1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুবলীগের নিজস্ব ‘ট্রাইব্যুনালে' চাঁদাবাজির বিচার

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

চাঁদাবাজিসহ যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব অনৈতিক কাজের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিচার হবে যুবলীগের নিজস্ব ‘ট্রাইব্যুনালে'৷ বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য এরইমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷

Bangladesch - DW Chefredakteurin Ines Pohl, Leiterin DW-Asien Debarati Guha treffen Premierminister Sheikh Hasina in Dhaka
ছবি: DW

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘যুবলীগের এই ট্রাইব্যুনাল চালু আছে অনেক দিন ধরেই৷ ট্রাইব্যুনালের প্রধান হলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান৷ আর প্রেসিডিয়াম সদস্যরা এর মেম্বার৷ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ট্রাইব্যুনাল বসে৷''

গত শনিবার আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কামটির বৈঠকে ছাত্রলীগ থেকে শোভন-রাব্বানীকে সরিয়ে দেয়া ছাড়াও যুবলীগে শুদ্ধি অভিযানের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা৷ শুধু তাই নয় তিনি কয়েকজন নেতার নাম ধরে তাদের ‘ অপকর্মের' কথাও তুলে ধরেন৷ জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে কিছু ছবিও দেখান৷ তিনি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনও আংশিক তুলে ধরেন৷ বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন নেতা জানান,‘‘শেখ হাসিনা যুবলীগের কয়েকজন নেতার নাম ধরে বলেন ওরা শোভন-রাব্বানীর চেয়েও খারাপ৷''

অবশ্য এটাই প্রথম নয়৷  গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে গণবভবনে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদকে যুবলীগ দক্ষিণের কমিটি ভেঙে দিতে বলেন৷  কাকরাইলে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের ভবন নির্মান থেকে চাঁদা দাবীর অভিযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী তখন ক্ষুব্ধ হন৷ আর চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের বিরুদ্ধে৷  জানা গেছে তার বিরুদ্ধে ‘চরম' ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশও দেয়া হয়েছিল৷ পরিস্থিতি বুঝে তখন তিনি দেশের বাইরে চলে যান৷ এরপর প্রভাবশালী মহলে দেন দরবার করে তার জন্য৷ পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন৷ তারও ওপর চাপ এখনো আছে৷ তার সহযোগীরা এখানো বেপরোয়া৷ দক্ষিণেরই সাংসগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে চলাফেরা করেন৷ তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসারও অভিযোগ আছে৷

হারুন অর রশীদ

This browser does not support the audio element.

জানাগেছে যুবলীগের কিছু নেতার এখন আয়ের প্রধান উৎস ‘ ক্যাসিনো' ব্যবসা৷ সেগুন বাগিচা এলাকার একটি ভবনেই আছে এরকম তিনটি ক্যাসিনো৷ আর ঢাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে কম করে হলেও ৫০টি ক্যাসিনো৷ জুয়া খেলার  ব্যবসার জন্যই এইসব ক্যাসিনো গড়ে তোলা হয়েছে৷ আর জুয়ার ব্যবসা করে কেউ কেউ ফুলে ফেঁপে উঠছেন৷ তারা আবার দেশের বাইরেও ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে যান৷ ক্যাসিনোগুলোর মূল নিয়ন্ত্রণ ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের শীর্ষ কয়েক নেতার হাতে৷ কেন্দ্রীয় যুবলীগের অন্তত: দুজন নেতাও এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযযোগ আছে৷

এদিকে কেন্দ্রীয়  এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বাড়ি ও জমি দখলের৷ ঢাকার পুরো মিরপুর এলাকায় সে এই কাজে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে৷  তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার পাশেই একটি জেলায় ৷ সে সংসদ নির্বাচনে গ্রামের বাড়ি এলাকা  থেকে মনোনয়নেরও চেষ্টা করেছিল৷ আর সয়েদাবাদের বাস টার্মিনাল, শিক্ষাভবনসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন কয়েকজন যুবলীগ নেতা৷

যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট তার বিরুদ্ধে আঞ্জুমানের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ তিনি দাবি করেন,‘‘আমার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্ত হয়েছে৷ কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি৷'' আর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র উঁচিয়ে চলার অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি৷

ইসমাইল হোসেন সম্রাট

This browser does not support the audio element.

তার এলাকার কিছু যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘‘এগুলো কারা করে আমার জানা নাই৷''

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ বলেন,‘‘সম্রাটের বিরুদ্ধে আঞ্জুমানের অভিযোগ নিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছিলাম ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য৷ তবে আঞ্জুমানের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই বলে লিখিত দেয়া হলে আমরা আর এগোতে পারিনি৷ তবে আমরা বেশ কয়েক জনের বিচার করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি৷''

যুবলীগ দক্ষিণের কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলে ,‘‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী গণবভনে এক অনুষ্ঠানে যুবলীগ দক্ষিণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সত্য৷ তবে তখন তিনি কমিটি ভেঙে দিতে বলেছেন কিনা আমার তা জানা নেই৷ কারণ আমি একটু দূরে ছিলাম৷ তবে তিনি কমিটি যদি ভেঙে দিতে বলতেন তাহলে ভেঙেই দিতে হত৷ কারণ তিনি আমাদের নেত্রী৷ আর শনিবারের ওয়ার্কিং কামিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যুবলীগ নিয়ে কী বলেছেন তা আমাদের জানা নেই৷ আমরা সেখানে ছিলামনা৷ আমাদের চিঠি দিয়েও তিনি কিছু জানাননি৷ আমরা পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি৷''

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নিছবি: Palash Sikder

তবে যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তা আমলে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ এজন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে৷ আর এই সব অভিযোগের বিচারের জন্য সহসাই ট্রাইব্যুনাল বসবে বলে জানান তিনি৷ তিনি বলেন,‘‘যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যেসব অভিযোগ আসছে তা আমরা সংগ্রহ করছি৷ আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রধানমন্ত্রী আমাদের কিছু না জানালেও আমরা ব্যবস্থা নেব৷ আর সেই ব্যবস্থা হবে আমাদের ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে৷''

ইসমাইল হোসেন সম্রাট বলেন,‘‘আমরা শুদ্ধি অভিযানকে স্বাগত জানাই৷ প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন তাই হবে৷''

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে বার বার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি৷ বিভিন্ন সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, এই শুদ্ধি অভিযানের তালিকায় কেন্দ্রীয় যুবলীগের তিন এবং ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর মিলিয়ে আরো সাত জন নেতার নাম আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ