পিয়ংইয়াং একটি পারমাণবিক সমরাস্ত্র বর্জিত বিশ্ব চায়, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘চরম ও প্রত্যক্ষ' হুমকির কারণে পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে, বলেছেন জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত কিম ইন রিয়ং৷
বিজ্ঞাপন
কোরীয় উপদ্বীপে পরিস্থিতি ‘‘একটি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে ও পরমাণু যুদ্ধ যে কোনো সময়ে শুরু হতে পারে'', সোমবার জাতিসংঘের সাধারণ সম্মেলনের নিরস্ত্রীকরণ পরিষদকে বলেন উত্তর কোরিয়ার উপ-রাষ্ট্রদূত কিম ইন রিয়ং৷
‘‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পূর্ণ এলাকাআমাদের রকেটের পাল্লায়; যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের পবিত্র রাজ্যাঞ্চলে এক ইঞ্চিও অনুপ্রবেশ করে, তাহলে ওরা পৃথিবীর যে কোনো কোণায় আমাদের গুরুতর দণ্ডদান থেকে রক্ষা পাবে না'', কিম ইন রিয়ং বলেন৷
উত্তর কোরিয়া নিয়মিতভাবে তার পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের শক্তি ও পাল্লা বাড়িয়ে বলে থাকে; তবে বিচ্ছিন্ন দেশটি ২০০৬ সাল যাবৎ ছ'টি পরীক্ষামূলক আণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র গুয়াম দ্বীপে মার্কিন রাজ্যাঞ্চল অবধি পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে, বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও পিয়ংইয়াং-এর ঘনিষ্ঠতম মিত্রদেশ চীনের যৌথ আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক সমরাস্ত্র কর্মসূচিকে থামাতে পারেনি৷
যেসব দেশের কারণে টিকে আছে উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়ার উপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও এমন কয়েকটি দেশ আছে যারা উত্তর কোরিয়া থেকে পণ্য বা অস্ত্র আমদানি করে৷ চলুন দেখে নিই কোন দেশগুলো আছে এই তালিকায়৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFPGetty Images
অ্যাঙ্গোলা
আফ্রিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল নিরাপত্তারক্ষীদের মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণ দেয় উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFPGetty Images
চীন
চীন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেশ৷ চীনের শিল্পকারখানায় উত্তর কোরিয়ার অনেক নাগরিক কাজ করে৷ চীনে উত্তর কোরিয়ান অনেক রেস্তোরাঁও রয়েছে, যেখান থেকে উত্তর কোরিয়া বিদেশি মুদ্রা অর্জন করে৷
ছবি: Getty Images/K. Frayer
কঙ্গো
কঙ্গোর সরকার উত্তর কোরিয়া থেকে স্বয়ংক্রিয় পিস্তল এবং অন্য ছোট অস্ত্র আমদানি করে, যা মধ্য আফ্রিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্সিয়াল দেহরক্ষী এবং পুলিশ ব্যবহার করে৷
ছবি: Reuters/R. Carrubba
মিশর
অভিযোগ রয়েছে, উত্তর কোরিয়া মিশরকে ক্ষেপণাস্ত্রের উপকরণ পাঠিয়েছে৷ এ অভিযোগ সত্য কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্র৷
ছবি: Reuters/Amr Abdallah Dalsh
ইরিত্রিয়া
ইরিত্রিয়া আফ্রিকার ছোট একটি দেশ৷ এই দেশটিরও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে৷ জানা গেছে, তারা উত্তর কোরিয়া থেকে সামরিক উপকরণ কিনে থাকে৷
ছবি: DW
কুয়েত
উত্তর কোরিয়ার অনেক শ্রমিক কুয়েতে নির্মাণ কাজে যুক্ত আছে৷ কুয়েতে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসও আছে৷
ছবি: Imago/Xinhua
মোজাম্বিক
উত্তর কোরিয়া মোজাম্বিককে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সহযোগিতা করছে৷ এছাড়া ভূমি থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণেও সহায়তা দিচ্ছে দেশটিকে৷
ছবি: Gianluigi Guercia/AFP/Getty Images
নামিবিয়া
দক্ষিণ পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে সমরাস্ত্র উপকরণ তৈরি করার একটি কারখানা স্থাপনের জন্য উপকরণ এবং কর্মী পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া৷
ছবি: DW/B. Osterath
নাইজেরিয়া
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় উত্তর কোরিয়া থেকে অনেক চিকিৎসক যান৷ ২০১৩ সালে এক সন্ত্রাসী হামলায় উত্তর কোরিয়ার তিন চিকিৎসক নিহত হয়েছিলেন সেখানে৷
ছবি: picture alliance /AP Photo/L. Oyekanmi
ওমান
ওমানে নির্মাণ প্রকল্পগুলোতে কাজ করার জন্য উত্তর কোরিয়া তাদের শ্রমিক পাঠিয়ে থাকে৷
ছবি: SR
কাতার
কাতারেও নির্মাণ প্রকল্পে উত্তর কোরিয়ার অনেক শ্রমিক কাজ করে৷ ২০২২ সালে দেশটিতে ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে৷ এজন্য সেখানে স্টেডিয়ামসহ বড় বড় স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Zumapress
সুদান
উত্তর কোরিয়া সুদানে যেসব সামরিক উপকরণ পাঠায়, তার মধ্যে রকেট কন্ট্রোল সেকশন এবং স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরিচালিত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Shazly
সিরিয়া
দীর্ঘ সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলা দেশটিও উত্তর কোরিয়ার উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম৷ জানা গেছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সরকার উত্তর কোরিয়া থেকে অনেক সমরাস্ত্র এবং উপকরণ কিনে থাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Press Service of the President
উগান্ডা
আফ্রিকার দেশ উগান্ডারও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার সেনারা উগান্ডায় বিমানবাহিনীর পাইলট এবং টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন৷
ছবি: AP
সংযুক্ত আরব আমিরাত
ইউএই-তে উত্তর কোরিয়ার অনেক রেস্তোরাঁ এবং নির্মাণ কোম্পানি রয়েছে, যেখানে কাজ করার জন্য সবসময়ই উত্তর কোরিয়া থেকে কর্মী পাঠানো হয়৷ এছাড়া উত্তর কোরিয়া থেকে স্কুড মিসাইল কিনে থাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত৷
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/A. Widak
15 ছবি1 | 15
কিম ইন রিয়ং সোমবার নিরস্ত্রীকরণ কমিটিকে বলেন যে, তাঁর দেশ সারা বিশ্বে ‘‘পুরোপুরিভাবে পারমাণবিক সমরাস্ত্র বর্জন'' সমর্থন করে৷ কিন্তু যতোক্ষণ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘‘পরমাণু অস্ত্র নিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও (পিয়ংইয়াংকে) ব্ল্যাকমেল করছে,'' (ততক্ষণ অবধি) উত্তর কোরিয়ার পক্ষে নিরস্ত্রীকরণ করা সম্ভব নয় – বলেন কিম ইন রিয়ং৷ তাঁর মতে ‘‘বিশ্বের অন্য কোনো দেশ এতদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে চরম ও প্রত্যক্ষ পারমাণবিক হুমকির সম্মুখীন হয়নি৷''
ট্রাম্পের টুইটারে হুঙ্কার
জাতিসংঘে কিম ইন রিয়ং-এর বিবৃতির আগেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন যে, ‘‘প্রথম বোমা পড়া অবধি'' সংঘাত সমাধানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে৷
টিলারসন একটি কূটনৈতিক সমাধানের জন্য সচেষ্ট হলেও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত আগস্ট মাসে টুইট করেন যে, উত্তর কোরিয়ার হুমকির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এমন ‘‘অগ্নি ও রোষের'' বিস্ফোরণ ঘটবে, যা বিশ্ব আজ অবধি দেখেনি৷
ট্রাম্প পরে টিলারসনের প্রচেষ্টাকে টুইটারে হাস্যাস্পদ করেন এই বলে যে, টিলারসন কিম জং উন-এর সঙ্গে আপোশের চেষ্টা করে নিজের ‘‘সময় নষ্ট করছেন''৷ এছাড়া ট্রাম্প বারংবার উত্তর কোরিয়ার নেতাকে ‘লিটল রকেট ম্যান' বলে অভিহিত করেন৷ ‘‘নিজের শক্তির অপচয় কোরো না, রেক্স; যা করা দরকার, তা আমরা করব,'' ট্রাম্প যোগ করেন৷
‘সরাসরি আলাপ-আলোচনা', নাকি চূড়ান্ত প্রস্তুতি?
মঙ্গলবার মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী জন জে. সালিভ্যান তাঁর জাপান সফরের অবকাশে আভাস দেন যে, উত্তর কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি আলাপ-আলোচনার সম্ভাবনা থাকতে পারে৷ চীন ও অপরাপর দেশ এ ধরনের আলাপ-আলোচনার সপক্ষে হলেও, যতক্ষণ পিয়ংইয়াং তার পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে, ততোক্ষণ অবধি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান উত্তর কোরিয়ার সঙ্গেসরাসরি আলাপ-আলোচনায় বিমুখ – অন্তত বিমুখ ছিল৷ সালিভ্যান কিন্তু জাপানে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সংকট সমাধানের জন্য কূটনীতির দিকে মনোযোগ দিচ্ছে৷
‘‘কালে প্রত্যক্ষ আলাপ-আলোচনার সম্ভাবনা আমরা পুরোপুরি নাকচ করি না'', সালিভ্যান টোকিও-য় তাঁর জাপানি সতীর্থের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর বলেন৷ ‘‘কিন্তু কূটনীতি ব্যর্থ হলে, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য মিত্রদেশের সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে খারাপ ফলশ্রুতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে,'' তিনি যোগ করেন৷
এসি/ডিজি (এপি, ডিপিএ, রয়াটার্স)
উত্তর কোরিয়ায় কিম বংশের ‘রাজত্ব’
কিম পরিবার গত ৭০ বছর ধরে উত্তর কোরিয়া শাসন করছে৷ রাষ্ট্রীয় প্রচারণায় কিম ইল-সুং, কিং জং-ইল ও কিম জং-উন প্রায় দেবতার সমান৷ কিন্তু কিংবদন্তির পিছনে মানুষগুলি কারা?
ছবি: picture alliance / dpa
তরুণ নেতা
উত্তর কোরিয়ার প্রথম ও ‘চিরন্তন’ প্রেসিডেন্ট কিম ইল-সুং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাহায্যে ক্ষমতায় আসেন ১৯৪৮ সালে৷ উত্তর কোরিয়ার সরকারি বর্ষপঞ্জির শুরু কিম ইল-সুং-এর জন্মবর্ষ ১৯১২ সাল থেকে৷ ছবিতে কিম ১৯৫৩ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন, যে চু্ক্তির মাধ্যমে কোরিয়া যুদ্ধের বাস্তব সমাপ্তি ঘটে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বীরগাথা
কোরিয়া যুদ্ধের পর দশকের পর দশক ধরে পিয়ংইয়ং-এর প্রচারণা যন্ত্র কিম ইল-সুং-কে ঘিরে এক কিংবদন্তির মায়াজাল সৃষ্টি করেছে৷ কিমের ছোটবেলা আর ত্রিশের দশকে জাপানিদের বিরুদ্ধে তাঁর সংগ্রামের ভিত্তিতে তাঁকে এক অদ্বিতীয় সামরিক ও রাজনৈতিক প্রতিভা হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে৷ ১৯৮০ সালের পার্টি কংগ্রেসে কিম ঘোষণা করেন যে, তাঁর পুত্র কিম জং-ইল তাঁর উত্তরাধিকারী হবেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আমৃত্যু শাসক
১৯৯২ সালে কিম ইল-সুং তাঁর স্মৃতিকথা লিখতে ও প্রকাশ করতে শুরু করেন৷ নাম দিয়েছিলেন ‘এক শতাব্দীর স্মৃতি’৷ স্মৃতিকথায় কিম দাবি করেছেন যে, তিনি ছয় বছর বয়সে একটি জাপানি বিরোধী প্রতিবাদসভায় যোগদান করেন ও আট বছর বয়স থেকেই স্বাধীনতা সংগ্রামে সংশ্লিষ্ট হন৷ ১৯৯৪ সালে কিমের মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতিকথা অসমাপ্তই থেকে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/JIJI Press
‘দ্য কিম ইজ ডেড, লং লিভ দ্য কিম’
পিতার মৃত্যুর পর কিম জং-ইল ক্ষমতা গ্রহণ করেন৷ ইতিপূর্বে তিনি বহু বছর ধরে ক্ষমতাশীল ওপরমহলের সদস্য ছিলেন৷ তাঁর ১৬ বছরের শাসনে দরিদ্র দেশটি দুর্ভিক্ষ ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে আরো দরিদ্র হয়ে পড়ে৷ কিন্তু কিম ও তাঁর পরলোকগত পিতাকে নিয়ে ব্যক্তিপূজার ঐতিহ্য অব্যাহত থাকে৷
ছবি: Getty Images/AFP/KCNA via Korean News Service
উঠতি তারকা
রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে একটি সামরিক শিবিরে কিম জং-ইল-এর জন্ম হয়েছিল বলে উত্তর কোরিয়ার বাইরে ইতিহাসবিদদের ধারণা৷ কিন্তু কিমের সরকারি জীবনী অনুযায়ী, তাঁর জন্ম কোরিয়ার পবিত্র পাইচু পর্বতে, ১৯৪২ সালের ১৫ই এপ্রিল তারিখে, অর্থাৎ তাঁর বাবার জন্মদিনের ঠিক ৩০ বছর পরে৷ কিমের জন্মের সময় নাকি আকাশে একটি নতুন তারা ও একটি যমজ রামধনু দেখা দেয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
পারিবারিক জটিলতা
কিম জং-ইল তিনজন পৃথক মহিলার সঙ্গে মোট তিন পুত্র ও দুই কন্যার জনক হন৷ ১৯৮১ সালের এই ছবিটিতে কিমকে তাঁর পুত্র কিম জং-নাম-এর সঙ্গে দেখা যাচ্ছে, যিনি ২০১৭ সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উত্তরাধিকারী
২০০৯ সালে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম খবর দেয় যে, কিম জং-ইল তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র কিম জং-উনকে নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেছেন৷ ২০১০ সালে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল৷ পরের বছর কিম জং-ইল পরলোকগমন করেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Yu
পিতাপুত্র
পিয়ংইয়ং-এর কাহিনী অনুযায়ী, ২০১১ সালে কিম জং-ইল-এর মৃত্যুর সময় একাধিক রহস্যজনক ঘটনা ঘটে৷ পবিত্র পাইচু পর্বতের উপর একটি হ্রদে জমা বরফ বরফঝড় চলাকালীন হঠাৎ বিকট আওয়াজ করে ফেটে যায়৷ অপরদিকে পাহাড়ের গায়ে এক অগ্নিময়ী বার্তা ফুটে ওঠে৷ কিম জং-ইল-এর মৃত্যুর পর পিয়ংইয়ং-এ তাঁর বাবার মূর্তির পাশে কিম-এর একটি ২২ মিটার উঁচু মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রহস্যময় অতীত
ক্ষমতা গ্রহণের আগে কিম জং-উন পাদপ্রদীপের আলো থেকে দূরেই ছিলেন৷ তাঁর সঠিক বয়স নিয়েও বিতর্ক আছে৷ তবে তিনি ১৯৮২ ও ১৯৮৪ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে ধরে নেওয়া হয়৷ তাঁর শিক্ষা সুইজারল্যান্ডে বলে কথিত আছে৷ ২০১৩ সালে তিনি সাবেক মার্কিন বাস্কেটবল তারকা ডেনিস রডম্যান-এর সঙ্গে পিয়ংইয়ং-এ মিলিত হয়ে দুনিয়াকে চমকে দেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কিমাশ্চর্য
আগের কিমদের মতো কিম জং-উনকে নিয়েও নানা ‘কিম’-বদন্তি, অর্থাৎ কিংদন্তি রয়েছে৷ ২০১৫ সালে উত্তর কোরিয়ার শিক্ষকদের জন্য একটি নতুন ম্যানুয়ালে নাকি দাবি করা হয় যে, কিম তিন বছর বয়সেই গাড়ি চালাতে পারতেন৷ ২০১৭ সালে রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবর: পাইচু পর্বতের উপর কিম-এর জন্য একটি স্মৃতিসৌধ সৃষ্টি করা হবে৷
ছবি: picture alliance/dpa/Kctv
পারমাণবিক উচ্চাশা
পিতা ও পিতামহের চাইতে অনেক কম বয়সে ক্ষমতায় আসা সত্ত্বেও কিম শক্ত হাতে ক্ষমতা আঁকড়ে রয়েছেন৷ ২০১৭ সালে বিদেশে আততায়ীর হাতে তাঁর সৎভাই কিম জং-নাম-এর মৃত্যুর পর নির্মম একনায়ক হিসেবে পশ্চিমে কিম জং-উন-এর ভাবমূর্তি আরো দৃঢ় হয়েছে৷ এছাড়া কিম তাঁর দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার অভূতপূর্ব ভাবে বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন৷