ছোট মেয়েদের স্কুলে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা করছেন জার্মানির নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের সরকার৷ এই পদক্ষেপ মুসলিম ছাত্রীদের একঘরে করতে পারে বলে ফেডারাল বৈষম্য প্রতিরোধ সংস্থার প্রধানের অভিমত৷
বিজ্ঞাপন
নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্তি দপ্তরের কর্মকর্তা সেরাপ গ্যুলার কিন্তু ১৪ বছরের কম বয়সি মেয়েদের স্কুলে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার পক্ষে একাধিক যুক্তি দেখিয়েছেন৷ অপরদিকে রাজ্যের সিডিইউ-এফডিপি জোট সরকারের প্রস্তাবিত এই নিষেধাজ্ঞা শিক্ষক মহল, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়, এমনকি চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দলের মন্ত্রীদের মধ্যেও ব্যাপক বিভাজন ও বিতর্কের সৃষ্টি করেছে৷
গ্যুলার স্বয়ং সিডিইউ দলের সদস্য৷ সরকারি জেডডিএফ টেলিভিশন সংস্থার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘(এই নিষেধাজ্ঞা) একটি শিশুর মুক্ত বিকাশ নিয়ে – যে কারণে এটা ধর্ম বা (মুসলিমদের) সমাজে অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে নয়, বরং শিশুদের স্বার্থকে কেন্দ্র করে৷''
মুসলিম নারীরা যেসব উপায়ে ‘পর্দা’ করে
হিজাব, বোরকা বা নিকাবের মতো নারীদের জন্য বিভিন্ন ইসলামি পোশাক নিয়ে ইউরোপে এখন তুমুল বিতর্ক চলছে৷ কোনো কোনো দেশ এ সব পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে৷ মুসলমান নারীদের শরীর ঢাকার পোশাকগুলি কী কী – চলুন জেনে নেই৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হিজাব
দেশ এবং সংস্কৃতিভেদে অনেক মুসলমান নারী হিজাব পরিধান করেন৷ মূলত মাথা, চুল এবং গলা এবং ঘাড়ের খোলা অংশ ঢাকা হয় এই পোশাক দিয়ে৷ বিভিন্ন ডিজাইনের এবং রঙের হিজাব পাওয়া যায় যেগুলো পরলে চেহারা পুরোটাই দেখা যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Seyllou
নিকাব
নিকাব পরলে নারীর পুরো শরীর ঢেকে যায়, শুধু চোখ দু’টো খোলা থাকে৷ সাধারণত পুরোপুরি রক্ষণশীল মুসলমান নারীরা নিকাব পরেন৷ নিকাব মূলত কালো রঙের হলেও অন্যান্য রঙের নিকাবও ইদানীং দেখা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
দোপাট্টা
দক্ষিণ এশিয়ার মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় দোপাট্টা বা ওড়না৷ নিকাব বা বোরকার মতো না হলেও এই পোশাকেও নারীর শরীর অনেকটা ঢাকা থাকে৷ তবে চুলের কিছুটা, চেহারা এবং গলা দেখা যায়৷ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যান্য ধর্মের মেয়েরাও দোপাট্টা পরেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S.Jaiswal
আল-আমিরা
মূলত দুই টুকরো কাপড় দিয়ে আল-আমিরা তৈরি করা হয়৷ একটি টুকরো দিয়ে চুল পুরোপুরি ঢেকে দেয়া হয় আর অন্য টুকরোটা হিজাবের মতো জড়িয়ে দেয়া হয়৷ কম বয়সি মুসলিম নারীদের মধ্যে এই আল-আমিরা বেশ জনপ্রিয়৷
শায়লা
শায়লা হচ্ছে লম্বা, চারকোনা এক ধরনের স্কার্ফ, যা গল্ফ অঞ্চলের মুসলিম নারীদের মধ্যে জনপ্রিয়৷ এটি সাধারণত কালো রঙের হয় এবং কাঁধের কাছে পিন দিয়ে আটকাতে হয় এটিকে৷ তবে হিজাবের মতো সবকিছু ঢেকে রাখে না শায়লা৷
ছবি: Getty Images/AFP/A.Rochman
এশার্প
অনেকটা হিজাবের মতো হলেই এসার্প তৈরি হয় সিল্ক দিয়ে এবং বেশ উজ্জ্বল রঙের হয়৷ মূলত তুরস্কের মুসলিম নারীরা এটা পরিধান করেন৷ এটি বিভিন্ন রং এবং ডিজাইনে পাওয়া যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Altan
কেরুডুং আর টুডুং
ইন্দোনেশিয়ার আধুনিক মেয়েরা আজকাল যে হিজাব ব্যবহার করছে, তার নাম কেরুডুং৷ আর প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়ায় নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় টুডুং৷ এই দু’টি অনেকটা চাদরের মতো হলেও, একটি অংশে সুন্দর প্যার্টার্ন থাকে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে থাকে বিভিন্ন রঙের শেডও৷ হিজাবের মতো টুডুং বা কেরুডুং-ও চুল, গলা এবং কাঁধ পুরোপুরি ঢেকে ফেলে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S.Khan
চাদর
ইরানের মেয়েদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় চাদর৷ বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সাধারণত সে দেশের নারীরা চাদর পরে নেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Mehri
বোরকা
মুসলিম নারীরা সারা চেহারা এবং সারা শরীর পুরোপুরি ঢেকে ফেলে বোরকা পরিধান করেন৷ ক্ষেত্রবিশেষে বোরকার চোখের অংশে জাল দেয়া থাকে, যাতে তারা দেখতে পারেন৷ কালো ছাড়াও বিভিন্ন রংঙের বোরকা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Arshad Arbab
জিলবুবস
সারা শরীর ঢেকে রেখেও নারীর স্তন এবং পশ্চাতদেশের আকার ফুটিয়ে তোলা যায় এই পোশাকে৷ এ জন্যই একে জিলবুবস বলা হয়৷ ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই পোশাকের ব্যবহার দেখা যায়৷ তবে এই পোশাক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ দ্রষ্টব্য: মুসলিম নারীদের পোশাক সংক্রান্ত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ছবিঘরটি তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Indahono
10 ছবি1 | 10
গ্যুলার স্মরণ করিয়ে দেন যে, ইসলামি প্রথা অনুযায়ী বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছানোর পরেই মেয়েদের হিজাব পরা শুরু করা উচিত৷ ‘‘কাজেই এক্ষেত্রে ধর্মীয় স্বাধীনতার যুক্তি উত্থাপন করা উচিৎ নয়, কেননা, ধর্ম এত কমবয়সি মেয়েদের হিজাব পরার কথা বলেনি৷''
গ্যুলার বলেন, ‘‘ডে-কেয়ার আর প্রাইমারি স্কুলের মেয়েদের যে পুরুষদের কাছ থেকে তাদের ‘আকর্ষণ' লুকিয়ে রাখতে হবে, এই মনোভাব শিশুদের যৌন কামনার বস্তু করে তোলে৷''
‘‘একজন তরুণী যখন বলেন, ‘আমি হিজাব পরতে চাই না,' তখন সেটা তাঁর অধিকার এবং আমাদের সেই অধিকার মেনে নিতে ও সম্মান করতে হবে,'' গ্যুলার যোগ করেন৷
মতবিরোধ
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দলের সাধারণ সম্পাদক আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার বলেছেন, কেন শিশুদের হিজাব পরা উচিত নয়, সেটা তাঁর দল অভিভাবকদের বোঝাতে পারবে বলে তিনি আশা করেন৷ ‘‘কিন্তু আমরা শেষ পন্থা হিসেবে হিজাব নিষেধের সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করছি না,'' বলেন ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার৷
অপরদিকে ফেডারাল অন্তর্ভুক্তি কমিশনার আনেটে ভিডমান-মাউৎসসহ সিডিইউ দলের অপরাপর সদস্যের মতে হিজাব নিষেধে সাংবিধানিক সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ ফেডারাল বৈষম্য প্রতিরোধ সংস্থার প্রধান ক্রিস্টিনে ল্যুডার্স ব্যক্তিগত ধর্মীয় প্রতীক নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন, ‘‘যারা স্কুলে মুসলিমদের হিজাব পরা নিষেধ করতে চান, তারা কোনো সমস্যার সমাধান করছেন না, বরং সে ধরনের শিশুরা যাতে নিজেদের বৈষম্য বা বিচ্ছিন্নতার শিকার বলে মনে করে, তার ব্যবস্থা করছেন৷''
পোশাক নিয়ে ইরানি মহিলাদের চোর-পুলিশ খেলা
ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ইরানের মহিলাদের পোশাক-আশাকের ব্যাপারে কড়া বিধিনিয়ম মেনে চলতে হয়৷ তবে প্রতিরোধ দানা বাঁধছে, তরুণীরা ক্রমেই আরো বেশি করে রঙিন সাজপোশাকের দিকে ঝুঁকছেন৷
ছবি: IRNA
মাথার চুল দেখানো চলবে না
১৯৭৯ সালের পর থেকে ইরানের শাসকবর্গ মহিলাদের ‘শালীন’ পোশাক-আশাক পরিধানের নির্দেশ দিয়েছেন৷ এই ‘ড্রেস কোড’ অনুযায়ী মহিলাদের মাথার চুল পুরোপুরি ঢাকা থাকতে হবে; লম্বা ঢোলা পাতলুন আর ওভারকোট পড়তে হবে; সেগুলো যতদূর সম্ভব কালো বা ছাই রঙের হলেই ভালো৷
ছবি: Isna
নীরব প্রতিরোধ
প্রায় চার দশকের নিপীড়ন সত্ত্বেও মহিলাদের সাহস অটুট৷ বহু ইরানি মহিলা কড়া ড্রেস কোডের নিজস্ব ব্যাখ্যা করে নিয়েছেন৷ তারা হিজাব আর বোরখা পরেন বটে, তবে নিজেদের মতো করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/A. Kenare
সর্বত্র নিয়ন্ত্রণ
রঙচঙে আর খোলামেলা ফ্যাশন কাম্য নয়৷ প্রতিবছর গরমে পথেঘাটে নৈতিকতার প্রহরীদের নজরদারি বাড়ে৷ বিধিনিয়ম মেনে না চললে, পুলিশ পথ আটকায়, শুরু হয় লম্বা তর্ক-বিতর্ক, বাগবিতণ্ডা...
ছবি: ISNA
ফলশ্রুতি
‘মরাল পুলিশ’-কে সন্তোষজনক কারণ না দেখাতে পারলে অর্থদণ্ড, এমনকি কারাদণ্ডও হতে পারে৷ আটক মহিলাদের মুচলেকা দিতে হয় যে, তারা ভবিষ্যতে নিয়ম মেনে চলবেন৷ জেলহাজতে থাকাকালীন মহিলাদের জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে নোংরা কালো ‘চাদর’ পরিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়৷
ছবি: FARS
রঙচঙে, আঁটোসাটো আর ছোট...
অনেক তরুণী শাস্তির ভয়েও সাজ ছাড়তে রাজি নন৷ নৈতিকতার প্রহরীদের দৌরাত্ম্য সত্ত্বেও কমবয়সি মহিলারা ক্রমেই আরো বেশি করে আধুনিক সাজপোশাকের দিকে ঝুঁকছেন৷ বহু মডেল সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হালফ্যাশন পরিবেশন করে থাকেন৷
ছবি: Hasan Koleini
নিপীড়ন সত্ত্বেও ফ্যাশন
ইরানি মডেল শবনম মোলাভি এমনকি মার্কিন ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘এফএসএইচএন’-এর প্রচ্ছদও অলঙ্কৃত করেছেন৷ গত মে মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, ‘ইসলাম পরিপন্থি সংস্কৃতি’ প্রচারের দায়ে৷ কয়েকদিন পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান৷
ছবি: fshnmagazine.com
রোহানির আমলেও বোরখা বাধ্যতামূলক
তবে ফ্যাশন সচেতনতাকে অত সহজে নিষিদ্ধ করা যায় না৷ নৈতিকতার প্রহরীদের যাবতীয় উৎপাত ইরানি মহিলাদের ফ্যাশনেবল জামাকাপড় পরার শখ রোধ করতে পারেনি৷
ছবি: Isna
নিষ্ফল প্রতিশ্রুতি
প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি ২০১২ সালের নির্বাচনি প্রচার অভিযানে ‘খোলা রাস্তায় হয়রানি’ বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ কিন্তু যে বিশটির বেশি সংস্থা মহিলাদের পোশাক-আশাকের উপর নজর রাখার দায়িত্বে, তাদের একটি বড় অংশ রোহানির নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত৷
ছবি: FARS
নৈতিক গোয়েন্দা পুলিশ
২০১৬ সালের এপ্রিল মাস থেকে সরকার নিজেই আরো প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তেহরানের পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন যে, মোট সাত হাজার পুরুষ ও মহিলা সাদাপোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ হিসেবে মহিলাদের সাজপোশাক ও আচার-ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছেন৷
ছবি: cdn
ইন্টারনেটে সংহতি
গত জুলাই মাসের শেষে ইরানি পুরুষরা #মাইনহিজাব (অর্থাৎ আমার হিজাব) হ্যাশট্যাগ দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি অভিযান শুরু করেন৷ তারা ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম নিজেদের হিজাব পরা অবস্থায় ছবি পোস্ট করে ইরানি মহিলাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন৷
ছবি: facebook/my stealthy freedom
10 ছবি1 | 10
এফডিপি প্রধান ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার এনআরডাব্লিউ রাজ্যের অন্তর্ভুক্তি মন্ত্রী এফডিপি রাজনীতিক ইওয়াখিম স্টাম্পের হিজাব নিষেধ পরিকল্পনাকে সমর্থন করে বলেন, ‘‘শিশুদের যদি প্রাইমারি স্কুলে, এমনকি কিন্ডারগার্টেনে হিজাব পরতে হয়, তাহলে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ব্যক্তিগত বিকাশধারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হবে৷''
বয়সসীমা কী ও কেন?
জার্মানিতে শিশুরা ১৪ বছর বয়স থেকে তাদের ধর্ম নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারে৷ ১৯২১ সালের এই আইন অনুযায়ী ১৪ বছর বা তার বেশি বয়সের ছেলেমেয়েরা তাদের ধর্মমত স্বাধীনভাবে বেছে নিতে পারে৷
কতজন শিশু বর্তমানে হিজাব পরে থাকে সে বিষয়ে কোনো পরিসংখ্যান নেই বলে গ্যুলার জানিয়েছেন৷
এপ্রিল মাসের সূচনায় অস্ট্রিয়ার রক্ষণশীল সরকার ১০ বছরের কম বয়সি মেয়েদের কিন্ডারগার্টেন বা স্কুলে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন৷
এসি/এসিবি (ডিপিএ, ইপিডি, কেএনএ)
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনাদের মন্তব্য চাই৷ তাই লিখুন নাচের ঘরে৷
হিজাব পরা ফ্যাশন মডেল
উদ্বাস্তু-সন্তান ও মার্কিন নাগরিক হালিমা এডেন ফ্যাশনের জগতে এক পথিকৃৎ৷ নিউ ইয়র্ক, মিলান ও লন্ডনের ফ্যাশন শো-তে প্রথম যে মডেল হিজাব পরে রানওয়েতে নামেন, তিনি হলেন হালিমা৷
ছবি: Reuters/B. McDermid
মার্কিন জাতীয় পতাকার রঙে হিজাব
ছবিতে লাল-সাদা-নীল রঙের হিজাব পরে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি হলেন ১৯ বছরের তরুণী হালিমা এডেন, যিনি ধর্মপ্রাণ মুসলিম৷ হালিমা শুধু হিজাবই পরেন না, তিনি মুসলিম নারীদের মতো শরীর ঢেকে রাখেন৷ তবুও ফ্যাশনের জগতে তাঁর সাফল্য দেখবার মতো...
ছবি: Reuters/B. McDermid
মার্কিন ‘অ্যালিওর’ থেকে আর্বি ‘ভোগ’-এর প্রচ্ছদে
হালিমা সম্প্রতি মার্কিন মহিলা পত্রিকা ‘অ্যালিওর’-কে বলেছেন যে, তিনি ‘‘মুসলিম মহিলাদের সম্পর্কে ভুল ও বস্তাপচা ধারণা’’ দূর করতে চান৷ ‘অ্যালিওর’ পত্রিকার জুলাই মাসের ইস্যুর প্রচ্ছদে রয়েছেন হালিমা, যেমন তিনি ‘ভোগ’ পত্রিকার আর্বি সংস্করণের আগস্ট মাসের ইস্যুর প্রচ্ছদে ছিলেন৷
ছবি: Reuters/B. McDermid
হিজাব পরে রানওয়েতে
২০১৭ সালের গোড়া থেকে হালিমা আইএমজি মডেলস সংস্থার মডেল – হাদিদ ভগিনীদ্বয় অথবা জিসেল ব্যুন্ডসেন-এর মতো সুপারমডেলরা যে সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ৷ ছবিতে হালিমাকে মিলানে ম্যাক্স মারা কোম্পানির হয়ে মডেলিং করতে দেখা যাচ্ছে৷ ব়্যাপার কেনি ওয়েস্ট-এর ফ্যাশন লেবেল ‘ইজি’ অথবা আলবের্তো ফেরেত্তি-র হয়েও তিনি রানওয়েতে নেমেছেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Medina
উদ্বাস্তু থেকে ফ্যাশন মডেল
হালিমার জন্ম কেনিয়ার একটি উদ্বাস্তু শিবিরে৷ ছোটবেলায় মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় আসেন – আজ সেখানেই পড়াশুনা করছেন৷ হালিমা জন্মসূত্রে সোমালি৷ তাঁর পরিবার সোমালিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে কেনিয়ায় পলায়ন করেছিল৷
ছবি: Reuters/B. McDermid
মিস মিনেসোটা হতে গিয়ে...
...২০১৬ সালে বিকিনির বদলে বুর্কিনি পরেন হালিমা৷ মিস মিনেসোটা হলো মিস ইউএসএ সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্যায়৷ গোড়ার দিকেই বাদ পড়েন হালিমা, কিন্তু প্রতিযোগিতার আয়োজক আইএমজি মডেলস সংস্থা তাঁকে মডেল হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করে৷ মনে করা যেতে পারে, ২০১৫ সাল অবধি মিস ইউএসএ প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷
ছবি: Imago
দু’পক্ষ থেকেই সমালোচনা
হালিমা যে মডেলিং করছেন, রক্ষণশীল মুসলিমদের সেটা পছন্দ নয়৷ অপরদিকে উদারপন্থি মুসলিমদের কাছে নারীদের পরিধেয়র উপর বাধানিষেধ গ্রহণযোগ্য নয়৷ হালিমা বলেন, সৌন্দর্যই তাঁর সব কথা নয়; এছাড়া হিজাব পরার ফলে তাঁকে ‘‘তুই বড় মোটা হয়ে গেছিস’’, ‘‘তুই বড় রোগা হয়ে গেছিস’’, এ সব কথা শুনতে হয় না৷