রাজ্যের আদালতে ধাক্কা ট্রাম্পের, ভরসা সুপ্রিম কোর্ট
৬ নভেম্বর ২০২০
রাজ্যের আদালত ট্রাম্পের আবেদন শুনতে চাইলো না। তবে এরপর সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে ট্রাম্প শিবির।
ছবি: Evan Vucci/AP Photo/picture alliance
বিজ্ঞাপন
প্রথম পর্যায়ে আদালতে ধাক্কা খেলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। মিশিগান এবং জর্জিয়ার আদালতে তিনি যে মামলা দায়ের করেছিলেন, আদালত তা গ্রহণই করল না। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হলো, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ওই মামলা করা হয়েছিল।
মিশিগানে ভোট গণনা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রতিনিধিরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ভোট গণনায় যথেষ্ট স্বচ্ছতা নেই। ট্যাবুলেশন শিট দেখতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। বৃহস্পতিবারই মিশিগানের একটি আদালতে এই আবেদন করা হয়। আদালতে মামলাটি শোনেন বিচারক সিন্থিয়া স্টিফেন্স। বৃহস্পতিবারই তিনি জানিয়ে দেন, মামলাটির কোনো মেরিট নেই। রিপাবলিকানরা কোনো প্রামাণ্য তথ্য দিতে পারেননি তাঁদের বক্তব্যের সমর্থনে। ফলে মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়। বিচারক জানিয়েছেন, শুক্রবার লিখিত ভাবে তিনি তাঁর বক্তব্য জানিয়ে দেবেন।
ফ্যাক্ট চেক: মার্কিন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ
মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল আসতে শুরু করার পর বুধবার থেকে এই নির্বাচনে জালিয়াতির নানা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে৷ ছবিঘরে দেখে নেয়া যাক এসব অভিযোগ এর পেছনে কতটুকু ভিত্তি রয়েছে৷
ছবি: Goran Tomasevic/Reuters
জালিয়াতির অভিযোগ
মার্কিন নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ফলাফলে এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন৷ কিন্তু বুধবার থেকে এই নির্বাচনে জালিয়াতির নানা অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে৷ এসব অভিযোগকারীর বেশির ভাগই ট্রাম্প এর সমর্থক৷
ছবি: Daniel Acker/REUTERS
ট্রাম্পের অভিযোগ
ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকদের অভিযোগ, জালিয়াতি হয়েছে এবারের নির্বাচনে৷ বিশেষ করে ভোট গণনায়৷ তারা এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবার কথাও ভাবছে৷ এক টুইটে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, আমরা বড় ধরনের জয় পেতে যাচ্ছি, কিন্তু তারা নির্বাচন আমাদের কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে যাবার চেষ্টা চালাচ্ছে৷
ছবি: Edgard Garrido/Reuters
ফ্যাক্ট চেক ১ : মিশিগানে বাইডেনের অবিশ্বাস্য জয়?
বুধবার সকালে হঠাৎ করে মিশিগানে বাইডেনের ভোট ১ লাখ ৩৮ হাজার বেড়ে যায়৷ এ নিয়ে শুরু হয় নানা অভিযোগ৷ আসলে এই ঘটনাটি ঘটে মিশিগানের এক নির্বাচন কর্মকর্তার ভুলের কারণে৷ তিনি ভুল করে একটি শূন্য বেশি বসিয়ে দিয়েছিলেন বাইডেনের ভোট গণনায়, কিন্তু ভুলটি ২০ মিনিটের মধ্যে শুধরে নেয়া হয়৷ তবে এই ভুলের খবর ছড়িয়ে পড়লে রিপাবলিকানরা জালিয়াতির অভিযোগ তোলে৷
ছবি: Angela Weiss/AFP
ফ্যাক্ট চেক ২: অ্যারিজোনার কলম বিভ্রাট
অ্যারিজোনায় ভোট দেয়ায় একটি বিশেষ কলম ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে ট্রাম্প সমর্থকদের, এরকম একটি অভিযোগও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে৷ তাদের অভিযোগ, এই বিশেষ কলম শুধু ট্রাম্প সমর্থকদেরই ব্যবহার করতে বাধ্য করা হচ্ছে, এবং এই কলম ব্যবহার করার ফলে ব্যালট পেপারটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন, যেকোন ধরণের কলম ব্যবহার করে ভোট দিলে তা বৈধ ভোট হিসেবে বিবেচিত হবে৷
ছবি: Goran Tomasevic/REUTERS
ফ্যাক্ট চেক ৩: উইসকনসিনে মোট ভোটের চেয়ে বেশি ভোট প্রদান?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একজন অভিযোগ তোলেন যে উইসকনসিনে মোট রেজিস্টার্ড ভোটের চেয়ে বেশি ভোট দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, এই অভিযোগে তথ্যগত ভুল রয়েছে৷ কারণ, এই রাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী, যেকোন ভোট প্রদানের যোগ্য ব্যক্তি ভোটের দিনেও রেজিস্টার্ড ভোটার হতে পারেন এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন৷ আসলে মোট ভোটারের পরিমাণ অভিযোগে উল্লেখিত ভোটার সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি৷
ছবি: Edgard Garrido/REUTERS
5 ছবি1 | 5
শুক্রবার বিচারক লিখিত ভাবে তাঁর বক্তব্য জানিয়ে দিলে সেখানে জয়ী হবেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। আদালতের কারণেই সেখানে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হচ্ছিল না।
আদালতের এই রায়ের পরে রিপাবলিকানরা মুখ খুলতে চাননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরও তাঁরা এড়িয়ে গিয়েছেন। ডেমোক্র্যাটরা অবশ্য জানিয়েছেন, সময় নষ্ট করার জন্যই আদালতে গিয়েছিল রিপাবলিকানরা। আদালত সত্য তুলে ধরেছে।
জর্জিয়াতেও একি ভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন ট্রাম্পের পারিষদরা। সেখানেও তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালতের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল যে, জর্জিয়ার একটি কাউন্টিতে যে পোস্টাল ব্যালট এসেছে তা যেন গণনা করতে দেওয়া না হয়। রিপাবলিকানদের এই দাবি মানতে চায়নি আদালত। মামলা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। জর্জিয়ার ভোট গণনা এখনো চলছে। সেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে ট্রাম্প এবং বাইডেনের।
পেনসিলভানিয়ার একটি মামলায় অবশ্য খানিকটা আশার আলো দেখতে পেয়েছেন ট্রাম্প সমর্থকরা। ট্যাবুলেশন শিট স্পষ্ট ভাবে দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার আদালত। কিন্তু ট্রাম্প যে বিভিন্ন জায়গায় ভোটের গণনা বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছিলেন, এখনো পর্যন্ত সেই কোনো আবেদনেই তিনি সদর্থক সাড়া পাননি।