1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজাকারের তালিকায় কোনো ফাঁক থাকবে না তো?

১৩ ডিসেম্বর ২০১৯

অবশেষে চূড়ান্ত হচ্ছে একাত্তরে ভাতা পাওয়া রাজাকারদের তালিকা৷ পত্রপত্রিকায় লেখা হয়েছে, তালিকা চূড়ান্ত করতে গিয়ে জেলা প্রশাসকরা অনেক বাধার সন্মুখীন হতে হয়েছিলেন৷ সেগুলো কতটা অতিক্রম করা গেছে তা দেখার বিষয়৷

Pakistan Bangladesh Bürgerkrieg
ছবি: AP

এক দশক আগে যখন একাত্তরে মানবতাবিরোধীদের বিচার শুরু হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে, তখন থেকেই রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি উঠতে থাকে৷ রাজাকারদের তালিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের এ বছরের মাঝামাঝি জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ কিন্তু পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তালিকা প্রস্তুত করতে গিয়ে জেলা প্রশাসকরা সে সময় বেশ কয়েক রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন৷

চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি ছিল ৪৮ বছর আগের ঘটনার যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না৷ দ্বিতীয়ত, সে সময়কার বাংলাদেশের বিশটি জেলার প্রশাসকের কার্যালয়ে পাকিস্তান সরকারের ভাতা নেয়াদের তালিকাও পুরোপুরি মিলছে না৷ তৃতীয়ত, দেশ স্বাধীন হবার পর যাদের বিরুদ্ধে দালাল আইনে মামলা হয়েছে, সে সংখ্যাও খুব বেশি নয় (যুগান্তর, অক্টোবর ২০১৯)৷

এর বাইরে জড়িতদের অনেকেই মারা গেছেন- এটিও একটি কারণ৷ আর যারা জীবিত রয়েছেন তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে৷ কারও কারও মৃত্যুদণ্ডসহ নানা মেয়াদে শাস্তি হয়েছে৷ আবার কেউ কেউ ক্ষমতাসীন দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছেন৷

এছাড়া স্থানীয়ভাবে যাদের নাম পাওয়া যাচ্ছে, এর মধ্যে কিছু কিছু ক্ষমতার দ্বন্দ্বের কারণেও আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এ অবস্থায় এসব বাধা ডিঙ্গিয়ে একটি সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা জরুরি৷

সবচেয়ে বড় কথা হলো, এই তালিকা হতে হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত৷ কারণ, এটা ইতিহাসের অংশ৷ আমরা দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে বার বার কাজ হয়েছে৷ কিন্তু আজও এর পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা সম্ভব হয়নি৷ তালিকায় শুধু বারবার মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যাই বেড়েছে৷ তারপরও পেশাগত কাজে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ আজও সনদ পাননি বা নেননি৷ তালিকায় ঠাঁই হয়েছে কি হয়নি তা জানেন না৷ তাই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধার যেমন ঠাঁই হয়নি, সেটা যে কারণেই হোক না কেন, তেমনটি যেন এই তালিকার ক্ষেত্রে না হয়৷ রাজাকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করা জরুরি৷ কেউ যেমন বাদ না পড়েন, তেমনি ভুল করে কারও নাম যেন চলে না আসে৷

যুবায়ের আহমেদ, ডয়চে ভেলে

আরেকটি বিষয় হলো, বেতনভুক্ত রাজাকার ছাড়াও আরো যারা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত ছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? এ বিষয়টিও পরিষ্কার করা দরকার৷ কারণ, সাধারণভাবে রাজাকার বলতে একাত্তরে সাধারণভাবে যারা পাকবাহিনীকে সমর্থন করেছিল এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত হয়েছিল, তাদের বোঝানো হয়ে থাকে৷

গেল মে মাসে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির যে বৈঠকটি হয়েছিল সেখানে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সদস্যদের আসনগুলো অবৈধভাগে শূন্য ঘোষণা করে তাদের জায়গায় যাদের সংসদ সদস্য করা হয়েছিল তাদের নামও তালিকায় যুক্ত করার কথা বলা হয়৷ এছাড়া স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনের নামও তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল৷ চূড়ান্ত তালিকায় এসবও রাখা হবে কি না তা পরিষ্কার নয়৷ তবে সবচেয়ে বড় কথা এ তালিকা ইতিহাসের দায়মুক্তির তালিকা৷ এখানে ভুল গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই তাড়াহুড়ো করে তা প্রণয়ন করা ঠিক হবে না৷ প্রয়োজন হলে আরো সময় নেয়া যেতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ