মার্কিন জুরি ট্রাম্পকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছে। তবে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
ছবি: Seth Wenig/AP/picture alliance
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার নিউইয়র্ক আদালতের জুরি সাবেক রাষ্ট্রপতি ডনাল্ড ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। জনৈক ই জিন ক্যারোল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ক্যারল একজন কলামনিস্ট। ১৯৯৬ সালে ট্রাম্প তাকে যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণ করেছিলেন বলে ক্যারল অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
আদালতে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। কিন্তু যৌন হেনস্থার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ক্যারল জানিয়েছিলেন, প্রথম যখন একথা তিনি লিখেছিলেন, ট্রাম্প তার মানহানি করেছিলেন। এদিন আদালত সেই মানহানির অভিযোগও মেনে নিয়েছে। এরপরেই ট্রাম্পকে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। আদালতকক্ষে ট্রাম্পের আইনজীবী থাকলেও ট্রাম্প নিজে উপস্থিত ছিলেন না।
যৌন কেলেঙ্কারি মামলা : ট্রাম্প সমর্থক এবং বিরোধীরা মুখোমুখি
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট হতে পারেন ট্রাম্প৷ মামলার সেরকম রায় অনিবার্য ভেবে বিরোধীরা উৎফুল্ল, তবে ট্রাম্প সমর্থকরা মামলাটিকেই ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ আখ্যা দিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায়৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
‘ট্রাম্পের সময় শেষ’
যৌন সম্পর্কের তথ্য গোপন রাখার জন্য সাবেক এক পর্ন তারকাকে টাকা দিয়েছিলেন- এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে গ্রেপ্তার হতে পারেন ডনাল্ড ট্রাম্প৷ ম্যানহাটনের আদালতের সামনে যখন ট্রাম্প সমর্থকদের ভিড়, বিরোধীদেরও সরব উপস্থিতি দেখা গেছে তখন৷ অনেকের হাতেই ছিল ‘কংগ্রেসে বাধা’, টিক টক, সময় শেষ’ ইত্যাদি লেখা পোস্টার৷ তাদের প্রত্যেকেই মনে করেন এই মামলার মাধ্যমে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হতে চলেছে৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
আদালতে কঠোর নিরাপত্তা
যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখার জন্য সাবেক পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে টাকা দেয়ার অভিযোগের মামলাটির শুনানি শেষ হওয়ার আগেই ট্রাম্প তার বিরুদ্ধে বাইডেন সরকারের ‘ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ রিপাবলিকানদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানান৷ আবার দু বছর আগের ক্যাপিটল হামলার মতো ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় আদালত প্রাঙ্গনে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ৷ ছবিতে আদালতের চারপাশে তল্লাশি চালাচ্ছেন এক পুলিশ সদস্য৷
ছবি: Amanda Perobelli/REUTERS
‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’
মঙ্গলবারের ছবি৷ নিউইয়র্কে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় ট্রাম্প-বিরোধীদের একজন চক দিয়ে লিখে দিয়েছেন, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়’ ৷ অর্থাৎ, বার্তাটা খুব সহজ আর তা হলো- অপরাধ করলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও কারাগারে যেতে হবে, কারণ, আইনের চোখে সবাই সমান৷
ছবি: Shannon Stapleton/REUTERS
সাংবাদিকদের ভিড়
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হতে পারেন, রায়ের সমর্থনে এবং বিরোধিতায় বড় মিছিল হতে পারে- সব মিলিয়ে ম্যানহাটনের আদালত এখন সব সংবাদ মাধ্যমেরই আকর্ষণের কেন্দ্রে৷ আদালতের বাইরে তাই সাংবাদিকদের অধীর অপেক্ষা৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
আদালতের সামনে ব্যারিকেড
ম্যানহাটন আদালতের সামনে অস্থায়ী ব্যারিকেড দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা৷
ছবি: Vanessa Carvalho/ZUMA/picture alliance
‘ট্রাম্প বিজয়ী’
গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের পরাজয় এবং জো বাইডেনের জয় সার্বিকভাবে মেনে নেননি ডনাল্ড ট্রাম্প৷ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে সমর্থকদের প্রতি বিক্ষোভ মিছিল করার আহ্বান জানিয়েছিলেন৷ ২০২১ সালে ক্যাপিটলে হামলা তারই পরিণাম৷ রিপাবলিকানদের অনেকে এখনো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মানতে নারাজ৷ তাদেরই একজন ম্যানহাটনের আদালতের সামনে হাজির হয়েছেন ‘ট্রাম্প জিতেছিলেন’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে৷
ছবি: Mike Segar/REUTERS
‘ট্রাম্প শেষ’
আরেক ট্রাম্পবিরোধীর হাতের ব্যানারে লেখা, ‘ট্রাম্প শেষ’৷ মামলায় শেষ পর্যন্ত কি সত্যিই ট্রাম্প অভিযুক্ত হবেন? সর্বশেষ শুনানিতে আইনজীবী রবার্ট কস্তেলার বক্তব্য সে বিষয়ে কিছুটা সংশয় জাগিয়েছে৷ তিনি বলেছেন, সাবেক পর্ন তারকাকে টাকাটা দিয়েছিলেন ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন৷ কস্তেলার দাবি, মাইকেল কোহেন নিজেই টাকাটা দিতে গিয়েছিলেন, অর্থাৎ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্তটা ট্রাম্পের নয়৷
ছবি: David Dee Delgado/REUTERS
ট্রাম্পের তরুণ সমর্থকদের সমাবেশ
ম্যানহাটনের আদালতের বাইরে নিউ ইয়র্ক ইয়ং রিপাবলিকান ক্লাবের সদস্যদের বিক্ষোভ সমাবেশ৷ সমাবেশের এক পর্যায়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন তারা৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে নিন, ট্রাম্প’
আদালতের সামনে আরো কয়েকজন ট্রাম্প সমর্থক৷ ২০২৪-এর নির্বাচনে অংশ নিয়ে ট্রাম্প আবার বিজয়ীর বেশে ক্ষমতায় ফিরবেন- এমনই প্রত্যাশা তাদের৷
ছবি: Andrew Kelly/REUTERS
9 ছবি1 | 9
কী হয়েছিল
ক্যারল দাবি করেছেন, ১৯৯৬ সালে এক বান্ধবীর উপহার কেনার জন্য ট্রাম্প ক্যারলকে ডেকেছিলেন। তারা ম্যানহাটনের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে গেছিলেন। সেখানে কথা বলতে বলতে ক্যারলকে নিয়ে ট্রাম্প ট্রায়ালরুমে ঢুকে পড়েন। এবং সেখানেই তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ক্যারল জানিয়েছেন, কোনোমতে ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে পড়েন এবং পালিয়ে যান। পরে এই পুরো ঘটনার কথাই তিনি লিখেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রকাশ্যে তা মিথ্যা বলে দাবি করেন। ২০২২ সালে নিজের তৈরি সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও ট্রাম্প একই কথা লিখেছেন।
৭৯ বছরের ক্যারলের আইনজীবী জানিয়েছেন, আদালতের সিদ্ধান্তে তারা খুশি। তবে ক্যারল কিছু জানাননি। অন্যদিকে ট্রাম্পও এখনো বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে তার আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। ট্রাম্প নির্দোষ।
ফৌজদারি মামলা
আরো একটি ফৌজদারি মামলা চলছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তিনিই একমাত্র সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে। অভিযোগ, এক অভিনেত্রীকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য তিনি কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন। ওই অভিনেত্রীও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচনের আগে ওই অভিনেত্রীর মুখ বন্ধ করতে ওই অর্থ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। আদালতে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন ডনাল্ড ট্রাম্প।