1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারে হত্যা বাড়ছে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ নভেম্বর ২০২১

বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যা বাড়ছে। আর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটছে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে। নিজেদের মধ্যেও দ্বন্দ্বের কারণেও ঘটছে হত্যাকাণ্ড। ঘটছে গুপ্ত হত্যা।

Saudi Arabien | weibliche Waffentrainerin Mona Al-Khurais
প্রতীকী ছবিছবি: Ahmed Yosri/REUTERS

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র মো. সোহেল এবং তার সহকারী হরিপদ সাহাকে হত্যা করা হয় সোমবার তাদের কার্যালয়ে। বিকাল চারটার দিকে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় আরো পাঁচজন আহত হন। মুখোশধারীরা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। সোহেল ১৩ নাম্বার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। পুলিশ এবং তার পরিবারের ধারণা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই প্রতিপক্ষ নিজের দলের। তবে হত্যাকাণ্ডে ভাড়াটে খুনিরা অংশ নিয়ে থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।

একইদিন মুন্সিগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতা একজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত আবদুল হক বেপারিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবারের দাবি।

পিরোজপুরের গুলিবিদ্ধ যুবলীগ নেতা ফয়সাল মাহবুব গত ১৬ নভম্বের মারা যান চিকিৎসাধীন অবস্থায়। তিনি পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ৭ নভেম্বর পিরোজপুরের শংকরপাশা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বড় একটি অংশ ঘটে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য  অনুযায়ী দুই ধাপের ইউপি নির্বাচনে এপর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৭ জন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের(আসক) হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ৭৪জন। এরমধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছেন ৪৩ জন। এরমধ্যে ইউপি নির্বাচনে ৩১ জন। পৌর নির্বাচনে ১০ জন এবং সংসদীয় উপনির্বাচনে সহিংসতায় মারা গেছেন তিন জন।

নূর মোহাম্মদ

This browser does not support the audio element.

অবশ্য এর আগের বছর ২০২০ সালে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড অনেক কম ছিলো। ওই বছর পুরো ১২ মাসে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৩১টি। তার মধ্যে নির্বাচনী সংঘাতে মারা গেছে পাঁচ জন। গত বছর অল্প কিছু নির্বাচন ও উপনির্বাচন ছিলে। এরমধ্যে উপজেলা নির্বাচনে একজন এবং পৌর ও সিটি নির্বাচনে চার জন নিহত হন।

২০১৯ সালে রাজনৈতি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৩৯টি। তার মধ্যে বিভিন্ন নির্বাচনে নিহত হয়েছেন ২৫ জন।

২০১৮ সাল ছিলো একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর। ওই বছর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে ৬৯টি। ২০১৭ সালে রাজনৈতিক হত্যাকান্ড হয়েছে ৫২টি।

আসকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়। ২০১৭ সাল থেকে এপর্যন্ত রাজনৈতিক হত্যা চলতি বছরেই বেশি ঘটেছে। নির্বাচনি খুনাো বেশি। আর ১০ মাসেই তা আগের বছরের দুই গুণেরও বেশি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডও এই ১০ মাসেই বেশি।

চলতি বছরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার পেছনে দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচনকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরা। আর এই হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের হাতেই আওয়ামী লীগের লোকজন বেশি খুন হয়েছে। বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে নাই। সাবেক আইজপি নূর মোহাম্মদ মনে করেন," স্থানীয় এই নির্বাচনে উত্তেজনা একটু বেশি থাকে। তবে আগে যেটা হতো, যে জনপ্রিয় সেই পাস করত। কিন্তু এবার জনপ্রিয়তার সাথে প্রতীক যুক্ত হয়েছ। বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে নেই দলীয়ভাবে তাই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। প্রার্থীরা মনে করছেন নৌকা প্রতীক পেলে জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যারা পাচ্ছেন না তারা বিদ্রোহী হচ্ছেন। ফলে সংঘাত ও হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাচ্ছে। এটা কমাতে প্রতীকের বিষয়টি ফের বিবেচনা করা উচিত।”

নূর খান

This browser does not support the audio element.

আসকের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার কর্মী নূর খানও একই ধরনের কথা বলেন। তবে তিনি মনে করেন," কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থাও এর জন্য দায়ী। রাজনীতিতে আদর্শহীনতাও এর কারণ।”

তিনি জানান, "এইসব রাজনৈতিক হত্যায় মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত বিচার খুব কমই হয়। কারণ যারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত তারাও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী । ফলে অনেক মামলাই শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার বা সমঝোতার মাধ্যমে শেষ হয়।”

নূর মোহাম্মদ বলেন," কিছু বড় বড় রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে অতীতে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারও আইন করে বন্ধ রাখা হয়েছিলো। এখন যে হত্যাগুলো হচ্ছে তার মামলা ও তদন্ত হয়। তবে পুলিশকে আরো সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে যেন কেউ যেন রেহাই পেয়ে না যায়।” তবে বিচারে দীর্ঘ সময় লাগে বলে জানান তিনি। নূর খান মনে করেন, এটাই বড় একটি সমস্যা। এই কারণে শেষ পর্যন্ত সাক্ষী পাওয়া যায় না।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ