1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে যেখানে আছে, সেখানেই পরীক্ষার ব্যবস্থা দরকার

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৬ মে ২০২০

ঈদযাত্রার কারণে দেশের আনাচে কানাচে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ ফলে ভয়াবহ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে হলে যে যেখানেই আছে, সেখানেই তার পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে৷ 

ঢাকামুখী মানুষের স্রোত থামানোর পরামর্শ
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain

এমনটাই মনে করেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুস্তাক হোসেন৷ এজন্য প্রয়োজনে সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে হলেও ফের ঢাকামুখী মানুষের স্রোত থামানোর পরামর্শ তার৷৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের তো কোন পদ্ধতিই কাজে আসেনি৷ আমরা না পেরেছি কার্যকর লকডাউন করতে, না পেরেছি মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে৷’’

বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমছে না৷ বরং প্রতিদিনই আক্রান্ত এবং মৃত্যু দু'টোই বাড়ছে৷ সর্বশেষ মঙ্গলবার আরো ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ এ নিয়ে দেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২২ জনে৷ আর নতুন করে এক হাজার ১৬৬ জন আক্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৭৫১ জনে৷

ঈদের ছুটি আর সাধারণ ছুটি মিলিয়ে আগামী ৩০ মে শেষ হচ্ছে ছুটির মেয়াদ৷ নতুন করে ছুটি বাড়ানো না হলে ৩১ মে রোববার থেকে সবকিছু খুলে দেওয়ার কথা৷ ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুণ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখনও আমাদের কাছে নতুন কোন সিদ্ধান্ত আসেনি৷ এই সিদ্ধান্তটা সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে আসে৷ ফলে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না৷’’

ডা. মুস্তাক হোসেন

This browser does not support the audio element.

সরকারি সিদ্ধান্ত যেটাই আসুক কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ? জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার তো মনে হয়, ঝুঁকি বেড়েই গেল৷ এত মানুষ গ্রামে গেল৷ এখন যদি তারা ঢাকায় ফিরতে শুরু করেন তাহলে পরিস্থিতি তো ভালো হওয়ার কোন লক্ষণ দেখি না৷ আমার মনে হয়, ছুটি কিছুদিন বাড়িয়ে হলেও যে যেখানে আছে, সেখানেই থাকার ব্যবস্থা করতে হবে৷ তা না হলে পরিস্থিতি তখন হয়ত আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা কষ্টকর হয়ে যাবে৷’’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবারও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে শত শত যাত্রী ও ছোট যানবাহন পরাপার হচ্ছে৷ অনেকেই ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছেন৷ আবার কেউ কেউ ঢাকায় যাচ্ছেন৷ তবে করোনা সংক্রমণ রোধে কেউ সামাজিক দূরত্ব মানছেন না৷

বিআইডব্লিউটিসি'র দৌলতদিয়া ঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক মাহাবুব হোসেন জানিয়েছেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমান ছয়টি ছোট ফেরি চলাচল করছে৷ ঢাকা থেকে যে পরিমাণ যাত্রী গ্রামে যাচ্ছেন আবার ঠিক সেই পরিমান যাত্রী ঢাকায় ফিরছেন৷

ঈদের ছুটির মধ্যেও দেশে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা ব্যবস্থা চালু ছিল৷ হাসপাতালগুলোতেও আক্রান্ত রোগীদের চাপ ছিল৷ সর্বশেষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্য নিলুফার মঞ্জুর মারা গেছেন৷ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান৷ নিলুফার মঞ্জুর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী৷ মঞ্জুর এলাহীও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে স্বজনেরা জানিয়েছেন৷ এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য মগবুল হোসেন মারা যান৷ 

ডা. নজরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

সামনের সংকট থেকে উত্তরণের পথ কী? জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এখন প্রতিটি মানুষকে নিজে থেকে সবকিছু মেনে চলতে হবে৷ যাদের সুযোগ আছে তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, হাত ধুতে হবে, মাস্ক পড়তে হবে৷ এছাড়া তো আর কিছু করার দেখি না৷ কারণ এখন সারাদেশের আনাচে কানাচে এটা ছড়িয়ে পড়বে৷ আর যাদের এসব মানার সুযোগ নেই, তাদের যে কি হবে তা আমি ভাবতেই পারছি না৷’’

ডা. মুস্তাক হোসেন বলেন, ‘‘করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলো এখন কানায় কানায় পূর্ণ৷ মুগদা, কুর্মিটোলা ও কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালের কোন সিট ফাঁকা নেই৷ ঢাকা মেডিকেল প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে৷ ফলে নতুন রোগী নেওয়ার সুযোগ হাসপাতালগুলোতে কমে আসছে৷ করোনা জন্য এখন হাসপাতাল বাড়াতে হবে৷ না হলে কিভাবে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে আমরা বুঝতে পারছি না৷ এভাবে কত হাসপাতাল বাড়ানো যাবে?''

এদিকে মানুষের উদাসীনতায় দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের৷ মঙ্গলবার নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি অধিকাংশ মানুষের মাঝে ধৈর্য ও শৃঙ্খলার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে৷ অনেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে অবস্থান করলেও, অনেকেই এসব কানে তুলছে না৷ তাদের এই উদাসীনতা ভয়ানক বিপদ ডেকে আনছে৷ এতে উদ্বেগের পাশাপাশি যেমন বাড়ছে সংক্রমণ, তেমনি বাড়ছে মৃত্যুও৷’’ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ