মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বিমানটি গত বছরের ১৭ই জুলাই পূর্ব ইউক্রেনে ভেঙে পড়ে৷ ডাচ সেফটি বোর্ড তাদের রিপোর্টে সম্ভবত একটি রুশ ‘বুক' ক্ষেপণাস্ত্রকে এর জন্য দায়ী করবে, তবে কোনো পক্ষের উপর দোষারোপ না করে৷
বিজ্ঞাপন
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পত্রপত্রিকা যতটুকু জানতে পেরেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, এমএইচ১৭ উড়ালটি ‘বুক' মাটি-থেকে-আকাশ রকেটের আঘাতে ভূপাতিত হওয়ার খবরটা সাচ্চা৷ নেদারল্যান্ডস-এর নাম-করা ‘ফল্কসক্রান্ট' দৈনিক তদন্তের কাছাকাছি তিনটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে একই খবর দিয়েছে৷
বহু বিশেষজ্ঞ এবং পশ্চিমি সরকারবর্গের বিশ্বাস যে, পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীরা ‘বুক' রকেটটি নিক্ষেপ করে৷ বিমান দুর্ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্তের নিয়মাবলী অনুযায়ী ডাচ সেফটি বোর্ড-এর কারোর ওপর দোষারোপ করার অধিকার নেই৷ কাজেই বোর্ড তাদের রিপোর্টে তা করবে না বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে৷ কিন্তু নানা প্রশ্ন – এবং সেই সঙ্গে একটি বুনিয়াদি বিতর্ক থেকে যাচ্ছে৷ ‘‘এমএইচ১৭ সম্পর্কে আজ আমরা দু'টো রিপোর্ট শুনবো: একটি হল্যান্ড থেকে, আরেকটি রাশিয়া থেকে,'' টুইট করেছেন স্টিভ রোজেনবার্গ৷ কিন্তু কে বিমানটিকে ভূপাতিত করেছে, তা নিয়ে রাশিয়া এবং পশ্চিমি দুনিয়ার মধ্যে মতানৈক্য চলবে৷''
ওদিকে ‘বুক' রকেটের রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত রুশি নির্মাতা আলমাজ-আন্তাই সংস্থা এই মঙ্গলবার সকালেই একটি সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে তাদের নিজস্ব তদন্তের ফলাফল পেশ করেছে, যে বিষয়ে হাওয়ার্ড আমোস টুইট করেছেন: ‘‘নানা ধরনের লাল লাইন আর অ্যারো দিয়ে আলমাজ-আন্তাই প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে, বুক রকেটটি সামনে থেকে এমএইচ১৭ উড়ালটিতে ধাক্কা মারে৷''
ডাচ সেফটি বোর্ডের রিপোর্ট দু'পক্ষের এই পারস্পরিক সন্দেহ ও দোষারোপকে থামাতে পারবে বলে মনে হয় না৷ জেরাল্ড হেনজেল টুইট করেছেন: ‘‘রাশিয়ান ট্রল ফ্যাকট্রিরা জেগে ওঠো৷ আজ এমএইচ১৭ সংক্রান্ত চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ হবে৷ কাজেই এখন আরো কিছু উদ্ভটে ষড়যন্ত্রের থিওরি ভেবে বার করার সময় এসেছে...৷''
বিমান দুর্ঘটনা, না হত্যাকাণ্ড!
১৭ জুলাই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ সীমান্তের কাছে বিধ্বস্ত হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-এর এমএইচ১৭ বিমানটি৷ এতে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন৷ ধারণা করা হচ্ছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters
নিহত সব আরোহী
১৭ জুলাই রুশ সীমান্তের কাছে একটি গ্রামে বিধ্বস্ত হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭-এর এমএইচ১৭ বিমান৷ এতে ২৯৮ আরোহীর সবাই নিহত হন৷
ছবি: imago/Xinhua
চলছে উদ্ধার কাজ
রুশপন্থিরা রবিবার থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে এক জায়গায় নিয়ে রাখা শুরু করে৷ ইউক্রেনের জরুরি বিভাগের কর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার ভোরে আরো ২১ আরোহীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়৷ ফলে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫১’তে৷
ছবি: Reuters
তদন্তকারীদের প্রবেশ নিষেধ
আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার কর্মীদের দুর্ঘটনাস্থলের শুধুমাত্র নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত যেতে দেয়া হচ্ছে৷ সব স্থানে প্রবেশের অনুমতি তাঁরা পাচ্ছেন না৷
ছবি: imago/Itar-Tass
লাশবাহী ট্রেন
রুশপন্থিরা মৃতদেহগুলোকে আপাতত একটি ট্রেনে রেখেছে৷ ঐ ট্রেনের চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিতে আছে লাশগুলো৷
ছবি: Reuters
দেহাবশেষ
এখনো মৃতদেহ উদ্ধার চলছে৷ কিছু কিছু মৃতদেহ চেনার উপায় নেই৷ আছে কেবল দেহাবশেষ৷
ছবি: Reuters
দুপক্ষের অভিযোগ
ইউক্রেনের দাবি, তাদের দেশে থাকা রুশপন্থিরাই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে বিমানটি বিধ্বস্ত করেছে৷ তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রাশিয়া এর সাথে জড়িত নয়৷
ছবি: imago/Itar-Tass
অভিযোগ ‘বুক’ এর দিকে
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘বুক’ নামে পরিচিত ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের প্রতিক্রিয়া এতই ভয়াবহ ছিল যে, যাত্রীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিমানটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়৷ ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূমি থেকে ৭২ হাজার ফুট উচ্চতার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম৷ আর মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমানটি উড়ছিল ৩৩ হাজার ফুট উচ্চতায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বেঁচে গেল এয়ার ইন্ডিয়া
মাত্র ৯০ সেকেন্ড৷ এই সময়টাই বাঁচিয়ে দিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানকে৷ পূর্ব ইউক্রেনে মিসাইল হামলায় বিধ্বস্ত মালয়েশিয়ার বিমানটির মতোই পরিণতি হতে পারতো দিল্লি থেকে বার্মিংহামগামী বিমানটির৷ মালয়েশিয়ার বিমানটি যখন বিধ্বস্ত হয় তখন এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি ছিল মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে৷
ছবি: picture alliance/dpa
শোকে স্তব্ধ নেদারল্যান্ডস
বিমানটিতে ১৫৭ জন যাত্রী ছিল নেদারল্যান্ডসের৷ তাই শোকে স্তব্ধ দেশটি৷
ছবি: Reuters
দেশে দেশে শোক
এছাড়া মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চলছে শোক৷