সম্প্রতি নিউইয়র্কের একটি সিনেমা হলে পাঁচটি বাংলা চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে৷ সেগুলোতে দর্শক উপস্থিতি দেখে ঐ হল কর্তৃপক্ষ সহ অন্য হলের মালিকরা ভবিষ্যতে আরও বাংলা ছবি দেখাতে রাজি হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেল ‘চ্যানেল আই' এর উত্তর অ্যামেরিকা অঞ্চলের প্রধান কর্মকর্তা আশরাফুল আলম খোকন জানিয়েছেন এই তথ্য৷ মূলত তাঁর উদ্যোগেই নিউইয়র্কের হলে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম উপস্থিতি ঘটেছে৷
ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে খোকন জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হলগুলোতে ইংরেজি ছবি ছাড়াও প্রচুর হিন্দি ছবিও দেখানো হয়৷ বাঙালিরা হলে গিয়ে সেগুলো দেখে৷ ‘‘তখন আমি চিন্তা করলাম বাংলাদেশেওতো এখন অনেক ভালো ভালো চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে৷ বাঙালিরা হুমড়ি খেয়ে সেই ছবিগুলোর সিডি, ডিভিডি কিনছে৷ তখন আমার মনে হলো, তাহলে তো সিনেমা হলেও ছবি চলতে পারে৷''
যুক্তরাষ্ট্রের হলে বাংলা ছবি
খোকন বলেন, বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন হল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে প্রথমে তারা রাজি হয়নি৷ এভাবে দুই বছর চেষ্টা করার পর একজন হল মালিক বলেন, যদি আগেই হল ভাড়া দিয়ে দেয়া হয় তাহলে তিনি ছবি প্রদর্শন করতে রাজি আছেন৷
ফ্রাংকফুর্টে বৈশাখি আড্ডা
কাগজে কলমে বাংলা নববর্ষ ছিল ১৪ই এপ্রিল৷ কিন্তু প্রবাস জীবনে একেবারে নির্দিষ্ট দিনেই উৎসব সম্ভব হয়ে ওঠেনা৷ ফ্রাংকফুর্টে তাই একটু ভিন্ন আঙ্গিকে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হলো ২৭শে এপ্রিল৷
ছবি: DW/A. Islam
নীরবতা পালন
ফ্রাংকফুর্টের সালবাউ গ্রিসহাইমকে মনে হচ্ছিল এক টুকরো বাংলাদেশ৷ বাংলা নতুন বছর উদযাপনে গত শনিবার (২৭.০৪.১৩) সেখানে হাজির হন হাজারখানেক মানুষ৷ তাদের চোখে ছিল শোকের ছায়া৷ সাভারে ভবন ধসে হতাহতের খবর জানতেন সবাই৷ বর্ষবরণের অনুষ্ঠান তাই শুরু হয় এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে৷
ছবি: DW/A. Islam
দেশ গুণিজন পদক
এবছর দেশ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে গুণিজন পদক দেওয়া হয় জনপ্রিয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগরকে৷ ইমপ্রেস টেলিফিল্মের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সম্মানসূচক শাল জড়িয়ে দেন দেশ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর দুই সদস্য শিশিরার্দ্র মামুন এবং মিঠু কবির৷
ছবি: DW/A. Islam
মনের কথা
ব্যক্তিজীবনে খানিকটা চাপা স্বভাবের মানুষ ফরিদুর রেজা সাগর৷ ক্যামেরার সামনে তাঁর উপস্থিতি বেশ কমই চোখে পড়ে৷ এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের কর্মময় জীবন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের আগ্রহ অনেক৷ ফ্রাংকফুর্টে সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজার বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে নিজের সম্পর্কে বলেন ফরিদুর রেজা সাগর৷
ছবি: DW/A. Islam
উচ্ছ্বসিত আফজাল
গত বছর দেশ গুণিজন পদক পেয়েছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আফজাল হোসেন৷ এ বছর ফরিদুর রেজা সাগর এই পদক অর্জন করায় উচ্ছ্বসিত আফজাল৷ ফরিদুর রেজা সাগরের উপর একটি তথ্যচিত্রও নির্মাণ করেছেন তিনি৷ তবে কারিগরী জটিলতার কারণে অনুষ্ঠানে সেটি প্রদর্শন সম্ভব হয়নি৷
ছবি: DW/A. Islam
মঞ্চে অতিথিরা
ফ্রাংকফুটে বৈশাখি আড্ডায় বাংলাদেশ থেকে হাজির হন ফরিদুর রেজা সাগর, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, আফজাল হোসেন, সামিনা চৌধুরী, এস আই টুটুল, গোলাম মোর্তোজা এবং আমীরুল ইসলাম৷ মঞ্চে তাদের কয়েকজনের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন শিশিরার্দ্র মামুন৷
ছবি: DW/A. Islam
সঞ্চালক গোলাম মোর্তোজা
বৈশাখি আড্ডায় সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা৷ দেশ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর আজীবন সদস্য তিনি৷ ছবিতে রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা’র সঙ্গে মোর্তোজা৷
ছবি: DW/A. Islam
দর্শকদের মন জয় করলেন টুটুল
বৈশাখি আড্ডার এক পর্যায়ে মঞ্চ দখল করে নেন কণ্ঠশিল্পী এস আই টুটুল৷ ভালবাসা মানে, নিরবধি, ইচ্ছে ঘুড়ি, রাতে নাইরে ঘুম, মন, শূন্য মহা শূন্যসহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গানের এই শিল্পী ফ্রাংকফুর্টে দর্শকদের সুরের তালে মাতিয়ে তোলেন৷
ছবি: DW/A. Islam
ক্লান্ত সামিনা
এস আই টুটুলের সঙ্গে মঞ্চে মাঝে মাঝে সঙ্গী হন সামিনা চৌধুরী৷ দীর্ঘ বিদেশ সফরে ক্লান্ত ছিলেন সামিনা৷ তবে তাঁর সুরে সেই ক্লান্তি ধরা পড়েনি৷ বরং দর্শকদের অনুরোধ রক্ষা করতে সচেষ্টা ছিলেন জনপ্রিয় এই শিল্পী৷
ছবি: DW/A. Islam
বৈশাখি খাবার
বৈশাখি আড্ডা অথচ বাংলা খাবারের আয়োজন থাকবে না – তা কি হয়? সালবাউ গ্রিসহাইমের এক কোনায় তাই বাঙালি খাবারের আয়োজন নিয়ে বসেছিলেন এই যুবক৷ পেঁয়াজু, শিঙাড়া, পুরি, বিরিয়ানি সবই ছিল তাঁর ছোট্ট দোকানে৷
ছবি: DW/A. Islam
ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অর্থ সহায়তা
বৈশাখি আড্ডা থেকে সাভারে ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়৷ এই অনুষ্ঠানে লটারির মাধ্যমে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ চ্যানেল আইয়ের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে সাভার ভবন ধসে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে৷ আয়োজকরা জানিয়েছেন এই তথ্য৷
ছবি: imago/Xinhua
10 ছবি1 | 10
এই অবস্থায় ‘রুহানা ফুডস' এর সহযোগিতায় চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ তাদের প্রযোজিত পাঁচটি ছবি নিয়ে ঐ সিনেমা হলে 'রুহানা-চ্যানেল আই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল' নামের একটি উৎসবের আয়োজন করে৷ ছবিগুলো হচ্ছে ঘেটুপুত্র কমলা, মনের মানুষ, গেরিলা, থার্ড পার্সন সিঙ্গুলার নাম্বার ও লালটিপ৷
তিনব্যাপী এই উৎসবে বাঙালি দর্শকের উপস্থিতি দেখে হল কর্তৃপক্ষ ভবিষ্যতে বাংলা ছবি মুক্তি দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানান খোকন৷ তবে শর্ত একটাই, ছবিগুলো নতুন হতে হবে৷ আগে থেকে সিডি বা ডিভিডি থাকলে হবে না৷
খোকন বলেন শুধু একটি হল কর্তৃপক্ষই নয়, অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পাশের আরেকটি হলও বাংলা ছবির ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে৷ এই সফলতার পেছনে বাঙালি দর্শকদের সহযোগিতার কথাও কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেন তিনি৷
খোকন বলছেন, চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হয়েছে৷ তারা তাদের আগামী ছবিটি একইসঙ্গে ঢাকা ও যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷