1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুদ্ধাপরাধের বিচার

২৭ এপ্রিল ২০১২

যুদ্ধাপরাধে সহযোগিতা করার দায়ে অভিযুক্ত হলেন লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট চার্লস টেলর৷ জাতিসংঘের সমর্থনপুষ্ট ‘স্পেশাল কোর্ট ফর সিয়েরা লিওন' বৃহস্পতিবার টেলরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনে৷

ছবি: dapd

১৯৯৭ থেকে ২০০৩ – এই ছয় বছর লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন টেলর৷ অনেক বছর পর তিনিই হলেন প্রথম কোনো সরকার প্রধান, যিনি একটি আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে অভিযুক্ত হলেন৷ এর আগে জার্মানির কুখ্যাত নাৎসি বাহিনীর প্রধান আডল্ফ হিটলারের উত্তরসূরি অ্যাডমিরাল কার্ল ড্যোনিৎস'কে অভিযুক্ত করেছিল বিখ্যাত নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল৷

লাইবেরিয়ার প্রতিবেশী দেশ সিয়েরা লিওন'এর গৃহযুদ্ধে লিপ্ত বিদ্রোহীদের সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে টেলরের বিরুদ্ধে৷ ১৯৯১ সালে শুরু হওয়া ঐ গৃহযুদ্ধে বিদ্রোহী ‘রেভোলিউশনারি ইউনাইটেড ফ্রন্ট' বা আরইউএফ সদস্যদের অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেন টেলর৷ সিয়েরা লিওন'এর তৎকালীন সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা করেছিল আরইউএফ৷

Charles Taylor guilty of aiding war crimes

02:00

This browser does not support the video element.

‘স্পেশাল কোর্ট ফর সিয়েরা লিওন'এর বিচারক রিচার্ড লুসিক বলেন, আরইউএফ সদস্যদের পক্ষে টেলর হীরা বিক্রি করতেন এবং অস্ত্র কিনতেন৷ উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে বিদ্রোহ শুরু করার পর প্রথম বছরেই আরইউএফ বিদ্রোহীরা সিয়েরা লিওন'এর পূর্ব ও দক্ষিণের বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়৷ ঐ এলাকা দুটি হীরার ভাণ্ডার বলে পরিচিত ছিল৷

সিয়েরা লিওনের গৃহযুদ্ধ শেষ হয় ২০০২ সালে৷ অর্থাৎ এটা প্রায় ১১ বছর স্থায়ী ছিল৷ এ সময়ে প্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হয়৷ এছাড়া আহত হয় বহু লোক৷ ধর্ষিত হয় অনেক নারী৷ আরইউএফ এর নির্যাতনের একটা ধরণ ছিল কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হাত কেটে নেয়া৷

আদালত বলছে, টেলর জানতেন আরইউএফ সদস্যরা মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করছেন৷ সেটা জেনেই তিনি তাদের সহায়তা করেন৷

সিয়েরা লিওন'এ গৃহযুদ্ধ বন্ধের এক বছর পর ২০০৩ সালে টেলর নিজ দেশ লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷ এরপর তিনি নাইজেরিয়ায় পালিয়ে যান৷ কিন্তু ২০০৬ সালে ধরা পড়েন৷ এরপর ২০০৭ সালে তাঁর বিরুদ্ধে বিচার কাজ শুরু হয়৷

লাইবেরিয়ার সাধারণ মানুষ টেলিভিশনে আদালতের প্রক্রিয়া দেখেছেনছবি: Reuters

এবার টেলর সম্পর্কে কিছু তথ্য৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া শেষে দেশে ফিরে সরকারি কাজে যোগ দিয়েছিলেন টেলর৷ কিন্তু অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর চাকরি চলে যায়৷ এরপর লিবিয়ায় গিয়ে তিনি গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন৷ দেশে ফিরে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন৷ এর এক পর্যায়ে ১৯৯৫ সালে সরকারের পতন হলে ১৯৯৭ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়৷ তাতে লোকজনকে ভয় দেখিয়ে তিনি নিজে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন৷ কিন্তু দুই বছর পরই টেলরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়৷ এবং ২০০৩ সালে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷

টেলরের শাস্তি নির্ধারণে আগামী মাসের ১৬ তারিখে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে৷ এরপর ৩০ তারিখে শাস্তির রায় ঘোষণা করা হবে৷ টেলরকে সাজা ভোগ করতে হবে লন্ডনে৷

এদিকে টেলরের বিরুদ্ধে আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, এর ফলে প্রমাণিত হলো কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়৷ বিশ্বের যেসব শীর্ষ নেতা এখনো মানবতাবিরোধী কাজ করে চলেছেন, এই রায় তাদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বার্তা৷ তবে অ্যামনেস্টি বলছে, টেলরের মতো আরও বহু অপরাধী রয়েছে৷ তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে৷

নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ'ও এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক (এএফপি, রয়টার্স)

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ