এ বার রবীন্দ্রজয়ন্তী নিয়েও বিতর্ক। যার কেন্দ্রবিন্দুতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশ জানিয়েছে, পঁচিশে বৈশাখের অনুষ্ঠানে বাজাতে হবে মুখ্যমন্ত্রী গান।
বিজ্ঞাপন
গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যাতে বলা হয়, প্রতিবারের মতো এ বছর দিকে দিকে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করা হবে না। তবে সরকারের তরফ থেকে কলকাতা এবং বিভিন্ন জেলায় সরকারি অনুষ্ঠান হবে। রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন উপলক্ষে সরকার ট্যাবলো বার করবে জেলায় জেলায়। যা রবীন্দ্রনাথের ছবি দিয়ে সাজানো হবে। বাজানো হবে রবীন্দ্রনাথের বাছাই করা গান। তারই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা করোনা বিরোধী প্রচারের গানও বাজানো হবে। শুধু তাই নয়, পাড়ায় পাড়ায় এবং বিভিন্ন আবাসনে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানেও ওই গান বাজানোর নির্দেশ জারি করে পুলিশ। বলা হয়, সকাল নয়টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে বাজাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর গান।
রাজ্যের শিল্প-সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই পুলিশের এই বিজ্ঞপ্তি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ডয়চে ভেলেকে পবিত্র সরকার জানিয়েছেন, ''প্রতিদিনই তো ওঁর গান শুনতে হয়। করোনার বিরুদ্ধে প্রচারও জরুরি, সন্দেহ নেই। তবে একটা দিন অন্তত রবীন্দ্রনাথের জন্য থাক! রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান বাজানো কি খুব প্রয়োজন ছিল?''
শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন
দুই বাংলার সাংস্কৃতিক যোগসূত্রকে আরো শক্তিশালী করতে শান্তিনিকেতনে তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ভবন৷ এর জন্য ২৫ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ৷ এখানে ৪৫০ আসনের প্রেক্ষাগৃহসহ একটি সংগ্রহশালা ও পাঠাগারও রয়েছে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
শুভ উদ্বোধন
রবীন্দ্রনাথের সার্ধ-শতবর্ষের সময়ই শান্তিনিকেতনে এই ভবন গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন শেখ হাসিনা৷ তখন থেকেই তিনি প্রতীক্ষায় ছিলেন৷ শুক্রবার সেই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটলো৷ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ ভবনের৷ আশা, ভারত-বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের নতুন অধ্যায় খুলে যাবে এবার৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
আনন্দযজ্ঞ
বাংলাদেশ ভবনে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের গ্রন্থের সংগ্রহ নিয়ে একটি পাঠাগার তৈরি করা হয়েছে৷ সাধারণের ব্যবহারের করার কথা ভেবেই বাড়িটিতে একটি ক্যাফেটোরিয়াও রাখা হয়েছে৷ গত এপ্রিলের মাঝামাঝি বাংলাদেশের সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর শান্তিনিকেতনে এসে বাড়িটির চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ তদারকি করে গিয়েছিলেন৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে চাঁদের হাট
বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের দিন শান্তিনিকেতনে উপস্থিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিরা৷ ছিলেন বহু রবীন্দ্র অনুরাগীও৷ এদিনই ছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবর্তন৷
ছবি: DW/P. Samanta
কবি ও মুজিবুর
বাংলাদেশ ভবন যে শান্তিনিকেতনের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠবে, তাতে সন্দেহ নেই৷ বাংলাদেশ ভবনের প্রবেশদ্বারের দুই প্রান্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মুরাল’ স্থাপন করা হয়েছে৷ ভেতরেও দেখা মিলবে তাঁদের৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
স্মারক
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসভিত্তিক সংগ্রহশালায় দেখা মিলবে জানা-অজানা কিংবা চেনা অচেনা বস্তুর৷ কিন্তু রবীন্দ্র অনুরাগী মাত্রেই জানেন পদ্মার বোটের প্রতিরূপটির কথা৷ কবিগুরুর জীবনের একটা বিশেষ সময় কেটেছে বাংলাদেশে৷ সেই সব স্মৃতিকে নিয়ে গড়া হয়েছে বাংলাদেশ ভবনের গ্যালারি৷ এখানেই ঠাঁই দেওয়া হয়েছে কবিগুরুর বাংলাদেশে কাটানোর নানা স্মৃতিবাহী স্মারক, ছবি৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
পায়ে পায়ে শান্তিনিকেতন
বিশ্বভারতীতে আজকাল পর্যটকদের জন্য প্রায়ই যানজট হয়৷ ব্যক্তিগত গাড়ি বা টোটোর উৎপাতে অনেকেই অতিষ্ঠ হয়ে যান৷ তবে এমন আনন্দঘন মুহূর্তকে ধরে রাখতে কেউ কেউ পায়ে পায়েই বেরিয়ে পড়েছেন৷ পুলিশি নিরাপত্তায় শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন ভবনগুলি আর বিখ্যাত মনীষীদের বাড়িগুলিও দেখে নিয়েছেন তাঁরা৷ ছবিতে অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’৷
ছবি: DW/P. Samanta
আলোকিত মঞ্চ
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রথমবার শান্তিনিকেতনে এলেন বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সঙ্গে ছিলেন দুই বাংলার দুই নেত্রী৷ কাজেই তিস্তার জলবণ্টন সমস্যা বা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমস্যা নিয়ে কোনো কথাই হয়নি, এটা ভাবা যায় না! বাংলাদেশে এ বছরই সাধারণ নির্বাচন৷ তাই শেখ হাসিনার এই পশ্চিমবঙ্গ সফর বাড়তি তাৎপর্য পাচ্ছে৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
7 ছবি1 | 7
পবিত্রবাবুর সঙ্গে অবশ্য এক মত নন কবি সুবোধ সরকার। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, ''রবীন্দ্রনাথের গান বন্ধ করে তো কেউ করোনার প্রচারের গান বাজাতে বলছে না! আমি তো বলবো, পুলিশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। রবীন্দ্রজয়ন্তী নিঃসন্দেহে বাঙালির আবেগের জায়গা। পুলিশ সেই মঞ্চটাকেই করোনা প্রতিরোধের জন্যও ব্যবহার করছে। কারণ, এখনও করোনা নিয়ে বহু মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি।''
বিরোধী রাজনীতিকদের অনেকেই পুলিশের এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। প্রশ্ন উঠছে নাগরিক সমাজের একাংশেও। বলা হচ্ছে, কেন যে কোনও ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর গান, কবিতা, ছবি আমাদের শুনতে এবং দেখতে হবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসক এবং রাজনীতিক হিসেবে বিশিষ্ট, শিল্পী হিসেবে তো নন! তা হলে কেন সরকারি প্রচারে বার বার তাঁর আঁকা, কবিতা এবং গান সামনে আনা হয়? এটাও কি এক ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার নয়?
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''প্রথমত রবীন্দ্রগানের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান বাজানোর অর্থ রবীন্দ্রনাথকে অপমান করা। বাঙালি সংস্কৃতিকেও অপমান করা। দ্বিতীয়ত বলতে চাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে যে প্রশাসনটি চালান, সেখানে তিনিই একাই সব। অর্থাৎ, তাঁর চরিত্রটি কার্যত একনায়কতান্ত্রিক। একনায়কের কাজই হলো একমাত্র নিজেকে তুলে ধরা। সে কারণেই তাঁর প্রশাসনে তিনিই কবি, তিনিই শিল্পী, তিনিই গানের রচয়িতা। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।''
জোড়াসাঁকোর অন্দরমহলে
কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি এখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ হিসেবে ব্যবহৃত৷ এই বাড়িতেই জন্মগ্রহণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ আধুনিক বাংলা সাহিত্যে এই বাড়ির অবদান অনস্বীকার্য৷
ছবি: DW/P. Samanta
যাবার দিনের কথা
বারান্দায় কবির মূর্তির সামনে রয়েছে একটি ট্রেনের অনুকৃতি। শান্তিনিকেতন থেকে যে ট্রেনে কবিকে শেষবারের মতো কলকাতায় আনা হয়, এটি তারই অনুকৃতি। ভারতীয় রেল ঠাকুরবাড়িকে এই উপহার দিয়েছে।
ছবি: DW/P. Samanta
দিনুর ঘর
রবীন্দ্রসঙ্গীতের ‘সকল গানের ভাণ্ডারী’ দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর অধিকাংশ রবি গানের স্বরলিপিকার ছিলেন। কবি নতুন কোনও গান রচনা করার পরপরই দিনেন্দ্রনাথ স্বেচ্ছায় বা কবির নির্দেশে সে গান কণ্ঠে তুলে নিতেন।
ছবি: DW/P. Samanta
নিরাকারের জন্য প্রার্থনাস্থল
বাড়ির পুরনো অংশের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে দালানটি। ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার আগে এটি ছিল ঠাকুরদালান। তখন এখানে দুর্গাপুজো হত। ব্রাহ্ম ধর্মে দীক্ষার পর এই দালান নিরাকার ব্রহ্মকে উৎসর্গ করা হয়।
ছবি: DW/P. Samanta
প্রাচীন ঠাকুরবাড়ি
১৭৮৪ সালে এই দালান অংশের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর বিপরীতে রয়েছে একটি স্থায়ী মঞ্চ। এখানেই বাল্মিকী প্রতিভা নাটক নিয়ে কবির আত্মপ্রকাশ।
ছবি: DW/P. Samanta
শয়নকক্ষ
কবি ও কবিপত্মী মৃণালিনী দেবীর ব্যবহৃত এই ঘরটিতে রয়েছে অনুচ্চ গদিযুক্ত লম্বা পালঙ্ক, বই রাখার তাক ও বেতের চেয়ার। রয়েছে বেশ কয়েকটি ছবি। তার মধ্যে একটি গুরুদেবের শান্তিনিকেতনে ক্লাস নেওয়ার ছবি।
ছবি: DW/P. Samanta
এসো বস আহারে
দোতলায় সিঁড়ি দিয়ে উঠেই প্রথমে পড়ে ঠাকুরবাড়ির ভোজন কক্ষ। টেবিল ও হেলান দেওয়া চেয়ারে প্রতিফলিত ঠাকুর পরিবারের আভিজাত্য।
ছবি: DW/P. Samanta
রাজা সাজার ঘর
কবির ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদের ঠাঁই ছিল এখানেই। বিচিত্রা ভবনে যতবার পারিবারিক নাটকের আয়োজন হয়েছে, কবি এই আয়নায় নাটকের সাজ করেছেন। ঘরটিতে সাজানো রয়েছে কবির নানা বয়সের ছবি।
ছবি: DW/P. Samanta
দক্ষিণের বারান্দা
জীবনস্মৃতিতে উল্লিখিত সেই দক্ষিণের বারান্দা এটাই। এখানে কবির জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। এই বারান্দা পেরিয়েই যে ঘর, সেখানে রয়েছে বংশ তালিকা। বারান্দার আবরণীর ওপাশে দেখা যাচ্ছে বাড়ির পুরোনো অংশ।
ছবি: DW/P. Samanta
সঙ্গিনীর শেষের দিনে
জীবনের শেষের দিকে কবি-পত্নী এই ঘরেই কাটিয়েছেন। এমনকী তাঁর শেষশয্যাও এখানেই পাতা হয়েছে। সারা রাত মৃত্যুশয্যায় স্ত্রীকে পাহারা দেওয়ার পর কবি চলে গিয়েছিলেন ছাদে। আজও কাঁচের আলমারিতে তাঁর ব্যবহৃত শাড়িটি পরম যত্নে রাখা।
ছবি: DW/P. Samanta
ওই দেখা যায় হেঁশেল
দোতলার রান্নাঘরটি বেশ ছিমছাম এবং আলোবাতাস পূর্ণ। এখানেই জাপানি অতিথিদের জন্য নাকি প্রথমবার চা খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। আমদানি করা হয়েছিল চায়ের সরঞ্জাম সমূহ। হেঁশেলের আলমারিতে রাখা আছে দেড়শো বছরের পুরনো চিনামাটির পাত্র ও পাথরের বাসনপত্র।
ছবি: DW/P. Samanta
ভোজের উৎসস্থল
ঠাকুরবাড়ির যাবতীয় সৃজনশীল রান্নার উৎসস্থল দোতলার এই মাটির উনুন। প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী বা মৃণালিনী দেবীর নানা রকম অভিনব আয়োজনের শরিক এই উনুনই। চা করার জন্য কয়লার চুল্লিরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
ছবি: DW/P. Samanta
যাত্রী নেই
কবিগুরুর ব্যবহৃত কালো রঙের এই গাড়ি আজ সম্পূর্ণ বিশ্রামে। অনেক আলোকবর্ষ দূরে চলে গিয়েছেন এই গাড়ির যাত্রী। তাঁর স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে জোড়াসাঁকোয়।
ছবি: DW/P. Samanta
ছবির ঘর
প্রবীণ কবির কাছে ক্যানভাসই হয়ে উঠেছিল কবিতা। কবিগুরুর নানা ছবির সম্ভার রয়েছে এই ঘরে।
ছবি: DW/P. Samanta
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু
দেওয়ালে টাঙানো ছবিগুলো দেখলে বোঝা যায় এ তাঁর রোগশয্যার চিহ্ন। এই প্রয়াণকক্ষেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এর পিছনের ঘরে পর্দা টেনে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা।
ছবি: DW/P. Samanta
14 ছবি1 | 14
সুজনবাবুর বক্তব্যের বিরোধিতা করে প্রাক্তন সাংসদ এবং নাট্য বক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''এই বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করাটাই আসলে লজ্জাজনক। সময়ের কথা মাথায় রাখা জরুরি। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গোটা পৃথিবীতে এখন করোনা সংকট। দিকে দিকে লকডাউন। ফলে মানুষের কাছে গিয়ে সব সময় প্রচার করাও সম্ভব হচ্ছে না। রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের মধ্যে যদি করোনার প্রচারও জুড়ে দেওয়া হয়, তাতে ভুল কিছু তো দেখতে পাই না। রাজনীতির জন্য রাজনীতি না করাই শ্রেয়।'' তৃণমূল সাংসদ শুখেন্দুশেখর রায়ের বক্তব্য, ''শুধু রবীন্দ্রজয়ন্তী নয়, বর্তমান সময়ে যে কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই করোনা বিরোধী সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই গান ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার তো করোনার মধ্যেও রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে অনুষ্ঠান করছে। তাতে করোনা সচেতনতার বিষয়টি থাকলে অসুবিধা কোথায়?''
বিতর্ক ছিল, আছে, থাকবে। তবে নাগরিক সমাজে বার বারই একটি প্রশ্ন ফিরে ফিরে আসছে। করোনা নিয়ে প্রচার আগেও হয়েছে, আবারও হবে। তারই মধ্যে করোনা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য রাজনীতিও চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগও বন্ধ হবে না। শুধু এই একটি দিন সেই রাজনীতি থেকে রবীন্দ্রনাথকে মুক্ত রাখলে বাঙালির সম্মানহানি হতো না।