1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রাজিলের ফুটবল

২৮ নভেম্বর ২০১২

১৯৮২'র বিশ্বকাপে ব্রাজিল হারে ইটালির কাছে ৩-২ গোলে, এমনকি নক-আউট পর্যায়ে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়৷ ‘বিউটিফুল গেম'-এর সেদিনই সমাধি, বলেছেন জিকো, ব্রাজিলের চিরকালের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে একজন৷

ছবি: Reuters

সে'পর্যন্ত ব্রাজিলের খেলা ছিল যেন খরস্রোতা নদী, সেইসঙ্গে একটা অ্যাডভেঞ্চার৷ কিন্তু ১৯৮২'র সেই দিনটিতে ব্রাজিলের ডিফেন্স ছিল নড়বড়ে, বিভ্রান্ত, নয়তো ইটালির পাওলো রসি'র হ্যাটট্রিকটা সম্ভবই হতো না৷ অথচ নক-আউট পর্যায়ের জন্য কোয়ালিফাই করতে হলে ব্রাজিলের শুধু ড্র করলেই চলতো৷ তবুও ব্রাজিল স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে অল-আউট অ্যাটাক দেখাতে যায়, এবং সেই করতে গিয়েই মরে৷

না, ব্রাজিল মরেনি, মরেছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সেই আশ্চর্য ধারা – বলেছেন জিকো, যিনি নিজে ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপে খেলেছেন, কিন্তু কোনোবারেই সোনা জিততে পারেননি৷ ব্রাজিলের ফুটবল খেলার ধরণ যেন সেই দিন থেকে পুরনো হয়ে যায়, মান্ধাতার আমলের হয়ে যায়৷ ডাক ওঠে পাওয়ার ফুটবলের, যেন টেনিসের সার্ভ অ্যান্ড ভলি৷ না, ঠিক তা নয়, আধুনিক ফুটবল হয়ে ওঠে অনেক বেশি সুচতুর, সতর্ক৷ ভালো খেলা মাথায় থাক৷ গোল না করলে জেতা যায় না, এই হয়ে দাঁড়ায় ফুটবলের সাধারণ দর্শন৷

২০০৬ সালের বিশ্বকাপে জাপান দলের কোচ ছিলেন জিকোছবি: AP

রিও ডি জানেইরো'র সকারেক্স সম্মেলনে জিকো স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, ১৯৮২ সালে ব্রাজিলের টিমটা দারুণ ছিল, লোকে আজও সেই টিমের কথা বলে৷ ‘‘সেদিন আমরা খেলাটা জিততে পারলে আজ ফুটবল অন্যরকম হতো,'' বলেছেন জিকো৷ ‘‘তার বদলে আমরা এমন ফুটবল খেলতে শুরু করি যার উদ্দেশ্য হল, যে করে হোক খেলাটা জেতা৷ এমন ফুটবল, যার ভিত্তি হল দরকার হলে ফাউল করে বিপক্ষের খেলা নষ্ট করা৷''

সেদিন ব্রাজিলের সেই হার বিশ্ব ফুটবলের পক্ষে মঙ্গলজনক হয়নি বলে মনে করেন জিকো৷ বিশেষ করে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের পক্ষে তা সর্বনাশা না হলেও, সর্বগ্রাসী হয়েছে৷ ১৯৮২'র পর ব্রাজিল দু'বার বিশ্বকাপ জিতেছে বটে, কিন্তু সেটা অনেক বেশি দক্ষ এবং অনেক কম নয়নাভিরাম ফুটবল খেলে৷

ফুটবলের সংজ্ঞা পাল্টিয়ে স্পেন আজ বিশ্ব ফুটবলের মাপকাঠি, কথাটা সম্প্রতি বলেছেন ব্রাজিলের বিদায়ী কোচ মানো মেনেজেস৷ অপরদিকে জিকো বলেছেন, ব্রাজিলের দলগুলি এখন খেলোয়াড়দের পেশিশক্তিতে যে'ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে, তা'তে তিনি নিজে আজ পেশাদারি ফুটবলে জায়গা পেতেন কিনা সন্দেহ৷

ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাবগুলোর মনোবৃত্তিতেও এই পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন জিকো৷ তারাও তাদের যুব দলগুলিতে রোমারিও'র মতো ফরোয়ার্ড চায় না, চায় গাঁট্টা-গোট্টা কোনো সেন্টার ফরোয়ার্ড৷ এছাড়া শহরগুলো থেকে ফুটবল খেলার মতো পোড়ো জমি, ফাঁকা মাঠ, অলিগলি, সবই উধাও হচ্ছে প্রোমোটারদের কোপে৷ গরীব ঘরের ছেলেপিলেরা আর ফুটবল খেলার জায়গা খুঁজে পাচ্ছে না৷ ব্রাজিলে ফুটবল খেলার জন্য আজ শহরের মাঝখানে কোনো দামী কন্ডোমিনিয়ামো বাস হওয়া চাই, কোনো প্রাইভেট ক্লাবের সদস্য হওয়া চাই – বলেছেন জিকো৷

হায় ব্রাজিল, হায় ফুটবল৷

এসি/এসবি (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ