1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তি আবেগ ও একজন সাকিব আল হাসান

১ নভেম্বর ২০১৯

ক্রিকেট নিয়ে আমাদের আবেগের জায়গা রয়েছে৷ সেই আবেগের সবচেয়ে বড় নায়কের নাম সাকিব আল হাসান৷

ছবি: Getty Images/AFP/I.S. Kodikara

কিন্তু জুয়াড়ির যোগাযোগের তথ্য গোপনে যে শাস্তি তাকে আইসিসি সাকিবকে দিয়েছে, এ নিয়ে খুব বেশি কিছু করার নেই বলে মনে করছেন কালের কণ্ঠের উপসম্পাদক ও ক্রীড়া সাংবাদিক মোস্তফা মামুন৷

সাকিবের শাস্তি ঘোষণার পর থেকেই এ নিয়ে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম৷ পাল্লা দিয়ে উত্তপ্ত গণমাধ্যমও৷ বিশেষ করে ভারত সফর, ক্রিকেটারদের ধর্মঘট এবং বিসিবি সভাপতির নানা বক্তব্যের পরপরই ঘোষণা আসা, সব মিলিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে জন্ম দিয়েছে নানা অবিশ্বাস ও আস্থাহীনতার৷ 

‘‘ধর্মঘটের কারণে হয়তো আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল’’

This browser does not support the audio element.

সাকিব কী আসলেই অন্যায় করেছেন? তিনি তো জুয়াড়ির কাছ থেকে টাকা নেননি, ম্যাচের কোনো তথ্য জুয়াড়িকে দিয়েছেন, মেলেনি এমন প্রমাণও৷ তাহলে শুধু একটা ‘ভুলের' কারণে এতো বড় শাস্তি সাকিবভক্তরা মেনে নিতে পারছেন না৷ তবে দেশের ক্রিকেটের উত্থান ও বিস্তারপর্বের সাক্ষী মোস্তফা মামুন মনে করছেন, এক্ষেত্রে আসলে বেশি বা কম হিসেব করার কোনো অবকাশ নেই৷ বরং সাকিবকে দুই বছরের সাজা দেয়া হলেও শুধু শুরুতেই সব স্বীকার করায় তার শাস্তি এক বছর স্থগিত করা হয়েছে৷

তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু এটা ছয় মাস ধরে চলেছে এবং তিনটা ইনসিডেন্ট, ফলে আইসিসি তার আইনের জায়গা থেকে দেখেছে৷ অনেককে এক্ষেত্রে সরাসরি দুই বছর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেয়া হয়, যেমন সনৎ জয়সুরিয়া৷ তিনি অবশ্য শুরুতে স্বীকার করেননি৷ ফলে, এটাকে আমরা যদি নৈর্ব্যক্তিকভাবে দেখি তাহলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই৷ বরং সাকিব যাতে এক বছর পর আবার ফিরতে পারেন, সে ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে৷''

বিসিবির সঙ্গে সাকিবের দ্বন্দ্বের কথা চিন্তা করে অনেকে দায় চাপাচ্ছেন বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটির ওপরও৷ ধারণা করছেন, ধর্মঘটের শাস্তিই এটি কিনা৷ কিন্তু আইন বলছে, কোনো দেশের বোর্ডের আসলে এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ বা, আকসুর কাজে প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা নেই৷ মোস্তফা মামুনও মনে করেন, এক্ষেত্রে বিসিবিকে তদন্তের বিষয়ে জানানোর কোনো বাধ্যবাধকতা আকসুর বা আইসিসির নেই৷ বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বোর্ডকে এসবের বাইরেই রাখা হয়৷ 

প্রশ্ন উঠেছে নিষেধাজ্ঞা জানানোর টাইমিং নিয়েও৷ মোস্তফা মামুন মনে করেন, আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে বিসিবি আগে থেকেই বিষয়টা জানতো৷ ‘‘তদন্ত চলছে সেটা বিসিবি জানতো, কিন্তু স্পেসিফিক এটা যে সাকিব সেটা তারা সম্ভবত  জানতো না৷ তাছাড়া এক ধরনের চিন্তাও থাকার কথা, ভারডিক্ট (রায়) কবে হবে৷ আইসিসি সম্ভবত বলেছিল একটু দেরি হবে৷ কিন্তু আমি যতোদূর জানতে পেরেছি, একটা ভার্সন অনুসারে সাকিবই আইসিসিকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে ভারত সফরের মাঝখানে এমন রায় না হয়৷''

ভারত সফরে সাকিব না থাকায় বাংলাদেশের যেমন ক্ষতি হয়েছে, ভারতেরও বড় ক্ষতি হয়েছে বলে মনে কেরন এ সাংবাদিক৷ সাকিবের ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে সফর আকর্ষণীয় হলে বরং আয়োজক দেশ হিসেবে ভারতও কম লাভবান হতো না বলে মনে করেন তিনি৷

‘আন্দোলনের শাস্তিস্বরূপ সাকিবের নিষেধাজ্ঞা এসেছে', এমন মন্তব্য একেবারেই মানতে নারাজ এই ক্রীড়া সাংবাদিক৷ তবে ধর্মঘট বা অন্যান্য কারণে খেলোয়াড় ও বিসিবির মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি না হলে বিষয়টা নিয়ে দুই পক্ষ আরো আন্তরিকভাবে কাজ করতে পারতো বলে মনে করেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘ধর্মঘটের কারণে হয়তো আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল৷ এখন যেটা হয়েছে বিসিবি একেবারেই আনুষ্ঠানিক যে অবস্থান নেয়া যায়, সেটিই ঘোষণা করেছে৷ অন্যসময় হলে হয়তো সাকিবও একটি আগে বিসিবিকে জানাতো, বিসিবিও আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা সাকিবকে সহায়তা করা বা ইনফরমাল চ্যানেলে নানা ধরনের সহযোগিতার চেষ্টা করতো৷''

যোগাযোগের ঘাটতির কথা উঠে এসেছে বাংলাদেশের বিসিবি এবং ভারতের বিসিসিআই-এর মধ্যেও৷ আইপিএলের একটি ম্যাচের আগে জুয়াড়ির সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগের যে ঘটনাটি উঠে এসেছে, সেটি নিয়ে বিসিসিআই-এর সঙ্গে যোগোযোগ করে আইসিসি৷ ফলে বিসিবির সঙ্গে ভালো যোগাযোগ থাকলে অনানুষ্ঠানিকভাবেও সাকিবের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি বিসিবির অনেক আগেই জেনে যাওয়ার কথা৷ এক্ষেত্রে বিসিবির কূটনৈতিক ব্যর্থতা দেখছেন মোস্তফা মামুন৷

তবে মামুন মনে করেন, খেলোয়াড় একবার অপরাধ স্বীকার করে নিলে তারপর আসলে আর বোর্ডের তেমন কিছু করার থাকে না৷ বরং তখন সাকিবকে এখন কিভাবে ফিরতে সহযোগিতা করা যায়, সে চেষ্টাই এখন করতে হবে৷ আইসিসিকে সব সহযোগিতা করলে বেশকিছু ক্ষেত্রে সাজা কমানোর উদাহরণও রয়েছে৷ ফলে আগামী বছর ‘টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন সাকিব', এমন প্রত্যাশা একেবারেই অমূলক নাও হতে পারে৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ