রতি জার্মানদের মুগ্ধতা
২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বারাক ওবামার প্রতি জার্মানরা বেশ মুগ্ধ ছিল৷ কিন্তু এখনও কী সেটা আছে?
ছবি: AP
অনুমোদন দেননি আঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার জন্য জার্মানিতে এসেছিলেন বারাক ওবামা৷ তিনি বার্লিনের ঐতিহাসিক ‘ব্রান্ডেনবুর্গ গেট’-এর সামনে বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সে অনুমতি দেননি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তাঁর যুক্তি ছিল, বিদেশি নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হতে দেয়া যাবে না এই নিদর্শনকে৷ পরে অবশ্য বার্লিনের আরেক জায়গায় বক্তৃতা দেন ওবামা৷ প্রায় দুই লক্ষ মানুষ তাঁর কথা শোনেন৷
ছবি: AP
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বার্লিন সফর
২০০৮ সালে প্রচারণার সময় প্রচুর জার্মানের সমর্থন পেলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামা প্রথমবারের মতো রাজধানী বার্লিনে আসছেন আগামী মঙ্গলবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘ওবামা ফিঙ্গার্স’
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জার্মানির একটি ফ্রোজেন ফুড কোম্পানি ‘ওবামা ফিঙ্গার্স’ নামে ফ্রাইড চিকেন বাজারে ছেড়েছিল৷ সঙ্গে ছিল মজাদার সস৷
ছবি: AP
ওবামার কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ
২০০৮ সালের এই ছবিতে বার্লিনের মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইটের সঙ্গে ওবামাকে দেখা যাচ্ছে৷ ওবামার নির্বাচনি প্রচারণার সফলতা দেখে জার্মান রাজনীতিবিদরা ওবামার কাছ থেকে অনেক কৌশলই গ্রহণ করেছেন৷ যেমন অনলাইনে উপস্থিতি বাড়ানো, তৃণমূলকে শক্তিশালী করা, ক্যাম্পেইন ব্লগ চালু, অনলাইনে চাঁদা সংগ্রহ করা ইত্যাদি৷
ছবি: AP
২০০৯ সালে একবার
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এবারই প্রথম সরকারি সফরে বার্লিনে আসছেন ওবামা৷ তবে এর আগে ২০০৯ সালে জার্মানিতে এসেছিলেন তিনি৷ সেবার মিশর থেকে ফ্রান্স যাওয়ার পথে ড্রেসডেন শহরে ক্ষণিকের যাত্রা বিরতি করেছিলেন ওবামা৷
ছবি: Getty Images
চিত্রকর্মে ওবামা
গত এপ্রিলে কোলন শহরে অনুষ্ঠিত একটি মেলার ছবি এটি৷ চিত্রশিল্পী ফিক মুনোৎসের আঁকা এই ছবিটির নাম ‘ওবামা’৷
ছবি: Reuters
খেলনায় ওবামা
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির ন্যুরেমব্যার্গ শহরে আন্তর্জাতিক খেলনা মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানেও ছিল ‘ওবাম্যানিয়া’-র চিহ্ন৷
ছবি: AP
ম্যার্কেলের যুক্তরাষ্ট্র সফর
২০১১ সালের জুন মাসে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক অ্যাওয়ার্ড ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ দেয়া হয়৷ এরপর ম্যার্কেলের সম্মানে সরকারি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তখন থেকে এই দুই বিশ্বনেতা একে অপরকে তাদের প্রথম নামে ডাকেন – অ্যাঙ্গেলা ও বারাক৷
ছবি: AP
8 ছবি1 | 8
ওবামা প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয় ‘প্রিজম' নামের একটি কর্মসূচীর মাধ্যমে গোয়েন্দারা অনেক দিন ধরেই এ তৎপরতা চালিয়ে আসছে৷ অথচ যুক্তরাষ্ট্র সফর করে এসে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স-পেটার ফ্রিডরিশ জার্মানির গোয়েন্দা বিষয়ক গোপন সংসদীয় কমিটিকে আবারও বললেন এ সব বিষয়ে জার্মানি আগে কিছু জানতোনা৷ কমিটির সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে যে সব কথা বলেছেন সেগুলো বরং বিরোধীদের দিয়েছে আরো তোপ দাগানোর সুযোগ৷
বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সংসদ সদস্য টোমাস অপারমান কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তীব্র সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন এসপিডির৷ যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে সরকারের আরো কঠোর হওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি৷ এদিকে কোলনে দেয়া এক ভাষণে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল বলেছেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রকে আমি বলতে চাই, জার্মানির মাটিতে জার্মান আইনই কার্যকর৷ ভবিষ্যতে আমরা এ আইনই প্রয়োগ করবো৷'' না করে উপায়ও নেই৷ এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের করিতকর্মা গোয়েন্দাদের তৎপরতার কথা জার্মানি জানতো না এটা শতকরা আশি ভাগ জার্মানই বিশ্বাস করেননা৷