রাজপ্রাসাদ নেই, মসনদও নেই, কিন্তু সিঙ্গাপুরে রাজকুমার, রাজকুমারীরা আছেন৷ দেখে চেনা যায় না তাদের৷
বিজ্ঞাপন
যাদের নামের সঙ্গে ‘টেঙ্কু' আছে, বুঝতে হবে তারাই রাজকুমার বা রাজকুমারী৷ কোন বংশের রাকজুমার বা রাজকুমারী? কেন সুলতান হুসেইন শাহর কথা মনে নেই? তার সঙ্গে চুক্তি করেই তো সিঙ্গাপুরে উপনিবেশিক শাসন শুরু করেছিল ব্রিটেন৷
গত শতকের শেষ দিকেও জরাজীর্ন এক রাজপ্রাসাদে গাদাগাদি করে থাকতেন তারা৷ তখন রাজপ্রাসাদে অবশ্য সুলতানের ৭৯জন বংশধরের মধ্যে মাত্র ১৪জন ছিলেন৷ মাসোহারার আশ্বাস দিয়ে তাদের রাজপ্রাসাদ ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সরকার৷
সেই রাজপ্রাসাদ এখন জাদুঘর৷ রাজবংশের হয়েও টেংকু শওল, টেংকু আজান, টেংকু ইন্দ্র, টেংকু ফজল বা প্রিন্সেস পুতেরিকে এখন সেখানে যেতে হয় বেড়াতে৷
তারা যে এখন সাধারণ মানুষ!
টেংকু ইন্দ্র কনসালট্যান্ট, তার ছেলে টেংকৃ আজান ব্যবসায়ী, প্রাসাদচ্যুত হওয়ার পর কিছুদিন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করা টেংকু ফয়জল ট্যাক্সিচালক আর টেংকু পুতেরি এখন বায়োটেক ফার্মের কর্মী৷
টেংকু ইন্দ্র বলছিলেন, ‘‘আপনি রাজপরিবারের কিনা তা আর এখন গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো পারিবারিক সূত্রে পাওয়া কোনো পরিচয় দিয়ে নয়, এখন জীবিকা নির্বাহ করতে হয় মেধা দিয়ে৷''
এসিবি/কেএম (রয়টার্স)
কেন সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যাবেন?
পরিচ্ছন্ন রাস্তা, অপূর্ব সুউচ্চ ভবন এবং আন্তর্জাতিক স্ট্রিট ফুড৷ ছবিঘরে দেখে নিন সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যাওয়ার কিছু কারণ৷
ছবি: picture-alliance/Global Travel Images
মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল
সিঙ্গাপুরের এই স্থাপত্যটির নিমার্ণশৈলী অপূর্ব এবং অসাধারণ৷ মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেলকে সংক্ষেপে এমবিএস বলা হয়৷ এটি বর্তমানে সিঙ্গাপুরের নতুন ল্যান্ডমার্কে পরিণত হয়েছে৷ এটির উচ্চতা ২০০ মিটার, উপরে রয়েছে অসাধারণ একটি ছাদ৷ আর সেখানে আছে স্কাই পার্ক৷
ছবি: DW/A. Termèche
সিঙ্গাপুরের মাইলফলক
এই সিংহটি সিঙ্গাপুরের প্রতীকী প্রাণী৷ সংস্কৃতে ‘সিঙ্গা’ অর্থ সিংহ৷ বন্দরনগরীটি এশিয়ার মডেল নগরী হিসেবে গড়ে উঠেছে৷ এই মার্লিওন ভাস্কর্যটি একটি সিংহ, যার লেজটি মাছের মতো৷ এটি শহরের একটি ল্যান্ডমার্ক৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/G. Hellier
মেরিনা বে
‘স্টপ ওভার’ গন্তব্য হিসেবে সিঙ্গাপুর ভীষণ জনপ্রিয়৷ শহরটির বেশিরভাগ এলাকা হেঁটেই দেখা যায়৷ অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হলো ‘মেরিনা বে’ বা মেরিনা উপসাগর৷ ছবির ডানদিকে পুরোনো ঔপনিবেশিক ভবনগুলো সুউচ্চ ভবনগুলোর সাথে পাল্লা দিতে পারেনি৷ বাঁ পাশে গড়ে উঠছে নতুন সিঙ্গাপুর, আছে মেরিনা বে স্যান্ডস হোটেল, বিশাল শপিং মল এবং পদ্মফুলের আকৃতিতে আর্টসায়েন্স জাদুঘর৷
ছবি: picture-alliance/robertharding/G. Hellier
আকাশছোঁয়া ছাদ
এমবিএ’র সবচেয়ে লোভনীয় বস্তুটি হলো এর অসাধারণ সুইমিং পুল৷ ৫৭ তলায় অবস্থিত এই পুলে যখন সাঁতার কাটবেন, মনে হবে পুরো সিঙ্গাপুর আপনার পায়ের নীচে৷ তবে এমবিএ-তে যদি একটি রুম বুক করে থাকেন, তবেই এখানে প্রবেশের সুযোগ মিলবে৷ আর এজন্য কেবল একটি সিঙ্গেল রুমের জন্যই আপনাকে কমপক্ষে গুণতে হবে ৩০০ ইউরো!
ছবি: picture alliance/robertharding
বাগানের শহর
সিঙ্গাপুরে অন্তত ৬০ লাখ মানুষের বাস৷ এশিয়ার সবুজতম শহর বলা হয় এটিকে৷ উপসাগরের পাশে বাগানগুলো শহরের সবুজ প্রকল্পের অংশ৷ স্কাইওয়ে বা এরিয়াল ওয়াকওয়েতে হাঁটলে উপর থেকে ১০১ হেক্টর কমপ্লেক্সের অসাধারণ সৌন্দর্য চোখে পড়বে৷ তবে সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য দেখা যায় রাতের বেলায়, যখন সুউচ্চ কৃত্রিম গাছগুলো আলোয় ঝলমল করে ওঠে৷
ছবি: DW/A. Termèche
বে সাউথ গার্ডেন
এখানকার পার্কে রয়েছে বিশাল দু’টি গ্রিন হাউস৷ বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ কাঁচের গ্রিন হাউস হিসেবে ফ্লাওয়ার ডোম গ্রিনহাউসটি বিশ্ব রেকর্ডের গিনেস বুকে স্থান করে নিয়েছে৷ ছোটটির নাম ‘ক্লাউড ফরেস্ট’৷
ছবি: DW/A. Termèche
সাগর তীরে এসপ্লানেড থিয়েটার
সিঙ্গাপুরে যেসব ভবন নির্মিত হয়েছে, সবগুলোতেই প্রকৃতিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে৷ এমনকি থিয়েটার বানানোর ক্ষেত্রেও৷ থিয়েটারটিতে ২০০০ আসন রয়েছে, একটি কনসার্ট হল রয়েছে ১৬শ আসনের এবং আছে একটি শপিং মল৷ এর আকৃতি ডুরিয়ান (বাংলাদেশের কাঁঠালের মতো) ফলের মতো৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H.-P. Lochmann
অরচার্ড রোড
সিঙ্গাপুরে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ কেনাকাটা৷ শহরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অভিজাত আর ঝলমলে শপিংমল৷ সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এগুলো৷ সপ্তাহের সাতদিনই খোলা৷ এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় শপিং এলাকা হলো অরচার্ড রোড৷
ছবি: picture-alliance/dpa/How Hwee Young
চীনা নববর্ষ উদযাপন
সিঙ্গাপুরে বৌদ্ধ, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সব ধর্মাবলম্বী শান্তিতে বসবাস করেন৷ তাই চায়না টাউন, লিটল ইন্ডিয়া বা আরব স্ট্রিট অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত৷ বিশেষ করে যখন চীনা নববর্ষ উদযাপন হয়, তখন এসব সড়ক জমজমাট হয়ে ওঠে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Morrison
ঐতিহ্য
বিশ্বের অন্যতম ধনী শহরহুলোর একটি হলো সিঙ্গাপুর৷ তবে শহরের যত চাকচিক্যই থাকুক না কেন, এখানকার মানুষ নিজেদের ঐতিহ্যকে বিসর্জন দেননি৷ হিন্দু মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, মসজিদ এবং চার্চগুলো এখানকার সংস্কৃতি আর প্রথার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/prisma
খাবারের দোকান
সিঙ্গাপুরের অধিবাসীরা খেতে ভালোবাসেন৷ যাঁরা বিভিন্ন অফিসে কাজ করেন, দুপুরের খাবারের সময় তাঁদের অনেকেই রাস্তায় খাবারের দোকানগুলো থেকে নানা ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন৷ এখানকার স্ট্রিটফুড খুবই জনপ্রিয়৷