1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনৈতিক সংঘাতে ছয় বছরে নিহত ৬৩৫

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৩ জানুয়ারি ২০২০

গত ছয় বছরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাতে ৬৩৫ জন নিহত হয়েছেন৷ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব বিস্তারের অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে এসব ঘটনা ঘটে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা৷ যার শিকার হন সাধারণ কর্মী আর নাগরিকেরা৷

Bangladesch Parlamentswahlen Gewalt in Rajshahi
ছবি: Reuters

আধিপত্য বিস্তারে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাতে জড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে৷ নির্বাচন, ক্ষমতা বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে প্রায়ই৷ এমনকি নিজ দলের ভেতরেও অন্তর্কোন্দল রূপ নেয় সংঘর্ষে৷ যার কারণে ঘটে প্রাণহানী৷

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত বড় কোনো ঘটনা না ঘটলেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে৷ বিশ্লেষকেরা মনে করেন রাজনৈতিক সংঘাত বাংলাদেশের নীতিহীন রাজনীতিরই বহিঃপ্রকাশ৷ দলগুলো গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে৷

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে গত ৬ বছরে দেশে মোট তিন হাজার ৭১০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে৷ তাতে নিহত হয়েছেন ৬৩৫জন, আহত ৪১ হাজার ৩৪৫ জন৷

নূর খান

This browser does not support the audio element.

 আসক-এর হিসাবে, শুধু ২০১৯ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই হাজার ৬৮৯ জন৷ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে মোট ২০৯টি৷ ২০১৮ সালে এমন ঘটনার সংখ্যা ছিল ৭০১টি৷ এতে ৬৭ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছেন সাত হাজার ২৮৭ জন৷ ২০১৭ সালে নিহত হয়েছেন ৫২ জন আর আহত চার হাজার ৮১৬ জন৷ সেবছর রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে ৩৬৪টি৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক সংঘাতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানী হয়েছে ২০১৬ সালে৷ মোট ১৭৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ১১ হাজার ৪৬২ জন৷ সংঘাতের ঘটনা ছিল ৯০৭ টি৷ ২০১৫ সালে ১৫৩ জন আর ২০১৪ সালে ১৪৭ জন মারা গেছে এমন সহিংসতার কারণে৷

এইসব ঘটনা প্রধানত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জড়িত ছিল৷ এর বাইরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও সংঘাতের জন্ম দিয়েছে৷ নির্বাচন, নির্বাচন প্রতিরোধ এবং মাঠ দখলে রাখার চেষ্টা ছিল সহিংসতার প্রধান কারণ৷

২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে-পরে বাংলাদেশে ব্যাপক সহিংসতা হয়৷ ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের নামে যানবাহন ও স্থাপনায় সবচেয়ে বেশি আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে৷ ২০১৩ সালে ৯৭ জন দগ্ধ হয়েছেন, তাদের মধ্যে ২৫ জন মারা যান৷

তারেক শামসুর রহমান

This browser does not support the audio element.

মানবাধিকার কর্মী এবং আসকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা আমাদের নীতিহীন রাজনীতির প্রকাশ৷ আর দুঃখজনক হলেও সত্য এর শিকার হন রাজনৈতিক দলের সাধারণ কর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষ৷ রাজনৈতিক দলগুলো তাদের শক্তি দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে ভয় দেখাতে সংঘাত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে৷ তারা সহিষ্ণু নয়, তারা অসহিষ্ণুতার প্রকাশ ঘটায়৷''

তিনি মনে করেন, ‘‘রাজনৈতিক দলগুলো তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহারে ব্যর্থ হয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে৷ এটি রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরেও ঘটে৷ তারও কারণ এক গ্রুপের ওপর আরেক গ্রুপের অসুস্থ উপায়ে আধিপত্য বিস্তারের প্রবণতা৷''

তাঁর মতে, ‘‘নির্বাচনে সংঘাত ও সহিংসতাও হয় পরিস্থিতি নিজেদের পক্ষে নেয়ার জন্য৷ কারণ, ক্ষমতার লড়াই৷''

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রহমান মনে করেন, ‘‘আমাদের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক প্রবণতা হলো পরস্পরকে অস্বীকার করা৷ আমরা গণতেন্ত্রর কথা বলছি বটে, গণতন্ত্রের কথা আছে বটে৷ কিন্তু গণতন্ত্রের যে মূল স্পিরিট, পরস্পরের প্রতি আস্থা রাখা, বিরোধী দলকে আস্থায় নিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা করা, তাদের বিশ্বাস করা-এটা বাংলাদেশে নাই৷''

 তিনি বলেন, ‘‘দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রতিককালে অসহিষ্ণুতা চরমভাবে বেড়ে গেছে৷ বিরোধীদলকে আস্থায় নিয়ে গণতন্ত্রের চর্চা করা যাচ্ছে না এবং রাজনৈতিক সহিংসতার মাত্রা বেড়ে গেছে৷''

তার মতে, ‘‘সহিংসতার মাত্রা কমানো না গেলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিনির্মাণ করা যাবে না৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ