ফোর্বস ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক এক তালিকা দেখে এমন প্রশ্নের আবির্ভাব৷ তালিকাটা ৩০ বছরের কম বয়সি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অর্থ উপার্জনকারী সেলিব্রেটিদের৷ তাতে শীর্ষ দশের সাতজনই হচ্ছেন নারী৷
বিজ্ঞাপন
একেবারে শীর্ষ অবশ্যই লেডি গাগা৷ গত বছরে তাঁর আয় ছিল ৮০ মিলিয়ন ডলার৷ হিট গান বিক্রি, ওয়ার্ল্ড ট্যুর আর বিভিন্ন পণ্যের মডেল হয়ে এই অর্থ আয় করেছেন লেডি গাগা৷ পরিমাণটা হয়ত আরও বাড়তে পারতো যদি না ইনজুরির কারণে কয়েকটি ট্যুর বাতিল না করতেন৷ ঐ সময়টা তাঁকে তাঁর ২৪ ক্যারেট সোনা দিয়ে তৈরি হুইলচেয়ারে কাটাতে হয়েছে!
সুন্দরীদের হাতব্যাগের গল্প
ব্যবহারিক প্রয়োজনের চেয়েও হাতব্যাগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ আভিজাত্য এবং ফ্যাশনের কারণে৷ কিন্তু সবসময়ই কি হাতব্যাগের গুরুত্ব এমন ছিল? বাভারিয়ার জাদুঘরে মেয়েদের এই অতিপ্রয়োজনীয় অনুষজ্ঞটির পাঁচশো বছরের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে৷
ছবি: Getty Images
ব্যাগের চেয়ে বেশি কিছু
হারমেসের এই ট্রাভেল ব্যাগটি (ছবিতে সাদা রঙের) গেরেস ক্যালি সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত করে তুলেছিলেন৷ অভিনেত্রী এবং মনোকোর এই রাজকুমারী ব্যাগটি এতবার ব্যবহার করেছেন যে, ১৯৫৬ সালে সেটির নামকরণ করা হয়েছিল ‘ক্যালি ব্যাগ’৷ বাভারিয়ার জাতীয় জাদুঘরে হাতব্যাগের পাঁচশো বছরের ইতিহাস এভাবে তুলে ধরা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images
পকেটভর্তি সোনা
হ্যান্ডব্যাগের ব্যবহার শুরু হয় ষোড়শ শতকের দিকে৷ সেসময় বিভিন্ন ধরনের মুদ্রা আলাদা আলাদা করে রাখতে ছোট ছোট ব্যাগ ব্যবহার করা হতো৷ এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কেন না তখন প্রত্যেক ধর্ম এবং বড় শহরের নিজস্ব মুদ্রা ছিল৷
ছবি: Bayerisches Nationalmuseum München
বৈচিত্রময় কাজ
হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে গবেষণা সহজ কাজ নয়, বলেছেন ইয়হানেস পিচ্স, মিউনিখের প্রদর্শনীর কিউরেটর এবং পোশাকের ইতিহাস বিষয়ক একজন গবেষক তিনি৷ কোন ধরনের ব্যাগ কোন সময় ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটা জানতে অনেক বিষয় বিচার করতে হয়৷
ছবি: Bayerisches Nationalmuseum München
অলংকৃত এবং বাস্তব
প্রদর্শনীতে বিভিন্ন পেইন্টিং এবং ভাস্কর্যও রাখা হয়েছে৷ এসব দেখে বিভিন্ন ব্যাগের ব্যবহার এবং সেগুলো বহনের ধরন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে৷ সপ্তদশ শতকের দিকে ব্যাগের মধ্যে বিভিন্ন কারিগরী পরিবর্তন আসতে শুরু করে৷ সেসময় ডাক ব্যবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে খামের আকারের অনেক পকেটযুক্ত ওয়ালেটের ব্যবহার শুরু হয়৷
ছবি: Bayerisches Nationalmuseum München
ফ্যাশন বিপ্লব
ফরসি বিপ্লবের পর মেয়েদের স্কার্টের ডিজাইনের পরিবর্তন আসে৷ সেসময় অপেক্ষাকৃত অপ্রশস্ত পোশাক পড়তে এবং হাতে ব্যাগ বহন শুরু করেন মেয়েরা৷ অষ্টাদশ এবং ঊনবিংশ শতকের দিকে হাতে ব্যাগ বহন আধুনিতকতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়৷
ছবি: Bayerisches Nationalmuseum München
পুরুষের আনুষঙ্গিক উপকরণ
ফরাসি বিপ্লবের আগ অবধি পুরুষরা মেয়েদের মতোই কাপড়ের ভেতরে ব্যাগ বহন করতো৷ কিন্তু পরবর্তীতে পুরুষের পোশাকে পরিবর্তন আসে এবং বড় ব্যাগ ব্যবহারের চর্চা পুরুষরা এরকম ত্যাগ করে৷ তবে বর্তমান সময়ে ল্যাপটপ এবং ব্যাকপ্যাক ছাড়াও, হাতব্যাগ ব্যবহার পুরুষের ফ্যাশনে ফিরে এসেছে৷
ছবি: HUGO BOSS
স্টাইলের প্রতীক
ঊনবিংশ শতকে ট্রেন নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ঘটায় মানুষের যোগাযোগ বাহনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে৷ স্যুটকেস আলাদাভাবে লাগেজ ভাগেনে বহন করা হতো বলে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে বহন করার একটি বিকল্প ব্যাগের প্রয়োজন সৃষ্টি হয়৷ বিশেষ করে মেয়েরা তাদের ভ্যানিটি ব্যাগ সঙ্গে রাখতেই পছন্দ করতেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সৃজনশীলতা
১৯৭০ দশকে ম্যাগাজিন গোল করে মোড়ানো হলে যেমন দেখায়, সেরকমের ব্যাগ ব্যবহার ফ্যাশনে পরিণত হয়৷ ম্যাগাজিনের ‘ল্যামিনেটেড’ কভারের সঙ্গে হাতল জুড়ে এসব ব্যাগ তৈরি করা হতো৷
ছবি: Bayerisches Nationalmuseum München
ভালো দেখাচ্ছে
ব্রিটেনের ডাচেস অব ক্যামব্রিজ যে হাতব্যাগটি ব্যবহার করেন, সেটির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে৷ চিঠিপত্রের প্রসার ঘটার সময়কার ব্যাগের উত্তরসূরি হচ্ছে ছোট্ট এই ব্যাগটি৷ এর কোনো হাতল নেই৷ ফলে এটি হাতের মুঠোয় বা হাতের নীচে চেপে বহন করতে হয়৷ ১৯২০ সালের দিকে এই ব্যাগের প্রচলন শুরু হয়, যেটি ব্যবহার এখনও স্লিম মেয়েদের ফ্যাশন৷
ছবি: Getty Images
9 ছবি1 | 9
এরপরেই আছেন তালিকায় থাকা তিন তরুণের প্রথমজন ক্যানাডিয়ান সেনসেশন জাস্টিন বিবার৷ তবে তাঁর আয় লেডি গাগার চেয়ে ২২ মিলিয়ন ডলার কম, অর্থাৎ ৫৮ মিলিয়ন৷ তালিকার অন্য দুই ছেলে তারকা হলেন ডিজে ক্যালভিন হ্যারিস ও অভিনেতা টেলর লাউটনার৷ তাঁদের আয় যথাক্রমে ৪৬ ও ২২ মিলিয়ন ডলার৷ আর মেয়েদের মধ্য আছেন টেলর সুইফট (৫৫ মিলিয়ন ডলার), রিহানা (৪৩ মিলিয়ন), কেটি পেরি (৩৯ মিলিয়ন), আডেলে (২৫ মিলিয়ন), জেনিফার লরেন্স (২৬ মিলিয়ন ডলার) ও ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট (২২ মিলিয়ন)৷
তবে শুধু কম বয়সি তারকাদের তালিকায় নয়, গত জুনে ফোর্বস যে ‘পাওয়ারফুল সেলিব্রেটি'-দের লিস্ট তৈরি করেছিল তাতেও শীর্ষ দশে ছিলেন ছয়জন নারী৷
ফেমিনিস্ট ওয়েবসাইট জেজেবেল ডটকমের ব্লগার কেট ড্রাইস বলছেন, ‘‘শুধু যৌন আবেদন দিয়ে মেয়েরা অর্থ আয়ের ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তা ঠিক নয়, বরং গানের শিল্পীরা শুধু মিউজিশিয়ান হওয়ার চেয়ে আরো অন্যান্য বিষয়েও দক্ষতা অর্জন করছেন৷ তাই তাঁরা বেশি আয় করছেন৷''
তিনি বলেন, লেডি গাগা, রিহানা, টেলর সুইফট, কেটি পেরির মতো তারকারা পণ্যের মডেল হয়েই বেশি আয় করছেন৷ বিশেষ করে তাঁরা চান বিভিন্ন কসমেটিক পণ্যের সঙ্গে নিজের নাম জড়াতে৷ এমনকি জাস্টিন বিবারও তরুণীদের কাছে তাঁর নাম বেঁচে অনেক অর্থ আয় করছেন বলে মনে করেন ড্রাইস৷