ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের একটি দাতব্য সংস্থায় লাদেনের ভাই অনুদান দিয়েছিলেন বলে যুক্তরাজ্যের এক সংবাদপত্রের দাবি। শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিজ্ঞাপন
চরম বিতর্কে যুক্তরাজ্যের রাজ পরিবার। দ্য সানডে টাইমসের অনুসন্ধানমূলক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে ওসামা বিন লাদেনের ভাই বাকর বিন লাদেনের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করেন প্রিন্স চার্লস। তারপরেই এক মিলিয়ন পাউন্ড দান করেন বাকর। চার্লসের একটি দাতব্য সংস্থায় ওই টাকা অনুদান হিসেবে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়নি।
প্রেমের কারণে যতবার বিব্রত ব্রিটিশ রাজপরিবার
প্রেম ও বিয়ের ঘটনায় একাধিকবার বিব্রত হতে হয়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবারকে৷ এমনই কয়েকটি ঘটনা জানুন ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Mary McCartney/Queen Elizabeth II
চার্লস ও ক্যামিলা
বিয়ের ১২ বছর পর ১৯৯২ সালে লেডি ডায়ানার সাথে বিচ্ছেদ হয় যুবরাজ চার্লসের৷ মনোমালিন্য ছাড়াও এই বিচ্ছেদের পেছনে অন্যতম কারণ ছিল চার্লসের প্রাক্তন প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কার বোলস৷ রাজপরিবারের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ২০০৫ সালে ক্যামিলাকে বিয়ে করেন চার্লস৷ এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেননা চার্লসের মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও তাঁর পিতা ফিলিপও৷
ছবি: AP
ডায়ানা ও দোদি
চার্লসের সাথে বিবাহিত থাকাকালীন এবং বিচ্ছেদের পরেও একাধিক পুরুষের সাথে জুড়তে থাকে ডায়ানার নাম৷ এরমধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মিশরের চলচ্চিত্র প্রযোজক দোদি ফায়েদের সাথে তাঁর সম্পর্ক৷ ১৯৯৭ সালে প্যারিসের যে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ডায়ানা সেই গাড়িতে তাঁর সাথে ছিলেন ফায়েদও৷ ডায়ানার জীবনযাপন বিষয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের অসন্তোষ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আলোচিত হয়েছে৷
ছবি: dapd
রাজকুমারী অ্যান
চার্লসের ছোট বোন রাজকুমারী অ্যানের সাথেও জড়িয়ে ছিল নানা পুরুষের নাম, যার মধ্যে অন্যতম ক্যামিলার সাবেক স্বামী অ্যান্ড্রু পার্কার বোলসও৷ এছাড়া, অ্যানের স্বামী মার্ক ফিলিপসের নামও জড়ায় নানা কেচ্ছার সাথে৷ শুধু তাই নয়, অ্যান-মার্ক বিচ্ছেদের ফলে সংবাদমাধ্যমে আলোচিত হয় ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিচ্ছেদ-বিরোধিতা কমার প্রবণতা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/PA Wire/G. Fuller
মার্গারেট ও পিটার টাউনসেন্ড
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছোট বোন রাজকুমারী মার্গারেট৷ মার্গারেট প্রথম শিরোনামে আসেন পিটার টাউনসেন্ডের সাথে তাঁর প্রেমের কারণে৷ সেই সময় বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে এমন কারো সাথে রাজপরিবারের সদস্যের বিয়ে হওয়া ছিল অসম্ভব৷ পরিবারের চাপে টাউনসেন্ডকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন মার্গারেট, কিন্তু পরবর্তীতে চিত্রগ্রাহক অ্যান্টনি আর্মস্ট্রং-জোনসের সাথে তাঁর বিয়েও সৃষ্টি করে বহু বিতর্ক৷
ছবি: AFP/Getty Images
অষ্টম এডোয়ার্ড ও ওয়ালিস সিম্পসন
মার্গারেটেরও আগে মার্কিন নাগরিক ও বিবাহ-বিচ্ছেদপ্রাপ্ত ওয়ালিস সিম্পসনকে বিয়ে করার জন্য রাজকর্তব্য থেকে সরে আসেন অষ্টম এডোয়ার্ড৷ সেই সময় রাজার আসনে বসতে চলা এডোয়ার্ডের এই পদক্ষেপ আলোড়ন তোলে৷ এর ফলে, তাঁর ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হন৷ এডোয়ার্ড-ওয়ালিসের বিবাহ এখনও রাজপরিবারের অন্যতম বিতর্কিত ঘটনা হিসাবে আলোচিত হয়৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
অ্যান্ড্রু
চার্লসের ছোট ভাই অ্যান্ড্রুরও পিছু ছাড়েনি বেশ কয়েকটি বিতর্কিত ঘটনা৷ যেমন মার্কিন অভিনেত্রী কু স্টার্কের সাথে তার সম্পর্ক৷ শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে সারা ফার্গুসনকে বিয়ে করলেও কু স্টার্কের কন্যার ‘গডফাদার’ হন অ্যান্ড্রু, যা নতুন করে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে তাকে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/S. Tan
হ্যারি ও মেগান
মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলের সাথে রাজপুত্র হ্যারির বিয়ের পর থেকেই চলছিল নানা রকমের জল্পনা৷ বুধবার একটি বিবৃতি দিয়ে তাঁরা জানান যে রাজকর্তব্য থেকে সরে আসতে চলেছেন তাঁরা৷ রাজপরিবারের সদস্য হিসাবে নিজেদের দায়িত্ব ছেড়ে ব্যক্তিগত জীবনে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চান বলে জানান এই জুটি৷ ইতিমধ্যেই তাঁদের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাকিংহাম প্যালেস৷
ছবি: picture-alliance/AP/D. Lipinsky
7 ছবি1 | 7
৯/১১-র মূল চক্রী ওসামা বিন লাদেনের ভাইয়ের কাছ থেকে কেন অনুদান গ্রহণ করলেন চার্লস, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ পরিবারের অফিস সূত্র অনুদানের কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু বিষয়টির সঙ্গে চার্লসের নাম যেভাবে জড়িয়েছে, তার প্রতিবাদ করেছে তারা। তাদের বক্তব্য, ওই দাতব্য সংস্থার পাঁচজন অছি বা ট্রাস্টির যৌথ সিদ্ধান্তেই ওই অনুদান গ্রহণ করেছিল। প্রিন্স চার্লসের সেখানে কোনো হাত ছিল না। তাকে কাঠগড়ায় তোলারও কোনো অর্থ হয় না।
তবেচার্লস যে বিন লাদেনের ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং অনুদান স্বীকার করেছিলেন, তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি চার্লসের অফিস।
ওই দাতব্য সংস্থার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, যে পরিবারের কাছ থেকে অনুদান নেয়া হয়েছে, তারা কোনো অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত বলে খবর পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে নির্দিষ্ট খোঁজখবর নেওয়ার পরেই অনুদান গ্রহণ করা হয়েছিল।
অনুদান নেয়া নিয়ে এর আগেও বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন প্রিন্স চার্লস। কাতারের রাজার কাছ থেকে ব্যাগে করে তিন মিলিয়ন ডলার অনুদান নিয়েছিলেন তিনি। তা নিয়েও তীব্র বিতর্ক হয়েছিল। অনুদান সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তদন্তও চলছে তার সংস্থার বিরুদ্ধে। তারই মধ্যে নতুন এই তথ্য প্রকাশ করল যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম।