যৌনতার মেলা ২০১২
২ ডিসেম্বর ২০১২![Ein junges Paar schmust zusammen verliebt im Bett, aufgenommen am 02.12.2006 in Berlin (Symbolbild zum Thema Beziehung, Sexualität, Erotik, Liebe, Schlafzimmer). Foto: Jörg Lange - Model relase vorhanden - +++(c) dpa - Report+++](https://static.dw.com/image/16017124_800.webp)
বিগত দশকে ভারতের শহুরে মানুষের যৌন তৃপ্তির মাত্রা কি নিচে নেমে গেছে? বিবাহপূর্ব যৌন সম্পর্ক কি এখনও সেখানে নিষিদ্ধ বিষয়? নারীদের চেয়ে কি ভারতের পুরুষরা যৌনাচরণে বেশি তৃপ্ত? নারীরা কি তাদের যৌন সঙ্গীর প্রতি অধিকতর বিশ্বস্ত ও অনুগত? এমনই নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে প্রায় দশ বছর ধরে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ আইটিজি৷
তাদের এই গবেষণা কর্মের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ভারতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো যৌন মেলা ২০১২৷ এই মেলায় নগ্নতা, কিশোর-কিশোরীদের যৌনাচরণ, ভারতীয় নারীদের জাগরণসহ ভারতীয় সমাজের যৌনাচরণের নানা দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন শিক্ষাবিদ, অভিনয় শিল্পী, লেখক এবং বিশেষজ্ঞরা৷
ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলেই যৌনাচরণ নিয়ে কথাবার্তা বলাকে ‘অশোভনীয়' বলে মনে করা হয়৷ তবুও আইটিজি তাদের গবেষণায় তুলে এনেছে ভারতের মানুষের যৌন জীবন নিয়ে বেশ কিছু পরিসংখ্যান৷ নতুন দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই এবং কলকাতাসহ ১৬টি নগরীর পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের সাথে কথা বলেছে আইটিজি৷ তাদের গবেষণার ফল অনুসারে, ভারতের বড় শহরগুলোতে বসবাসকারী ১৮ শতাংশ এবং ছোট শহরের ১৩ শতাংশ নারী-পুরুষ বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছে৷ বড় শহরগুলোর ৫৮ শতাংশ এবং ছোট শহরগুলোর ৪০ শতাংশ পুরুষ এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছে যে, বিবাহবহির্ভূত যৌন সম্পর্কের সুযোগ এবং প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার ফলে তারা বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করেছে৷
এছাড়া এই জরিপে দেখা গেছে, ছোট শহরগুলোর ৬০ শতাংশ এবং বড় শহরগুলোর ৫০ শতাংশ নারী মনে করেন যে, যৌনজীবনে তাদের সমান অধিকার এবং পছন্দ-অপছন্দের মূল্য রয়েছে৷ আর যৌন কাজের সময় বা পরে ছোট শহরগুলোর ৩৮ শতাংশ এবং বড় শহরগুলোর ২৪ শতাংশ নারী জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য কখনই কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না৷
যৌন মেলায় উপস্থিত নায়িকা কোয়েল পুরি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘ভারতের সমাজে পরিস্থিতি এতোটাই পাল্টে গেছে যে, আমরা এখন যৌনজীবনের নানা দিক নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারছি৷ ফলে বোঝা যাচ্ছে যে, যৌনতা নিয়ে কথা বলাটাকে এখন আর মানুষ তেমন খারাপভাবে দেখছেন না৷''
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের নগরায়ন প্রক্রিয়া মানুষের জীবন যাত্রায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনছে৷ লেখিকা শোভা দে বলেন, ‘‘নারীরা বর্তমানে তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিজেদের চাহিদার কথা খোলাখুলি আলোচনা করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করছে৷ এক্ষেত্রে পরিবর্তনের প্রধান বাহক মূলত নারী এবং তারা এখন আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী, সফল এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভরশীল৷'' আইটিজি'র জরিপের ফল অনুসারে, শহুরে নারীদের ১৪ শতাংশই একইসময়ে একাধিক যৌনসঙ্গী রাখার পক্ষে৷
আর ভারতের সমাজের যৌনাচরণ বিষয়ে গবেষক এবং সমাজ বিজ্ঞানী সঞ্জয় শ্রীভাস্তভা বলেন, ‘‘আমি মনে করি, পুরুষরা প্রথাগত যৌনাচরণ পছন্দ করলেও নারীরা ভিন্ন ধারার যৌনাচরণ বেশি পছন্দ করে৷'' যৌন মেলায় বক্তারা এ ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন যে, ভারতীয় সমাজের যৌন সংস্কৃতির পরিবর্তিত ধারায় ভারতীয়দের মনে যৌনতার এই ধারার সাথে খাপখাওয়ানো নিয়ে বেশ শঙ্কা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে৷