যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় ফেসবুকের নিউজ ট্যাব বন্ধ হচ্ছে
১ মার্চ ২০২৪
মেটা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য ফেসবুকে যে আলাদা ‘নিউজ ট্যাব’ আছে সেটি ভবিষ্যতে আর থাকবে না৷ সংবাদ পড়তে পাঠক ফেসবুকে যাচ্ছে না বলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা৷
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, নিউজ ট্যাবে সংবাদ পরিবেশনের জন্য ঐ দুই দেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে যে চুক্তি আছে সেটি নবায়ন করা হবে না৷
অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের নিউজ ট্যাবে গিয়ে খবর পড়ার হার ৮০ শতাংশের বেশি কমে গেছে বলে মেটা জানিয়েছে৷ ‘‘মানুষ ফেসবুকে সংবাদ ও রাজনৈতিক কনটেন্ট পেতে আসে না,’’ ব্লগ পোস্টে লিখেছে মেটা৷
তবে দুই দেশেই ব্যবহারকারীরা ফেসবুক ফিডে খবর দেখতে পাবেন বলে জানানো হয়েছে৷
এর আগে মেটা গতবছর ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করার ঘোষণা দিয়েছিল৷
মেটা বলছে, নিউজ ট্যাব বন্ধ করার কারণে যে অর্থ ও সম্পদ বেঁচে যাবে সেটা এমন কোনো কাজে ব্যবহার করা হবে যা মানুষ ফেসবুকে দেখতে চায়, যার মধ্যে ‘শর্ট ভিডিও রয়েছে’৷
অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিক্রিয়া
দেশটির কমিউনিকেশন্স মন্ত্রী মিশেল রোল্যান্ড ও অ্যাসিস্টেন্ট ট্রেজারার স্টেফান জোন্স এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, মেটার সিদ্ধান্তের কারণে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম উল্লেখযোগ্য আয় হারাবে৷ ‘‘অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ প্রকাশকেরা তাদের কনটেন্টের জন্য ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য,’’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়৷
সে কারণে সরকারের পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা ঠিক করতে আলোচনা চলছে৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)
ফেসবুক : এক ছাত্রাবাস থেকে সারা বিশ্বে
২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুক যাত্রা শুরু করে৷ বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্ক৷ তবে নানাসময়ে ফেসবুকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগও উঠেছে৷
ছবি: Dado Ruvic/REUTERS
শুরুর কথা
১৯ বছর বয়সি মার্ক সাকারবার্গ ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে তার রুমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করেন৷ ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিন বন্ধুর সঙ্গে মিলে তিনি thefacebook.com চালু করেন৷ উত্তর অ্যামেরিকার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল৷
ছবি: JOSH EDELSON/AFP/Getty Images
প্রথম বিনিয়োগ প্রাপ্তি
পেপল-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা পিটার টিলের কাছ থেকে পাঁচ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছিল সাকারবার্গের কোম্পানি৷ এরপর ২০০৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কোম্পানিটি ফেসবুক-এ পরিণত হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা
২০০৮ সালে মাইস্পেসকে সরিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ ওয়েবসাইটে পরিণত হয় ফেসবুক৷ পরের বছর মোবাইল অ্যাপ চালু হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
টাইম ম্যাগাজিনের স্বীকৃতি
২০১০ সালে টাইম ম্যাগাজিন সাকারবার্গকে ‘পার্সন অফ দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করে৷ ‘আমাদের প্রতিদিনকার জীবনযাপনের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনায়’ জাকারবার্গকে বেছে নেওয়া হয়৷
তরুণদের প্ল্যাটফর্ম হয়ে ওঠা
২০১১ সালে আরব বসন্তের সময় ফেসবুক আরব তরুণদের মতপ্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছিল৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/M. Deghati
ইনস্টাগ্রাম কেনা
২০১২ সালে এক বিলিয়ন ডলার দিয়ে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক৷
ছবি: DAVID H. CALZADA/Zoonar/picture alliance
১০০ কোটি পেরোনো
২০১২ সালের অক্টোবরে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যায়৷
ছবি: AP/dapd
হোয়াটসঅ্যাপ ক্রয়
২০১৪ সালে ১৯ বিলিয়ন ডলার দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় ফেসবুক৷
ছবি: Justin Sullivan/Getty Images
অভিযোগ
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া প্রভাব বিস্তার করেছিল বলে অভিযোগ আছে৷ এই কাজে রাশিয়া ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে বলে অভিযোগ৷
ছবি: Facebook
ফেসবুকের তথ্য চুরি
২০১৮ সালে ব্রিটিশ কনসাল্টিং ফার্ম ‘ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা’ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়৷ মার্কিন কংগ্রেসের মুখোমুখি হয়ে জাকারবার্গ ভুয়া খবর, নির্বাচনে বিদেশি প্রভাব ও হেট স্পিচ বন্ধ এবং ডাটা প্রাইভেসি রক্ষায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেন৷
ছবি: Andrew M. Chang/ZUMA Wire/imago images
নাম পরিবর্তন করে মেটা
২০২১ সালে ফেসবুকের কোম্পানির নাম পরিবর্তন করে মেটা রাখা হয়৷ সাকারবার্গ মনে করেন ইন্টারনেটের ভবিষ্যৎ হবে মেটাভার্স৷ ফেসবুকের নাম মেটা রাখার এটিও একটি কারণ৷
ছবি: Yves Herman/REUTERS
এখনও সবচেয়ে জনপ্রিয়
তরুণ প্রজন্ম টিকটিক বা স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহারে আগ্রহী হলেও ফেসবুক এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামাজিক নেটওয়ার্ক৷ কারণ বর্তমানে ফেসবুকের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৯৬ কোটি৷
ছবি: Reuters/D. Ruvic
এক্স-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা
২০২৩ সালে মেটা এক্স-এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ‘থ্রেডস’ অ্যাপ চালু করে৷
ছবি: STEFANI REYNOLDS/AFP
শিশুদের ক্ষতি করার অভিযোগ
২০২৩ সালের অক্টোবরে কয়েকটি মার্কিন রাজ্য ফেসবুকের বিরুদ্ধে শিশু ও টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করার অভিযোগ আনে৷ এর প্রেক্ষিতে ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে মেটা৷