ট্রাইব্যুনালের কাজে সুপ্রিম কোর্টের অসন্তোষ
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬![Mir Quasem Ali](https://static.dw.com/image/18034903_800.webp)
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিলের শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন এবং তদন্ত সংস্থার কাজ নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন৷ আদালত বলেন, তাঁদের (প্রসিকিউটর ও তদন্ত সংস্থা) পেছনে সরকার যথেষ্ট অর্থ খরচ করছে৷ অথচ তাঁরা সঠিকভাবে মামলা তদন্ত ও পরিচালনা করছেন বলে মনে হয় না৷ যেসব প্রসিকিউটর অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন তাঁদের সরিয়ে দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন আদালত৷ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সেই সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷
মাহবুবে আলম পরে সাংবাদিকদের জানান, ‘‘মীর কাসেমের আপিল শুনানির সময় আপিল বিভাগে বেশ কিছু অসংগতি ধরা পড়ার ফলে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার ওপর আদালত গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷''
এর আগে জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল মামলায়ও প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন আদালত৷
অসদাচরণের তদন্ত
ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীর গুরুতর পেশাগত অসদাচরণের তদন্ত হচ্ছে৷ তাঁকে এরইমধ্যে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে৷ এর আগে শৃঙ্খলা ও আচরণবিধি ভঙ্গ এবং গুরুতর পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগে মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু৷ সাময়িক বরখাস্তের আগে ৪ ফেব্রুয়ারি চিফ প্রসিকিউটর এক অফিস আদেশের মাধ্যমে মোহাম্মদ আলীকে ট্রাইব্যুনালের মামলা পরিচালনা থেকে প্রত্যাহার করেন৷
প্রধান বিচারপতি ‘আনকাইন্ড' মন্তব্য করেছেন
এই প্রসঙ্গে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ব্যক্তিগতভাবে কোনো প্রসিকিউটর বা তদন্তকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতে পারে৷ আমরাও প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি৷ কিন্তু আপিল বিভাগ যেভাবে ঢালাও অভিযোগ করেছে তা অনাকাঙ্খিত৷ প্রধান বিচারপতি আমার বিবেচনায় ‘আনকাইন্ড' মন্তব্য করেছেন৷ মীর কাসেম আলীর মামলায় যদি প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার অযোগ্যতার প্রশ্ন এখন তোলা হয় তাহলে এই দায়তো ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের ওপর যায়৷ কিন্তু আমার বিবেচনায় ট্রাইব্যুনাল এপর্যন্ত যে ১৭টি মামলার রায় দিয়েছে তা যুগান্তকারী৷''
তিনি বলেন, ‘‘এটা করে আপিল বিভাগ জামায়াতের হাতে একটি অস্ত্র তুলে দিয়েছেন৷ এখন সবগুলো মামলায় জামায়াত এই অস্ত্র ব্যবহার করবে৷ কিন্তু আমরাতো জানি কত প্রতিকূল অবস্থা, হুমকি, হামলার মুখে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে৷ বিচারক ও প্রসিকিউটরের বাড়িতে হামলা হয়েছে৷ ৪০ বছরে অনেক ডকুমেন্ট নষ্ট করা হয়েছে৷ অনেক সাক্ষীকে আদালতে আসতে দেয়া হয়নি৷ আপিল বিভাগের এগুলো বিবেচনায় থাকা উচিত৷''
শাহরিয়ার কবির আরো বলেন, ‘‘প্রসিকিউটর এবং তদন্তকারীদের পেশাগত দক্ষতার আরো উৎকর্ষতা চাই আমরা৷ কিন্তু তাই বলে ত্রুটিপূর্ণ তদন্তের মধ্য দিয়ে মামলার রায় হয়েছে এই কথা কোনভাবেই ঠিক নয়৷''
প্রিয় পাঠক, শাহরিয়ার কবিরের বক্তব্যের সঙ্গে আপনি কি একমত? মন্তব্য করতে পারেন নীচের ঘরে৷