‘ফগ অফ ওয়ার' যুদ্ধ সংক্রান্ত পরিভাষায় বেশ প্রচলিত শব্দ সমষ্টি৷ বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে অস্বস্তি আর অনিশ্চয়তার বিষয়টি বুঝিয়ে থাকে এই শব্দ সমষ্টি দিয়ে৷
বিজ্ঞাপন
মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানির হত্যাকাণ্ডের পর কথিত অনিশ্চয়তার বিপরীতে ইরান হামলা চালিয়েছে দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে৷ প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে৷ এর মাধ্যমে পাল্টা জবাব দেওয়া হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ৷ হামলার পর এই ঘোষণাও এসেছে ইরান আর যুদ্ধ চায় না৷
ইরানের এ হামলা ‘সমানুপাতিক প্রত্যাঘাত'- কিনা তা মাপার কোন নিক্তি হয়তো নাই৷ তবে একেবারে প্রতি উত্তরহীনতার অস্বস্তি কেটে গেল কি? মনে রাখা দরকার, যুদ্ধ এমন এক চক্র, প্রবেশ হয়তো অনায়াস, কিন্তু প্রস্থান প্রায়শই কঠিন৷
বিশ্বব্যাপী নানা মাত্রার অস্থিরতা ক্রমশ গ্রাস করছে যেন৷ এই অস্থিরতা থেকে বিশ্বের কোনো দেশই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এখন আর মুক্ত নয়৷ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বলয় তৈরির একালের মাস্টার মাইন্ড সোলেইমানি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হওয়ার পর স্বভাবতই ক্ষোভে ফুঁসছে ইরানের প্রতি সহানুভূতিশীল ইসলামী দেশের জনতা৷
মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ছিলেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের কুদস ফোর্সের প্রধান৷ ইরানে খামেনির পর তিনিই দ্বিতীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, তিনি কেবল খামেনির কাছেই জবাবদিহি করতেন এবং দেশের সশস্ত্র ও গোয়েন্দা কার্যক্রম নিজেই পরিচালনা করতেন৷ একই সঙ্গে ইরাকের সামরিক বাহিনীতেও তাঁর ব্যাপক প্রভাব ছিল৷ ব্যতিক্রমী অথচ সফল সমরকৌশলের কারণে চলিত বিশ্বে তিনি এক আলোচিত চরিত্র৷
ইরানের শত্রু-মিত্র
১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর থেকে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সর্ম্পকের অবনতি ঘটে৷ প্রভাব পড়ে বাকি দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগেও৷ ছবিঘরে দেখুন ইরানের আজকের শত্রু-মিত্র কারা, কার সঙ্গে তার কেমন সম্পর্ক৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Taherkenareh
যুক্তরাষ্ট্র: বন্ধু থেকে শত্রু
১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় মোসাদ্দেক সরকার উৎখাত হওয়ার পর ইরানের ক্ষমতায় আসেন রেজা শাহ পাহলভি৷ পরর্বতী ২৬ বছর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র ছিল একে অপরের বন্ধু৷ ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবে শাহ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এই সম্পর্ক শত্রুতায় রূপ নেয়৷ ১৯৮০ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই৷ একে অপরকে তারা সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবেও অ্যাখ্যায়িত করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Barria
ইসরায়েল: আন্তরিকতা থেকে অবিশ্বাস
তুরস্কের পর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া ২য় মুসলিম দেশ ইরান (১৯৫০ সাল)৷ রেজা শাহের শাসনকালে দুই দেশের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল৷ ১৯৭৯ সালে খোমেনি ক্ষমতায় এসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইসরায়েলকেও শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেন৷ তেহরান পরমানু অস্ত্র বানাচ্ছে বলে ১৯৯০ সালের পর থেকে অভিযোগ করছে ইসরায়েল৷ দেশটির বিরুদ্ধে হামাস ও হেজবোল্লাহকে মদদ দেয় ইরান৷ অন্যদিকে ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রেকে সমর্থন দেয় ইসরায়েল৷
ছবি: AP
সৌদি আরব: ঘাড়ের কাছে শত্রু
মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতা বিস্তারের লড়াইয়ে ইরানের চিরশত্রু সৌদি আরব৷ ১৯৭৯ সালে তেহরানের ক্ষমতায় পরিবর্তন আসার পর থেকেই তা প্রকট আকার ধারণ করেছে৷ দুই দেশ কখনও সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও চলছে তাদের ছায়াযুদ্ধ৷ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিবদমান গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দেয়৷ গত বছরের সেপ্টেম্বরে সৌদির দুইটি তেলক্ষেত্রে হামলার পেছনে ইরান রয়েছে বলে দাবি করেছে রিয়াদ৷
ছবি: picture-alliance/AA/E. Yorulmaz
রাশিয়া: দখলদার থেকে মিত্র
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইরানে আস্তানা গাড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও কয়েকবছর দখলদারি বজায় রাখে তারা৷ শাহের শাসনামলেও সম্পর্ক ভাল ছিল না৷ এমনকি ইরাক-ইরান যুদ্ধে সাদ্দামকে সহায়তা দিয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ তবে ১৯৯১ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে ইরান হয়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদার৷
ছবি: AP GraphicsBank
ইউরোপ: আলোচনায় সমাধান
ইরানের ইসলামিক বিপ্লবের পর ইউরোপের সঙ্গেও তেহরানের সম্পর্ক শীতল হয়ে ওঠে ৷ তবে প্রেসিডেন্ট আলী আকবর রাফসানজানির সময়ে এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়৷ পরমাণুসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ইইউ বরাবরই ইরানের সঙ্গে আলোচনার উপর জোর দিয়ে আসছে৷ ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে পরমাণু কার্যক্রম স্থগিতকরণ চুক্তি বাতিল করলেও ইউরোপের দেশগুলো তা এখনও বজায় রেখেছে৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/N. Economou
চীন: অস্ত্র আর বাণিজ্যের সম্পর্ক
১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধে তেহরানকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল চীন৷ বেইজিংয়ের শীর্ষ তিনটি অস্ত্র ক্রেতা দেশের একটি ইরান৷ অন্যদিকে ইরানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন৷ যদিও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর সেখান থেকে তেল আমদানি ব্যাপকভাবে কমিয়ে দিতে হয়েছে চীনকে৷ কাসেম সোলেইমানিকে হত্যাকাণ্ডের পর চীন জানিয়েছে তেহরানের সঙ্গে বেইজিংয়ে সম্পর্ক অটুট থাকবে৷
ছবি: AP / DW-Fotomontage
ইরাক: সর্ম্পকে নতুন মোড়
সাদ্দাম হোসেনের চালানো হামলা থেকে শুরু হওয়া ইরাক-ইরান যুদ্ধ অব্যাহত ছিল আট বছর৷ তবে বর্তমানে বাগদাদের শিয়া নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে তেহরানের৷ দেশটির একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীকেও সামরিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে ইরান৷ এইসব গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে৷
কথিত আছে লেবাননের হেজবোল্লাহ গোষ্ঠীর উত্থান ইরানের মাধ্যমেই৷ তাদের মূল টার্গেট মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের শত্রু ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আস্তানাগুলো৷ ২০১৮ সালে হেজবোল্লাহ ও তাদের জোট দেশটির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে৷ যার মধ্য দিয়ে লেবাননের সরকারে ইরানের প্রভাব আরো বেড়েছে৷ এছাড়াও ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহী আর ফিলিস্তিনের হামাস ইরানের মিত্রশক্তি৷
ছবি: Reuters/O. Sanadiki
ভেনেজুয়েলা: শত্রু যখন একই
অবরোধ, অর্থনৈতিক সঙ্কট আর দুই দেশের একই শত্রু, ইরান-ভেনেজুয়েলাকে নিয়ে এসেছে কাছাকাছি৷ ২০০১ সালে ইরানের মোহাম্মদ খাতামি আর ভেনেজুয়েলার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজের মাধ্যমে সহযোগিতামূলক এই সম্পর্কের গোড়াপত্তন৷ আহমদিনেজাদ ক্ষমতায় আসার পর তা আরো নিবিড় হয়৷ একক শত্রু যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়তে দুইদেশ বেশি কিছু চুক্তিও করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AA/ABACA/Iran Presidency
বাংলাদেশ: পাঁচ দশকের সম্পর্ক
১৯৭১ সালের পর থেকে ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক৷ বিভিন্ন সময়ে দুই দেশের রাষ্ট্রীয় সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ১৯৯৫ সালে প্রেসিডেন্ট রাফসানজানি ঢাকা এসেছিলেন৷ গত বছরের সেপ্টেম্বরে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ৷ অক্টোবরে বাকুতে ন্যাম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসার রুহানি ‘সাইডলাইন বৈঠক’ করেন৷ গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ১.৭৭ কোটি ডলারেরর পণ্য রপ্তানি করেছে দেশটিতে৷
ছবি: Fars
10 ছবি1 | 10
বিভিন্ন ফ্রন্টে সোলেইমানির নির্দেশে ইরান মার্কিন সৈন্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে বিভিন্ন সময়৷ যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিকভাবে চাপে রাখতে সোলেইমানির জুড়ি ছিল না৷ আর যুক্তরাষ্ট্রও বিভিন্ন সময় হত্যার পরিকল্পনা করেও সফল হতে পারেনি এত দিন৷ রিপাবলিকানরা দলীয় কারণে সমর্থন করছে কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এই হামলা ও হত্যা সমর্থন করেনি৷ নিম্নকক্ষের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ও ডেমোক্র্যাট সদস্য ন্যান্সি পেলোসির দাবি, মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা না করে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হয়নি, যা নিরেট আইনের লঙ্ঘন৷ অন্যদিকে ট্রাম্পের সাফাই, ‘‘সোলেইমানি দীর্ঘ সময় ধরে হাজারো মার্কিন নাগরিককে হত্যা করেছেন এবং আরো হত্যার পরিকল্পনা করছিলেন''৷ তিনি আরো বলেন, ‘‘ইরানে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় নিহত অনেক বিক্ষোভকারীসহ লাখো মানুষের মৃত্যুর জন্য সোলেইমানি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত৷''
২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে এবং ইরানের ওপর স্থগিত বা তুলে নেয়া সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণা দেয়৷ ছয় জাতির এই চুক্তিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ছিল রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি৷ এক বিশ্লেষণে প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী ফরেন অ্যাফেয়ার্স বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে ও ইরানের ওপর অধিকতর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও কোন সফলতা পায়নি৷ বরং চাপের মুখে ইরান সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখিয়েছে এবং নিজেদের মতো করে চাপ সামাল দিচ্ছে৷ চীন-রাশিয়ার মোরাল সাপোর্ট কিছুটা প্রণোদনার কাজ করছে৷
অভিশংসনের খড়গ মাথায় নিয়ে ট্রাম্প পরের দফায় প্রেসিডেন্ট হতে চাচ্ছেন৷ ওয়ার ফ্রন্টে বলার মতো কোন পোর্টফোলিওর অভাব ছিল, সোলাইমানিকে মেরে সে শূন্যতায় কিছু মাইলেজ যোগ করতে পারে সেই উচ্চাশা থেকে এই হত্যাকাণ্ড৷
বিভিন্ন কারণে বিগত কয়েক দশক ধরে দেখা যাচ্ছে সরাসরি যুদ্ধের ব্যাপারে ইরানের খুব একটা আগ্রহ নেই৷ তবে দেশটি বিভিন্ন ফ্রন্টে প্রক্সি ওয়ার চালিয়ে যাচ্ছে৷ হিজবুল্লাহকে দিয়ে ইসরায়েলকে ব্যস্ত রাখা, সিরিয়ার আইএসকে বাড়তে না দিয়ে আমেরিকাকে পাততাড়ি গোটাতে বাধ্য করা আর সর্বশেষ ইরাকে জনতার বিক্ষোভের নামে অ্যামেরিকান দূতাবাসে হামলা, এমন সব ছায়া যুদ্ধে ইরান তার দুই শত্রু ইসরায়েল আর অ্যামেরিকাকে তটস্থ রেখেছে৷ অ্যামেরিকা সোলাইমানিকে হত্যা করে সরাসরি যুদ্ধের উস্কানি দিচ্ছে, যদিও ইরান তার প্রধান সমরনায়ককে হারিয়েও এক প্রকার সংযত প্রতিক্রিয়াই দেখিয়েছে৷ মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীল ছিল এবং আরো হলো এই হত্যাকাণ্ডের পর৷ এই অঞ্চলটি আর একটি যুদ্ধের ভার বহন করতে পারবে না নিশ্চিতভাবেই৷ ইরান হয়তো অ্যামেরিকার তৈরী এ ওয়ার ট্র্যাপে পা দিয়ে বিপদ ডেকে আনবে না৷
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটিগুলো
ইরাক থেকে তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্যের বেশিরভাগ দেশেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি৷ আছে হাজারো সৈন্য৷ এই ঘাঁটিগুলো দিয়ে ইরানকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: imago/StockTrek Images
ইরাক
ইরাকে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫,২০০ সৈন্য রয়েছে৷ তবে তা ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে পেন্টাগন৷ এর অংশ হিসেবে বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থেকে এরিমধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারও করা হয়েছে৷ বর্তমানে গ্রিন জোন, বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা, আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে দেশটির সেনাসদস্য রয়েছে৷ গত নভেম্বরে আল আসাদ বিমান ঘাঁটিতে সৈন্যদের সঙ্গে দেখা করেছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স৷
ছবি: imago/StockTrek Images
কুয়েত
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র কুয়েত৷ দুই দেশের মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা সহায়তা চুক্তি৷ দেশটিতে রয়েছে বেশ কয়েকটি মার্কিন ঘাঁটি৷ যেখানে প্রায় ১৩ হাজার সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/S. Nelson
সিরিয়া
সিরিয়ার কোথায় যুক্তরাষ্ট্রের কত সংখ্যক সৈন্য রয়েছে সে বিষয়টি প্রকাশিত নয়৷ অক্টোবরে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ তার আগ পর্যন্ত দেশটিতে প্রায় ২০০০ সৈন্য ছিল, বর্তমানে যা ৮০০ জনে নেমে এসেছে৷ যেসব ঘাঁটি চালু আছে তার একটি সিরিয়ান-জর্ডান সীমান্তে৷ এর কাছেই রয়েছে ইরানীয় আর তাদের সমর্থিত বাহিনী৷
ছবি: -picture alliance/AP Photo/Z. Garbarino
জডার্ন
ইরাক, সিরিয়া, ইসরায়েল, আর সৌদি আরবের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে জডার্নের৷ কৌশলগত দিক থেকে তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান এটি৷ দেশটির মুভাফফাক ছালটি বিমান ঘাঁটি থেকে সিরিয়ায় আইএস বিরোধী হামলা চালানো হয়েছে৷ অবশ্য কিং ফয়সাল বিমান ঘাঁটিতে ২০১৬ সালে তিন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছিল জডার্নের বিমান বাহিনীর গুলিতে৷
ছবি: AP
সৌদি আরব
সৌদি আরবে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের তিন হাজার সেনাসদস্য রয়েছে৷ অক্টোবরে সৌদি তেলক্ষেত্রে হামলার পর ইরানের সঙ্গে সৌদি আরবের সংঘাতের শঙ্কায় সেখানে আরো সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা৷
ছবি: Getty Images/AFP/F. Nureldine
বাহরাইন
বাহরাইনে যুক্তরাষ্ট্রের একটি নৌ ঘাঁটি রয়েছে৷ দ্বীপ রাষ্ট্রটি বরাবরই সৌদি আরবের মিত্র৷ ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পদক্ষেপের সমর্থকও তারা৷ বর্তমানে সেখানে সাত হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: AP
ওমান
ওমানের অবস্থান হরমুজ প্রণালীর কাছে আরব উপকূলে, যা জ্বালানি পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পথ৷ ২০১৯ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রেকে বিমান ও সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেয় ওমান৷ বর্তমানে সেখানে ৬০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/E. Noroozi
সংযুক্ত আরব আমিরাত
হরমুজ প্রণালীর পাশে থাকা আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত৷ তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের সাথে ভাল সম্পর্ক বিদ্যমান৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে পাঁচ হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে পেন্টাগন৷
ছবি: picture-alliance/AP/K. Jebreili
কাতার
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিটি কাতারের আল উদিদে৷ এর আধুনিকায়নে ২০১৮ সালে ১৮০ কোটি ডলারে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে কাতার৷ বর্তমানে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ হাজার সৈন্য নিযুক্ত রয়েছে৷
ছবি: Reuters/N. Zeitoon
তুরস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য রয়েছে তুরস্কেও৷ দেশটির ইনজিরলিক বিমান ঘাঁটিসহ বেশ কিছু জায়গায় মার্কিন সেনা অবস্থান করছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
10 ছবি1 | 10
জীবিত সোলাইমানির চেয়ে মৃত সোলেইমানি বরং অধিকতর শক্তিশালী৷ শিয়া-সুন্নিতে বিভক্ত ইরানের জন সমাজ সোলেইমানির জানাজায় একত্রিত হয়ে দেখিয়েছে অভূতপূর্ব ঐক্য৷ মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ফলে বিপর্যস্ত ইরানিরা খামেনির উপর বিরক্ত ছিল, ছোটখাট বিক্ষোভ ও দেখাতো৷ সোলেইমানির মতো জনপ্রিয় ব্যক্তিকে হত্যা করে এই সরকারের প্রতি সমর্থন পোক্ত হয়েছে৷
ইরাক সরকারও ইরানের প্রতি এখন সহানুভূতিশীল৷ সোলেইমানি মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো আরবে যে মার্কিনবিরোধী রাজনৈতিক পরিবেশের স্বপ্ন দেখতেন তা আরো গতি পাবে৷ ইরাকি পার্লামেন্ট যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারির বিরুদ্ধে কথিত বিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে পাসের দাবি উঠেছে৷ এরই মধ্যে জার্মানি ইরাক থেকে কিছু সৈন্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে৷ নিজেদের হঠকারিতায় অ্যামেরিকা ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে৷
আপাত দূরবর্তী দেশ হিসেবে ইরান-মার্কিন চলতি টানাপড়েনে বাংলাদেশকেও সতর্ক থাকতে হবে৷ প্রায় তিন বছর আগে ২০১৭ সালের মে মাসে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয় আরব-ইসলামিক-অ্যামেরিকান সম্মেলন৷ সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের আহ্বানে এ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ৫৬ জন আরব ও মুসলিম শীর্ষ রাষ্ট্র নেতা যোগ দেন৷ ওআইসি বা ইসলামী সম্মেলন সংস্থা ছাড়া আর কোনো সম্মেলনে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের এমন ব্যাপক উপস্থিতি এর আগে দেখা যায়নি৷ এই শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নিয়েছিলেন৷
এই সম্মেলনের মূখ্য তিন উদ্দেশ্যের একটি- ট্রাম্পের সাথে মুসলিম বিশ্বের আইস ব্রেকিং৷ দ্বিতীয়ত, ইরানের হুমকি মোকাবিলায় অ্যামেরিকা ও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোকে পাশে রাখা এবং তৃতীয়ত, ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা৷
প্রথমটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য সর্বজনীন হলেও পরের দুটি আসলে সৌদি আরবের নিজস্ব এজেন্ডা৷ সম্মেলনে ৩৪ হাজার সেনা নিয়ে একটা কমান্ড গঠনের ‘রিয়াদ ঘোষণা' বাংলাদেশের মতো জোট নিরপেক্ষ দেশগুলোকে অস্বস্তিতে ফেলে৷ বাংলাদেশ সম্মেলনের পরই জানিয়ে দেয়, কেবল মক্কা ও মদিনাতে যদি কোনো হামলা হয় তখনই শুধু বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করবে৷ এর বাহিরে কোথাও কোনো বিষয়ে অংশগ্রহণ করবে না৷ ওই ঘটনায় বাংলাদেশ ইরানের সম্পর্ক টানাপড়েনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়৷
সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করাই হলো যেকোনো দেশের পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য, বাংলাদেশেরও তাই৷ ইরান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বৈরথে স্পষ্টত কোন পক্ষ নেয়ার সময় এখনই আসেনি সত্য৷ তারপরেও বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে শান্তিকামী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের করণীয় কী হবে তা বর্তমান সরকার যথাযথভাবে গ্রহণ করবে এমন আশা করা যায়৷ জাতিসঙ্ঘ সনদের ২(৪) ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল সদস্য-রাষ্ট্র আঞ্চলিক অখন্ডতার বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের ভীতি প্রদর্শন থেকে এবং জাতিসঙ্ঘের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো উপায় গ্রহণ করা থেকে নিবৃত্ত থাকবে৷'' জাতিসঙ্ঘের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ এই ম্যান্ডেট মেনে চলেছে বরাবর।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্র: বন্ধু থেকে শত্রু
একটা সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু ছিল ইরান৷ সেখান থেকে চিরশত্রুতায় রূপ নিয়েছে তাদের সম্পর্ক৷ কীভাবে এই মেরুকরণ ঘটল দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: gemeinfrei
ইরানের সরকার উৎখাত
১৯৫১ সালে ইরানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মোসাদ্দেক৷ তিনি ব্রিটিশদের কাছ থেকে দেশটির তেল সম্পদ জাতীয়করণ করেন৷ ১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই সিক্স এবং এবং মার্কিন সিআইএ ক্যু ঘটিয়ে মোসাদ্দেককে উৎখাত করে৷
ছবি: picture-alliance/CPA Media Co. Ltd
শাহের ক্ষমতা আরোহন
মোসাদ্দেকের পতনের পর ক্ষমতায় ফেরেন ইরানের নির্বাসিত শেষ সম্রাট রেজা শাহ পাহলভি৷ পরবর্তী দুই দশক ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গড়ে ওঠে নিবিড় বন্ধুত্ব৷ এক পর্যায়ে মার্কিন অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতায় পরিণত হয় পারস্য উপসাগরের দেশটি৷ যুক্তরাষ্ট্রের কোন অনুরোধই এসময় ফেলেননি শাহ, এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার৷
ছবি: gemeinfrei
ইসলামী বিপ্লব
শাহের আমলে ইরানের তেল ব্যবসায় প্রায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রিটিশ ও অ্যামেরিকান কোম্পানিগুলোর৷ ইরানি জনগণের মধ্যে রাজতন্ত্রবিরোধী ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে৷ ১৯৭৯ সালের ১৬ জানুয়ারি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন রেজা শাহ পাহলভি৷
ছবি: Getty Images/Afp
খোমেনির ফেরা
দুই সপ্তাহ পর দেশে ফেরেন নির্বাসিত নেতা আয়াতোল্লাহ খোমেনি৷ তিনি ইরানের ‘ইসলামি বিপ্লবের’ নেতৃত্ব দেন৷ কিছুদিনের মধ্যেই দেশটির ছাত্ররা তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখল করে৷ ৪৪৪ দিনের জন্য বন্দী হয় ৫২ অ্যামেরিকান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AFP/G. Duval
প্রথম অবরোধ
বন্দী সঙ্কটের সমাধান না হওয়ায় ইরানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার৷ দেশটিতে মার্কিন পণ্য রপ্তানি ও তেল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়৷ জব্দ করা হয় ইরানের ১২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ৷ বের করে দেয়া কূটনীতিকদের৷
ছবি: Imago/ZumaPress
ইরাক-ইরান যুদ্ধ
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ইরান আক্রমণ করে সাদ্দাম হুসেন৷ যুদ্ধ চলাকালে ইরাককে গোয়েন্দা প্রতিবেদন, অর্থ, সামরিক প্রযুক্তি এমনকি রাসায়নিক অস্ত্রও সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র৷ এই যুদ্ধ চলে আট বছর৷ এসময় লেবাননে ইরানের সমর্থিত হেজবুল্লাহ গোষ্ঠীর হামলায় বৈরুতের একটি ব্যারাকে ২৪৪ অ্যামেরিকান নিহত হয়৷
ছবি: picture-alliance/Bildarchiv
ইরানের বিমানে হামলা
১৯৮৮ সালে পারস্য উপসাগরে ইরানের একটি যাত্রিবাহী বিমানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র৷ নিহত হয় ইরানের ২৯০ জন যাত্রী৷ একে দুর্ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান৷ এই ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক আরও তিক্ততায় রূপ নেয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/A. Taherkenareh
নতুন অবরোধ
ইরান সন্ত্রাসীদের মদত দেয়ার পাশাপাশি পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে, এমন অভিযোগে দেশটিকে একঘরে করার জন্য প্রচার চালায় ক্লিনটন প্রশাসন৷ ১৯৯৬ সালে বিদেশি কোম্পানিগুলোর ইরানে বিনিয়োগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন৷
ছবি: AP
সম্পর্ক সহজীকরণ
১৯৯৮ থেকে পরবর্তী দুই বছর মোহাম্মদ খাতামি সরকারের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আগ্রহ প্রকাশ করে ক্লিনটন প্রশাসন৷ এজন্য রোডম্যাপও ঘোষণা করা হয়৷ খাতামি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রস্তাব দেন৷ ২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়৷
ছবি: AP
পরমাণু আকাঙ্ক্ষা
২০০৫ সালে আহমদিনেজাদের শাসনামলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের আবারও অবনতি ঘটে৷ ইরান এসময় পরমাণু কার্যক্রম শুরু করে৷ বুশ ইরানকে সন্ত্রাসের রপ্তানিকারক হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেন৷ তবে ২০১৫ সালে ওবামা যুক্তরাষ্ট্র ও জোট রাষ্ট্রগুলোর সাথে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম স্থগিতকরণ চুক্তিতে বৈরিতার সেই বরফ কিছুটা গলে৷
ছবি: AP
যুদ্ধের দামামা
২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে পরমানু চুক্তি বাতিল করে ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ইরানের উপর চাপ প্রয়োগ করতে নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে ওয়াশিংটন৷ দুই দেশের প্রক্সি ওয়ার অনেকটাই যুদ্ধাবস্থায় রূপ নিয়েছে চলতি বছরের তিন জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জেনারেল কাসিম সোলেইমানিকে হত্যার পর৷