1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যেতে চান না অনেক রোহিঙ্গা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৪ নভেম্বর ২০১৮

 বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গাদের প্রথম দল বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে যাবে৷ প্রথম দিন ৩০টি পরিবারের ১৫০ জন রোহিঙ্গার যাওয়ার কথা৷ তবে অনেকেই ফিরতে চাইছেন না৷ এমনকি ক্যাম্প থেকে পালানোর খবরও পাওয়া যাচ্ছে৷

Bangladesch Rohingya Flüchtlinge in Kutupalong Flüchtlingslager
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/T. Chowdhury

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এই কাজে সহায়তার প্রক্রিয়ায় থাকলেও সংস্থাটি ডয়চে ভেলেকে জানায় যে, মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়৷ শরণার্থী, ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়েছে কিনা, সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই৷''

তাঁর দাবি,‘‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমার – দু'দেশই এখন প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত৷''

‘‘কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়েছে কিনা, এখনো নিশ্চিত নই''

This browser does not support the audio element.

জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিহ্নিত করা ৪৮৫টি পরিবারের মোট ২২৬০ জন রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফেরত নিতে রাজি হয়েছে৷তবে দেশটি প্রতিদিন মাত্র ১৫০ জন করে ফেরত নেবে৷ এ জন্য টেকনাফের কেরানতলীতে একটি ও নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় আরেকটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে৷ ১৫ নভেম্বর প্রথমে তাঁদের সেখানে নিয়ে রাখা হবে৷ তারপর মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে৷ দু' দেশের প্রতিনিধিরাই তখন সেখানে থাকবেন৷ এদিকে এরইমধ্যে রোহিঙ্গাদের একাংশ মিয়ানমারে ফিরতে অনীহা প্রকাশ করেছে৷ টেকনাফের উনচিপ্রাং অনিবন্ধিত ক্যাম্পের আবুল কাশেম জানান, ‘‘যতদিন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা হবে, ততদিন আমরা মিয়ানমারে যাবো না৷ আমাদের জায়গা-সম্পত্তি যা ছিল, তা ফিরিয়ে দিলে তবেই আমরা যাবো৷ ওখানে এখনো অত্যাচার করা হচ্ছে, ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে৷ তাই আমরা নিরাপত্তা পাবো না৷''

‘সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে বলা হয়েছে, কাউকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফেরত পঠানো হবে না৷''

This browser does not support the audio element.

একই ক্যাম্পের আরেকজন রোহিঙ্গা মোহাম্মদ আমিন বলেন, ‘‘আমরা অনেক দুঃখ-কষ্ট স্বীকার করে বাংলাদেশে এসেছি৷ আমাদের নির্যাতন করা হয়েছে৷ মা-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে৷ আমাদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে৷ জমি কেড়ে নেয়া হয়েছে৷ এই অত্যাচার, নির্যাতেনের বিচার করতে হবে৷ আমাদের সবকিছু ফিরিয়ে দিতে হবে৷ নিরপত্তা দিতে হবে৷ তাহলে আমরা যাবো, না হলে যাবো না৷''

যতদিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হবে তত দিন আমরা যাবনা

01:03

This browser does not support the video element.

নুরুল হক নামের এক তরুণ রোহিঙ্গা উখিয়ার বালুখালি ক্যাম্পে ছিলেন৷ কিন্তু রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পঠানো হবে শুনে তিনি ৩-৪ দিন আগে টেকনাফের উনচিপ্রাং ক্যাম্পে পালিয়ে এসেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের বর্মা (মিয়ানমার) পাঠানো হবে শুনে আমি ক্যাম্প থেকে এখানে চলে এসেছি৷ আমরা যাবো না৷ আমাদের আবার তারা নির্যাতন করবে৷''

এ প্রসঙ্গে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম বলেন, ‘‘কেউ ক্যাম্প থেকে পালিয়েছে কিনা – এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত কোনো তথ্য পাইনি৷ ‘মাথা' গণনা শেষে আমরা বুঝতে পারব আসলেই কেউ পালিয়েছে কিনা৷ আমরা প্রাথমিক তালিকা থেকে প্রত্যাবাসন শুরু করছি৷''

আমাদের সবকিছু ফিরিয়ে দিতে হবে: মোহাম্মদ আমিন

01:35

This browser does not support the video element.

প্রত্যাবাসন তালিকায় যাঁদের নাম আছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছে ইউএনএইচসিআর৷ মঙ্গলবার তারা ১১টি পরিবারের সাথে কথা বলেছে৷ বুধবার আরো ১৯টি পরিবারের সঙ্গে কথা বলার কথা৷ রোহিঙ্গারা আদৌ ফেরত যেতে ইচ্ছুক কিনা, তা-ও তারা জানছেন৷ গত ২৮ অক্টোবর ৪৮৫টি পরিবারের ২২৬০ জন রোহিঙ্গার তথ্য সরবরাহ করে অনুরোধ করা হয় যে, তাঁরা যেন এই পরিবারগুলির সাথে যোগাযোগ করে তাঁদের মতামত সংগ্রহ করেন৷

জানা গেছে, এই প্রত্যাবাসন স্থল সীমান্ত দিয়ে হবে৷রোহিঙ্গারা ঘুনদুম-বুথিডং সীমান্ত দিয়ে রাখাইনে প্রবেশ করবেন৷

কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআর-এর পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার যোশেফ সূর্য ক্রিপুরা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কারুর কারুর ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর আমরা পর্যবেক্ষণ করছি৷ এছাড়া পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় আমরা যুক্ত হওয়ার কাজও করছি৷ সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে কাউকে তাঁদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত পঠানো হবে না৷''

বর্মা পাঠানো হবে শুনে আমি ক্যাম্প থেকে চলে এসেছি: নুরুল হক

00:27

This browser does not support the video element.

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘সবাই স্বেচ্ছায় ফিরে যাচ্ছেন কিনা, সেটা জানার কাজ করছি আমরা৷ অ্যাসেসমেন্ট শেষ না হলে বলা যাবে না যে সবাই স্বেচ্ছায় ফিরে যাচ্ছেন কি যাচ্ছেন না৷ তবে আমাদের কথা হলো, মিয়ানমারে এখানো ফিরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি৷ তাই আমাদের মতে, সেখানে ফেরত পাঠানোর মতো পরিবেশ এই মুহূর্তে নেই৷''

২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন৷ এতদিন পর যে প্রক্রিয়ায় মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়া শুরু করতে যাচ্ছে, তাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ