না লাল মাংস শুধু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়, এমন নয়৷ প্রতি সপ্তাহে এক বা দু’বার লাল মাংস খাওয়া আপনার যৌনজীবনের জন্যও উপকারী৷ ইটালিয়ান গবেষকদের এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে এই তথ্য৷

দুধের তৈরি খাবারে থাকে প্রচুর ভিটামিন ডি, যা এক ধরনের যৌন হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে৷

কলা আমাদের অতি পরিচিত ফল, যা সারা বছর পাওয়া যায়৷ এই কলায় রয়েছে ব্রোমেলিয়ান যা যৌন সম্ভোগের ইচ্ছা বাড়ায়৷

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানা বিশিষ্ট ডুমুর ফলে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড, যা পুরুষদের যৌনমিলনের সময়টুকুকে আরো দীর্ঘায়িত করতে সাহায্য করে৷ এই ফল তাজা বা শুকনো – দু’ভাবেই খাওয়া যেতে পারে৷

স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নারী এবং পুরষের যৌনশক্তি বাড়াতে যেমন সহায়ক, তেমনি শরীরের ওজন কমাতেও ভূমিকা রাখে৷ জার্মান পুষ্টিবিদ হান্স ডিটার শাউপ তাই ওজন কমানোর জন্য স্ট্রবেরি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন৷

তরমুজে থাকা সিট্রুলিন ধমনীকে স্বচ্ছন্দে বা শান্ত রেখে যৌনজীবনকে সুখকর করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে৷ অ্যামেরিকার টেক্সাস রাজ্যের এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটিসহ কয়েকটি সমীক্ষার ফলাফল থেকে জানা গেছে যে তরমুজ শরীরে যৌন উদ্দীপনা বৃদ্ধি করে৷

অতি সুস্বাদু এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬, যা নারী পুরুষ উভয়েরই যৌনশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখে৷ তবে আমাদের অঞ্চলে ফলটি তেমন সহজলভ্য নয়৷

আদার নানা গুণের কথা আমাদের কারো আর অজানা নয়৷ সর্দি, কাশি, ঠান্ডায় আমরা আদা ব্যবহার করি৷ তবে এবার ইটালিয়ান গবেষকদের করা সমীক্ষা থেকে জানা গেছে যে, আদা শরীরের রক্ত চলাচলকে সহজ করে কামশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে৷

কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন ‘ই’, যা যৌনমিলনের উত্তেজনা জাগায়, বিশেষ করে নারীদের৷

পোলাও, কোর্মা, মাংস, রোস্ট, কাবাব, মিষ্টি পায়েস বা সেমাই, জর্দায় সুগন্ধীয় এলাচ ছাড়া রান্নার কথা বাঙালিরা ভাবতেই পারে না! আর মশলা চা? তাতেও যে চাই এলাচ৷ কিন্তু এলাচ যে পুরুষের যৌনশক্তি বাড়াতে প্রাকৃতিক ভায়াগ্রার মতো কাজ করে, সেকথা হয়ত জানা নেই অনেকেরই৷ হ্যাঁ, এই তথ্যই দিয়েছেন ইটালিয়ান গবেষকরা৷

শুধু বিশেষ কিছু খাবার খেয়ে যৌনশক্তি বাড়িয়ে যৌনজীবনকে পুরোপুরি আনন্দময় করা যাবে, এমনটা ভাবা অবশ্য ঠিক নয়৷ এর জন্য শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি৷ সঙ্গে চাই ইতিবাচক চিন্তা, নিয়মিত ব্যায়াম, স্ট্রেস ফ্রি জীবনযাত্রা, বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত খাবার এবং সর্বোপরী সুখী পরিবার৷ কেবলমাত্র তবেই যৌনজীবন পুরোপুরি উপভোগ করা সম্ভব!

যৌনমিলনের পর, অনেকের যৌনাঙ্গে বা শরীরের অন্যান্য স্থানে অ্যালার্জি হয়৷ এই সমস্যাকে বহু বছর খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয়নি৷ কিন্তু এখন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ দেখা গেছে যে, মিলনের পর অনেক নারী অ্যালার্জির কারণে ডাক্তারের কাছে যেতে বাধ্য হচ্ছেন৷ এমনকি বীর্যপাতের পর নিজের বীর্যের কারণে অনেক পুরুষের শরীরেও দেখা দিচ্ছে অ্যালার্জি৷

এ ধরনের অ্যালার্জির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টও শুরু হতে পারে৷ যৌনমিলনের কারণে দেখা দেয়া অ্যালার্জির কারণে হতে পারে মৃত্যুও৷

১৯৫৮ সালে, অর্থাৎ ৫৮ বছর আগে নেদারল্যান্ডসের এক ডাক্তার প্রথম যৌনতার কারণে দেখা দেয়া এই অ্যালার্জির কথা লিখিতভাবে উল্লেখ করেছিলেন৷ এতদিনেও কিন্তু গবেষণামুলক লেখালেখিতে এ ধরণের রোগীর উল্লেখ খুব একটা নেই৷

যৌনমিলনের পর অ্যালার্জি দেখা দিলেও অনেকেই লজ্জায় ডাক্তারের কাছে যেতে চান না৷ এই প্রবণতা অবশ্য মেয়েদের মধ্যেই বেশি৷ যৌনমিলনের পর অ্যালার্জি দেখা দিলেও অনেকেই লজ্জায় ডাক্তারের কাছে যেতে চান না৷ এই প্রবণতা অবশ্য মেয়েদের মধ্যেই বেশি৷

অনেক সময় ডাক্তারের ভুলের কারণেও যৌনতাজনিত অ্যালার্জির কথা কেউ জানতে পারে না৷ ডাক্তার ধরে নেন, সাধারণ কোনো ইনফেকশন হয়েছে৷ সেই অনুযায়ীই চলে চিকিৎসা৷

একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি ১০ হাজারের মধ্যে অন্তত একজন নারী বা পুরুষ এ ধরনের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হন৷

পুরুষদের বীর্যে এমন অনেক উপাদান রয়েছে, যা থেকে অ্যালার্জি হতে পারে৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যৌনতার পরের এই অ্যালার্জির জন্য দায়ী বীর্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপদান ‘প্রোস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন’ বা পিএসএ৷ এই পিএসএ-র কারণে প্রোস্টেট ক্যানসারও হয়ে থাকে৷ অন্যদিকে যৌনমিলন এবং প্রজননেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পিএসও৷ ডিম্বানু আর শুক্রানুর মিলনও পিএসএ-র ওপর নির্ভরশীল৷

অনেক সময় কুকুরের বীর্যের কারণেও মানুষের দেহে দেখা দিতে পারে এই অ্যালার্জি৷ কুকুর প্রস্রাব করার সময় অনেক সময়ই সেই প্রস্রাব ছিঁটে তার গায়ে লাগে৷ তখন প্রস্রাবের সঙ্গে বীর্যও লাগে শরীরে৷ পোশা কুকুরকে কেউ যখন আদর করেন সেই বীর্যের সংস্পর্শেও এসে যায় মানুষ৷ এভাবে যৌনমিলন ছাড়াও হতে পারে বিপজ্জনক এই অ্যালার্জি৷

খাবারে অনেকেরই অ্যালার্জি থাকে৷ আর যৌনমিলনের সময় সেই খাবারের কারণেও কিন্তু হতে পারে অ্যালার্জি৷ ব্রাজিলে এক নারীর বাদামে অ্যালার্জি ছিল৷ তাই তাঁর পার্টনার যৌনমিলনের আগে বাদাম খেলেও খুব ভালো করে ব্রাশ করে ভেবেছিলেন মুখে যেহেতু বাদামের কণাও নেই, সেহেতু মেয়েটির অ্যালার্জি হবে না৷ কিন্তু যৌনমিলনের পরই অ্যালার্জি শুরু হয়ে যায় মেয়েটির শরীরে৷

পুরুষদের অ্যালার্জির ধরণটা একটু অন্যরকম৷ যৌনমিলনের পর পুরুষদের সাধারণত খুব মাথাব্যথা হয়৷ কারো কারো কয়কেদিন খুব ক্লান্ত লাগে৷ কেউ কেউ আবার সপ্তাহ খানেক পর্যন্ত সর্দি-জ্বরে ভোগে৷

এমন অ্যালার্জি কয়েকবার হলে একসময় মনে আতঙ্ক দেখা দেয়৷ অনেকে তো তখন আর সেক্সই করতে চান না৷

আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যৌনমিলন এড়িয়ে চলা কোনো সমাধান নয়৷ বরং যৌনমিলনে কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে৷

কিন্তু যাঁরা সন্তান নিতে চান তাঁদের কী হবে? তাঁদের তো কনডম ব্যবহার করলে চলবে না! তাঁদের জন্য একমাত্র সহায় অ্যান্টিহিসটামিন৷ এই ওষুধ অ্যালার্জির কষ্ট অনেকটাই কমাতে সক্ষম৷

প্রথম প্রেমে পড়ার অনুভূতি কে না জানে? অকারণেই হেসে ওঠা, ভালো লাগা, প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর সুখ বা আনন্দে রক্তচাপ যেন বেড়ে যায়৷ সব মিলিয়ে এক অসম্ভব ভালো লাগার অনুভূতি! ‘এন্ডরফিন’ হরমোন মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রে সক্রিয় হয়ে ওঠার কারণেই মুহূর্তগুলো এত মধুর মনে হয়, ছড়িয়ে দেয় ভালোলাগার অনুভূতি৷ এমনকি প্রেমে পড়ার সময়টাতে নাকি শরীরে ভীষণ ব্যথা পেলেও, প্রথম প্রথম তা টেরই পাওয়া যায় না৷

শরীরের ‘সোমাট্রপিন’ বা গ্রোথ হরমোনই শিশুদের আস্তে আস্তে বড় হতে ও বুদ্ধি বাড়তে সাহায্য করে থাকে৷ শরীরের হাড় গঠন এবং প্রোটিন এবং জরুরি চর্বি তৈরিতেও কাজ দেয় এই হরমোন৷ তবে যদি কোনো শিশুর শরীরে এই হরমোন অতিরিক্ত পরিমাণে থাকে, তাহলে তারা অতিরিক্ত বেশি বড়সড় হয়৷ শরীরে হরমোন তৈরির প্রধান কেন্দ্র মস্তিস্ক থেকেই নিঃসৃত হয় এই হরমোন৷

শরীরে খাদ্য তৈরির প্রক্রিয়া বা বিপাকের জন্য ‘ইনসুলিন’ হরমোনটি দায়ী৷ এটি পেশির কোষগুলোর উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে এবং রক্ত থেকে গ্লুকোজ শোষন করে৷ ডায়বেটিস রোগীর শরীরে যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি না হওয়ার ফলে চিনি রক্তেই থেকে যায়, যে কারণে জীবন বিপন্নও হতে পারে৷ তাই ডায়বেটিস রোগীকে কম পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার পরমর্শ দেয়া হয়৷ এতেও কাজ না হলে রোগীকে নিয়মিত বাইরে থেকে ইনসুলিন দিতে হয়৷

‘মেলাটনিন’ হরমোন আমাদের শরীরে দিন এবং রাতের একটা ভারসাম্য বজায় রাখে৷ এই হরমোনই অন্ধকারে শরীরের ভেতর ছড়িয়ে যায় এবং আমাদের ক্লান্ত করে ঘুম পাড়িয়ে দেয়৷ ইউরোপীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালে জানিয়েছিল যে, মেলাটনিন হরমোন ‘জেটল্যাগ’ উপশম করতে খাদ্যের বিকল্প হিসেবেও কাজ করতে পারে৷ এই হরমোন ঘুম পাড়াতে এবং ঘুম থেকে জাগাতে সাহায্য করে৷

‘কর্টিসল’ হরমোন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্ট্রেস হরমোন, যা শরীর থেকে রাতে উৎপাদিত হয়ে দিনে কাজে লাগে৷ এই হরমোন মন ও শরীরের ‘ইমিউন সিস্টেম’ বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতে সাহায্য করে, যা কোনো ‘ইনফেকশন’ বা ক্ষতের প্রতিষেধক হিসেবেও কাজ করে থাকে৷ তবে অতিরিক্ত স্ট্রেস হরমোন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক৷

মন খারাপ? মন ভালো করতে জিমে যাবেন নাকি একটু মিষ্টি বা চকলেট খাবেন? আপনার শরীরের ‘সেরটোনিন’ হরমোনকে উজ্জীবিত করতে এই দুটোর একটাকে বেছে নিতে হবে৷ সেরটোনিন এবং ডোপামিন হরমোনকেও কিন্তু ‘হ্যাপিনেস হরমোন’ বা সুখ হরমোন বলা হয়ে থাকে, যা আমাদের মন-মেজাজ ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে৷ লক্ষ্য রাখবেন, শরীরে সুখ হরমোন কম হলে মেজাজ কিন্তু বিগড়ে যেতে পারে!