1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রংপুরে জোড়া হত্যা: নিহতদের ওপরই দায় চাপানোর চেষ্টা!

২২ আগস্ট ২০২৫

রংপুরের তারাগঞ্জে রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার এজাহার পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পাল্টে দিয়েছে বলে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।

তিনজন পুলিশকর্মীর সাথে চারজন গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে৷
একইভাবে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর খুলনা শহরে মহানবী (সা.)-কে কটুক্তির অভিযোগে উৎসব মণ্ডল নামে এক কিশোরের ওপর  সোনাডাঙা ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের অফিসে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মব নিয়ে গিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত উৎসব মারা গেছে ভেবে হামলাকারীরা চলে গেলে সে রক্ষা পায়। তবে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়।ছবি: Sarkar Mohammad

শুধু তাই নয়, প্রকারান্তরে ‘হত্যার দায়' নিহতদের ওপরই চাপানো হয়েছে বলেও মনে করেন নিহত রূপলালের ছেলে ও মেয়ে।

এজাহারে পুলিশ রূপলালের স্ত্রী মালতী ওরফে ভারতী রাণীর যে ফোন নাম্বারটি দিয়েছে, তা টঙ্গাইল এলাকার আরেক ব্যক্তির নাম্বার। তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ ফারুক অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত ৯ আগস্ট রূপলাল দাস ও  তার ভাতিজি জামাই প্রদীপ লালকে বাড়িতে ফেরার পথে বুড়ির হাটে আটক করে মব তৈরি করে ধরে নিয়ে বুড়ির হাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ ভিডিওতে কারা রূপলাল ও প্রদীপকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তা-ও দেখা যায়। ভিডিও ফুটেজে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা গেলেও তাদের কাউকে পুলিশ  এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। যে চারজনকে আটক করা হয়েছে, তাদের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়নি বলে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন।

এজাহার নিয়ে বিতর্ক

হত্যা মামলা হয় ১০ আগস্ট। কিন্তু মামলার এজাহারে কী আছে তা নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানতেন না। দুইদিন আগে ব্যাংকের কাজে ওই এজাহার সংগ্রহ করা হয়। রূপলাল দাসের মেয়ে নুপুর রাণী দাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, " মামলায় অনেক ঘটনা পাল্টে দেয়া হয়েছে। আর হত্যার জন্য আমার বাবাকেই দায়ী করা হয়েছে। ” মামলায় কী কী বিষয় পাল্টে দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে নুপুর বলেন, "আমার বাবাকে আমি বুড়ির হাট মাঠে গিয়ে মৃত অবস্থায় পাই। কিন্তু এজাহারে লেখা হয়েছে তিনি হাসপাতালে মারা গেছেন। আর হত্যাকাণ্ডের সময় সেখানে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ভিডিওতেও চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়। কিন্তু এজাহারে তার কোনো উল্লেখ নাই। আমি গিয়ে আমার বাবাকে চিহ্নিত করি। তখনো প্রদীপ দাদা বেঁচে ছিলেন।”

"পুলিশ সব দোষ আমার বাবার ঘাড়েই চাপিয়েছে। আমার বাবা নাকি নিজের কারণেই মারাগেছে। এখন তো আর উনি বেঁচে নাই। ওনাকে দোষ দিলে উনি তো আর প্রতিবাদ করতে পারবেন না। ঘটনার পরের দিন আমার বিয়ের তারিখ ঠিক করতে যাওয়ার কথা ছিল। তাদের ব্যাগে পানীয় ছিল, যেটা আমাদের বিয়ে শাদীতে খায়। কিন্তু ব্যাগে আপেল, কমলা , ডালিম,  পেয়ারা, মিষ্টিও ছিল। সেগুলো নিয়ে গেছে। এজাহারে ওই ফল ও মিষ্টির কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে, ব্যাগে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয়  এবং ঔষধ পায়। কয়েকজন তাদের  আটকে তা পান করলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং উত্তেজিত জনতা তাদের গণপিটুনি দেয় বলে দাবি করা হয়েছে,” বলেন তিনি।

‘এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছি, বাকিদের আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে’: এমএ ফারুক

This browser does not support the audio element.

তার অভিযোগ, "পুলিশ আমার মায়ের কাছ থেকে একটি কাগজে সই নেয়। ওই কাগজে কী লেখা ছিল শোকার্ত অবস্থায় তা তিনি দেখেননি। কিন্তু এখন আমরা দেখছি, পুলিশ তার ইচ্ছেমতো এজাহার দিয়েছে, যার সঙ্গে বাস্তবের মিল নাই।”

আর এজাহারে আসামির সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট যে, ২০-২৫ জন লোক তাদের হত্যা করেছে। কিন্তু আসামি করা হয়েছে ৭০০ জনকে। ভিডিও ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, তাদের কাউকেই এখনো আটক করা হয়নি।''

"এছাড়া এজাহারের আমার মায়ের ফোন নাম্বার হিসাবে যে নাম্বার দিয়েছে, তা আমাদের পরিবারের কারো নাম্বার নয়। আমরা ওই নাম্বারে ফোন করে দেখেছি সেটা টাঙ্গাইলের একজনের নাম্বার,” বলেন নুপুর।

এজাহারের ওই ফোন নাম্বারে ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকেও ফোন করা হয়। ফোন করে জানা যায় ওই নাম্বারটি টাঙ্গাইল সদরের একজন পুলিশ সদস্যের। তারাগঞ্জের মামলার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি তার। ওই পুলিশ সদস্য বলেন, আরো অনেকের ফোন পাচ্ছেন তিনি।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ ফারুক ডয়চে ভেলের কাছে দাবি করেন, " মামলার এজাহারে পুলিশ কোনো পবির্তন বা বিকৃতি ঘটায়নি। তাদের পরিবার যে এজাহার দিয়েছে, সেই এজাহার অনুযায়ী মামলা হয়েছে। পুলিশ কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু করেনি। ”

অন্যের ফোন নাম্বার রূপলালের স্ত্রী-র হিসেবে দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, " ভুল হতে পারে।”

তিনি দাবি করেন, "এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করেছি। তবে ভিডিও ফুটেজে যাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনো আটক করতে পারিনি।”

পুলিশ এজাহারে অজ্ঞাত আসামি ৭০০ বানিয়ে বিষয়টিকে গণরোষ হিসাবে দেখানের চেষ্টা করেছে, এজাহারেও সেরকম গণপিটুনির কথা বলা হয়েছে। ফলে এই মামলা আসামিদের সুযোগ করে দেবে বলে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। রূপলালের ছেলে জয়দাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, "মামলাটি সাজানো হয়েছে এমনভাবে, যেন আমার বাবা ও দাদাই তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী। আসামিরা যাতে রেহাই পায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

যেভাবে ভিক্টিমের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা

২২ জুন লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগেপেশায় নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে দেয় একদল লোক। হামলার শিকার ও পরে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, পরেশ চন্দ্র শীল (৬৯) ও তার ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীল। সেই ঘটনায় একটি মসজিদের ইমামের নেতৃত্বে মব সৃষ্টি করা হয়।

ওই ঘটনার সময় উত্তেজিত জনতার উদ্দেশ্যে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি বলেছিলেন," বাংলাদেশে এমন মামলা তাদের দেবো,  নিশ্চিত তাদের যেন যাবজ্জীবন বা ফাঁসি হয়..”

পিতা-পুত্র  প্রায় দেড় মাস ধর্ম অবমনার মামলায় কারাগারে থাকার পর গত ৭ আগস্ট জামিন পেয়েছেন। কিন্তু ধর্ম অবমাননার মামলা তাদের বিরুদ্ধে রয়ে গেছে। বিষ্ণু চন্দ্র শীলের স্ত্রী দীপ্তি রানী শীল শুক্রবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার শ্বশুর এবং স্বামীকে পিটুনি দেয়া হয়েছে। আবার উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অনেক কষ্ট করে এই মাসের ৭ তারিখে তাদের জামিন করিয়েছি। কিন্তু মামলা থেকে রেহাই পায়নি।”

তিনি জানান, "তারা এখন বাড়িতেই থাকেন। বাইরে বের হন না। আর চুল কাটার সেলুনটিও বন্ধ আছে। ভয়ে খুলতে পারছেন না। আমি একা মানুষ, কীভাবে সংসার চালাই তা আমি ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। পুলিশ বা স্থানীয় কেউ আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না।”

একইভাবে গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর খুলনা শহরে মহানবী (সা.)-কে কটুক্তির অভিযোগে উৎসব মণ্ডল নামে এক কিশোরের ওপর  সোনাডাঙা ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের অফিসে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মব নিয়ে গিয়ে হামলা চালানো হয়। গুরুতর আহত উৎসব মারা গেছে ভেবে হামলাকারীরা চলে গেলে সে রক্ষা পায়। তবে তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর তার পরিবারের সদস্যরা শহর ছেড়ে চলে গেছেন। উৎসব পরে জামিন পেলেও তার লেখা পড়াব বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, " তার মামলাটি এখনো চলছে। সে জামিন পেলেও এখন আর প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে না।” তার পরিবারের একটি ফোন নাম্বার পাওয়া গেলেও ওই ফোনে বার বার চেষ্টার পরও কেউ রিসিভ করেননি।

এরকম আরো অনেক ঘটনা আছে জানিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র নাথ দাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, "রংপুরের গঙ্গাচড়া থেকে শুরু করে খুলনা, লালমনিরহাট সবখানেই একই রকম ঘটনা ঘটছে।  ধর্ম অবমাননার অথবা অন্য কোনো অভিযোগ তুলে সংখ্যালঘুদের ওপর মব ভায়েলেন্স চালানো হচ্ছে। কোনো অপরাধ প্রমাণ হচ্ছে না। ফেসবুকের ভুয়া স্ক্রিনশট দিয়েও হামলা করা হচ্ছে। কিন্তু যারা হামলা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ভিক্টিমদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে কারাগারে আটক  রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তা দেয়ার নামে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে তাদের।”

‘মামলায় অনেক ঘটনা পাল্টে দেয়া হয়েছে’: নুপুর রাণী দাস

This browser does not support the audio element.

"রংপুরের ঘটনায় যে হত্যা মামলা হয়েছে, সেটা নিয়েও আমরা অভিযোগ পেয়েছি। মামলার এজাহার এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে আসামিরা পার পেয়ে যায়। আমরা সংখ্যালঘু বলেই এই ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আইন আমাদের জন্য সমানভাবে কাজ করছে বলে মনে হয় না।,” বলেন তিনি।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, "রংপুরে দুইজনকে মব তৈরি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা স্পষ্ট তার ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। তারপরও পুলিশ মামলার ক্ষেত্রে নানা কৌশল নিয়েছে অপরাধীদের রক্ষার জন্য। এটা আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।”

তার কথা, "পুলিশের এই আচরণ বিচার পেতে বাধা তৈরি করবে। আর চিহ্নিত আসামিদের গ্রেপ্তার না করে শত শত আসামি করার মধ্যে পুলিশের খারাপ উদ্দেশ্য আছে।”

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, "দেশে সংখ্যালঘুদের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। পুলিশ এই ধরনের ভূমিকা নিলে তা কাটবেও না।”

‘আমরা এখানে বাংলাদেশে গত ৫৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার একটা প্রামাণ্যচিত্র দেখাতে চেয়েছিলাম'

শুক্রবার সকালে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন' করতে দেয়নি পুলিশ। ‘পাহাড় থেকে সমতল, অস্তিত্ব রক্ষায় অটল' শিরোনামে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন এই সম্মেলনের আয়োজন করেছিল।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন-এর আহ্বায়ক সুস্মিতা কর ডয়চে ভেলেকে বলেন, "এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত আয়োজন ছিল। সকালে সারাদেশ থেকে আমাদের প্রতিনিধিরাও আসেন। প্রয়োজনীয় অনুমতিও ছিল। কিন্তু সকালে পুলিশ প্রধান গেটে অবস্থান নিয়ে আমাদের কাউকে ঢুকতে দেয়নি।”

‘আমরা এখানে বাংলাদেশে গত ৫৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার একটা প্রামান্য চিত্র দেখাতে চেয়েছিলাম’: সুস্মিতা কর

This browser does not support the audio element.

"আমরা এখানে বাংলাদেশে গত ৫৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার একটা প্রামাণ্যচিত্র দেখাতে চেয়েছিলাম। আমরা দেখাতে চেয়েছিলাম যে, আমাদের বলা হয় আমরা কোনো একটি দলের ভোট ব্যাংক, কিন্তু বাস্তবে তা নয়। কিন্তু আমরা তা দেখাতে পারলাম না.” বলেন তিনি।

খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই সম্মেলন আবার করার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন সম্মেলন হতে না দেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে বলেছেন, ‘‘উদ্যোক্তারা যথাসময়ে ও যথাস্থানে অনুমতির আবেদন জমা দিতে পারেনি। অনুমোদনও নিতে পারেনি। এ কারণে এখানে কর্মসূচি করতে দেয়া হয়নি।”

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ