যুক্তরাষ্ট্রে তুষার ঝড়, রেকর্ড ছাড়াবে ঠান্ডা বাতাসের তোড়
৫ জানুয়ারি ২০১৮
ইস্ট কোস্টের বাসিন্দারা রীতিমতো যেন ডিপ ফ্রিজে বসে আছেন৷ প্রচণ্ড তুষারপাত ও ঝড়ের পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যাও হয়েছে৷ মারা গেছেন সাতজন৷
বিজ্ঞাপন
আবহাওয়া পূর্বাভাষে বলা হচ্ছে, পুরো সপ্তাহান্ত জুড়েই এমন অবস্থা থাকতে পারে৷ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এপিকে ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের আবহাওয়াবিদ ব্রায়ান হার্লি বলেন, ‘‘শুধু ঠান্ডা নয়, কঠিন ঠান্ডা৷''
তিনি জানান যে, আর্কটিকে বিস্ফোরণের কারণে ফিলি থেকে বিয়েনটাউন পর্যন্ত তাপমাত্রা মাইনাস ১৫ ডিগ্রিতে নেমে আসতে পারে৷ মেরিল্যান্ড ও ভার্জিনিয়া রাজ্যের বাসিন্দাদেরও মাইনাস ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ঠান্ডা হজম করতে হতে পারে৷ এছাড়া উত্তর-পূর্বের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে তাপমাত্রা মাইনাস ১০ ডিগ্রির নিচে থাকবে৷
মেক্সিকো উপসাগরে দু'দিন আগে ঝড়টি শুরু হয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা প্যানহ্যান্ডল উপকূলে প্রথম আঘাত হানে৷
বৃহস্পতিবার নাগাদ এটি পুরো পূর্ব উপকূলে তাণ্ডব চালাতে শুরু করে৷ বাতাসের গতি তখন ছিল ঘন্টায় ৭০ মাইল৷ কোথাও কোথাও ৪৬ সেন্টিমিটার পুরু বরফের স্তর পড়ে গেছে৷
নিউ ইংল্যান্ডে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বরফ পানিতে ভেসে গেছে অনেক এলাকা৷ বৈরি আবহাওয়ার কারণে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে৷
এর মধ্যে নর্থ ও সাউথ ক্যারোলাইনায় বরফ পড়া রাস্তায় গাড়ির চাকা পিছলে চারজন মারা যান৷
ফিলাডেলফিয়ায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রেনের গায়ে আঘাত করে৷ এতে গাড়ির এক আরোহী মারা যান৷
আবহাওয়াবিদ হার্লি বলছেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে৷
কার্ল এরিকসন নামের আরেক আবহাওয়াবিদ বলেন যে, কোথাও কোথাও মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে৷
রোববার গড় তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি হবার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
বাংলাদেশে শৈত্য প্রবাহ
পৌষের দ্বিতীয়ার্ধে এসে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ৷ এ কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ ৷ শৈত্যপ্রবাহের কিছু চিত্র দেখুন এই ছবিঘরে৷
ছবি: bdnews24.com
দিনভর কুয়াশা
শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় দিনভর ঢাকা ছিল ঢাকার বেশিরভাগ এলাকা৷ ঘন কুয়াশায় নৌ চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেছে বুড়িগঙ্গাসহ বিভিন্ন নদীতে৷
ছবি: bdnews24.com
দেরিতে সূর্যোদয়
ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকাবাসী বৃহস্পতিবার সূর্যের মুখ দেখেছেন বেশ দেরিতে৷ দেশের অনেক জায়গায় আবার সূর্যের মুখই দেখা যায়নি৷
ছবি: bdnews24.com
গরীবের দুর্ভোগ
ঢাকায় হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়া আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষদের৷
ছবি: bdnews24.com
বেড়েছে রোগবালাই
তীব্র ঠাণ্ডায় বাংলাদেশের কোথাও কোথাও কোল্ড ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে দেড় বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যুও হয়েছে ডায়রিয়ায়৷
ছবি: bdnews24.com
সারা দেশে তাপমাত্রা
বৃহস্পতিবার ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এছাড়া এদিন চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৫, , রংপুরে ৯, দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৯, শ্রীমঙ্গলে ৮ দশমিক ৬, টাঙ্গাইলে ৮ দশমিক ৫, গোপালগঞ্জে ৮ দশমিক ৪, ময়মনসিংহে ৮ এবং যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
ছবি: bdnews24.com
চলতে পারে
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় বাংলাদেশে শীত বেড়েছে৷ আর এই শৈত্য প্রবাহ চলতে পারে আরও দুই-এক দিন৷ আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে জানুয়ারিতে আরেকটি একটি মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তীব্র (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ২-৩টি মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি শৈত্য প্রবাহের কথা বলা হয়েছে৷
ছবি: bdnews24.com
সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়, সাড়ে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ এবারের শীত মৌসুমে এটাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা৷ আর এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বাগেরহাটের মোংলায়, ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷