1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজারবাগ পীরের ‘শত মিথ্যা মামলা’ ও মামলাবাজ চক্র

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৯ অক্টোবর ২০২১

বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা, ভুয়া ওয়ারেন্ট এবং ভুয়া জামিনের পেশাদার চক্র গড়ে উঠেছে৷ আর এইসব মামলায় হয়রানি ও নিঃস্ব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷

Bangladesch Coronavirus Justiz
ছবি: Mortuza Rashed/DW

সম্প্রতি ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ মামলার জন্য আলোচনায় এসেছেন ঢাকার রাজারবাগ এলাকার পীর দিল্লুর রহমান৷

গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির তদন্তে জানা যায়, পীর দিল্লুর রহমান বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৮০০টি ভুয়া মামলা করেছেন৷ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা দেয়ার তথ্যও পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তারা৷

আর এইসব মামলার পেছনে আছে সাত হাজার একর জমি ও রাবার বাগান দখল৷ পীরের পক্ষে তার অনুগতরা এসব মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে ৷

বিষয়টি দেশের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ মামলাগুলো স্থগিত করে পীরের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ শুধু তাই নয়, এর আগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন রাজারবাগ পীরের সব আস্তানা বন্ধের যে সুপারিশ করেছে, তা বাস্তবায়নের জন্যও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷

‘যারা মামলা করেছেন তারা কেউ বাদীদের চেনেন না’

This browser does not support the audio element.

তবে রাজারবাগ পীরের পক্ষে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ৮০০ দূরের কথা, তিনি কারুর বিরুদ্ধে একটি মামলাও করেননি৷ 

যারা মামলার শিকার হয়েছেন তাদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, ‘‘সিআইডির তদন্তে দেখা গেছে, যারা মামলা করেছেন তারা পীরের মুরিদ, আইনজীবী, কর্মচারী, বাবুর্চি৷ যারা মামলা করেছেন তারা কেউ বাদীদের চেনেন না৷ মামলার উদ্দেশ্য হলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় পীরের অবৈধ জমি দখল করা অথবা দখল করা জমি নিজের আয়ত্তে রাখা৷’’

তিনি বলেন, ‘‘আদালত এখন তিন ধরনের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷  পীরের পক্ষে করা সব মামলা একযোগে সিআইডি তদন্ত করে দেখবে৷ তারপর মামলাগুলোর ভবিষ্যত নির্ধারণ করা হবে৷ পীরের কেনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা তা তদন্ত করবে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট৷ তাছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনকে পীরের সম্পদের তদন্ত করতে বলা হয়েছে৷’’

তবে রাজারবাগের পীরের এসব মামলাই দেশের একমাত্র ঘটনা নয়৷ বাংলাদেশে মিথ্যা মামলার একাধিক চক্র আছে বলে জানা গেছে৷ শুধু তাই নয় ভুয়া ওয়ারেন্ট ও জামিনেরও চক্র আছে৷

ভুয়া ওয়ারেন্টে অনেক লোকেরই হাজতবাসের ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে৷ গত বছর হাইকোর্ট এসকল চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল৷ কারণ এই ধরনের চক্রের সাথে আদালতের এক শ্রেণির কর্মচারি ও আইনজীবীও জড়িত৷

আইনজীবী শিশির মনির জানান, ‘‘হাইকোর্টে এ নিয়ে একজন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা চলছে৷ আর মূল কথা হলো আমাদের বিচারব্যবস্থার যে সিস্টেম তাতে মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করা সহজ৷ দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলার পর মামলা দিয়ে জীবন অতিষ্ট করে তোলা হয়৷ পঞ্চগড়ে মামলায় জামিন পেলে, কক্সবাজারে মামলা হয়, সেখানে জামিন পেলে ঢাকায় মামলা হয়৷ এভাবে চলতে থাকে৷’’

‘আইনেই মিথ্যা মামলা করার ফাঁক আছে’

This browser does not support the audio element.

এদিকে বিদ্যমান আইনেই মিথ্যা মামলা করার ফাঁক আছে বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু৷

তিনি জানান, ‘‘১৯৪৪ সালের পুলিশ প্রবিধানেই বলা আছে সত্য বা মিথ্যা যে অভিযোগই করা হোক না কেন তা মামলা হিসেবে থানাকে রেকর্ড করতে হবে৷ আর কোনো মামলা মিথ্যা প্রমাণের আগে তাকে মিথ্যা বলার সুযোগ নাই৷’’

অবশ্য আদালতের রায়ের আগে তদন্ত পর্যায়েও মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হতে পারে৷ তবে তা হতে হবে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে৷ তদন্ত পর্যায়ে যদি পুলিশ দেখে মামলা মিথ্যা তাহলে তদন্ত কর্মকর্তা আসামিকে অব্যহতি দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন৷ আর তখন ম্যাজিষ্ট্রেট চাইলে বাদীকে শোকজ করে তাৎক্ষণিকভাবে সিআরপিসির (দণ্ডবিধির) ২৫০ ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দিতে পারেন৷ আবার মামলার রায়ে যদি আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হন তখনো বাদীর বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিতে পারেন৷

তিনি বলেন, ‘‘তবে মিথ্যা মামলার এই প্রতিকার পাওয়ার তেমন কোনো নজির নাই৷ এটা অনেকটাই আদালতের ওপর নির্ভর করে৷’’

এদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মিথ্যা মামলার ব্যাপারে আলাদাভাবে প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে৷ মামলা মিথ্যা প্রমাণ হলে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ