সোমবার থেকে শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া৷ চলবে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত৷ উত্তর কোরিয়া এই অনুশীলনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রায় তিন লক্ষ ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৭ হাজার সেনা বার্ষিক এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে৷ উত্তর কোরিয়া এর সমালোচনা করে একে ‘দখলের উদ্দেশ্যে আক্রমণাত্বক অনুশীলন' বলে আখ্যায়িত করেছে৷ শুধু তাই নয়, মহড়া শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরমাণু হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছে৷ দেশটির বার্তা সংস্থায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘যদি আমরা এই মুহূর্তে বোতাম চাপি, তাহলে যেসব স্থান থেকে উসকানি দেয়া হচ্ছে সেগুলো নিমিষেই ধ্বংস হয়ে ভস্মে পরিণত হবে৷''
উত্তর কোরিয়া গত জানুয়ারিতে চতুর্থবারের মতো পরমাণু পরীক্ষা চালায়৷ এরপর ফেব্রুয়ারিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে৷ এই দুই ঘটনায় আন্তর্জাতিক তীব্র চাপের মুখে পড়ে দেশটি৷ এর প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ৷ ফলে এখন থেকে কোনো দেশ উত্তর কোরিয়ায় অস্ত্র রপ্তানি করতে পারবে না৷ এছাড়া দেশটির নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তির উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাদের সম্পত্তিও৷
তবে এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে পিয়ংইয়ং ছয়টি স্বল্প দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে৷ দেশটির নেতা কিম জং উন ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন৷ এর আগেও নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে উত্তর কোরিয়াকে নানা পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে৷
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার এই আগ্রাসী তৎপরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এবারের যৌথ মহড়ার আকার ও পরিধি বাড়িয়েছে৷ উত্তর কোরিয়া এই অনুশীলনকে ‘আক্রমণাত্বক' বললেও দেশ দুটি বলছে এটি ‘আত্মরক্ষামূলক'৷
যে দেশে জিন্স ‘হারাম’, গাঁজা ‘হালাল’
দেশটি এতটাই যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী যে সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই ‘জিন্স’-এর পোশাক পরা নিষিদ্ধ৷ অথচ অন্যদিকে যে যত খুশি ‘গাঁজা’ সেবন করতে পারবেন! এমন দেশ উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে জানুন মজার কিছু তথ্য৷
ছবি: Getty Images/C. Chu
ইচ্ছে মতো চুল কাটা মানা
হ্যাঁ, উত্তর কোরিয়ায় যার যেমন খুশি চুল কাটবেন সে উপায় নেই৷ স্বৈরশাসক কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর পরই ঠিক করে দিয়েছেন, দেশের সব পুরুষকে বিশেষ ১০টি আর মেয়েদের ১৮টি হেয়ার স্টাইলের মধ্যেই যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে৷ আর কিম জং উন যেভাবে চুল কাটান সেভাবে দেশের আর কেউ কাটাতে পারবেন না৷
ছবি: picture alliance/AP Images
যে দেশে ‘স্বর্গ’ আছে...
উত্তর কোরিয়ার সব মানুষ মন থেকে নিজের দেশকে ‘স্বর্গ’ না বললেও, যাঁরা গাঁজা সেবন করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বলেন৷ এ দেশে যে যত খুশি গাঁজা খেতে পারেন৷ গাঁজা সেখানে কোনো নিষিদ্ধ মাদক নয়৷ সুতরাং যে যত খুশি গাঁজা খেলে কোনো সমস্যাই নেই৷
ছবি: picture alliance/Photopqr/l'Alsace
সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম
বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামটি কিন্তু উত্তর কোরিয়ায়৷ নাম রুনগ্রাদো মে ডে স্টেডিয়াম৷ ১৯৮৯ সালের পহেলা মে স্টেডিয়ামটির কাজ শেষ হয়েছিল বলে নামের সঙ্গেও জুড়ে দেয়া হয়েছে ‘মে দিবস’৷ ১ লক্ষ ৫০ হাজার দর্শকের আসন আছে স্টেডিয়ামটিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জন্মদিনেও বাধা...
উত্তর কোরিয়ায় বছরের বিশেষ দু’টি দিনে কেউ জন্ম নিলে সেই দিনে জন্মদিন উদযাপন করা যাবে না৷ উত্তর কোরিয়া সাবেক দুই শাসক কিম ই সুং এবং কিম জং ইল মৃত্যুবরণ করেছিলেন বলে সেই দিনগুলোতে দেশের কোনো সাধারণ মানুষের জন্মদিন উদযাপন রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ৷ এ নিয়ম মানতে গিয়ে প্রায় ১ লাখ মানুষকে ৮ জুলাই বা ১৭ ডিসেম্বরের জন্মদিন উদযাপন করতে হয় একদিন পর, অর্থাৎ ৯ জুলাই এবং ১৮ ডিসেম্বরে৷
ছবি: Fotolia/Jenny Sturm
যুক্তরাষ্ট্র ‘শত্রু’, তাই...
এক সময় উত্তর কোরিয়ায় সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা ছিল, কিন্তু এখন যে ধরনের শাসন চলছে তাকে সমাজতান্ত্রিক বলার উপায় নেই৷ দেশের নাম ‘ডেমোক্র্যাটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়া’, অথচ ঘোষিতভাবেই চলছে একদলীয় শাসন৷ তবে সমাজতন্ত্র না থাকলেও উত্তর কোরিয়ার সেই ‘শীতল যুদ্ধের’ সময়কার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধিতা ঠিকই আছে৷ যুক্তরাষ্টের মানুষ বেশি জিন্স পরে বলে এ দেশে জিন্স পরা নিষিদ্ধ৷