রামুর বৌদ্ধ পল্লী থমথমে
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে৷ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে৷
স্থানীয় বসিন্দারা জানান, এক বৌদ্ধ যুবক সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকে পবিত্র কোরান শরিফ অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করেছে - এমন অভিযোগ তুলে শনিবার রাত ৯ টার দিকে একটি ইসলামি দলের সদস্যরা মিছিল বের করে৷ মিছিলটি রামু উপজেলার বৌদ্ধ বসতি এলাকা বড়ুয়া পাড়ার দিকে এগিয়ে যায়৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এরপর মিছিল থেকে যুবকদের একটি দল বড়ুয়া পাড়ার বৌদ্ধ মন্দির এবং বাড়িঘরে আগুন দেয়া শুরু করে৷ এই তাণ্ডব এবং সহিংসতা চলে ভোর রাত ৪টা পর্যন্ত৷ এসময় ১২টি বৌদ্ধ মন্দির এবং বৌদ্ধদের ৩০টি বাড়িতে আগুন দেয়া হয়৷ তারা আগুন দেয়া ছাড়াও শতাধিক ঘরবাড়ি এবং দোকানপাটে হামলা ও লুটপাট চালায় বলে ডয়চে ভেলেকে টেলিফোনে জানান ঘটনার শিকার একটি পরিবারের সদস্য সুনীল বড়ুয়া৷
রবিবার ভোরে পুলিশ, ব়্যাব এবং বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷ প্রশাসন পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঐ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে৷ সুনীল বড়ুয়া অভিযোগ করেন, মিছিলের সময় পুলিশ থাকলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি৷
তিনি বলেন, এই হামলায় এক রাতে কয়েকশ’ বৌদ্ধ পরিবার নিঃস্ব হয়ে পথে বসে গেছেন৷ তাদের থাকা খাওয়ার জন্য এখনেও তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি৷
এদিকে, রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দিন খান আলমগীর এবং শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনার জন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং একটি মৌলবাদী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন৷ তিনি হামলার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷ এছাড়া কক্সবাজারে নাইখংছড়ি এলাকা থেকে হামলায় জড়িত সন্দেহে ৩৫ জনকে আটক করা হয়েছে৷ পুলিশ জানায়, তারা হামলার পর পালিয়ে যাওয়ার পথে আটক হয়৷
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নেতা সুশীল বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, এখনও পুরো কক্সবাজার এলাকায় বৌদ্ধরা চরম আতঙ্কে আছেন৷
প্রসঙ্গত, এই হামলার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে ঢাকায় সমাবেশ হয়েছে৷ প্রতিবাদ সমাবেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নেন৷
প্রতিবেদন: হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই