গৃহবধূ নিপীড়নের কথা নতুন নয়৷ যৌতুক দিতে না পারা, সন্তানহীনতা বা কোনো কারণ ছাড়াই পুত্রবধূর ওপর অকথ্য অত্যাচারের নানা ঘটনা আমরা শুনেছি, প্রত্যক্ষও করেছি৷ কিন্তু উল্টে পুত্রবধূর হাতে শাশুড়ি নির্যাতন – এমন কথা শুনেছেন কি?
বিজ্ঞাপন
ঘটনাটি ঘটে ক'দিন আগে, ভারতের উত্তর প্রদেশে৷ কথা নেই, বার্তা নেই, পুত্রবধূ সঙ্গীতা জৈন হঠাৎ করেই চড়াও হয় সত্তরোর্ধ্ব রাজরানী জৈনের ওপর৷ খাটের ওপর লাফ দিয়ে পিছন থেকে আক্রমণ করে৷ তারপর নির্মমভাবে মারধর করে শাশুড়িকে৷ প্রথমে গলায় দড়ি বেঁধে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে, পরে ইঁট দিয়ে তাঁকে আঘাত করে মাথায়৷ পাশাপাশি সমান তালে চলে কিল, ঘুসি৷ শেষে টেনে হিঁচড়ে শাশুড়িকে খাট থেকে টেনে ফেলে দেয়ার চেষ্টাও করে সঙ্গীতা৷
হ্যাঁ, নির্যাতনের এই দৃশ্য ধরা পড়ে ঘরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায়৷ জানা যায়, স্ত্রীর অত্যাচারী স্বভাবের প্রমাণ দিতে ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছিলেন স্বয়ং সঙ্গীতা জৈনের স্বামী, সন্দীপ জৈন৷ তাঁর কথায়, ‘‘বহুদিন ধরেই সঙ্গীতা আমার মা-বাবাকে গালিগালাজ করতো, মারধর করতো, হেনস্থা করতো৷ আমি ওর বিষয়ে বহু অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি৷ ভারতের আইন তো সবসময় পুত্রবধূর পক্ষেই যায়৷ তাই শেষ পর্যন্ত ওর মুখোশ টেনে ছিঁড়ে দিতেই সিসিটিভি লাগিয়েছিলাম৷''
স্বামীর পেতে রাখা গোপন ক্যামেরায় শাশুড়িকে পেটানোর এই ফুটেজ দেখেই সঙ্গীতাকে আটক করে রাজ্যের পুলিশ৷ পরবর্তীতে ভিডিওটি ফেসবুকে ‘পোস্ট' করেন কুন্দন শ্রীবাস্তব নামের এক সমাজসেবী৷ বলা বাহুল্য, ফেসবুকে পোস্টের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভিডিওটি ‘ভাইরাল' হয়ে যায়৷ সঙ্গীতাকে ‘রাক্ষসী বউ' আখ্যা দিয়ে চালু হয় #monsterbahu হ্যাশট্যাগ, যা ব্যবহার করে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান৷
মানবাধিকার সংগঠন ‘হেল্প এজ ইন্ডিয়ার' একটি সমীক্ষা বলছে, ভারতে বসবাসকারী বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা বয়স্ক মানুষের অর্ধেকেরও বেশি নিত্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার৷ শিকার চরম অপমান এবং অবহেলার৷ আর এই নির্যাতন যে শুধু ছেলের বউরা করে থাকে, তা না৷ করে নিজ সন্তানরাও৷ অথচ গৃহবধূ নির্যাতনের কথা উঠলে নারীবাদীরা যেমন ঝাঁপিয়ে পড়েন, শাশুড়ি-নির্যাতনের সময় তাঁরা তেমন তৎপর হলেন না কেন? শাশুড়িরা কি নারী নন?
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় সঙ্গীতার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করেছে পুলিশ৷ সঙ্গীতা অবশ্য কিছুতেই মুখ খোলেননি৷
ডিজি/এসি
বন্ধুরা, এমন ‘রাক্ষসী বউ’ আপনি আগে দেখেছেন কি? জানান নীচের ঘরে৷
মানুষ হত্যায় সিদ্ধহস্ত নারীরা
‘সিরিয়াল কিলার’ জ্যাক দ্য রিপারের কথা সবাই জানেন৷ আরো অনেক কুখ্যাত খুনির কথাও শুনেছেন হয়ত৷ তবে কোনো নারী সিরিয়াল কিলার বা খুনির কথা কি শুনেছেন? ছবিঘরে থাকছে এমনই ভয়ঙ্কর পাঁচ নারীর কথা৷
ছবি: gebphotography - Fotolia.com
রক্ত দিয়ে গোসল করতেন অ্যার্জেবেত বাথোরি
হাঙ্গেরিতে ১৫৬০ সালে জন্ম, মৃত্যু ১৬১৪ সালে৷ তার গল্প শুনলে মনে হবে কোনো ভৌতিক ছবির কাহিনি শুনছেন৷ বলা হয়ে থাকে, ৫৪ বছরের জীবনে তিনি ৮০ থেকে ৬০০ জনকে খুন করেছিলেন৷ যাঁদের খুন করতেন, তাঁদের রক্ত দিয়ে গোসলও করতেন অ্যার্জেবেত বাথোরি৷ ভয়ঙ্কর খুনি হিসেবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম আছে তাঁর৷
টাকা আর সম্পত্তির লোভে খুন করতেন বেল গানেস
নরওয়ের বেল গানেসের জন্ম ১৮৫৯ সালে, মৃত্যু ১৯০৮ সালে৷ ইতিহাসে ইনি ‘ব্ল্যাক উইডো’ নামে পরিচিত৷ নরওয়ের এই নারী জীবনে ৪০ জনের মতো মানুষকে হত্যা করেছেন৷ নিহতদের মধ্যে তাঁর স্বামী, পানিপ্রার্থী, বোন, এমনকি সন্তানও ছিল বলে ধারণা করা হয়৷ মূলত জীবন বিমার টাকা এবং অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার জন্যই খুন করতেন তিনি৷ খুনের সাক্ষী না রাখতে গিয়ে অনেক জনকে হত্যা করতে হয়েছে তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/United Archives/TopFoto
সন্তানকে বাঁচাতে তিন খুন
লিওনার্দা চিয়ানচিউলি (১৮৯৪-১৯৭০)৷ ইটালির এই নারী মাত্র তিনজনকে হত্যা করেই বিশ্বকুখ্যাত৷সন্তানকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেতে হবে শুনে ভাবনায় পড়ে যান লিওনার্দা৷ সন্তানকে যুদ্ধ থেকে দূরে রেখে বাঁচানোর একটা উপায়ই এলো মাথায়৷ লিওনার্দা ভাবলেন, সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে অন্যের প্রাণ উৎসর্গ করলে ছেলেকে বাঁচানো যাবে৷ তারপর একে একে তিনজন মধ্যবয়সি নারীকে হত্যা করলেন লিওনার্দা৷
কুস্তিগির থেকে সিরিয়াল কিলার
মেক্সিকোর হুয়ানা বারাথা৷ জন্ম ১৯৫৭ সালে৷ ছিলেন পেশাদার কুস্তিগির৷ তবে মানুষ হত্যায় নেমে সেই পরিচয় প্রায় ভুলিয়ে দিয়েছেন৷ হুয়ানাকে এখন ঠান্ডা মাথার সিরিয়াল কিলার হিসেবেই চেনে সবাই৷ কমপক্ষে ১১ জনকে খুন করেছেন৷ আরো ৪৯ জনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পেছনেও তাঁর হাত আছে বলে সন্দেহ করা হয়৷ ১১ জনকে খুন করার জন্য ৭৫৯ বছরের জেল হয়েছে হুয়ানার৷ এখনো জেলেই আছেন হুয়ানা৷
ছবি: Getty Images/AFP/D. Deolarte
ধর্ষকামীদের হত্যা?
যুক্তরাষ্ট্রের আয়েলিন ক্যারল ওয়ারনোস ১৯৮৯ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সাতজনকে খুন করেছিলেন৷ আয়েলিনের দাবি, ওই সাতজন পতিতা হিসেবে কাজ করার সময় তাঁকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিল, আত্মরক্ষার্থে হত্যা করতে হয় তাদের৷এ দাবির সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় ফ্লোরিডার আদালত৷ তাঁর জীবনকাহিনী নিয়ে টিভি সিরিয়াল, পূর্ণ দৈর্ঘ ছবিও হয়েছে৷ ‘মনস্টার’ ছবিতে আয়েলিনের চরিত্র রূপায়ন করে অস্কার জেতেন শার্লিজ থেরন৷