ব্রাসেলসে ন্যাটোর বৈঠকে জো বাইডেন বলেছেন, এর আগে ন্যাটো এত বেশি ঐক্যবদ্ধ ছিল না।
ছবি: Eric Lalmand/BELGA/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে বসেছিল ন্যাটোর জরুরি বৈঠক। বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য অ্যামেরিকা থেকে উড়ে এসেচিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৈঠক-শেষে তিনি বলেন, রাশিয়া ভেবেছিল, ন্যাটোর মধ্যে চিড় ধরাতে পারবে। এবং সেই সুযোগ ব্যবহার করে ইউক্রেনে নিজেদের জমি শক্ত করবে তারা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ন্যাটো সবচেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কেউ রাশিয়াকে সমর্থন করছে না। জি ৭ এর বৈঠকে বাইডেন বলেছেন, রাশিয়াকে জি ২০ থেকে বার করে দেওয়া উচিত।
ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে সিরীয়দের সংহতি
02:59
This browser does not support the video element.
চার দেশে ন্যাটোর সেনা
বাইডেন জানিয়েছেন, রাশিয়া যদি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে, তাহলে অ্যামেরিকা তার সরাসরি জবাব দেবে। অন্যদিকে ন্যাটো এবং জি ৭ বৈঠকে স্থির হয়েছে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো আরো বেশি সেনা পাটাবে। সুরক্ষার প্রয়োজনেই এ কাজ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ন্যাটোর প্রধান স্টলটেনবার্গ বলেছেন, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি এবং রোমানিয়ায় নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হবে।
চেরনোবিল সংশয়
জাতিসংঘে পরমাণু বিষয়ক সংগঠন হলো দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটোমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)। সম্প্রতি তারা চেরনোবিল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। ইউক্রেনের ওই পরমাণু প্রকল্পটি এখন রাশিয়ার সেনার দখলে। ইউক্রেনের অভিযোগ, পরমাণু প্রকল্প থেকে মাত্র পঞ্চাশ কিলোমিটার দূরত্বে লাগাতার বোমাবর্ষণ শুরু করেছে রাশিয়া। ফলে যে কোনো সময় পরমাণু প্রকল্পটিতে সমস্যা হতে পারে। ইতিমধ্যেই একবার প্রকল্পটিতে আগুন লেগেছিল। আবার তেমন কিছু ঘটলে বড় বিপদ হতে পারে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় ‘দ্বিমুখী নীতির’ সমালোচনায় আরবরা
ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়াকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও উয়েফা৷ অথচ দীর্ঘদিন ধরে তারা খেলার সঙ্গে রাজনীতি না মেশানোর নীতি অনুসরণ করে আসছিল৷
ছবি: Andre M. Chang/Zuma/picture alliance
রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা
ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই রাশিয়াকে সব ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করে ফিফা ও উয়েফা৷ ফর্মুলা ওয়ানও রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে৷
ছবি: Andre M. Chang/Zuma/picture alliance
ইউক্রেনের প্রতি সংহতি
যুদ্ধ শুরুর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলোতে ইউক্রেনের পতাকা প্রদর্শন করা হয়েছে৷ ছবিতে এভারটনের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে ম্যানচেস্টার সিটির ফুটবলারদের ইউক্রেনের পতাকা সম্বলিত পোশাক পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে৷ সেখানে লেখা আছে ‘নো ওয়ার’৷
ছবি: Oli Scarff/AFP/Getty Images
ইউক্রেনের জন্য নিয়মভঙ্গ?
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের মিডল ইস্ট ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো জেমস ডোরসে বলেন, ‘‘ফিফাসহ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংগঠনগুলো খেলার মাঠে যে কোনো রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুভূতি প্রকাশ নিষিদ্ধ করেছে৷ কিন্তু তারা এখন যেটা করছে, মনে হচ্ছে, ইউক্রেনের জন্য সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে৷ ফিলিস্তিন তো আছে অবশ্যই, কিন্তু ইয়েমেন? কোথায় গেল, সিরিয়া? লিবিয়া?’’
ছবি: Reuters/R. Sprich
স্কটল্যান্ডকে জরিমানা
গতবছর মে মাসে গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত হয়েছিল৷ সেই সময় ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বলেছিল, ফিলিস্তিন বা ইসরায়েলের পতাকা প্রদর্শনের জন্য প্লেয়ারদের জরিমানা করা হবে না৷ তবে অক্টোবরে স্কটল্যান্ড ও ইসরায়েলের মধ্যে খেলার সময় স্কটিশ ফ্যানরা ইসরায়েলের জাতীয় সংগীতের সময় ফিলিস্তিনের পতাকা তুলে অবজ্ঞাসূচক ধ্বনি দেয়ায় ফিফা স্কটল্যান্ডকে ১০ হাজার সাতশ ডলার জরিমানা করেছিল৷
ছবি: Andy Buchanan/AFP/Getty Images
‘পশ্চিমা মিডিয়ার ন্যারেটিভের সঙ্গে মেলে না’
মিশরের স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়ন আলি ফারাজ বলেন, ‘‘ইউক্রেনে যা হচ্ছে তাতে কারো খুশি হওয়া উচিত নয়৷ কিন্তু আমাদের কখনো খেলাধুলার সঙ্গে রাজনীতিকে মেশাতে দেয়া হয়নি৷ কিন্তু হঠাৎ করে এখন সেই অনুমতি দেয়া হচ্ছে৷’’ তিনি বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনিরা ৭৪ বছর ধরে নিপীড়িত হচ্ছে, কিন্তু আমার মনে হয় পশ্চিমা মিডিয়ার ন্যারেটিভের সঙ্গে এটা মেলে না বলে আমরা এ বিষয়ে কথা বলতে পারি না৷’’
ছবি: VinceMignott/PRiME Media Images/IMAGO
‘পশ্চিমা দেশের পক্ষে সবাই দাঁড়ায়’
মার্চের শুরুতে ইন্দোনেশিয়ার ক্লাব পার্সিব বান্ডুং এক খেলায় ‘স্টপ ওয়ার’ লেখা চিহ্ন প্রদর্শন করেছিল৷ তবে তাতে সমর্থন জানাননি মিডফিল্ডার ফিলিস্তিনের মোহামেদ রশিদ (বামে)৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি যে কোনো দেশে যুদ্ধের বিরুদ্ধে৷ যখন পশ্চিমা দেশে যুদ্ধ শুরু হয় তখন সবাই তাদের পক্ষে দাঁড়ায়৷ কিন্তু ফিলিস্তিনে যখন মানুষ মারা যায় তখন আমরা সংহতি দেখানোর অনুমতি পাই না৷ আমাদের খেলার সঙ্গে রাজনীতি মেশানোর দায় দেয়া হয়৷’’
ছবি: Karim Jaafar/AFP
6 ছবি1 | 6
শুধু তা-ই নয়। প্রকল্পটিতে রাশিয়া বেশ কিছু কর্মীকে আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ। তাদের দিয়ে দিনরাত কাজ করানো হচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ করেছিল ইউক্রেন। রাশিয়া এখন যে শহরে বোমাবর্ষণ করছে, সেখানে অধিকাংশই চেরনোবিলের কর্মীরা থাকেন।
উদ্ধারকাজ অব্যাহত
ইউক্রেনের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইরিনা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর থেকে তিন হাজার ৩৪৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মারিউপল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই হাজার ৭১৭ জনকে। বিভিন্ন সেফ প্যাসেজের মাধ্যমে সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ফেসবুকে এই আপডেট দিয়েছেন ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী। তবে তার অভিযোগ, মারিউপলে এখনো কোনোরকম মানবিক সাহায্য নিয়ে যেতে দিচ্ছে না রাশিয়ার সেনা। গোটা এলাকা কার্যত তারা ঘিরে রেখেছে। সেফ প্যাসেজেও লাগাতার বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে।
রাশিয়া আর এগোতে পারছে না
শুক্রবার ইউক্রেন দাবি করেছে, রাশিয়ার সেনা আর এগোতে পারছে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রধান উপদেষ্টা এদিন জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় রাশিয়ার সেনা আর এগোতে পারছে না। লড়াইয়ের শুরুতে রাশিয়ার সেনা আগ্রাসন দেখিয়েছিল। তারা দ্রুত বিভিন্ন শহর দখল করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এখন তারা ডিফেন্সিভ রণনীতি নিয়েছে। নিজেদের রক্ষা করার জায়গায় তারা পৌঁছে গেছে। তার দাবি, রাশিয়ার সেনার তেল, খাবার, গোলাগুলি ক্রমশ কমে আসছে।