গত ১২ বছর ধরে জার্মান জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ৷ বর্তমানে ইউরোপে আর কোনো দেশে এত দীর্ঘদিন সময় ধরে থাকা কোচ নেই৷ কেন তাঁর উপর এত ভরসা রেখেছে জার্মানি?
বিজ্ঞাপন
একটা কারণ, তিনি অতীত থেকে শিক্ষা আর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করে বর্তমানের জন্য তাঁর খেলোয়াড়দের প্রস্তুত করেন৷ ল্যোভ নিজেই জানিয়েছেন, তিনি নিজেকে স্বপ্নচারী হিসেবে দেখেন৷ জার্মানির ফুটবল প্রকাশনা ‘কিকার'কে তিনি বলেন, ‘‘নিজেদের প্রতিযোগিতামূলক রাখতে হলে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে৷ কয়েক বছর পর কেমন ধরনের ফুটবল খেলা হবে, সেসবের উত্তর আমাদের জানা থাকতে হবে৷''
জার্মানির বিশ্বকাপ দলে যারা আছেন
কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ শিরোপা ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েই জার্মানির দলটি সাজিয়েছেন৷ রাশিয়াতে লড়াইয়ের জন্য যে দল তিনি প্রস্তুত করেছেন, সেখানে পুরনোদের সঙ্গে রয়েছে কিছু নতুন মুখ৷ চলুন দেখে নেয়া যাক প্রাথমিক দলটি৷
ছবি: picture-alliance/ZB
মানুয়েল নয়ার
বিশ্বকাপ শুরুর আগে কি জার্মানির সেরা গোলরক্ষক পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন? ইনজুরির কারণে নয়ার লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকলেও জার্মান কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ তাঁর অধিনায়ককে ঠিকই দলে রেখেছেন৷
<br/>
<br/>
আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৪, গোল: ০, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/ZB
মার্ক আন্দ্রে ট্যার স্টেগেন
নয়ারের অনুপস্থিতিতে এফসি বার্সেলোনার প্রধান গোলরক্ষক ট্যার স্টেগেন জার্মান জাতীয় দলের গোলরক্ষকের ভূমিকা পালন করেন৷ জার্মানির বিশ্বকাপ দলেও তিনি আছেন দ্বিতীয় গোলরক্ষক হিসেবে৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৯ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: Reuters/G. Dukor
কেভিন ট্রাপ
যেহেতু এখনো মানুয়েল নয়ারের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া নিশ্চিত নয়, তাই চতুর্থ গোলরক্ষক হিসেবে কেভিন ট্রাপকে দলে রেখেছেন জার্মান কোচ৷ প্যারিস সঁ জার্মেইর এই গোলরক্ষকের আন্তর্জাতিক বড় ম্যাচে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা তেমন একটা নেই৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৩ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/SvenSimon/J. Kuppert
জেরোম বোয়াটেং
গত মার্চে ইনজুরির কবলে পড়ায় বোয়াটেংয়ের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু জার্মান দলের রক্ষণভাগের এই বিশ্বস্ত খেলোয়াড় আশাবাদী ছিলেন এবং দলের রাশিয়া যাত্রায় শরিক হতে পেরেছেন৷
<br/> <br/>আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭০ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture alliance /Sven Simon
মাটস হুমেলস
জার্মানির রক্ষণভাগের আরেক শক্তি মাটস হুমেলস এফসি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন৷ ল্যোভের কাছে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন হুমেলস৷ <br/> <br/>আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৬৩ গোল: ৫ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ১ বার
ছবি: picture alliance/sampics/S. Matzke
আন্টোনিও রুডিগার
রক্ষণভাগের দুই খেলোয়াড়ের ব্যাকআপ হিসেবে দলে রয়েছেন এফসি চেলসি’র আন্টোনিও রুডিগার৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৩ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Becker
নিকলাস শ্যুলে
বায়ার্নের তরুণ এই খেলোয়াড় প্রাথমিক দলে জায়গা পেলেও রাশিয়ার বিশ্বকাপে মাঠে নামতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৯ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/AA/A. Nasyrov
ইওস্যুয়া কিমিশ
রক্ষণভাগের এই খেলোয়াড় মধ্যমাঠেও বেশ পারদর্শী৷ তবে তাঁর চূড়ান্ত অবস্থান কী হবে তা ঠিক করবেন ল্যোভ৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৭ গোল: ৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/T. Eisenhuth
ইওনাস হেক্টর
লেফট-ব্যাকের এই খেলোয়াড়ের এফসি কোলনের সঙ্গে মৌসুমটা খুব একটা ভালো কাটেনি৷ ইনজুরির কারণেও ভুগেছেন তিনি৷ তা সত্ত্বেও দলের অন্যতম ভরসা তিনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৩৬ গোল: ৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/Gladys Chai von der Laage
মার্ভিন প্লাটেনহার্ড্ট
ল্যোভের কাছে হেক্টরের বিকল্প হচ্ছে প্লাটেনহার্ড্ট৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৬ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/sampics/S. Matzke
মাটিয়াস গিন্টার
২০১৪ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন সদস্য মাটিয়াস গিন্টার৷ তবে সেবার একবারও মাঠে নামা হয়নি তাঁর৷ রক্ষণভাগের এই খেলোয়াড় এবার দলে সুযোগ পাওয়ায় বিস্মিত হয়েছেন অনেকে৷ বোরুসিয়া ম্যুনশেনগ্লাটবাখের হয়ে তাঁর মৌসুমটা ভালো কাটেনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৭ গোল: ০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ১ বার
ল্যোভের অন্যতম পছন্দের এই খেলোয়াড় মধ্যমাঠে জার্মানির অন্যতম আস্থা৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৩ গোল: ৭ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture alliance/dpa/M. Becker
টোনি ক্রুস
খেদিরার মতো টনি ক্রুসও মধ্যমাঠের এক চমৎকার খেলোয়াড়৷ বিশেষ করে সতীর্থদের পাস দেয়ায় বিশেষ খ্যাতি রয়েছে তাঁর৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৮২ গোল: ১২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/GES/T. Eisenhuth
সেবাস্তিয়ান ব়্যুডি
বায়ার্নের এই খেলোয়াড় বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারদর্শী৷ তাই দলে তাঁর গুরুত্ব অনেক, যদিও বায়ার্নের হয়ে মৌসুমটা খুব একটা ভালো কাটেনি তাঁর৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৪ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture alliance/dpa/GES/M. I. Güngör
ইল্কে গ্যুনডোগান
গত বিশ্বকাপ মিস করেছিলেন ব্যাক ইনজুরির কারণে৷ আর দু’বছর আগে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে পারেননি লিগামেন্টে সমস্যার কারণে৷ এবার অবশ্য পুরোপুরি ফিট তিনি৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৪ গোল: ৪ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES-Sportfoto
মেসুট ও্যজিল
আর্সেনালের এই খেলোয়াড়ের বলের উপর নিয়ন্ত্রণ খুবই ভালো৷ নিজের পজিশনে পোক্ত তিনি৷ কিন্তু বড় ম্যাচে তাঁকে ঠিক খুঁজে পাওয়া যায় না৷ তাসত্ত্বেও ল্যোভ আস্থা রাখছেন ও্যজিলের উপর৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৮৯ গোল: ২২ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Maurer
টোমাস ম্যুলার
‘‘ম্যুলার সবসময়ই খেলেন,’’ বলেছেন বায়ার্ন কোচ ফান গাল৷ জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য৷ ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি গোল করা এই খেলোয়াড় এবারও চমক দেখাবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৯০ গোল: ৩৮ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ২ বার
ছবি: picture-alliance/S. Simon
মার্কো রয়েস
২০১৪ সালের বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ইনজুরির কারণে৷ তবে এবার বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার প্রত্যাশায় রয়েছেন জার্মানির আক্রমণভাগের তারকা মার্কো রয়েস৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ২৯ গোল: ৯ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/Rauchensteiner
ইউলিয়ান ড্রাক্সলার
পিএসজি’র এই খেলোয়াড় জার্মানির জাতীয় দলের মূল এগারোতে নিজেকে দেখতে মরিয়া৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৪২ গোল: ৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/M. I. Güngör
লিওন গোরেৎসকা
মধ্যমাঠের খেলোয়াড় লিওন গোরেৎসকা শালকের সঙ্গে চমৎকার এক মৌসুম কাটিয়েছেন৷ বিশ্বকাপের পর বায়ার্নে যোগ দেবেন তিনি৷ তবে এখন তাঁর সব মনযোগ রাশিয়া বিশ্বকাপের দিকে৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৪ গোল: ৬ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Probst
টিমো ভ্যার্নার
শক্তিশালী, দ্রুতগতির এবং নির্ভুল নিশানা - সবই যোগ করা যায় টিমো ভ্যার্নারের সঙ্গে৷ কনফেড কাপের এই সর্বোচ্চ গোলদাতা ল্যোভের আক্রমণভাবে খেলোয়াড়দের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছেন৷ <br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১২ গোল: ৭ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/GES/M. Ibo
মারিও গোমেস
জার্মানির সবচেয়ে কার্যকর স্ট্রাইকার হিসেবে পরিচিত মারিও গোমেসের উপর যথেষ্ট আস্থা রাখেন ল্যোভ৷
<br/> <br/>
আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ৭৩ গোল: ৩১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: Reuters/M. Rehle
ইউলিয়ান ব্রান্ট
বায়ার ০৪ লেভারকুজেনের সঙ্গে মৌসুমটা ভালোই কাটিয়েছেন৷ বাড়তি অনেক দায়িত্বও পালন করতে দেখা গেছে তাঁকে৷ তাই জাতীয় দলে ডাক পাওয়া তাঁর কাছে এক রকমের পুরস্কারের মতো ব্যাপার৷
<br/> <br/> আন্তর্জাতিক ম্যাচ: ১৪ গোল: ১ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ: ০
ছবি: picture-alliance/SvenSimon/A. Waelischmiller
23 ছবি1 | 23
২০০৪ সালে প্রথম জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হন ল্যোভ৷ সেই সময় ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানের সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ এরপর ২০০৬ বিশ্বকাপের পর জার্মানির পুরো দায়িত্ব পান তিনি৷ সেই থেকে এখন পর্যন্ত সাতটি বড় টুর্নামেন্টে কোচের দায়িত্ব পালন করেন ল্যোভ৷ প্রতিটিতেই দলকে অন্তত সেমিফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন৷রাশিয়া বিশ্বকাপে জার্মানি রবিবার মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ খেলবে৷ বিশ্বকাপ শুরুর আগে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, স্পেন, ব্রাজিল ও অস্ট্রিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচে জার্মানি জয় পায়নি৷ সৌদি আরবের সঙ্গে খেলা শেষ প্রীতি ম্যাচে ২-১ গোলের জয়ও সন্তোষজনক ছিল না৷ তবে ল্যোভ সেসব নিয়ে চিন্তিত নন৷ ‘‘ওসব ম্যাচ নিয়ে আমি চিন্তিত নই৷ ওয়ার্ম-আপ খেলাতে ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ আমি শুধু দেখতে চেয়েছি, খেলোয়াড়রা কীভাবে আমার কথা বাস্তবায়ন করছে৷ আসলে আমি সেসব খেলা থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করেছি,'' জানান ল্যোভ৷
দীর্ঘসময় ধরে জার্মানির দায়িত্বে থাকায় ল্যোভ খেলোয়াড়দের নিয়ে ভাবতে পেরেছেন, তাদের দূর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার পরিকল্পনা করতে পেরেছেন৷ এমন সুযোগ সাধারণত ক্লাব পর্যায়ের কোচেরা পেয়ে থাকেন৷ কারণ তাঁরা প্রতিদিন খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকেন৷
ল্যোভ দীর্ঘদিন কোচ থাকার কারণে যে জার্মানি লাভবান হয়েছে, সেটি ইংল্যান্ড কোচের নজরে এসেছে৷ ‘কিকার'কে তিনি বলেছেন, ‘‘সে কারণে জার্মান খেলোয়াড়দের মধ্যে বড় ক্লাবের মানসিকতা গড়ে উঠেছে৷ এবং তাঁরা জেতার জন্যই মাঠে নামে৷''
বিশ্বকাপ: শিল্পীর তুলিতে ইতিহাস
ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮-র চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছে জার্মানি৷ বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, চূড়ান্ত দলে নেই লেরয় জানে৷ তবে বিশ্বকাপে এটাই প্রথম বিস্ময় নয়৷ কার্টুনিস্ট জার্মান আচ্যেল ক্যানভাসে তুলে ধরেছেন আরো কিছু বিস্ময়ের কথা৷
ছবি: Aczel / Edel Books
১৯৩০: কোনো এক সময়...
প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩০ সালে, উরুগুয়েতে৷ সেসময় মূলত উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকার দলগুলো বিশ্বকাপে অংশ নেয়৷ ইউরোপ থেকে স্টিমশিপে চেপে সেই বিশ্বকাপে অংশ নিতে যায় চারটি দল৷ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে স্বাগতিক উরুগুয়ে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৫৪: বার্ন-এ চমক
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় সুইজারল্যান্ডে৷ সেবার প্রস্তুতি পর্বে হাঙ্গেরির কাছে ৮-৩ গোলে হারে জার্মানি৷ কিন্তু ফাইনালে ইতিহাস রচনা করে জার্মানরা৷ হাঙ্গেরিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে দেশটি৷ কার্টুনে জার্মান দলের ফ্রিৎস ভাল্টার (বামে) এবং প্রশিক্ষক সেপ হ্যার্বারগারকে উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের কাঁধের উপর দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৬৬: প্রথম এবং একমাত্র
যদিও ফুটবলের জন্মস্থান মনে করা হয় ইংল্যান্ডকে, তা সত্ত্বেও দেশটি বিশ্বকাপ জিতেছে মাত্র একবার - ১৯৬৬ সালে৷ সেবার নিজেদের মাটিতে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারায় ইংলিশরা৷ খেলার ১০১ মিনিটে, অর্থাৎ অতিরিক্ত সময়ে করা এক গোল, যেটি ‘ওয়েম্বলি গোল’ হিসেবে পরিচিত, নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়ে গেছে৷ কার্টুনে ববি মুরকে বিশ্বকাপ হাতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭০: পেলের জন্য ‘থ্রি চিয়ার্স’
সেবছর তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ব্রাজিল৷ বিংশ শতাব্দির অন্যতম ফুটবল তারকা পেলের নেতৃত্বে ফাইনালে ৪-১ গোলে ইটালিকে হারায় ব্রাজিল৷ রঙিন টিভিতে প্রচার হওয়া প্রথম বিশ্বকাপ সেটি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৭৪: বেকেনবাওয়ার বনাম ক্রুইফ
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্বকাপে বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল৷ জার্মানির তখনকার সেরা খেলোয়াড় ফ্রানৎস বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে তাঁর মতোই জনপ্রিয় নেদারল্যান্ডসের ইয়োহান ক্রুইফের লড়াই দেখতে উন্মুখ ছিলেন অনেকে৷ সেবার পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে খেলেছিল পূর্ব জার্মানি৷ ফাইনালে ২-১ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারায় জার্মানি৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৮৬: ঈশ্বরের হাত
সেবার ফুটবল তারকা দিয়েগো মারাদোনার দিকে নজর ছিল সবার৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জিতেছে বটে, কিন্তু তাঁর করা একটি গোল নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে৷ ‘ঈশ্বরের হাত’ খ্যাত সেই গোলটি মারাদোনা হাত দিয়ে করেছিলেন বলেই দাবি অনেকের৷ তবে সেবার পাঁচ ইংলিশ খেলোয়াড়কে কাটিয়ে মারাদোনার করা আরেক গোল ‘শতাব্দির সেরা গোল’-এর স্বীকৃতি পেয়েছে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
১৯৯০: থুথু হামলা
ইটালিতে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে জার্মানি৷ সেবার এক ম্যাচে জার্মানির রুডি ভ্যলারের গায়ে থুথু দিয়েছিলেন ডাচ খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক রাইকার্ড৷ সেই ঘটনার পর দুই খেলোয়াড় ধস্তাধস্তি শুরু করলে দু’জনকেই মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০০৬: ক্ষিপ্ত জিদান
সেবারের বিশ্বকাপ নিয়ে এখনো আলোচনা হয় জিনেদিন জিদানের এক আচরণের কারণে৷ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পেনাল্টি শ্যুটআউটে ফ্রান্সকে হারায় ইটালি৷ তবে ফাইনালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল যখন ইটালির মার্কো মাতেরাৎসিকে মাথা দিয়ে ঢুস দিয়ে ফেলে দেন জিদান৷ সেই ঘটনায় জিদানের উজ্জ্বল ফুটবল কেরিয়ারের সমাপ্তি ঘটে৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১০: টিকি-টাকার জয়
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিপক্ষকে কাবু করতে টিকি-টাকা স্টাইল ব্যবহার করে স্পেন৷ এই স্টাইলের মাধ্যমে নিজের দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে পাস দিয়ে প্রতিপক্ষকে বিরক্ত ও বিভ্রান্ত করেছে স্প্যানিশরা৷ ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে তারা৷
ছবি: Aczel/Edel Books
২০১৪: ড্রিবলিংয়ের রাজা
ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত গত বিশ্বকাপের তারকা ছিলেন লিওনেল মেসি৷ তাঁর কল্যাণে আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছিল বটে, তবে ফাইনালে হেরেছে জার্মানির কাছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৪: চার-তারকা দল
রিও ডি জেনেইরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ফাইনালে হাজির ছিল ৭৫,০০০ দর্শক৷ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে আর্জেন্টিনাকে হারায় জার্মানি৷ সেটা ছিল দক্ষিণ অ্যামেরিকার মাটিতে ইউরোপের কোনো দলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়৷
ছবি: Aczel / Edel Books
২০১৮: বিতর্কিত কাপ
চলতি বছর বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ রাশিয়া৷ দেশটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন দুর্নীতিতে জর্জরিত ফিফা’র এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত৷ ইতোমধ্যে ফ্যান-আইডির মাধ্যমে অগুনতি ফুটবল সমর্থকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে৷ এমনকি জার্মানির সরকারি কর্মকর্তাদের যারা খেলা দেখতে যাচ্ছেন, তাঁদের স্মার্টফোন থেকে যাতে রাশিয়া তথ্য চুরি করতে না পারে, সেজন্য সেসব ফোন দেশে রেখে যেতে বলেছে জার্মানি৷
ছবি: Aczel / Edel Books
ফুটবল ইতিহাস নিয়ে কমিক
বিশ্বকাপ ১৯৩০-২০১৮ শীর্ষক কমিক বইতে বিশ্বকাপের বিভিন্ন স্মরণীয় ইতিহাস ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে৷ কমিক বইটির প্রচ্ছদে ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো, মানুয়েল নয়্যার, লিওনেল মেসি এবং নেইমারসহ কয়েকজন তারকাকে শিল্পীর তুলিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Aczel / Edel Books
যার হাতে তুলি
কমিক বইটির জন্য কার্টুন এঁকেছেন আর্জেন্টিনার শিল্পী জার্মান আচ্যেল৷ তিনি কেরিয়ার শুরু হয়েছিল বুয়েনেস আইরেসে৷ সেখানে এল গ্রাফিকো স্পোর্টস ম্যাগাজিনে কাজ করতেন৷ পরবর্তীতে ২৬ বছর বয়সি এই কার্টুনিস্ট জার্মানিতে চলে আসেন এবং বর্তমানে মিউনিখে বসবাস করছেন ও ব্রিটিশ সকার ম্যাগাজিন ফোরফোরটু’তে কাজ করছেন৷