1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
অভিবাসনযুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে ঢোকা ভারতীয়দের ফেরাচ্ছে ভারত সরকার

২৮ জানুয়ারি ২০২৫

বেআইনি অভিবাসীদের প্রতি কড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিপ্রেক্ষিতে মোদী সরকারও বেআইনিভাবে থাকা ভারতীয়দের ফেরাচ্ছে।

ওভাল অফিসে ডনাল্ড ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বেআইনি অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরত পাঠাবার কড়া নীতি নিয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: Carlos Barria/REUTERS

২০২৪ সালে জো বাইডেনের আমলেই এক হাজার ৫২৯ জন ভারতীয়কে দেশে ফেরানো হয়েছে। তারা বেআইনিভাবে অ্যামেরিকায় থাকছিলেন। ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর অ্যামেরিকায় বেআইনি অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরানোর ব্যাপারে কড়া নীতি নিয়েছেন।

সম্প্রতি হাতকড়া পরিয়ে ব্রাজিলের বেআইনি অভিবাসীদের সেদেশে পাঠিয়েছে অ্যামেরিকা। কলম্বিয়াতেও সামরিক বিমানে করে বেআইনি অভিবাসীদের পাঠানো হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ভারত জানিয়ে দিয়েছে, যে সব ভারতীয় নাগরিক বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন বা ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও থেকে গেছেন, তাদের দেশে ফেরানো হবে

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, ''আমরা বেআইনি অভিবাসনের বিরুদ্ধে। কারণ, এর সঙ্গে অনেক ধরনের সংগঠিত অপরাধের যোগ থাকে। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্বের যে কোনো দেশে কোনো ভারতীয় যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার থেকে যান বা প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া ঢোকেন, তাহলে আমরা তাদের ফিরিয়ে নেব।''

জয়সওয়াল বলেছেন, ''তবে আমাদের কাছে আগে সব নথিপত্র দিতে হবে, আমরা যাচাই করে দেখবো। তারা যদি ভারতীয় হন, তাহলে আমরা বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাবো। আমরা তাদের ভারতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করবো।''

ট্রাম্পের নির্দেশে বন্ধ অভিবাসন-অ্যাপ

01:55

This browser does not support the video element.

তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কতজন বেআইনি ভারতীয় অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে আছেন, যাদের ফিরিয়ে আনা হবে? জয়সওয়াল বলেছেন, ''এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার সময় এখনো আসেনি।'' 

সম্প্রতি ওয়াশিংটনে গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও বলেছেন, ''যদি কোনো ভারতীয় বেআইনিভাবে অ্যামেরিকায় থাকেন, তাহলে তাদের ফিরিয়ে নেয়াটাই সরকারের নীতি।  সরকার বেআইনি অনুপ্রবেশকে সমর্থন করে না।''

যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে বসবাসরত ভারতীয়ের সংখ্যা

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানাচ্ছে,  ১৮ থেকে ২০ হাজারের মতো ভারতীয়কে প্রথমে ফেরত পাঠানো নিয়ে কথা চলছে। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ১৮ হাজার বেআইনি ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। তাদেরই প্রথমে ফেরত পাঠানো হবে।

তবে এক প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, সরকারি তথ্য অনুসারে, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই ৯০ হাজার ভারতীয় বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছে।

পিউ রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে সাত লাখ ২৫ হাজার বেআইনি ভারতীয় অভিবাসী আছে। বেআইনি অভিবাসীদের সংখ্যার হিসাবে এক নম্বরে মেক্সিকো, তারপরেই আছে এল সালভাদোর, তিন নম্বরে ভারত।

ট্রাম্প যা বলেছেন

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সাংবাদিকদের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি অভিবাসীদের বিষয়টি নিয়েও মোদীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন।  বেআইনি অভিবাসীদের নেয়ার ক্ষেত্রে যেটা ঠিক, প্রধানমন্ত্রী মোদী সেটাই করবেন।

ভারতের মনোভাব নিয়ে

ভারতের বিরুদ্ধে অ্যামেরিকার দীর্ঘদিনের অভিয়োগ হলো, দিল্লি এই বেআইনি অভিবাসীদের নিয়ে কালক্ষেপ করে, তারা সহযোগিতা করে না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তারা এবার কালক্ষেপ না করে বেআইনি পথে ঢোকা ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলছে।

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ভারতের এই সিদ্ধান্তের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে চায় ভারত। নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ট্রাম্প তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বন্ধুকে পাশে পাওয়াটা ভারতের পক্ষে জরুরি।''

শরদ মনে করেন, ''প্রতিবছর ভারত থেকে এইচ১বি ভিসা নিয়ে প্রচুর ভারতীয় অ্যামেরিকায় চাকরি করতে যান। তারা যাতে কোনো অসুবিধায় না পড়েন, সরকার সেটাও নিশ্চিত করতে চায়। এর সঙ্গে আরো একটা কারণ আছে। সেটা হলো, ট্রাম্প অতীতে একাধিকবার পণ্যের উপর মাসুল বসানোর হুমকি দিয়েছেন। চীনের পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি মাসুল বসিয়েছেন। ভারত চায় না, কোনো ভারতীয় পণ্যের উপর ট্রাম্প মাসুল বসান।''

বার্তাসংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ''আমরা চাই ভারতীয়দের প্রতিভা, ভারতীয়দের দক্ষতা বিশ্বে সর্বোচ্চ সুযোগ পাক। একইসঙ্গে আমরা বেআইনিভাবে অভিবাসীদের প্রবেশের কড়া বিরোধিতা করছি।'' 

তবে শরদ এটাও বলেছেন, ''অ্যামেরিকায় আইটি কোম্পানিগুলির মাথায় ভারতীয়রা আছেন। মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ক্ষেত্রে তাদের অবদানও প্রচুর। কিন্তু তারা ভারতে এসে তারা কেন এই কাজটা করেন না? ভারত থেকে ব্রেন ড্রেইন হয়ে যাচ্ছে, আর দেশও তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিভাবানদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটাও ভাবা দরকার।''

জিএইচ/এসজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ