যৌন নির্যাতন কেলেঙ্কারীতে আইরিশ ধর্মযাজকরা
২৪ ডিসেম্বর ২০০৯
অভিযুক্ত ক্যাথলিক বিশপের নাম জেমস মরিয়ার্টি৷ বুধবার ক্যাথলিকদের ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি তাঁর পদত্যগের কথা উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, আমি জানি আমি যে পদক্ষেপই নেই না কেন তা ভুক্তভোগীদের যন্ত্রণা কমাবে না৷ আমি সংশ্লিষ্টদের প্রতি এবং তাদের পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থী৷ যদিও মাত্র এক সপ্তাহ আগে ঠিক উল্টো কথাই বলেছিলেন বিশপ জেমস মরিয়ার্টি৷ এক রেডিও সাক্ষাতে তিনি বলেছিলেন, আমি মনে করি না আমার পদত্যাগ করার মত কোন কারণ রয়েছে৷ তবে এক সপ্তাহের মধ্যেই পরিস্থিতি পুরো উল্টে গেল৷ এর আগে চলতি মাসের শুরুতে আয়ারল্যান্ডের আরেক বিশপ ডোনাল মুরেও শিশু যৌন নির্যাতনের কেলেঙ্কারী মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন৷
চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন
গত ২৬ নভেম্বর আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের বিচারক ইয়োভনে মারফি এক প্রতিবেদন জমা দেন৷ তার এই প্রতিবেদনেই একের পর এক বের হয়ে আসে ওই এলাকার ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের কুকীর্তির কাহিনী৷ বিচারক মারফি জানান, ১৯৭৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ডাবলিনের ওই এলাকার ধর্মযাজকদের হাতে তিনশ'রও বেশি শিশু যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে৷ অনেকে ধর্ষিত পর্যন্তও হয়েছে৷ কিন্তু, এসব ঘটনা সবসময় চেপে গিয়েছে ক্যাথলিক গির্জার কর্তৃপক্ষ৷ কেলেঙ্কারী ছড়ানোর ভয়ে কখনো পুলিশকে এসব অপরাধ জানানো হয়নি৷ মূলত ক্যাথলিক গির্জার সম্মানহানির কারণেই ধর্মযাজকরা এই অন্যায়কে চেপে গিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই তদন্ত প্রতিবেদনে৷
চাপের মুখে ধর্মগুরুরা
এদিকে এই তদন্ত প্রতিবেদনের কারণেই ইতিমধ্যে জনগণের আস্থা হারিয়েছেন ডাবলিনের ক্যাথলিক ধর্মযাজকরা৷ তার ওপর একের পর এক বিশপের পদত্যাগের কারণে এখন অন্যান্য বিশপদের ওপরও চাপ বাড়ছে৷ আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ ক্যাথলিক ধর্মগুরু কার্ডিনাল শন ব্র্যাডি এক বার্তায় বলেছেন যে অনেকেই এই কেলেঙ্কারীর কারণে যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন৷ গত সপ্তাহে কার্ডিনাল ব্র্যাডির সঙ্গে সাক্ষাত করেন ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট৷ শুক্রবার পোপ বেনেডিক্ট এক বিবৃতিতে এই ধরণের জঘন্য অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন৷ তবে এরপরও ধর্মযাজকদের ওপর জনগনের আস্থা ফিরে আসবে কিনা সেটি দেখার বিষয়৷ কারণ ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অত্যন্ত পুরনো৷ উল্লেখ্য, ক্যাথলিকদের ধর্মমতে যাজক কিংবা যাজিকারা বিয়ে করতে পারেন না৷
প্রতিবেদক: রিয়াজুল ইসলাম, সম্পাদনা: দেবারতি গুহ