নিলয় সরকার৷ বয়স ২৭ বা ২৮৷ রানা প্লাজা ধসে একটি চোখ সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে গেছে৷ অন্য চোখটা দিয়েও ঝাপসা দেখেন৷ রানা প্লাজা ধসের বর্ষপূর্তিতে মঞ্চে উঠে চোখ হারানোর যন্ত্রণায় কথা বলতে পারছিলেন না৷ কান্নার তোড়ে গলা ধরে আসছিল...
বিজ্ঞাপন
একটা সময় নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলেন না, কেঁদে ফেললেন উচ্চ স্বরে৷ চোখের পানিতে বললেন ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার কথা৷ কণ্ঠে অভিযোগ নিয়ে বললেন, ‘‘সরকার নাকি সাহায্য দিয়েছে৷ কিন্তু আমি কোনো টাকা পাইনি৷ এখন দুই চোখে আমার দুনিয়া কেবলই অন্ধকার৷''
শুধু নিলয় নন, তাঁর সাথে কাঁদলেন উপস্থিত লোকজন, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী নেতা, পুলিশ কর্মকর্তা সবাই৷ নিলয়ের মতো রায়হান কবিরও উঠেছিলেন মঞ্চে৷ রানা প্লাজা ধসে কবির হারিয়েছেন তাঁর একটা পা৷ কৃত্তিম পা যদিও লাগানো হয়েছে, কিন্তু তাতে এখনো ততটা অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেননি৷ মঞ্চে উঠেই পা হারানোর বেদনা নিয়ে কেঁদে ফেললেন তিনিও৷ ক্ষোভ, হতাশা আর কষ্ট নিয়ে কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললেন, ‘‘সারা জীবনের জন্য যাঁর সাথে ঘর বেঁধেছিলাম, পা কাটা যাওয়ায় পর সেও আমাকে ছেড়ে চলে গেছে৷ এখন আমি কেবলই একা৷''
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তি
২৪শে এপ্রিল, ২০১৩৷ সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছের সুউচ্চ ভবন ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়ল বিকট শব্দে৷ ধসের আশঙ্কাকে আমলে না নেয়ার পরিণাম ১,১৩৫ জন পোশাক শ্রমিক, করুণ মৃত্যু৷ আহত এক হাজারেরও বেশি মানুষের এখনো দিন কাটে আতঙ্কে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাঁচা আর বাঁচানোর লড়াই
ভবন মালিক সোহেল রানার অর্থলিপ্সার নির্মম শিকার পোশাক শ্রমিকদের বাঁচানোর জন্য সরকারি উদ্যোগের অপেক্ষায় বসে থাকেননি সাধারণ মানুষ৷ দূর দূরান্ত থেকে ছুটে এসে একরকম খালি হাতেই অনেকে নেমে পড়েন উদ্ধার কাজে৷ নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে বহু পোশাক শ্রমিককে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে আনেন তাঁরা৷
ছবি: Reuters
অসহায়ত্ব
আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সুযোগ-সুবিধার অভাব থাকলেও, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মীর কমতি ছিল না৷ তবুও অনেকেই চলে গেছেন স্বজনদের কাঁদিয়ে৷ এ ছবির মতো অবস্থাতেও উদ্ধার করতে হয়েছে অনেক মৃতদেহ৷ ৮০০-রও বেশি মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা গেলেও, অনেকের পরিচয় আজও জানা যায়নি৷ কিছু লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে৷ কিন্তু ৮৭ জনের জন্য নতুন করে নমুনা চাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
রেশমার ফেরা
রানা প্লাজা ধসের ১৭তম দিনে ঘটে বিস্ময়কর এক ঘটনা৷ ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে আর কাউকে জীবন্ত উদ্ধার করা সম্ভব নয় ভেবে সাধারণ উদ্ধারকারীদের অনেকে যখন ঘরে ফিরছেন, তখনই প্রায় সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ২২ বছর বয়সি পোশাক শ্রমিক রেশমাকে৷
ছবি: Reuters
এখনো কাঁদে প্রাণ
ধসের পর ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন অনেকে৷ বিজিএমইএ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়েছে মাত্র ১৪ কোটি টাকা৷ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১২৭ কোটি টাকা জমা হয়েছে ঠিকই, তবে বিতরণ করা হয়েছে ২২ কোটি টাকা৷ ভবন ধসের বর্ষপূর্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের মুখে শোনা গেছে হতাশা আর ক্ষোভের কথা৷ পপি বেগমকে কেড়ে নিয়েছে রানা প্লাজা৷ ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে তাঁর কবর জিয়ারত করতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন বোন রোজিনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
মায়ের কান্না
জুরাইন কবরস্থানে রশিদা খাতুনের কবরের পাশে সফুরা খাতুন৷ ভবন ধসের প্রায় দশ মাস পর, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি পেয়েছিলেন সন্তানের লাশ খুঁজে পাওয়ার সান্ত্বনা৷
জুরাইন কবরস্থানে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করতে মূলত তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই এসেছিলেন৷ রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তিতে আয়োজন ছিল অনেক, তবে জুরাইন কবরস্থানে ভিড় ছিল না তেমন৷ সেখানে এভাবেই হারানো স্বজনের ছবি হাতে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছিলেন এক নারী৷
ছবি: DW/M. Mamun
প্রদর্শনী
রানা প্লাজা ধসের ছবি নিয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোকচিত্র প্রদর্শনী৷ বাংলাদেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ৬০ জন আলোকচিত্র সাংবাদিকের তোলা ছবি স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ফুলের জলসা
রানা প্লাজা ধসে নিহতদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন৷
ছবি: DW/M. Mamun
মোনাজাত
জুরাইন কবরস্থানে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত৷
ছবি: DW/M. Mamun
10 ছবি1 | 10
উপস্থিত কেউই এদিন আবেগ ধরে রাখতে পারেননি৷ বিজিএমইএ ভবনে বৃহস্পতিবার দুপুরে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় আহত-নিহতদের স্মরণে যে শোক সভার আয়োজন করা হয়েছিল, সেখানেই নিলয়-রায়হানরা কথা বলেন৷
সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে কাঁদেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও৷ অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি৷ অশ্রুসজল নয়নে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘‘রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকরা এসেছেন৷ এসেছে ফুলের মতো এতিম বাচ্চারা৷ এদের চোখে পানি দেখে নিজেকে সংবরণ করা কঠিন৷ আসুন এদের পাশে দাঁড়াই৷''
তিনি বলেন, ‘‘রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে৷ যেন এ ধরনের দুর্ঘটনা আর না ঘটে৷'' তাঁর অভিযোগ, পোশাক শিল্পের অগ্রযাত্রাকে বাধা দিতে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত চলছে৷ সবাই মিলে এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে৷
সাভারের রানা প্লাজার স্থানটি যেন হয়ে উঠেছে সমাধিস্থল৷ বৃহস্পতিবারও ভবনের পুরো জায়গাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা ছিল৷ এটা পার হয়ে ভেতরে গিয়ে হারানো স্বজনদের স্মরণে কেউ কেউ আগরবাতি জ্বেলেছেন৷ কেউ ছিটিয়ে দিয়েছেন গোলাপজল৷ স্বজনের আত্মার শান্তি কামনা করছেন তাঁরা৷ দুই হাত তুলে মোনাজাত করছেন৷
মৃত্যুকূপ থেকে যেভাবে ফিরলেন রেশমা
সাভারে ধসে পড়া ভবন থকে ১৭ দিন পর উদ্ধার করা হয় জীবিত রেশমাকে৷ এই সতের দিন তিনি কিভাবে কাটিয়েছেন? প্রশ্ন অনেকের মনে৷ চলুন উত্তর খোঁজা যাক৷
ছবি: Getty Images/AFP/STRDEL
সুস্থ আছেন রেশমা
সাভারে ধসে পড়া ভবন থকে ১৭ দিন পর উদ্ধার করা হয় জীবিত রেশমাকে৷ তিনি এখন সুস্থ আছেন৷ কিন্তু ধসে পড়া রানা প্লাজার মধ্যে কিভাবে সতের দিন কাটিয়েছেন তিনি? প্রশ্ন অনেকের মনে৷ চলুন ছবিতে উত্তর খোঁজা যাক৷
ছবি: Reuters
উদ্ধার অভিযান
১০ মে স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকর্মী রাজ্জাক ধসে পড়া ভবনের মধ্যে বেঁচে থাকা একজন মানুষের উপস্থিতি টের পান৷ সেই মানুষটি রেশমা৷ তিনি একটি ভাঙা পাইপ দিয়ে নিজের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন এবং তাঁকে বাঁচানোর অনুরোধ জানান৷ এরপর রড কেটে ভিতরে ঢুকে বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে রেশমাকে বাইরে নিয়ে আসা হয়৷
ছবি: Getty Images/STRDEL
যেভাবে টিকে ছিলেন রেশমা
১৭ দিন রেশমা কি খেয়ে টিকে ছিলেন সেই প্রশ্ন অনেকের৷ উদ্ধারকর্মী রাজ্জাক জানান, ‘‘রেশমা যে তলায় আটকে ছিলেন সেটা অন্যান্য তলার মতো মিশে যায়নি৷ সেখানে হাঁটা-চলা এবং নড়া-চড়া করার কিছুটা সুযোগ ছিল৷ রেশমা তাঁকে জানান যে, ঐ জায়গায় বিভিন্ন ধরনের শুকনা ও জুস জাতীয় খাবার ছিল, যা তিনি খেয়েছেন৷ ৭ মে শুকনা খাবার শেষ হয়ে যায় আর রসালো খাবার যায় পচে৷ ফলে শেষের দু’দিন ধরে তিনি অভুক্ত ছিলেন৷’’
ছবি: Getty Images/AFP/STRDEL
চিকিৎসকের ব্যখ্যা
ধ্বংসস্তূপের নীচে রেশমার এই ১৭দিন বেঁচে থাকার ঘটনাকে ডয়চে ভেলের কাছে ব্যাখা করেছেন মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. মনি লাল আইচ৷ তিনি বলেন, ‘‘রেশমা ১৭ দিনে হৃদরোগ বা নিউরোলোজিক্যাল সমস্যায় পড়তে পারতেন৷ হয়ত মানসিক জোর এবং বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছার কারণেই তাঁকে সেই সমস্যায় পড়তে হয়নি৷ আর গবেষণায় প্রমাণিত যে নারীদের মানসিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা পুরুষের তুলনায় অনেক বেশি৷’’
ছবি: Reuters
গোটা বিশ্বে আলোড়ন
রেশমাকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধারের খবরে গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত সাভারে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে এই তরুণীকে দেখতে যান৷ রেশমাকে কেউ যাতে মানসিকভাবে পীড়া না দেয় সেজন্যও সবাইকে নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা৷
ছবি: dapd
তৃতীয় নারী রেশমা
১৭ দিন ধরে অন্ধকারে ডুবে থাকা রেশমাকে উদ্ধারের খবরের সঙ্গে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে বিবিসি৷ এতে দেখা যাচ্ছে, এর আগে পাকিস্তানে একই রকম পরিস্থিতিতে নাকাশা বিবি নামক এক নারী পচা খাবার আর পানি খেয়ে টিকে ছিলেন ৬৩ দিন৷ আর হাইতির ইভান্স মোনসিজনাক টিকে ছিলেন ২৭ দিন৷ এই সময়ের পর তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়৷
ছবি: Getty Images
পরিবারের সঙ্গে দেখা
রেশমার মা জোবেদা খাতুন, দুই ভাই ও বোন আসমা গত কয়েকদিন ধরেই রয়েছেন সাভারে৷ হাসপাতালে রেশমার সঙ্গে দেখা করেছেন তারা৷ রেশমার বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘‘বর্তমানে রেশমা ভালো আছে, সুস্থ আছে৷’’
ছবি: Reuters
বাড়ছে মৃতের সংখ্যা
এদিকে, সাভারে ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে৷ গত ২৪ এপ্রিল ভবন ধসের পর ১২ মে অবধি উদ্ধার করা হয়েছে ১,১২৭ টি মৃতদেহ৷ নিহতদের মধ্যে ঠিক কতজন নারী আর কতজন পুরুষ – সেই হিসেব এখন আরা জানা যাচ্ছে না৷ অনেক মরদেহ পচে গেছে৷ গোটা বিশ্বে স্মরণকালের মধ্যে ভয়াবহতম ভবন ধস এটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তবুও কি সতর্ক আমরা?
সাভার ভবন ধসের পর কতটা সতর্ক হয়েছে বাংলাদেশ? এই প্রশ্ন অনেকর মনে৷ বিশেষ করে, যে পোশাক খাত বাংলাদেশকে গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত করে তুলছে, সেই খাতের শ্রমিকদের নিরাপত্তায় সরকার কতটা সচেষ্ট? সর্বশেষ খবর হচ্ছে, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷ রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক শিল্পের যে নেতিবাচক ‘ইমেজ’ তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতেই এই পদক্ষেপ৷
ছবি: Reuters
‘আমাদের ব্যর্থতার প্রতীক’
শান্তিতে নোবেল জয়ী বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস গত ৯ মে একটি নিবন্ধের একাংশে লিখেছেন, ‘‘সাভার ট্র্যাজেডি জাতি হিসেবে আমাদের ব্যর্থতার প্রতীক৷ রানা প্লাজার ফাটল ফেটে ভবন ধসে দেখিয়ে দিলো আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যে বিশাল ফাটল ধরেছে সেটা আমলে না নিলে জাতিও এরকম ধসের ভেতর হারিয়ে যাবে৷’’
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
নিহত স্ত্রী খালেদার ছবি নিয়ে এসেছেন বরিশালের জসিমউদ্দিন৷ এক বছর আগে এভাবেই ছবি নিয়ে স্ত্রীকে খুঁজেছিলেন তিনি৷ লাশও পাওয়া গিয়েছিল৷ এরপর বরিশালে দাফন করেছিলেন তাঁকে৷ সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতাও পেয়েছিলেন৷ কিন্তু দুর্ভাগ্য তাঁরই এক আত্মীয় সেই অর্থ মেরে দিয়েছেন৷ আট বছরের ছেলে রাফিউ ইসলাম আর আড়াই বছরের ছেলে নাফিউ ইসলামের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই অনেকটাই উৎকণ্ঠিত জসিমউদ্দিন৷
রানা প্লাজা ধসের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দিনটিকে স্মরণ করতে হাজারো শোকার্ত মানুষ সমবেত হন সাভারের রানা প্লাজা সংলগ্ন এলাকায়৷ সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীরাসহ নিহত ও আহতদের স্বজনদের ঢল নামে সেখানে৷ এতে করে বন্ধ হয়ে যায় রানা প্লাজা সংলগ্ন সড়ক৷ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার, লিফলেট, কালো পতাকা, কালো ব্যাজ, জাতীয় পতাকা ও প্রতীকী কাফনের কাপড় নিয়ে হাজির হন অনেকে৷ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও রানার বিচারের দাবিতে মহাসড়কে মিছিল ও সমাবেশ করেন পোশাক শ্রমিকরা৷ এ সময় তাঁরা সোহেল রানার ফাঁসির দাবি করেন৷ পাশাপাশি রানার জমি বাজেয়াপ্ত করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে তা বণ্টনের দাবি জানান৷ এছাড়া জুরাইন কবরস্থানে যেসব লাশ দাফন হয়েছে, সেখানেও ফুল দিয়েছেন স্বজনরা৷
এদিকে রানা প্লাজায় হতাহত শ্রমিকদের স্মরণে শোক র্যালি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে নিখোঁজ শ্রমিকের কোনো তথ্য পাওয়া গেলে বিজিএমইএ তাঁদের দায়ভার ও সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসন করতে প্রস্তুত৷ তিনি বলেন, ‘‘রানা প্লাজার শ্রমিক ভাই-বোনদের জন্য বিজিএমইএ সহায়তা কার্যক্রম বন্ধ করেনি৷ তাঁদের জন্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে৷ যদি কারো চিকিৎসার দরকার হয় তা করাতেও প্রস্তুত বিজিএমইএ৷