সুন্দরবনের অদূরে বাংলাদেশের বাগেরহাটে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে চলছে জোর বিতর্ক৷ তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন করে স্পষ্ট করেই বলে দিয়েছেন যে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে এবং এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না৷
বিজ্ঞাপন
বিদ্যুৎ প্রকল্পের খুঁটিনাটি
এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য বাগেরহাটের রামপালে ১৮৩৪ একর জমি অধিগ্রণ করে তা বালু দিয়ে এরইমধ্যে ভরাট করা হয়েছে৷ প্রকল্পটি বাংলাদেশের বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের মাত্র ৯-১৩ কিলোমিটারের মধ্যে৷ তবে সরকারের দাবি, সুন্দরবনের বাফারজোনের ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি৷
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনের বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি)-এর সঙ্গে দু'টি চুক্তি সই হয়েছে৷ রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র৷ তাই এই বিদ্যুৎ উদপাদনে ব্যবহার করা হবে কয়লা৷ আর সেই কয়লা ভারত থেকে আমাদানি করা হবে৷ জানা গেছে, এই প্রকল্পে অর্থের যোগান দেবে ভারতের এক্সিম ব্যাংক৷ প্রকল্পটি থেকে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪০ কোটি ৭৮ লাখ টাকা৷
বিদ্যুৎকেন্দ্রের দু'টি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ইউনিট উৎপাদনে আসবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে৷ ভারত এবং বাংলাদেশ প্রকল্পটিতে ৩০ ভাগ অর্থ বিনিয়োগ করবে৷ বাকি ৭০ ভাগ অর্থ ঋণ নেওয়া হবে৷ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ কোম্পানি৷
আপত্তি যেসব জায়গায়...
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে কেন আপত্তি, তা সংবাদমাধ্যমে এক যৌথ বিবৃতির মাধমে জানিয়েছেন পরিবেশবাদী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা৷ তাঁদের মধ্যে আছেন হাসান আজিজুল হক, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সুলতানা কামাল, সৈয়দ আবুল মকসুদ, রাশেদা কে চৌধুরী, ইফতেখারুজ্জামান, বদরূল ইমাম, এম এম আকাশ, শফিক উজ জামান, এম শামসুল আলম, খুশী কবির, আবদুল মতিন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মলয় ভৌমিক, রোবায়েত ফেরদৌস, শরীফ জামিল প্রমূখ৷
এঁরা যা বলেছেন তার সারসংক্ষেপ
রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প হলে তার থেকে নির্গত কার্বন ও ছাইভস্মে আশপাশের বায়ু ও পানিদূষণ, নির্গত গ্যাসে বিদ্যমান ভারী ধাতু, সালফার ও নাইট্রেজেন অক্সাইড ছড়িয়ে পড়ায় বিস্তির্ণ এলাকার বায়ুদূষণ এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য পানি দ্বারা আশেপাশের জলাশয়ের পানিদূষণ ঘটবে৷
সুন্দরবন ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রতিক্রিয়া
বিদ্যুৎ অবশ্যই দরকার, বিশেষ করে গরিবদের তো আরো বেশি দরকার৷ তারপরও রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে তা হবে মর্মান্তিক৷ একদিকে দেশের-দশের প্রয়োজন, অন্যদিকে পরিবেশ বিপর্জয়ের ভয়৷ কী বলছে দেশের মানুষ?
ছবি: picture-alliance/dpa/Pacific Press/M. Hasan
মোশাহিদা সুলতানা, শিক্ষক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা ঋতুর মতে, সুন্দরবনের পাশে এত বড় একটা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করে একে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা কোনোভাবেই ঠিক হবে না৷ তাঁর মতে, সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই, কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প আছে৷
ছবি: DW
সায়েম ইউ চৌধুরী, পাখি ও বন্যপ্রাণী গবেষক
৪০ বারেরও বেশি সুন্দরবনে গেছেন সায়েম৷ তিনি জানান, সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি সার কারখানা থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস নিঃসরণ হয়ে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়৷ পুকুরের মাছ, গাছপালা, প্রাণী – সব মারা পড়ে৷ এ রকম ছোট একটা সার কারখানার দুর্ঘটনা থেকে আমাদের পরিবেশ রক্ষা করার সক্ষমতা যেখানে নেই, সেখানে এত বড় একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো দুর্ঘটনা হলে আমাদের সরকার কী-ই বা করার থাকবে?
ছবি: DW
মারুফ বিল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা
মারুফ বিল্লাহর জন্ম রামপালেই৷ ছোটবেলা থেকেই তিনি সুন্দরবনকে ধ্বংস হতে দেখে আসছেন৷ আর এখন সুন্দরবন ঘেঁষে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করে একে ধ্বংসের আরেক পায়তারা করছে সরকার৷ তিনি জানান, সিডর আর আইলার পরে আমরা দেখেছি ঐ জনপদকে সে যাত্রায় বাঁচিয়েছিল সুন্দরবন৷ এখন যদি আমরাই তাকে মেরে ফেলি, তাহলে জনগণ কোথায় যাবে? তাই তাঁর প্রশ্ন, জীবন আগে, নাকি বিদ্যুৎ আগে?
ছবি: DW
সাইমুম জাহান হিয়া, শিক্ষার্থী
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইমুম জাহান হিয়া মনে করেন, সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের পরিচয় বহন করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ বন৷ এর পাশে বিশাল আকারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে যে কখনো কোনো দুর্ঘটনা হবে না – এটা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না৷ তাঁর মতে, দেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রয়োজন আছে, এটা ঠিক, তবে সেটা সুন্দরবনকে ধ্বংস করে নয়৷
ছবি: DW
হাসিব মোহাম্মদ, শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিব মোহাম্মদ কয়েকবার সুন্দরবনে গেছেন৷ আসলে এই বনাঞ্চলের জীববৈচিত্র তাঁকে সবসময় টানে৷ তাই এ বনের কোনোরকম ক্ষতি করে তিনি এর কাছাকাছি রামপালের মতো কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চান না৷ গত বছরের কয়েকটি ছোট ছোট জাহাজ সুন্দরবনে ডোবার পর যে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, সে কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি৷ তাঁর আশঙ্কা, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলে জাহাজ চলাচল বেড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাও বাড়বে৷
ছবি: DW
মিমু দাস, শিক্ষার্থী
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র মিমু দাসও মনে করেন, সুন্দরবনের এত কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা ঠিক হবে না৷ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার খবর পড়ে তাঁর মনে হয়েছে যে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করবে৷ মিমু বিদ্যুৎকেন্দ্র চান, তবে সেটা অন্য কোথাও৷
ছবি: DW
আদনান আজাদ আসিফ, মডেল ও অভিনেতা
মডেল ও অভিনেতা আদনান আজাদ আসিফ একজন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারও৷ কয়েক বছর ধরে সময় পেলেই তিনি সুন্দরবনে ছুটে যান৷ বিশ্বের সবেচেয়ে বড় এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আবাসস্থল৷ তাঁর মতে, সুন্দরবন বাংলাদেশের ফুসফুস৷ আর এমনিতেই নানা কারণে এখানে বাঘের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেয়েছে৷ তাই এর কাছাকাছি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো প্রকল্প করে এ বনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া ঠিক হবে না৷
ছবি: DW
আমিনুর রহমান, চাকুরিজীবী
ঢাকার একটি পরিবহন সংস্থায় কাজ করেন আমিনুর রহমান৷ তাঁর মতে, দেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ দরকার৷ তাই বড় কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে দেশের জন্য ভালোই হবে৷ তাছাড়া তিনি শুনেছেন যে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে তা সুন্দরবনের কোনো ক্ষতিই করবে না৷
ছবি: DW
আব্দুল আজীজ ঢালী, মধু চাষি
সুন্দরবনে গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মধু আহরণ করেন সাতক্ষীরার আব্দুল আজীজ ঢালী৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ বনের সঙ্গে থাকতে চান তিনি৷ সুন্দরবনে থাকলেও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কে কিছুই জানেন না আব্দুল আজীজ৷
ছবি: DW
ভবেন বিশ্বাস, মাছ শিকারি
ভবেন বিশ্বাসের জীবিকার অন্যতম উৎস সুন্দরবন৷ উদবিড়াল দিয়ে এ বনে তিনি মাছ ধরেন ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে৷ তাঁর বাবা ও ঠাকুরদাদার এ পেশা এখনো তিনি ধরে রেখেছেন৷ রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে এ খবর তিনি শুনে থাকলেও, এর ভালো বা খারাপের দিকগুলো – কিছুই জানা নেই তাঁর৷ তবে সুন্দরবনকে তিনি ভালোবাসেন, খুব ভালোবাসেন৷
ছবি: DW
10 ছবি1 | 10
সুন্দরবনের চতুর্দিকে ১০ কিলোমিটার এলাকাকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন' এলাকা বলে ধরা হয়৷ এ রকম এলাকায় নিষিদ্ধ কার্যাবলি হলো: (ক) প্রাণী বা উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী সব কার্যকলাপ, (খ) ভূমি এবং পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট বা পরিবর্তন করতে পারে এমন সব কার্যকলাপ, (গ) মাটি, পানি, বায়ু ও শব্দদূষণকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর জন্য ক্ষতিকারক যে কোনো কার্যাবলি৷
২০১০ সালে সুন্দরবন এলাকার পশুর নদীকে অন্তর্ভুক্ত করে নদী ও খালের বেশ কিছু জলাভূমি জলজ প্রাণী সংরক্ষণের স্বার্থে ‘বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য' ঘোষণা করে৷ তেলবাহী ট্যাংকার ও মালবাহী কার্গো চলাচল অভয়ারণ্যের প্রাণিদের জন্য বিপজ্জনক হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌ-পথ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেন৷ সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এবং ১০ কিলোমিটারের মধ্যে না হওয়ায়, দহনকৃত কয়লার মান ও পরিমাণগত তারতম্য বিবেচনায় না নিয়ে কেবল ব্যবহৃত প্রযুক্তির কারণে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রকে সুন্দরবনবান্ধব বলা যায় না৷
রামসার ও ইউনেস্কো – উভয় কর্তৃপক্ষ ২০১২ সালে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷ তারপরও উদ্বেগ আমলে নেওয়া হয়নি, এমন অভিযোগ উঠেছে৷ নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সরকারকে জানিয়েছে, কয়লাবাহী জাহাজ চলাচলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে৷ পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছাই থেকে সালফার ডাই-অক্সাইড ছড়ানোর কারণে বন্য গাছপালা ধীরে ধীরে মারা যাবে৷ একই সঙ্গে অ্যাসিড নিঃসরণের কারণে ভূমির উৎপাদনক্ষমতা হ্রাস পাবে৷ এছাড়া বায়ুদূষণকারী উপাদানগুলো মেঘমালার মাধ্যমে ছড়াবে৷ নাব্যতা হ্রাস পাওয়া পশুর নদীর সংকট বাড়বে৷ অথচ আলট্রা সুপার থার্মাল প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে এ সব কোনো ক্ষতি হবে না, এমন কথা বিজ্ঞানভিত্তিক নয়৷
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য কি ধ্বংস হয়ে যাবে?
‘ওটি সাউদার্ন স্টার-৭’ নামের অয়েল ট্যাংকারটির তলদেশ ফেটে যাওয়ায় ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস অয়েল শেলা নদী থেকে পশুর নদী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে৷ এদিকে স্থানীয় পদ্ধতিতে এ যাবৎ সামান্য পরিমাণ তেল অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
শ্বাসমূলীয় বন ও পশুপাখির জীবন বিপন্ন
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সুন্দরবনে তেলবাহী জাহাজডুবির ঘটনায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হবে৷ এর ফলে সুন্দরবনের গাছপালা, মাছ ও পশুপাখির প্রাণ বিপন্ন হতে পারে৷ এছাড়া তেল সরানোর কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়া গেলে দীর্ঘ মেয়াদে শ্বাসমূলীয় বন ও বনের পশুপাখির জীবনে বিপর্যয় বয়ে আসতে পারে৷ অথচ নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান দাবি করেছেন যে, তেলের প্রভাবে সুন্দরবনের তেমন ক্ষতি হবে না৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
যে দুটি কাজ করা উচিত ছিল
সুন্দরবনে জাহাজ ডুবে সাড়ে তিন লাখ লিটারেরও বেশি তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ার পর অন্তত দুটি কাজ দ্রুত করা উচিত ছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রথমত, নদীতে ফ্লোটিং বুমের সাহায্যে ভাসমান তেল যেন ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যবস্থা করা৷ দ্বিতীয়ত, নিয়ন্ত্রণে আনা ভাসমান তেল তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করা৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
মন্ত্রণালয়ের নীতি লঙ্ঘন
সাম্প্রতিক কালে ফার্নেস তেল আমদানি অন্তত ২০ গুণ বেড়েছে বাংলাদেশে৷ এ সব বিপজ্জনক পদার্থকে বলা হয় ‘হ্যাজম্যাট’ (হ্যাজারডাস ম্যাটেরিয়াল বা ঝুঁকিপূর্ণ পদার্থ) এবং এর পরিবহনে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া সাধারণ রীতি৷ মন্ত্রণালয় এই রীতি লঙ্ঘন করেছে৷ কোনো দুর্ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি তাদের ছিল না৷
ছবি: DW/M, Mamun
জাহাজ চলাচলের অনুমোদন কেন
সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে যান্ত্রিক যান চলা দেশের ও আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন৷ সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে জাহাজ চলাচলের অনুমোদন কেন দেওয়া হলো, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন৷
ছবি: DW/M, Mamun
ডলফিনের মৃত্যু
কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দুর্ঘটনার পর সুন্দরবন এলাকা ঘুরে এসেছেন৷ তাঁদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কাঁকড়া, কচ্ছপ, ডলফিনসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী মরতে শুরু করেছে৷
ছবি: Ingrid Kvale
জেলেদের কর্ম বিপর্যয়
সুন্দরবনে শেলা নদীতে তেল ছড়িয়ে বিপর্যয়ের পর সেখানকার কয়েক হাজারেরও বেশি জেলে পরিবারের দিন কাটছে অলস৷ নদী ও খালে তেল ভেসে থাকায় এসব জেলেরা জাল পেতে মাছ শিকার করতে পারছেন না৷ এর ফলে তাঁদের সংসার চালাতে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে৷
ছবি: STRDEL/AFP/Getty Images
শেলা নদীতে ট্যাংকার দুর্ঘটনা
৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার ভোরের দিকে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কাছে শেলা নদীতে সাড়ে তিন লাখ লিটারের ফার্নেল ওয়েলবাহী ট্যাংকার ডুবির পর, ছড়িয়ে পড়েছে তেল৷ সুন্দরবনের ৩৪ হাজার হেক্টর এলাকায় এরই মধ্যে তেল ছড়িয়ে পড়েছে বলে বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন৷
ছবি: STR/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
বিচার-বিশ্লেষণে দেখা যায়: (ক) রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবন ও সেখানকার জীববৈচিত্র্যের জন্য অপূরণীয় ক্ষতিকর – এ প্রশ্নে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোনো মতভেদ নেই৷ (খ) কয়লা-বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে মাত্রায় দূষক উৎপন্ন হয়, তাতে পরিবেশ দূষিত হয়৷ সুতরাং রামপালেও কয়লা-বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশ দূষিত হবে৷ এর পাশাপাশি কয়লা পুড়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বিষাক্ত গ্যাস ও বিষাক্ত ধাতব পদার্থ মিশ্রিত ছাই উৎপন্ন হবে৷ ফলত পানি ও মাটি দূষিত হবে৷ স্বাভাবিকভাবেই এ সব দূষণের কারণে সুন্দরবনের জীব ও উদ্ভিদ বিপন্ন হবে৷
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশবাসী জনপ্রতি মাত্র ৮ ওয়াট বিদ্যুৎ পাবে৷ এ বিদ্যুতে একটি এনার্জি সেভিং বাল্ব জ্বালানোও কঠিন৷
সরকারের না...
বিশিষ্ট নাগরিকদের এই অভিমত আমলে নিচ্ছেন না সরকারের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ৷ গত শনিবার এব সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষে তাঁর সরকারের অবস্থান তুলে ধরেছেন৷ বলেছেন, ‘‘রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে এবং এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না৷'' তিনি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে তাঁর সরকারের যুক্তি তুলে ধরে বিরোধিতাকারীদের কঠোর সমালোচনা করেন৷
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘গুলশানে হলি আর্টিজানে মানুষ খুন হলো এমন একটা সময়, যখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের সব থেকে সুন্দর পরিবেশ ছিল৷ বিশ্বব্যাপী মানুষ উন্মুখ হয়ে ছিল বাংলাদেশে আসবে, বিনিয়োগ করবে৷ ঠিক সে সময় কয়েকটা ঘটনা ঘটিয়ে বিনিয়োগটাকে থামানো, উন্নয়নটাকে থামানোর চেষ্টা হলো৷ ঠিক একইভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্ষেত্রেও আন্দোলনের নামে এত কথা এবং বাধা দেওয়া হচ্ছে৷ এই দু'টোর মধ্যে আমি খুব বেশি একটা তফাৎ দেখি না৷ আমার মনে হয়, বাংলাদেশ যে গতিতে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল, সেখানে তাকে থামিয়ে দেওয়াই যেন ছিল তাদের একটা চেষ্টা৷''
সুন্দরী বন সুন্দরবন
বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবন৷ বাংলাদেশ ও ভারতজুড়ে বিস্তৃত এ বনের মোট আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিশ্ব ঐতিহ্য
বাংলাদেশে সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ৬০১৭ কিলোমিটার৷ আয়তনের প্রায় ৭০ ভাগ স্থল আর ৩০ ভাগ জল৷ পুরো সুন্দরবনের ভেতরে জালের মতো অসংখ্য নদী আর খাল রয়েছে৷ জীববৈচিত্রে ভরপুর সুন্দরবনকে ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷ প্রায় ৪০০ প্রজাতির পাখির বসবাস এই বনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
বাঘের পায়ের ছাপ
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য৷ সেখানেই দেখা মেলে বেঙ্গল টাইগারের পায়ের ছাপ৷ এ বনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ডোরাকাটা বাঘ৷ জলবায়ুর পরিবর্তন, খাদ্যের অভাব আর চোরা শিকারসহ নানা কারণে দিন দিন এখানে কমে আসছে বাঘের সংখ্যা৷ বন বিভাগের মতে, সুন্দরবনে বর্তমানের বাঘের আনুমানিক সংখ্যা ৫০০৷ ২০০৪ সালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাঘশুমারি অনুযায়ী এ সংখ্যা ছিল ৪৪০৷
ছবি: DW/M, Mamun
অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রা হরিণ
সুন্দরবনের কটকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চিত্রা হরিণ৷ সুন্দরবনের সর্বত্রই এ প্রাণীটির দেখা মেলে৷ চিত্রা আর মায়া – এ দুই ধরণের হরিণ আছে সুন্দরবনে৷ তবে সবচেয়ে বেশি আছে চিত্রা হরিণ৷ ৩০ হাজারেরও বেশি চিত্রা হরিণের বসবাস সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
যার নামে সুন্দরবন
সুন্দরবনের অধিকাংশ গাছই চির সবুজ ম্যানগ্রোভ শ্রেণির৷ এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী৷ এ গাছের নামেই বনের নামকরণ৷ এছাড়া এই বনে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ আছেস যার মধ্যে ১৭টি ফার্ন জাতীয়, ৮৭টি একবীজপত্রী ও ২৩০ প্রজাতি দ্বিবীজপত্রী৷ সারা পৃথিবীজুড়ে যে ৫০ প্রজাতির প্রকৃত ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ আছে, তার ৩৫ প্রজাতিই পাওয়া যায় বাংলাদেশের সুন্দরবনে৷
ছবি: DW/M, Mamun
পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ
প্রতিবছর প্রচুর পর্যটক আসেন সুন্দরবন ভ্রমণে৷ ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ লাখ ২০ হাজার ৪১৪ জন পর্যটক বেড়াতে এসেছেন এখানে, যাঁদের মধ্যে বিদেশি পর্যটক ৩ হাজার ৮৫৪ জন৷
ছবি: DW/M, Mamun
বিচিত্র সাপ
শরণখোলা রেঞ্জের একটি জঙ্গলে গ্রিন ক্যাট স্নেক বা সবুজ ফনিমনসা সাপ৷ কয়েক প্রজাতির সামুদ্রিক সাপ ছাড়াও সুন্দরবনে দেখা যায় কিং কোবরা বা রাজগোখরা, রাসেলস ভাইপার, পিট ভাইপার, পাইথন, ব্যান্ডেড ক্রেইড ইত্যাদি৷
ছবি: DW/M, Mamun
কুমির দর্শন
জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ – সুন্দরন নিয়ে এরকম প্রবাদ বহুকালের৷ সুন্দরবনের হারবাড়িয়া এলাকার একটি খালে লোনা জলের এই কুমিরটিকে দেখা গিয়েছিল৷ সুন্দরবনের মহা বিপন্ন এ প্রাণীটি আকারে সাত মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়৷ লোনা পানির কুমিরের গড় আয়ু ১০০ বছরের মতো৷
ছবি: DW/M, Mamun
হরিণের বন্ধু
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে তোলা বানরের ছবি৷ সুন্দরবনে চিত্রা হরিণের পর সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ প্রাণীটি৷ সুন্দরবনে বানরকে হরিণের সুহৃদ বলা হয়৷ গাছের ডাল ভেঙ্গে হরিণকে পাতা খেতে বানর সহায়তা করে থাকে৷ এছাড়া বাঘের আগমনের খবরটিও সবার আগে হরিণকে দেয় বানর৷
ছবি: DW/M, Mamun
জঙ্গল উপভোগ
সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্যের ছোট খালে ঘুরে জঙ্গল উপভোগ করছেন পর্যটকরা৷ সকাল এবং বিকেলে এসব খালে বেড়ানোর সময় অনেক বন্য প্রাণীর দেখা মেলে৷
ছবি: DW/M, Mamun
ভ্রমণতরী
সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে একটি বেসরকারি সংস্থার ভ্রমণতরী৷ সুন্দরবন দেখতে আসা বিদেশি পর্যটকদের বেশির ভাগই আসেন বেসরকারি ভ্রমণ সংস্থাগুলোর সহায়তায়৷ এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও উদ্যোগেরও অভাব অনেক৷
ছবি: DW/M, Mamun
পণ্যবাহী জাহাজের কারণে ডলফিনের মৃত্যু
সুন্দরবনের ভেতরে জঙ্গল ঘেঁষে চলাচল করছে বড় বড় পণ্যবাহী জাহাজ৷ এ সব জাহাজের উচ্চ শব্দ যেমন বন্যপ্রাণীদের বিরক্তির কারণ হয়, তেমনি এসব জাহাজের সৃষ্ট ঢেউ ভাঙন ধরায় সুন্দরবনে৷ এ সব জাহাজের প্রোপেলারের আঘাতে প্রায়ই ডলফিনেরও মৃত্যু ঘটে৷
ছবি: DW/M, Mamun
অপরূপ সূর্যাস্ত
সুন্দরবনের কটকা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সূর্যাস্তের ছবি তুলছেন এক পর্যটক৷
ছবি: DW/M, Mamun
রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
সুন্দরবনের কোল ঘেঁষেই এগিয়ে চলছে রামপাল কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ৷ এতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয় বলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও মানব বসতির ১৫-২০ কিলোমিটারের মধ্যে এ ধরণের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেয় না৷ অথচ এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের সংরক্ষিত ও স্পর্শকাতর স্থানের দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটার৷
ছবি: DW/M, Mamun
13 ছবি1 | 13
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে৷ অন্যদিকে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আবারো এই প্রকল্প পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে সরকারের কাছে৷ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছে, পুনর্বিবেচনার চিন্তা করলে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি আলোচনাতেও রাজি৷
এদিকে সোমবার রামপাল প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত দুর্বার আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ৷ তিনি বলেন, গণজাগরণ সৃষ্টি করে আন্দোলনকে আরও বেগবান করা হবে৷
নতুন আশঙ্কা
ওদিকে শুধু রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নয়, এটা স্থাপন হলে আরো কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে – তা এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে৷ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুবিধা নিতে সুন্দরবনের আশপাশে শিল্প কারাখানা স্থাপনে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে৷ এরইমেধ্যে ৩০০টি শিল্পগোষ্ঠী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি আশেপাশের গ্রামগুলোর প্রায় ১০ হাজার একর জমি কিনেছেন৷ এর মালিকদের অধিকাংশই রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তি৷
ছাড়পত্র পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫০টি চালকল, ১৯টি করাতকল, ৯টি সিমেন্ট কারখানা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান ১৩টি, ৬টি অটো মিল, ৪টি লবণ-পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প, দু'টি জাহাজ নির্মাণ প্রকল্প এবং অন্যান্য ৩৮টি প্রকল্প রয়েছে৷
পরিবেশ অধিদপ্তর সুন্দরবনের ১০ কি.মি. এলাকায় এরইমধ্যে ১৫০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং প্রকল্পকে অবস্থানগত ছাড়পত্র দিয়েছে৷ যদিও সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কি.মি. এলাকা এখনও ‘সংকটাপন্ন এলাকা' হিসেবে চিহ্নিত৷
ইকবাল হাবিব
প্রধানমন্ত্রীর উচিত আলোচনা করা
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের মুখপাত্র স্থপতি ইকবাল হাবিব ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত চার বছর ধরে আমারা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে কথা বলছি৷ শুরুতে এই প্রকল্পে অনেক ত্রুটি ছিল৷ সরকার বলছে যে, সে ত্রুটি কাটানো হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী জার্মানিসহ আরো অনেক উন্নত দেশের উদাহরণ দিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে৷ কিন্তু আমার প্রশ্ন, আমাদের সেই ব্যবস্থাপনা এবং দক্ষতা আছে কিনা৷ আমি বলব নেই৷ এই প্রকল্পের ফলে যে ক্ষতি হবে, তা মনিটর এবং বন্ধ করার কোনো ব্যবস্থানা আমাদের নেই৷ তাই যাই বলা হোক না কেন, এই প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখেই আছে৷ যারা বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধ করতে পারে না, তারা কীভাবে রামপাল বিদ্যুৎকন্দ্রের দূষণ রোধ করবে?''
তাঁর কথায়, ‘‘এই প্রকল্প নিয়ে নানা মহল থেকে কথা হচ্ছে৷ পরিবেশবাদীরা কথা বলছেন, পেশাজীবীরা কথা বলছেন, বিজ্ঞানীরা কথা বলছেন৷ আলোচনার দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি৷ তাই সবাইকে কাছে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনা উচিত৷ কারুর দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ নয়, বরং দেশের স্বার্থেই সবার যৌক্তিক এবং তথ্যভিত্তিক বক্তব্য আমলে নেয়া উচিত৷''
বন্ধু, আপনি কি প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করেন? মনে করেন যে রামপালে বিদ্যৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না? লিখুন নীচের ঘরে৷