1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজ্যসভায় স্থলসীমান্ত বিল পাস

সমীর কুমার দে, ঢাকা৬ মে ২০১৫

ভারতের রাজ্যসভায় বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হয়৷বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বিলটি উত্থাপন করেন৷ আড়াই ঘণ্টা আলোচনার পর, বিকেলে ১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত এই স্থলসীমান্ত চুক্তিটির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়৷

Indien Bangladesh Grenze mit Soldaten und Stacheldraht
ছবি: AP

বিলটি পাসের মধ্য দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার ৪২ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান হতে যাচ্ছে৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে আনন্দে ভাসছে উভয় দেশের ১৬২টি ছিটমহলের নাগরিকরা৷ খবরটি প্রচার হওয়ার পরই উল্লসিত হয়ে ওঠেন তাঁরা, হয় মিষ্টি বিতরণ৷

ভারতের জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় স্থল সীমান্ত চুক্তি পাস হওয়ায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংসদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম৷ বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থলসীমান্ত চুক্তি পাসের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই অভিনন্দন জানান৷ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রধান বাধা কেটে গেছে৷ আশা করছি, বাকি প্রক্রিয়াগুলোও দ্রুত সম্পন্ন হবে৷ আর এর মাধ্যমে দু'দেশের ছিটমহলে যেসব নাগরিক আছেন, তাঁরা তাঁদের অধিকার ফিরে পাবেন৷

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সভাপতি মফিজার রহমান বুধবার টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজ্যসভায় বিলটি পাস হওয়ার পর ছিটমহলবাসীরা মেতে উঠেছেন আনন্দ-উল্লাসে৷ যাঁর যাঁর কাজ ফেলে সবাই চলে এসেছেন মহাসড়কের ধারের ছিটমহল অফিসের সামনে৷'' এ সময় তাঁরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে একে-অপরকে মিষ্টিমুখ করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘উভয় দেশের ১৬২টি ছিটমহলের সকলেই এই খবরে খুশি৷''

ছবি: AFP/Getty Images

নীলফামারীর পুটিমারী সমন্বয় কমিটির সভাপতি তছলিম উদ্দিন টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘ দিনের সমস্যার সমাধান হবে – এমন আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম৷ ভারতের রাজ্যসভায় বিলটি অনুমোদন হওয়ার পর আমরা নতুন করে আবার আশায় বুক বেধেছি৷ আর কয়েকটি ধাপ পার হলেই আমাদের সব সমস্যার সমাধান হবে৷ আমরা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করব৷''

তবে খানিকটা আশঙ্কার কথাও বলেন তছলিম উদ্দিন৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখনও আশ্বস্ত হতে পারছি না৷ কারণ কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোটের আমলে এই বিলটি মন্ত্রীসভা বৈঠকে পাস হলেও বিজেপির কারণে পার্লামেন্টে উঠেনি৷ এবার রাজ্যসভায় বিলটি পাস হলেও এখন যাবে লোকসভায়৷ এরপর রাষ্ট্রপতি বিলে স্বাক্ষর করলে, তবেই সংবিধান সংশোধন হয়ে ছিটমহল বিনিময়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ ফলে বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়া এখনও বাকি আছে৷''

গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সীমান্ত চুক্তি বিল নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়৷ শেষ পর্যন্ত চুক্তিটি পার্লামেন্টে পাস হবে কিনা – তা নিয়েও নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল৷ এর কারণ ছিল আসামকে চুক্তি থেকে বাদ রাখার সরকারি পরিকল্পনা৷ বিজেপির আসাম শাখার আপত্তির কারণেই আসামকে বাদ রেখে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল রাজ্যসভায় তুলতে চেয়েছিল মোদী সরকার৷ কিন্তু আসামের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ ও বিরোধীদল কংগ্রেসের আপত্তির মুখে সরকার এই সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে৷ স্থলসীমান্ত চুক্তিতে আসামকে যুক্ত করেই সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন করেছে ভারত সরকার৷ মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংবিধান সংশোধনী খসড়া বিল অনুমোদন করা হয়৷

প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেন৷ ২০১১ সালে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে এ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য একটি ‘প্রটোকল' স্বাক্ষর করা হয়৷ কিন্তু এর বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন না হওয়ায়, ৪২ বছর ধরে ব্যাপারটি ঝুলে রয়েছে৷ দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল ও অপদখলীয় জমি বিনিময় এবং সাড়ে ৬ কিলোমিটার সীমান্ত চিহ্নিত করাই এই স্থলসীমান্ত চুক্তির লক্ষ্য৷ এর মাধ্যমে সাড়ে ৬ কিলোমিটার অচিহ্নিত সীমানা চিহ্নিত করা হবে৷ ছিটমহলগুলোর মধ্যে ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি (৭১১০ একর জমি) এবং বাংলাদেশের ভেতরে ভারতের ১১১টি (১৭১৬০ একর) জমি বিনিময় হবে৷ এছাড়া অপদখলীয় জমির মধ্যে মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অধীন সীমান্তে ২,০০০ একর জমি এবং আসামের ২৬৮ একর জমির অধিকারী হবে বাংলাদেশ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ