1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যেসব কারণে এবারের গ্রন্থমেলা আলাদা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২ মার্চ ২০১৯

বেশি বই প্রকাশ ও বিক্রি- এটিই অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রকৃতি৷ তবে এবারের বইমেলায় এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে থিম৷ লেখকরা সরাসরি কথা বলেছেন৷ দেখা গেছে, নন-ফিকশনের প্রতি পাঠকের ঝোঁক৷ আর বেড়েছে তরুণ লেখকের সংখ্যা৷

Buchmesse Bangladesch
ছবি: DW/M. Mostafigur Rahman

এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা ছিল বৃষ্টি বিঘ্নিত৷ বেশ কয়েকবার স্টলগুলো বৃষ্টি উপদ্রপের শিকার হয়েছে৷ তারপরও এবার বই বিক্রি গত বইমেলার চেয়ে বেশি৷ আর বই প্রকাশও হয়েছে বেশি৷ বৃষ্টির কারণে এবার মেলা হয়েছে দুইদিন বেশি৷ ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ হয়েছে ২ মার্চ৷ আর এ কারণেও লেখক প্রকাশকরা বেজায় খুশি৷

বাংলা একাডেমি ২৮ তারিখ পর্যন্ত যে হিসাব দিয়েছে, তাতে এবার নতুন বই এসেছে ৪,৬৮৫টি৷ আর এই বইয়ের মধ্যে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা ১১৫১টি বলে বাংলা একাডেমি জানিয়েছে৷ বই বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকার, যা গত বছরের তুলনায় শতকরা ১০ ভাগ বেশি৷

‘ব্যতিক্রম ছিল থিমের কারণে’

This browser does not support the audio element.

পাঞ্জেরি প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী কামরুল হাসান শায়খ মনে করেন, ‘‘এবারের বইমেলা ব্যতিক্রম ছিল তার থিমের কারণে৷ পুরো বইমেলাকে সাজানো হয় আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়৷ ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত সময়কালকে ধরে বইমেলাকে সাজানো হয়, যা একটি নতুন আকর্ষণের জায়গা সৃষ্টি করেছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘এর বাইরে এবার পাঠক বেড়েছে বলে আমরা মনে করি৷ বিশেষ করে তরুণ পাঠকদের আগ্রহ ছিল দেখার মতো৷ যারা বলছেন এই ডিজিটাল যুগে ছাপা বইয়ের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ কমবে তাদের ধারণা অন্ততঃ এবারের বইমেলা ভুল প্রমাণ করেছে৷ আর তরুণ লেখকদের বইও এসেছে অনেক৷ তরুণ লেখকও বেড়েছে৷ নন-ফিকশনের পাঠক বেড়েছে৷ বই বেড়েছে৷''

তারপরও তিনি মনে করেন, ‘‘হুমায়ুন আহমেদ এখনো রাজত্ব করছেন৷ আগের মতো অত প্রবল না হলেও এককভাবে তিনিই এখনো শীর্ষে৷''

এবারের বই মেলায় লেখকরা তাদের নিজেদের বই নিয়ে, নিজেদের ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন৷ ‘লেখক বলছি' অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগ করে দিয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ৷ মেলা চলাকালে প্রতিদিন লেখকরা তাদের বইয়ের কথা বলেছেন, লেখালেখির কথা বলেছেন, সৃষ্টিশীলতার কথা বলেছেন৷ আর বই প্রেমিক শ্রোতারাও শুনেছেন তাদের কথা৷

‘সৃষ্টি নিয়ে কথা বলার সুযোগ ভালো লেগেছে’

This browser does not support the audio element.

তরুণ লেখক শেরিফ আল সায়ার এই আয়োজনটির প্রশংসা করেছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘লেখকদের তাঁর সৃষ্টি নিয়ে কথা বলার এই সুযোগ দেয়ার কাজটি আমার ভালোই লেগেছে৷ তবে আমরা সময় আরেকটু বাড়ানোর দাবি করেছিলাম৷ আর অংশগ্রহণের প্রক্রিয়াটি ছিল একটু দীর্ঘ ও জটিল৷ এটা আরেকটু সহজ করলে ভবিষ্যতে আরো লেখক অংশ নিতে পারবেন৷''

এই লেখকের সবচেয়ে ভালো লেখেছে এবারের বই মেলার স্টল বিন্যাস৷ যথেষ্ট জায়গা ছিল৷ লোকজন সহজেই হাঁটাচলা করতে পেরেছেন৷ ঢোকার জন্য অনেক প্রবেশ পথ ছিলো, যা ভোগান্তি কমিয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এবার বইমেলা বৃষ্টির কারণে দুইদিন বেড়েছে৷ বাণিজ্য মেলার সময় বাড়ে, বইমেলার বাড়ে না৷ এটা ছিল আমাদের আক্ষেপ৷''

সোহরাওযার্দী উদ্যানে বইমেলা সম্প্রসারণের পর থেকেই বই মেলার আয়তন বাড়ছে৷ এবার আরো বেড়েছে৷ এবারের বইমেলায় এ বছর ৫৫০টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৫০টি স্টল দেয়া হয়৷ আর প্যাভেলিয়ন ছিল ২৪টি৷ এর মধ্যে ১৪০টি স্টল ছিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে৷

‘মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে’

This browser does not support the audio element.

বাংলা একাডেমির পরিচালক এবং অমর একুশে গ্রন্থমেলার সদস্য সচিব জালাল আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বিজয় ১৯৫২ থেকে ৭১ নবপর্যায় - এটা ছিল আমাদের এবারের বই মেলার মূল থিম৷ আর এই থিমকে মাথায় রেখেই পুরো বইমেলার স্টল বিন্যাস থেকে শুরু করে সব ধরনের সাজসজ্জা করা হয়েছে৷ আর আমরা শিশুদের জন্য আয়োজনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি৷ শুধু শিশু পাঠক নয়, এবার শিশুদের লেখা বইও আমরা পেয়েছি৷ আর মেলার আয়তন বেড়েছে৷ শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা তৎপর ছিলাম৷''

তিনি বলেন, ‘‘এবার মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী ও বই প্রেমী এসেছেন৷ পাঠক, লেখক ও বই সবই বেড়েছে৷ বেড়েছে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা৷ আর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সামলে আমরা মেলা সচল রেখেছি৷ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি৷ মেলা বন্ধ রাখতে হয়নি৷''

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এবারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সামনে মেলাকে আরো সুন্দর ও নান্দনিক করতে চান৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ