1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনৈতিক দলগুলো যৌন হয়রানি রোধে যা করে

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার নিজের দলের এক নেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে এখনো বিচার পাননি৷ বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলে কি যৌন নিপীড়ন হয়? হলে ভুক্তভোগী বিচার পায়?

প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/dpa/Keystone USA Falkenberg

জলি তালুকদার বিচার পেতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-র অফিসের সামনে অনশনে বসেছিলেন গত সপ্তাহে৷ পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে তিনি অনশন ভেঙেছেন৷  ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে তিনি অনশন ভাঙলেও এখনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷

জলি তালুকদার গত ৩ মার্চ লিখিত অভিযোগ দেন৷ কিন্তু তার কোনো জবাব না পেয়ে তিনি অনশন শুরু করেছিলেন৷ তিনি তার অভিযোগে বলেন,গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশে যোগ দিতে মুক্তি ভবন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের দিকে যাওয়ার সময় পার্টির মিছিলে দলের জাহিদ হোসেন খানের যৌন নিপীড়নের শিকার হন তিনি৷ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি মিছিলে উপস্থিত কমরেড আবদুল্লাহ কাফী রতনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে প্রতিকার চান৷ জাহিদ হোসেন খান সিপিবি'র ঢাকা মহানগর বমিটির সদস্য৷

তবে জলি তালুকদার এ বিষয়ে এখন আর সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে চান না৷ তিনি বলেন, ‘‘পার্টি যেহেতু এখন বিষয়টি দেখছে, তাই তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে আমি সংবাদমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে চাই না৷’’ তবে তিনি সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলের উচিত হবে নারী ইস্যুগুলোকে আরো সিরিয়াসলি অ্যাড্রেস করা৷ বিশেষ করে যৌন হয়রানির ব্যাপারে হাইকোর্টের যে নীতিমালা রয়েছে, তা অনুসরণ করা৷ সে অনুযায়ী অভিযোগ সেল রাখা৷ এটা আমাদের পার্টিতে যেমন নেই, অন্যান্য দলে আছে বলেও আমার জানা নেই৷’’

আমাদের দলের উচিত হবে নারী ইস্যুগুলোকে আরো সিরিয়াসলি অ্যাড্রেস করা: জলি তালুকদার

This browser does not support the audio element.

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ছাত্র অধিকার পরিষদের প্রধান হাসান আল মামুনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন৷ ওই মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকেও সহযোগিতা করার অভিযোগে আসামি করা হয়৷ মামুনকে সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হলেও নুর ওই মামলাকে ‘মিথ্যা’ এবং ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেছেন৷ তারা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলেও ধর্ষণের মামলাকারী ওই নারী অভিযোগ করেছেন, ‘‘যারা আমি মামলা করার পর মামলাকে মিথ্যা বলে মিছিল, আন্দোলন করেছে, তাদেরই তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়েছে৷ তাহলে তদন্ত কি হবে তা বুঝতে আর বাকি নেই৷’’

ওই শিক্ষার্থীর কথা, তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের তালিকাভুক্ত সদস্য না হলেও তাদের শুভাকাঙ্খী৷ মামুনের গার্লফ্রেন্ড হিসেবে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি যোগ দিয়েছেন৷ তার অভিযোগ, ‘‘এখন জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে তারা ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নিতে চাচ্ছে৷ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার ছবি ছড়িয়ে দিয়ে আমাকে হেয় করা হচেছ৷ আমার বিচার পাওয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে৷’’

এমনিতে অনেক দলেই নারী সদস্যরা কমবেশি যৌন হয়রানির শিকার হন৷ কিন্তু ঘটনাগুলো সামনে আসে না৷ অনেকে অভিযোগ করারও সাহস করেন না৷ কেউ যদি অভিযোগ করেনও, তা নিয়ে উল্টো ওই নারী রাজনৈতিক কর্মীকেই সংকটে পড়তে হয়৷ আবার কিছু ঘটনা দলীয় পর্যায়ে মিটমাট করে দেয়া হয়৷ যৌন হয়রানির ঘটনা দলগুলোর ছাত্র সংগঠনের মধ্যেও হয়ে থাকে৷

নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী, সব দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৩৩ ভাগ নারী সদস্য রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ রাজনৈকি দলে নারীদের এই ক্ষমতায়ন সত্যিকার অর্থেই করতে হলে দলের অভ্যন্তরে নারীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার বিষয়টিতে আরো নজর দিতে হবে৷

রাজনীতিতে আসা নারীদের নিজেদেরই পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে চলতে হবে সবার আগে: মেহের আফরোজ চুমকি

This browser does not support the audio element.

আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি স্বীকার করেন যে, তাদের দলের ভিতরে ‘ছোটখাট’ যৌন হয়রানির অভিযোগ তারা মাঝেমধ্যে পান, কিন্তু  কখনো ‘বড় আকারের’ কোনো ঘটনা ঘটেছে বলে তার জানা নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অভিযোগ এলে আমরা বিষয়গুলো দেখি, তবে এজন্য আমাদের আলাদা কোনো সেল নেই৷’’ 

হাইকোর্টের যে নির্দেশনা আছে, সে ব্যাপারে দল কী করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সারাদেশে তো একই অবস্থা৷ আলাদা করে দলে সেল গঠনের কিছু নেই৷ সরকারি ক্ষেত্রে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার আছে, ৯৯৯ আছে৷ আরো অনেক ব্যবস্থা আছে৷’’

তবে তিনি মনে করেন, ‘‘রাজনীতিতে আসা নারীদের নিজেদেরই পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে চলতে হবে সবার আগে৷ নিজের নিরাপত্তাবোধ থাকতে হবে৷ তা না হলে দল কীভাবে দলের সব নারীকে নিরাপত্তা দেবে?’’

বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক নুরে আরা সাফার দাবি, দলের নারী সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা সব সময়ে সচেষ্ট আছেন৷ বিশেষ করে যখন সভা-সমাবেশ বা মিছিল হয় তখন এই কারণেই তাদের সামনের দিকে রাখা হয়৷ তিনি আরো দাবি করেন, তাদের দলের মধ্যে নারীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের একটি অভিযোগ সেল আছে৷ কেউ যৌন হয়রানির শিকার হলে সেখানে অভিযোগ করতে পারেন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ