ধূমপানের ফলে একজন মানুষের ফুসফুসের অবস্থা কী হয় তা নিয়ে প্রকাশিত এক ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে৷ নর্থ ক্যারোলাইনায় বসবাসরত নার্স আমান্দা এলার ভিডিওটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
ইতোমধ্যে প্রায় ছয়লাখবার শেয়ার হয়েছে ভিডিওটি৷ এতে একটি লাল রংয়ের সুস্থ ফুসফুসের পাশাপাশি এক ধূমপায়ীর ফুসফুস রাখা হয়েছে, যেটি কালো হয়ে গেছে৷ কালো ফুসফুসটি এমন এক ব্যক্তির যিনি দশবছর ধরে প্রতিদিন গড়ে এক প্যাকেট করে সিগারেট পান করেছেন৷
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে ধূমপান সংক্রান্ত এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভিডিওটি প্রকাশ করেন এলার৷ নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, যেসব মানুষ ধূমপানের হার কমিয়ে দেন, তাদেরও বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা থেকে যায়৷ যারা দিনে মাত্র একটি সিগারেট পান করেন তাদেরও হৃদরোগসহ স্ট্রোকের আশঙ্কা রয়েছে৷
উল্লেখ্য, ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতিবছর পঞ্চাশ লাখের মতো মানুষ মারা যায়৷ এই বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও ধূমপায়ীর সংখ্যা এখনো বড় আকারে কমেনি৷ বিশ্বে ধূমপায়ীর সংখ্যা একশো কোটির বেশি৷
এআই/জেডএইচ
ধূমপান ছাড়ার পর শরীরে যা যা ঘটে
একটি সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে দুশো’রও বেশি বিষাক্ত পদার্থ যা শরীরের জন্য একটি বোঝা৷ কিন্তু ধূমপান বন্ধ করার ঠিক পরপরই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে কী ভাবে পরিবর্তন ঘটে, তারই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Fotolia/Rumkugel
মাত্র ২০ মিনিট বিরতির পর
শেষ ধূমপানের মাত্র ২০ মিনিট পরেই শরীরের রক্তচাপ ও নাড়ির গতি স্বাভাবিক হয়ে যায়৷ ধূমপানের সময় সিগারেটের নিকোটিন শরীরের নার্ভ সিস্টেমকে সক্রিয় রাখার ফলে যতটুকু বেড়ে গিয়েছিলো তা আবার নামিয়ে নিয়ে আসে৷
ছবি: Fotolia/Andrei Tsalko
১২ ঘণ্টা ধূমপান না করলে যা হয়
সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন থেকে বের হওয়া যে বিষাক্ত গ্যাস শরীর গ্রহণ করেছিলো, তা ১২ ঘণ্টা পর থেকে স্বাভাবিক হয়ে আসে৷ এবং শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে থাকে কারণ ধূমপান করার সময় রক্তে অক্সিজেন যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হয়ে থাকে৷
ছবি: Fotolia/ Gina Sanders
সিগারেট ছাড়া দুই দিন
ধূমপানের কারণে স্বাদ ও গন্ধ নেওয়ার যে ক্ষমতা কমে গিয়েছিলো, তা ধূমপান বন্ধ করার মাত্র দুইদিন পরেই বাড়তে শুরু করে৷
ধূমপান বন্ধের তিনদিন
ধূমপান থেকে বিরত থাকার তিনদিন পরে থেকেই বুকের ভেতরটা হালকা মনে হয় এবং শ্বাস ক্রিয়া সহজ হয়, কারণ তখন আর শরীরের ভেতরে নিকোটিন থাকেনা৷ আর সে কারণেই ধূমপান না করার লক্ষণগুলো ভালোভাবে ধরা পড়ে বা বোঝা যায়৷ তখন মাথাব্যথা, বমিভাব, প্রচণ্ড ক্ষুধা পাওয়া, হতাশা বা আতঙ্কভাব হয়ে থাকে৷
ছবি: Andrzej Wilusz/Fotolia
ধূমপান বন্ধের কয়েক মাস পর
ধূমপান বাদ দেওয়ার কয়েকমাস পরেই দেখা যায় শরীরে রক্ত চলাচল অনেক ভালোভাবে হচ্ছে৷ আর আগের তুলনায় ফুসফুস শতকরা ৩০ ভাগ বেশি অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে এবং কাশিভাবও কমতে শুরু করে৷
ছবি: Fotolia/Sebastian Kaulitzki
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এক বছর, ১০ বছর বা ১৫ বছর পর
ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার এক বছর পর থেকেই হৃদরোগের ঝুঁকি অর্ধেক কমে যায়৷ তাছাড়া দশ বছর ধূমপান না করলে একজন ধুমপায়ীর ফুসফুসের ক্যানসারে মারা যাওয়ার ঝুঁকির তুলনায় অর্ধেক কমে যায়৷ শুধু তাই নয়, ১৫ বছর ধূমপান থেকে বিরত থাকলে তার করোনারি হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়, যে জীবনে কখনো ধূমপান করেনি তার মতো৷