1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাখাইনে শতাধিক হিন্দু হত্যা

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকায় শতাধিক হিন্দু রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে-এমনটাই জানিয়েছেন সেখান থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হিন্দু অধিবাসীরা৷ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে পাঁচ শতাধিক হিন্দু নারী-পুরুষ ও শিশু৷

মুরগির খামারে আশ্রয় নেয়া হিন্দু রোহিঙ্গারাছবি: Abdul Aziz

হামলা নির্যাতন এবং হত্যার মুখে মিয়ানমারের মংডু থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারের কুতুপালং হরি মন্দিরের কাছে একটি মুরগির খামারে আশ্রয় নিয়েছেন তারা৷ তাদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে ডয়চে ভেলে৷ তারা জানিয়েছেন, ২৭ শে আগস্ট থেকেমিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আকিয়াব জেলার মংডুর চিকনছড়ি, ফকিরা বাজার, সাহেব বাজার, পুরান বাজার ও রিক্কা পাড়াসহ কয়েকটি হিন্দু পাড়ায় হামলা ও নির্যাতন চালঅনো হয়৷ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘আমরা কুতুপালং গিয়ে পালিয়ে আশা হিন্দুদের সঙ্গে কথা বলেছি৷ আর আতে নিশ্চিত হয়েছি যে মিয়ানমারে শতাধিক হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে৷''

‘তাদের কারো গায়ে বার্মার সেনাবাহিনীর পোশাক ছিল না’

This browser does not support the audio element.

মংডুর চিকনছড়ি থেকে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন বকুল বালা৷ তিনি বললেন, ‘‘আমার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি পাশেই ফকিরা বাজারে৷ আমার স্বামী অনিরুদ্ধ মেয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন৷ সেখানে আমার স্বামী, মেয়ে এবং আমার নাতিকে মেরে ফেলেছে৷ আমাদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে৷ আমাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল৷ পরে আমরা পালিয়ে আসি৷ অনেককেই হত্যা করা হয়েছে৷''

সহিংসতার শিকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা

02:13

This browser does not support the video element.

হামলাকারীর মুখোশ পরে এসেছিল বলে জানিয়েছেন চিকনছড়ি থেকে পালিয়ে আসা আরেক ব্যক্তি চিত্তরঞ্জন কর৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘শুধু চোখ ছাড়া পুরো শরীর কালো পোশাকে ঢাকা ছিল৷ তারা বার্মিজ এবং মংডুর স্থানীয় ভাষায় কথা বলছিল৷ তাদের কারো গায়ে বার্মার সেনাবাহিনীর পোশাক ছিল না৷'' তিনি আরও জানান তাদের গ্রামের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে৷ বোমা মারা হয়েছে সেখানে৷  তাদের ধরে নিয়ে মুড়া পাহাড়ে ৭-৮ দিন বন্দি করে রাখা হয়েছিল বলে জানান তিনি৷ পরে সেখান থেকে পালিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছেন তারা৷

‘মংডুর হিন্দু পাড়ায় যা ঘটেছে তা যেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকেও হার মানিয়েছে’

This browser does not support the audio element.

যেসব হিন্দু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন তাদের অধিকাংশই কতুপালং হরি মন্দিরের একটি মুরগির খামারে আশ্রয় নিয়েছেন৷ কিছু স্থানীয় হিন্দুদের বাড়িতেও আশ্রয় পেয়েছেন৷ হরিমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এরা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে প্রবেশ করেছেন৷ আমাদের এলাকায় এসেছেন ৫ দিন আগে৷ প্রায় সবাই পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন৷ স্বামী-সন্তান হারিয়েছেন এরকম অনেকেই পালিয়ে এসেছেন৷ আমরা স্থানীয়রা তাদের একটি মুরগির খামারে থাকার ব্যবস্থা করেছি৷ কিছু মানুষকে বাড়িতেও আশ্রয় দিয়েছি৷ তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোন ত্রাণ সহায়তা নেই এখানে৷''

‘আমার স্বামী, মেয়ে আর নাতিকে মেরে ফেলেছে’

This browser does not support the audio element.

রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘ এদের সঙ্গে কথা বলে যা জেনেছি তা থেকে বলতে পারি মংডুর হিন্দু পাড়ায় যা ঘটেছে তা যেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকেও হার মানিয়েছে৷ তাদের ওপর চাপাতি, কিরিচ, বন্দুক এবং বোমা দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে৷ প্রথমে বাড়ি ঘেরাও করে তাদের হাত পা চোখ বেঁধে তারপর নির্যাতন চালান হয়েছে৷ পাহাড়ে নিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে৷''

‘প্রায় সবাই পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছেন’

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত হয়েছি পুরান বাজারে ৮৬ জন এবং অন্যান্য এলাকায় আরো ৩৫ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়েছে৷ মোট নিহতের সংখ্যা ১২১ জন৷ সাহেব বাজারে মুসলিম যুবকরা হিন্দুদের উদ্ধার করে পালাতে সহায়তা করেছে৷ নয়তো নিহতের সংখ্যা আরো বাড়ত৷''

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর -এর হিসাব মতে রাখাইনে সেনা নির্যাতন শুরুর পর ২৫শে আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে৷ আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গাকে হত্যার খবর জানিয়েছে৷

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত? লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ