রাশিয়াকে কড়া বার্তা দিতে চলেছে ইউরোপ
৩০ মে ২০২৩গত বছর ইউক্রেনের উপর হামলার ‘অজুহাত' হিসেবে রাশিয়া নিজের সীমানার দোরগোড়ায় পশ্চিমা বিশ্বের বেড়ে চলা প্রভাব তুলে ধরেছিল৷ বিশেষ করে সামরিক জোট ন্যাটোর থাবা থমকে দিতে ইউক্রেনের উপর কবজা করা জরুরি বলে যুক্তি দিয়েছিল রাশিয়ার নেতৃত্ব৷ অথচ বাস্তবে ইউক্রেনসহ রাশিয়ার সীমান্তের কাছের একাধিক দেশ বেশ কয়েক বছর ধরে ইইউ ও ন্যাটোর কাছে ‘অবহেলিত' থেকেছে৷ এই দুই জোটে যোগদানের কোনো বাস্তব সম্ভাবনার আশ্বাস পায় নি ইউক্রেন, জর্জিয়া, মলডোভা ইত্যাদি দেশ৷
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা সেই বাস্তবতা বদলে দিচ্ছে৷ বহু বছরের ‘অবহেলা' ঝেড়ে ফেলে পশ্চিমা বিশ্ব এবার সত্যি রাশিয়ার থাবা থেকে প্রতিবেশীদের মুক্ত রাখতে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে৷ মলডোভার রাজধানী চিসিনাউ-এর উপকণ্ঠে বৃহস্পতিবার ইউরোপের প্রায় ৪৭টি দেশের শীর্ষ নেতা মিলিত হয়ে রাশিয়াকে সেই বার্তা দিতে চলেছেন৷ ইউরোপীয় রাজনৈতিক সংঘ – ইপিসি-র দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য যথেষ্ট সময় না থাকলেও এর মাধ্যমে ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়ায় মলডোভার প্রতি সমর্থন যথেষ্ট স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ শীর্ষ সম্মেলনের আগেই ইইউ নেতারা ছোট ভিডিও পোস্ট করছেন৷ সেগুলিতে হ্যাশট্যাগ হিসেবে ‘মলডোভা নট অ্যালোন' ব্যবহার করা হচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এই সম্মেলনকে রাশিয়ার ‘উপনিশেবাদ'-এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷
প্রতিবেশী ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা এবং মলডোভার নিজস্ব ভূখণ্ডে রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রয়াস সে দেশের দুশ্চিন্তার কারণ৷ এমনকি ট্রান্সনিস্ট্রিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার স্বঘোষিত ‘শান্তি রক্ষী বাহিনী'-ও মোতায়েন রয়েছে৷ পশ্চিমা বিশ্বের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মলডোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্ডু নিজের দেশ ও সরকারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ইউরোপের আরও সহায়তার আবেদন করে চলেছেন৷ তার আশা, ইপিসি-র শীর্ষ সম্মেলন সেই সংহতির বার্তা দেবে৷ মাত্র ২৬ লাখ জনসংখ্যার এই রাষ্ট্রে এই প্রথম এত বড় আকারের শীর্ষ সম্মেলন মস্কোর কাছে অস্বস্তিকর হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাঠামোর বাইরের এই বৃহত্তর রাষ্ট্রজোট সাধারণ কৌশলগত হুমকি নিয়ে আলোচনার মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে৷
রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন ও মলডোভা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছে৷ রাশিয়ার হামলা না ঘটলে সেই স্বীকৃতি পেতে আরও বিলম্ব হতো, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে ইইউ-তে পথে দুই দেশের সামনে এখনো অনেক বাধা রয়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ মলডোভায় ইপিসি সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কিও সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেন৷ জেলেনস্কি দ্রুত ইইউ-তে যোগদানের আশা করলেও দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছেন৷
এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)