ব্রিকস শীর্ষবৈঠকের সমাপ্তি ভাষণে পুটিন বললেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে তিনি প্রস্তুত।
বিজ্ঞাপন
তবে পুটিন জানিয়েছেন, পুরোটাই নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের উপর। যদি তারা সুসম্পর্ক চায়, তাহলেই একমাত্র তা সম্ভব।
পুটিনের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর রাশিয়া ও অ্যামেরিকার সম্পর্ক কী হবে তা নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের উপর। তারা যদি সম্পর্ক ভালো করতে চায়, তাহলে তিনিও সুসম্পর্ক স্থাপন করবেন। যদি যুক্তরাষ্ট্র না চায়, তাহলে তা হবে না।
সাংবাদিক সম্মেলনে পুটিনকে প্রশ্ন করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাবেন। এনিয়ে পুটিন কতটা আশাবাদী? পুটিন বলেন, ''আমি যা শুনেছি, ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেন সংঘাতে ইতি টানার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করবেন।'' পুটিনের মতে, ''এর থেকে বোঝা যাচ্ছে, ট্রাম্প একান্তভাবে এটা চাইছেন। এই ধরনের বিবৃতিকে আমরা সবসময় স্বাগত জানাই।''
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি আন্তর্জাতিক জোট
পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যেতে দেশগুলো বিভিন্ন জোটে যুক্ত হয়৷ ছবিঘরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক জোটের কথা থাকছে৷
ছবি: Picture-Alliance/dpa/D. Solanki
আফ্রিকান ইউনিয়ন
আফ্রিকার ৫৫টি দেশের জোট এটি৷ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৭.৯৩ শতাংশ মানুষ এসব দেশে বাস করেন৷ বার্ষিক অর্থনৈতিক আউটপুট ২.৯৩৮ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বিশ্ব অর্থনীতির ২.৯ শতাংশ৷
ছবি: AFP/Getty Images
আরব লিগ
উত্তর আফ্রিকা ও আরব উপত্যকার ২২টি দেশ এর সদস্য৷ এই দেশগুলোতে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫.৮ শতাংশ মানুষ বাস করে৷
ছবি: Tunisian Presidency/REUTERS
ব্রিকস
বর্তমান সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও সাউথ আফ্রিকা৷ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪১.১৩ শতাংশ মানুষ এই পাঁচ দেশে বাস করেন৷ বৈশ্বিক জিডিপির ২৫.৭৭ শতাংশ উৎপাদন করে এই দেশগুলো৷ সম্প্রতি আরও ছয়টি দেশকে ব্রিকসে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়৷ এগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
ছবি: Sergei Bobylev/dpa/picture alliance
কমনওয়েলথ অফ নেশন্স
সাবেক ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা ৫২টি দেশ এর সদস্য৷ ১৯৩১ সালে এটি গঠন করা হয়েছিল৷ ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ এর সদস্য৷
ছবি: Aleksey Butenkov/Zoonar/picture alliance
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপের ২৭টি দেশের জোট৷ এসব দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫.৬ শতাংশ৷
ছবি: Kenzo Tribouillard/AFP/Getty Images
জি-টোয়েন্টি
বিশ্বের ১৯টি নেতৃস্থানীয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল দেশের এই জোট ১৯৯৯ সালে গঠিত হয়৷ ২০তম সদস্য হিসেবে এই জোটে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও৷ এই জোটের দেশগুলোর জনসংখ্যা ৪৬৯ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫৯.০৪ শতাংশ৷
ছবি: Aamir Ansari/DW
জি-সেভেন
১৯৯৮ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এটি জি-এইট নামে পরিচিত ছিল৷ ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখলের পর দেশটিকে এই জোট থেকে বহিষ্কার করা হয়৷ বর্তমানে জি-সেভেনের দেশগুলো হচ্ছে ক্যানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র৷ শিল্পোন্নত এই সাত দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৯২ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১১.৫৫ শতাংশ৷
ছবি: Frank Robichon via REUTERS
উপসাগর সহযোগী সংস্থা বা জিসিসি
পশ্চিম এশিয়ার ছয় দেশের জোট জিসিসি৷ এগুলো হলো বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
ছবি: Bandar Aljaloud/Saudi Royal Palace/AP/picture alliance
ন্যাটো
৩১ দেশের সামরিক জোট ‘নর্থ অ্যাটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন’ বা ন্যাটো৷ ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোর সদরদপ্তর ব্রাসেলসে৷ কোনো এক সদস্য দেশের উপর হামলা হলে বাকি সব সদস্যদেশ তার সহায়তায় এগিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে ন্যাটো চুক্তির ৫ নম্বর ধারাতে৷
ছবি: Stefan Puchner/dpa/picture alliance
জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, ন্যাম
১৯৬১ সালে ব্রেলগ্রেডে এটি গঠিত হয়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পুঁজিবাদী দেশসমূহের জোট ন্যাটো এবং সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহের জোট ওয়ারশ থেকে নিরপেক্ষ থাকতে এটি গঠন করা হয়েছিল৷ সদস্য সংখ্যা ১২০৷ বেশিরভাগ সদস্য দেশ আফ্রিকা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ল্যাটিন অ্যামেরিকার অংশ৷ বাংলাদেশও এর সদস্য৷
ছবি: Darko Vojinovic/AP/picture alliance
ওইসিডি
‘অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা’ বা ওইসিডির সদস্যসংখ্যা ৩৬৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা ও ২০টি ইউরোপীয় দেশ ওইইসি (ইউরোপীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা) নামে একটি জোট গঠন করেছিল৷ এটিই পরে ওইসিডিতে পরিণত হলে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, সাউথ কোরিয়ার মতো দেশ এতে যোগ দেয়৷
ছবি: Francois Mori/AP Photo/picture alliance
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা, ওআইসি
যেসব দেশে ইসলাম ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে এমন ৫৬টি দেশের জোট এটি৷ ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশ এর সদস্য৷ ওআইসি দেশগুলোর জনসংখ্যা প্রায় ২০০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৪.৯২ শতাংশ৷
ছবি: Getty Images/AFP/O. Kose
জাতিসংঘ
১৯৩ দেশের জোট এটি৷ ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশ এর সদস্য৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Roberts
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, ডাব্লিউটিও
এটি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা বিশ্বের বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি প্রবর্তন এবং সদস্য রাষ্ট্র বা পক্ষসমূহের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে সাহায্য করে৷ ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ১৬৩৷ বাংলাদেশ শুরু থেকেই এই সংস্থার সদস্য৷
ছবি: Xu Jinquan/Photoshot/picture-alliance
বিমসটেক
পুরো নাম ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্ট্রি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’ অর্থাৎ বহুপক্ষীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বঙ্গোপসাগরীয় উদ্যোগ৷ ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এক বৈঠকে এই জোট সৃষ্টি করা হয়৷ পরে নেপাল, মিয়ানমার ও ভুটান এতে যোগ দেয়৷ ২০২২ সালের মার্চে সবশেষ শীর্ষ সম্মেলন হয়েছে৷ সচিবালয় ঢাকায় অবস্থিত৷
ছবি: Picture-Alliance/dpa/D. Solanki
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা, সার্ক
১৯৮৫ সালে গঠিত সার্কের বর্তমান সদস্য সংখ্যা আট৷ এগুলো হলো আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা৷ এই জোটের সবশেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে, নেপালে৷ ২০১৬ সালে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের উরিতে হামলার পর ঐ বছর পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছিল৷
ছবি: Getty Images/N. Shrestha
ডি-এইট
ডেভেলপিং এইট বা উন্নয়নশীল আট দেশ নিয়ে গঠিত এই জোট ১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে৷ তুরস্কের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেচমেতিন এরবাকান এটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ এটি একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোট৷ বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান এবং তুরস্ক এই জোটের সদস্য৷
ছবি: Pakistan Embassy Ankara
17 ছবি1 | 17
গুতেরেসের রাশিয়া সফর নিয়ে বিতর্ক
জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গুতেরেস রাশিয়া গিয়েছিলেন। তিনি পুটিনের সঙ্গেও দেখা করেছেন। দুই বছরের মধ্যে এই প্রথমবার দুজনের সাক্ষাৎ হলো।
গুতেরেস পুটিনকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে এবং জাতিসংঘের চার্টার মেনে শান্তি ফেরা উচিত।
জাতিসংঘের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গুতেরেস আবার বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন জাতিসংঘের চার্টার ও আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী।
গুতেরেসের এই সফরে ইউক্রেন অত্যন্ত অখুশি। সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গুতেরেস ভুল করেছেন। এর ফলে শান্তি প্রক্রিয়া এগোবে না।
রাশিয়ার বিরোধী নেত্রী এবং অ্যালেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এই সফরের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধের তৃতীয় বছরে গুতেরেস একজন হত্যাকারীর সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন।