1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজশাহীতে কোচসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা, গ্রেপ্তার

৬ মার্চ ২০২৩

পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে হাতাহাতির জেরে সদ্য শেষ হওয়া যুব গেমসের ১১ খেলোয়াড় ও একজন কোচকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷

ছবি: privat

তাদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ক ছয় খোলোয়াড় ও একজন কোচকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়৷ বাকি পাঁচ খেলোয়াড় অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তাদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়৷ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক তাদের জামিন দেন বলে দৈনিক প্রথম আলো জানায়৷ 

রোববার দুপুরে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এই ঘটনা ঘটে বলে ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার৷  

গ্রেপ্তার ১১ খেলোয়াড়ের মধ্যে তিনজন ছেলে ও আটজন মেয়ে৷ ছয়জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি৷ এরা হলেন আলী আজম (১৯), আকাশ আলী মোহন (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯)৷অন্য পাঁচ জনের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে৷তাদের কোচ ৪৫ বছর বয়সি আহসান কবীর৷

পুলিশ জানায়, মামলায় এই ১২ জন ছাড়াও রমজান (১৯) নামের আরেক খেলোয়াড়কেও আসামি করা হয়েছে তবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি৷

এই খেলোয়াড়েরা জুডো, কুস্তি, কারাতেসহ বিভিন্ন খেলা খেলেন৷ রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি৷ তাদের বিরুদ্ধে একজন পুলিশ সদস্যকে পেটানো এবং তার স্ত্রীর স্বর্ণের চেইন চুরির মামলা দেওয়া হয়েছে৷

মামলার বাদী পুলিশের কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার (৩০) স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা৷ তাদের বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী খেতুর গ্রামে৷ কিবরিয়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কর্মরত৷

মামলার বরাতে রাজশাহী রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার জানান, রোববার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়াকে নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কনস্টেবল কিবরিয়া৷ দুপুরে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে গোলাম কিবরিয়াকে মারধর করা হয়৷ এরপর রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশ সবাইকেই থানায় নিয়ে যায়৷

বিকালে গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন৷ পরে সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১২ জনকে আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ৷

গ্রেপ্তার ১৭ বছর বয়সি এক নারী খোলোয়াড়ের চাচা বেলাল হোসেন বলেন, তার ভাতিজিসহ এই খেলোয়াড়রা ঢাকায় যুব গেমস খেলতে গিয়েছিলেন৷ খেলে পুরস্কারও পেয়েছেন৷ খেলা শেষে তারা রোববার ধুমকেতু ট্রেনে আসছিলেন৷

তিনি বলেন, ‘‘খেলোয়ারদের সবার ২৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ছিল একটি লাগেজে৷ ট্রেনে সেটি খুঁজে পাচ্ছিল না৷ তখন তারা ট্রেনে লাগেজটি খুঁজছিল৷ ওই সময় সিভিলে থাকা পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে এক মেয়ে খেলোয়াড়ের কথা কাটাকাটি হয়৷

‘‘এক পর্যায়ে ওই পুলিশ সদস্য মেয়েটিকে থাপ্পড় মেরে দেয়৷ এছাড়া আরেক ছেলে খেলোয়াড়কেও মারে৷ দুপুরে স্টেশনে নামার পর তাদের আবারও হাতাহাতি হয়৷” তিনি বলেন, এরপর পুলিশ দুই পক্ষকে মীমাংসার কথা বলে থানায় নিয়ে যায়৷ পরে মামলা করা হয়৷

রাজশাহী রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার বলেন, মারামারিতে পুলিশ সদস্য গোলাম কিবরিয়ার নাক ফেটে গেছে৷ তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷

মামলায় তার স্ত্রী দাবি করেছেন, স্বামীকে মারধরের সময় তার গলার চেইন চুরি করে নেওয়া হয়েছে৷ মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে কিবরিয়ার ভাই গোলাম সারওয়ার এবং সারওয়ারের বন্ধু সাব্বির ইসলামকে৷

গোলাম সারওয়ার বলেন, ট্রেনের ভেতরে কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ ট্রেন থেকে আগে নামাকে কেন্দ্র করে স্টেশনে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মেরে তার ভাইয়ের নাক ফাটানো হয়েছে৷

ওসি গোপাল কুমার আরও বলেন, ‘‘এতগুলো খেলোয়াড়কে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর সাহস আমার নেই৷ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা নিয়েছি৷ সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোচ এবং খেলোয়াড়দের আদালতে পাঠিয়েছি৷”

এদিকে, রাত ৮টার দিকে সাত জনকে রাজশাহীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়৷ আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়৷ আর অপ্রাপ্তবয়স্ক পাঁচ জনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এ তোলা হয়৷ আদালত তাদের সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত জামিন দেয়৷ 

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাইনুল ইসলাম জানান, এই শিশুদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এ তোলা হয়েছিল৷ শিশুদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই৷ এজাহারে যা আছে তা-ও জামিনযোগ্য৷ রাত হয়ে যাওয়ায় পূর্ণাঙ্গ শুনানি হয়নি তাই আদালতের বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান তাদের সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অন্তর্বতীকালীন জামিন দিয়েছেন৷

সোমবার আদালতে জামিন আবেদনের পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে; তারপর আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন বলে তিনি জানান৷

জেলা জজ আদালত পুলিশের পরিদর্শক পরিমল চক্রবর্তী জানান, প্রাপ্তবয়স্ক ছয়জন খেলোয়াড় ও কোচকে রাতে রাজশাহীর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়েছিল৷ ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. লিটন হোসেন আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন৷ রাতেই তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়৷

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, প্রথম আলো)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ