ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরু পর থেকে প্রতিদিনই গাজায় নিহত হচ্ছে অনেক মানুষ৷ জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে দেশে ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদ৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও হামলা বন্ধে সরব৷
বিজ্ঞাপন
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘ইসরায়লি বোমার আঘাতে, সন্ত্রাসী তৎপরতায় গাজায় ‘মৃতের সংখ্যা' ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে৷ শুধু সংখ্যা দিয়ে কি বোঝা যায় শিশু নারীসহ নিরস্ত্র মানুষদের ওপর সশস্ত্র বাহিনীর বর্বরতা, জীবনের হাহাকার ও ক্রোধ? বছরের পর বছর একই ঘটনার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যে শিশু শরীরে কিংবা হৃদয়ে জখম নিয়ে বড় হচ্ছে সে হাতে অস্ত্র নেবে না তো কী নেবে? দখলদার, গণহত্যাকারীর বিরুদ্ধে যে কোনো ধরনের প্রতিরোধই যুক্তিযুক্ত৷ জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধই তাই প্যালেস্টাইনের আরেক নাম৷
ছবিতে গাজা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ক্রমশ বাড়ছেই৷ তবুও হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কোনো লক্ষণ নেই৷ গাজার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
স্বজনের আর্তনাদ
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি ক্রমশ বাড়ছেই৷ ছবিতে স্বজনের মৃত্যুতে বিলাপ করছেন এক ফিলিস্তিনি৷ গাজায় এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে৷ ছবিটি ২১ জুলাই তোলা৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
বিমান হামলা চালানো হবে - ইসরায়েলের এমন সতর্কবার্তা শুনে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যাচ্ছে একদল ফিলিস্তিনি৷ ২২ জুলাই ছবিটি তোলা৷ মঙ্গলবার গাজায় হামলার পরিমাণ আরো বাড়িয়েছে ইসরায়েল৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসস্তূপের মাঝে আশ্রয়ের সন্ধান
সহায়সম্বল বলতে যা কিছু তা ঐ কাগজের বাক্সে৷ আর এই বাক্সসহ রাস্তায় হাঁটছে গাজার এই শিশুটি৷ তার পেছনে থাকা ধ্বংসস্তূপ একটি বাড়ির৷ গাজার পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি বিমান হামলায় বাড়িটি এভাবে ধসে গেছে৷
ছবি: Reuters
ধোঁয়ার কুণ্ডলী
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের বিমান হামলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে এই ধোঁয়া৷ ২২ জুলাই গাজা থেকে তোলা ছবি এটি৷ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন৷ কিন্তু তাঁর এই আহ্বান তেমন একটা আমলে নিচ্ছে না ইসরায়েল বা হামাস৷
ছবি: Reuters
বাদ পড়ছে না হাসপাতালও
গাজার মসজিদ, স্কুল এমনকি হাসপাতালেও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল৷ ফলে বেসামরিক প্রাণহানি বাড়ছে৷ ছবিতে গাজা সিটির আল-সাফিয়া হাসপাতালে শিশুদের মরদেহবাহী একটি লাশের ব্যাগ সরাচ্ছেন সেচ্ছাসেবীরা৷
ছবি: Marco Longari/AFP/Getty Images
গাধার গাড়িতে পালানো
গাধায় টানা গাড়িতে করে পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা৷ ছবিটি ২১ জুলাই তোলা৷ বলাবাহুল্য, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে গাজার বাইরে যাওয়া প্রায় অসম্ভব৷ কারণ অঞ্চলটির দুই দিক ঘিরে রেখেছে ইসরায়েল৷ আর একদিকে মিসরের সঙ্গে সীমান্ত৷ অপর পাশে সমুদ্র৷ ফলে গাজার মধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করতে হয় তাদের৷
ছবি: Reuters
ইসরায়েলি সেনা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ‘স্টেজিং এরিয়ার’ দিকে তাকিয়ে আছেন ইসরায়েলি সেনারা৷ গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও পরিচালনা করছে ইসরায়েল৷ এতে ইসরায়েলি কয়েকজন সেনা নিহত হয়েছে৷
ছবি: Reuters
হামলার প্রতিবাদ
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে৷ ছবিটি গত ২০ জুলাই অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় তোলা৷
ছবি: Reuters
নিষেধাজ্ঞা, অগ্নিকাণ্ড
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ নিষিদ্ধ করে প্যারিস পুলিশ৷ প্রতিবাদে রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় সাধারণ জনতা৷ ছবিটি ২০ জুলাই তোলা৷ এই ঘটনার পর প্যারিসে অবস্থানরত ইহুদিদের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এথেন্সে প্রতিবাদ
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়৷ ছবিটি ১৭ জুলাই তোলা৷
ছবি: Reuters
ঢাকায় প্রতিবাদ
হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যকার সহিংস পরিস্থিতি নিরসনে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশিরা৷ ছবিটি ১৮ জুলাই তোলা৷ বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন৷
ছবি: Reuters
11 ছবি1 | 11
প্রশ্ন হলো, একটি ছোট্ট রাষ্ট্র ইসরায়েল কী ভাবে দশকের পর দশক পুরো বিশ্বকে রক্তাক্ত করতে পারছে? আসলে ইসরায়েলের অস্তিত্ব ও গায়ের জোর তৈরি করেছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিবাদী বিশ্বব্যবস্থা৷'
তিনি লিখেছেন, ‘ইরাক, লিবিয়ায় মার্কিনি গণহত্যা – ধ্বংসযজ্ঞে একদিকে ইসরায়েল অন্যদিকে সৌদি আরব ছিলো প্রধান সহযোগী৷ তাই ধর্মীয় পরিচয় নয়, মতাদর্শিক অবস্থানই গুরুত্বপূর্ণ৷ সুতরাং এই অবিরাম লড়াই ইহুদি বনাম মুসলমানের নয়, লড়াই মানুষ বনাম পুঁজির, জালেম বনাম মজলুমের, দখলদার বনাম দখলকৃতের, খুনি বনাম আক্রান্তের৷'
আমার ব্লগে জাকির মাহদিন লিখেছেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই৷ শুধু ফিলিস্তিন নয়, বিশ্বের দেশে দেশে যত হত্যা-জুলুম, অন্যায়-অবিচার ও সর্বপ্রকার অমানবিকতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ আমার দৃষ্টিতে তার সমস্যা অনেক৷'
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আলেমগণ ইসরায়েলি যুদ্ধ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছেন তার ফলাফল কী? এর চেয়ে বেশি কিছু করার যোগ্যতা কি আসলেই আমাদের নেই? আমরা যদি যুদ্ধের বিপক্ষে হই, তাহলে হামাস যখন ইসরায়েলি সৈন্য হত্যা করে তখন উল্লাস প্রকাশ করি কেন? হামাস কেন ফিলিস্তিনের সাধারণ নাগরিকদের বুলেট ও মিসাইলের সামনে ঠেলে দিচ্ছে? ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের এ পর্যন্ত যুদ্ধের ফলাফল কী? '
তিনি আহ্বান জানিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের৷ বলেছেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসায় আসা যায় না পৃথিবীতে এমন কোনো সমস্যা নেই৷
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য মানুষ৷ পরিসংখ্যান বলছে, নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই শিশু ও নারী৷ বোমার আঘাতে প্রাণ হারানো শিশুরা হয়ত যুদ্ধ কি তাই জানে না৷ গাজার শিশুদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
ধ্বংসের মাঝে বেঁচে থাকা
ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিধ্বস্ত একটি গাড়ি পরীক্ষা করে দেখছে এক ফিলিস্তিনি শিশু৷ ছবিটি গত ১৪ জুলাই তোলা৷ বিমান হামলায় গাজায় নিহতদের মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই নারী ও শিশু৷
ছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty Images
পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটছেন ফিলিস্তিনিরা৷ তবে গাজায় তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় নেই বললেই চলে৷ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা মনে করেন, ইসরায়েলের হামলা সহসা বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই৷
ছবি: Reuters
অপেক্ষা
ইসরায়েলি হামলায় আহত ফিলিস্তিনি এই ছেলেটি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মিশর সীমান্তে অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে মিশরে ঢোকার জন্য অপেক্ষা করছে৷ আহতদের চিকিৎসার সুবিধার্থে মিশর রাফা সীমান্ত খুলে দেয় ১০ জুলাই৷
ছবি: Said Khatib/AFP/Getty Images
স্কুলে রাতযাপন
বাড়িতে যে-কোনো মুহূর্তে পড়তে পারে ইসরায়েলের বোমা৷ তাই ঘরবাড়ি ছেড়ে এই শিশুরা আশ্রয় নিয়েছে গাজায় অবস্থিত জাতিসংঘের স্কুলে৷ এখানে যে বোমা পড়বে না, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ তবে আশঙ্কা কম৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
আতঙ্ক
বাড়ির উপরে উড়ছে ইসরায়েলি ড্রোন৷ আর সেটাই দেখছে এই শিশুটি৷
ছবি: Thomas Coex/AFP/Getty Images
ইয়াসমিনের জানাজা
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলায় প্রাণ হারায় চার বছরের শিশু ইয়াসমিন৷ ছবিটি ১০ জুলাই তার জানাজার সময় তোলা৷
ছবি: Reuters
বিনা অপরাধে শাস্তি
গাজার শিশুরা জানে না তাদের অপরাধ কি? কেনই বা বোমা হামলার নির্মম শিকার তারা? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটারেও এমন প্রশ্ন করেছেন অনেকে৷ গত ১৪ জুলাই তোলা ছবিতে চাচার মৃত্যুতে কাঁদছে দুই শিশু৷
ছবি: Mahmud Hams/AFP/Getty Images
প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়
ছবিটি ২০১২ সালের এপ্রিলে তোলা৷ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে জাতিসংঘের স্কুলে নিয়ে যাচ্ছে তার এক সহপাঠী৷ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহতও হচ্ছে অসংখ্য শিশু৷ পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের৷ তবে এই শিশুটি ইসরায়েলি হামলায় দৃষ্টি হারিয়েছে কিনা জানা যায়নি৷
ছবি: Reuters
নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
ইসরায়েলের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান করছেন৷ তবে গাজার দু’দিকে ইসরায়েল, একদিনে মিশর এবং অপর পাশে সমুদ্র৷ এই অবস্থায় নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর৷ তবুও প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
হামলা নতুন নয়
গাজায় ইসরায়েলের হামলা নতুন নয়৷ হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব সেদেশ দেয় বিমান হামলার মাধ্যমে৷ আর তাতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণ হারায় নারী, শিশু এবং হামাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন মানুষ৷
ছবি: Reuters
10 ছবি1 | 10
‘আমি লাশ হয়ে পড়ে আছি
রক্তাক্ত দেহ, মাথার ঘিলু বের হয়ে রয়েছে
আসে পাশে আরও অনেক লাশ
আমার আব্বার, আমার আম্মার
আমার দাদু, আমার দাদী
আমাদের লাশের ছবিতে
ব্যবসা করা শুরু করেছ
মানববন্ধন, মিছিল আর
ফেসবুকে স্ট্যাটাস.....
আজ আমরা লাশ হচ্ছি
কাল না তোমাদের সন্তানেরা
এমন লাশ না হয়ে যায়...'
ফেসবুক পাতায় সাংবাদিক আবু সুফিয়ান লিখেছেন,‘ইসরায়লি আগ্রাসনের তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার পরদিন আবারো বোমা বিস্ফোরণে তিন শিশুসহ ২৫ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল৷ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের অনুরোধে ৪৭ সদস্য বিশিষ্ট কাউন্সিলটি ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তদন্ত চেয়ে ভোট নেয়৷ ভোটগ্রহণের ফলাফল হল – তদন্তের সপক্ষে ভোট প্রদান করেছে ২৯টি রাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশসহ ভোটপ্রদানে বিরত ছিল মোট ১৭টি রাষ্ট্র এবং তদন্তের বিপক্ষে একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে ভোট দিয়েছে ইসরায়েলের বন্ধু রাষ্ট্র অ্যামেরিকা৷'